ঢাকা ০৪:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ধানের শীষে ভোট চাইলেন তারেক রহমান, তারুণ্যের সামনে বিএনপির অঙ্গিকার পূরণের প্রতিশ্রুতি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:১৩:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫
  • / ৯২ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

তারুণ্যের সামনে নতুন প্রতিশ্রুতি নিয়ে আসছে বাংলাদেশ জাতীয়তা বাদী দল (বিএনপি)। আজ রোববার (৩ আগস্ট) রাজধানীর শাহবাগে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে সে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি  তরুণ প্রজন্মের সামনে দাড় করাতে চান নতুন এক বাংলাদেশ। যে দেশে শিক্ষা ও  কর্মসংস্থানে থাকবে গুণগত পরিবর্তন,,ই-কমার্স ও উদ্যোক্তা উন্নয়নে থাকবে বিস্তৃত পরিকল্পনা,আউটসোর্সিং বৈদেশিক আয় দেশে আনার নীতিগত উদ্যোগ,একাধিক ভাষা শিক্ষার সুযোগ,লাইব্রেরি আধুনিকায়ন ও নিরাপদ ক্যাম্পাস।

সমাবেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তারেক রহমান বলেন, গত দেড় দশকে ৪ কোটির বেশি নতুন ভোটার ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। সামনে জাতীয় নির্বাচন। এবার তোমাদের হারানো অধিকার ফিরে পাওয়ার সময়। ধানের শীষ প্রতীকে প্রথম ভোট হবে তোমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার হাতিয়ার।

তিনি বলেন, চলো, আজ আমরা সবাই একসঙ্গে প্রতিজ্ঞা করি— আমাদের প্রথম ভোট হবে বাংলাদেশ পুনর্গঠনের জন্য। আমাদের প্রথম ভোট হবে শহীদদের রক্তের মর্যাদা রাখার জন্য। আমাদের প্রথম ভোট হোক ধানের শীষের জন্য।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এই দেশের ছাত্রসমাজই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। তোমরাই গড়ে তুলবে শহীদদের স্বপ্নের সেই বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, শুধু রাজনৈতিক আন্দোলন নয়, আমাদের প্রয়োজন শিক্ষিত, দক্ষ, প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন একটি প্রজন্ম, যারা জ্ঞান ও মানবিকতা দিয়ে দেশকে নেতৃত্ব দেবে।
ছাত্রদলের হাজারো নেতাকর্মী জেল, নির্যাতন, খুন-গুম এবং হামলার শিকার হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে শতাধিক ছাত্রদলকর্মী শহীদ হয়েছেন, গ্রেফতার হয়েছেন দুই হাজারেরও বেশি। কিন্তু এই ত্যাগ বৃথা যাবে না।

দেশের তরুণদের সামনে অনেকগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্বপ্ন জাগানোর চেষ্টা করছেন তারেক রহমান। ক্ষমতায় আসলে তার দল সে অঙ্গিকারগুলো পূরণ করবেন বলে জানিয়েছেন।

শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে গুণগত পরিবর্তনের অঙ্গীকার
তারেক রহমান বলেন, ভবিষ্যতের শিক্ষানীতিতে আমরা চাই স্কুল থেকেই ব্যবহারিক ও কারিগরি শিক্ষার সংযোগ, যেন একজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় শেষে চাকরির জন্য পথে বসে না থেকে নিজের দক্ষতা দিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে।
তিনি বলেন, বিএনপি পরিকল্পনা করছে স্কুল পর্যায়ে আইটি, ডেন্টাল হাইজিন, মেডিকেল টেকনিশিয়ান ও অন্যান্য কারিগরি শিক্ষা চালু করার। এর পাশাপাশি থাকবে একাধিক ভাষা শিক্ষার সুযোগ— ইংরেজির পাশাপাশি আরবি, জার্মান, ফরাসি, জাপানি ও চীনা ভাষা শেখার সুযোগ থাকবে।

ই-কমার্স ও উদ্যোক্তা উন্নয়নে বিস্তৃত পরিকল্পনা
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, আজকের তরুণ প্রজন্মের জন্য দেশের প্রতিটি জেলায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প স্থাপনে সহায়তা করা হবে, যেন তারা নিজেরাই উদ্যোক্তা হয়ে অন্যদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে।
বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের পণ্যের সরবরাহ বাড়াতে বিশ্বমানের ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

আউটসোর্সিং বৈদেশিক আয় দেশে আনার নীতিগত উদ্যোগ
ফ্রিল্যান্সাররা বৈদেশিক মুদ্রায় আয় করলেও অনেকেই তা দেশে আনতে পারছেন না—এ সমস্যা সমাধানে বিএনপি সরকার গঠন করলে আন্তর্জাতিক লেনদেন নিরাপদ করতে জরুরি নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে বলে আশ্বাস দেন তারেক রহমান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক গৌরব ফিরিয়ে আনতে হলে গবেষণার পরিবেশ, আবাসন সংকট এবং খাবারের মান উন্নয়ন জরুরি। আমরা চাই প্রতিটি ক্যাম্পাস হোক নিরাপদ ও মুক্ত চিন্তার স্থান।

একাধিক ভাষা শিক্ষার সুযোগ
ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গ্লোবালাইজেশনের সুযোগ কাজে লাগাতে বিএনপি একাধিক ভাষা শিক্ষার ব্যবস্থা করতে চায় বলে জানান তারেক রহমান। তিনি বলেন, বাংলা ও ইংরেজির পাশাপাশি আরবি, জার্মান, ফ্রেঞ্চ, জাপানি শেখার সুযোগ সৃষ্টি হবে।
তারেক বলেন, একজন শিক্ষার্থীর জন্য একাধিক ভাষাজ্ঞান তাকে কর্মসংস্থানে এগিয়ে রাখবে। আমরা চাচ্ছি ছাত্র-ছাত্রীদের এমনভাবে তৈরি করতে যেন তারা বিশ্বে যেখানেই যাক না কেন, সহজেই টিকে থাকতে পারে।

লাইব্রেরি আধুনিকায়ন ও নিরাপদ ক্যাম্পাস
শিক্ষার্থীদের নিরাপদ ও মানসম্মত শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে তিনি বলেন, লাইব্রেরিগুলোকে অনলাইন-অফলাইন উভয় প্ল্যাটফর্মে আধুনিকায়ন করতে হবে। হলগুলোর আবাসন ও খাবারের মান বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, শিক্ষায় খরচ নয়, এটি রাষ্ট্রের বিনিয়োগ।

ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছিরের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ড. আসাদুজ্জামান খান রিপন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক আমান উল্লাহ আমান প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ধানের শীষে ভোট চাইলেন তারেক রহমান, তারুণ্যের সামনে বিএনপির অঙ্গিকার পূরণের প্রতিশ্রুতি

আপডেট সময় : ০৯:১৩:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫

তারুণ্যের সামনে নতুন প্রতিশ্রুতি নিয়ে আসছে বাংলাদেশ জাতীয়তা বাদী দল (বিএনপি)। আজ রোববার (৩ আগস্ট) রাজধানীর শাহবাগে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে সে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি  তরুণ প্রজন্মের সামনে দাড় করাতে চান নতুন এক বাংলাদেশ। যে দেশে শিক্ষা ও  কর্মসংস্থানে থাকবে গুণগত পরিবর্তন,,ই-কমার্স ও উদ্যোক্তা উন্নয়নে থাকবে বিস্তৃত পরিকল্পনা,আউটসোর্সিং বৈদেশিক আয় দেশে আনার নীতিগত উদ্যোগ,একাধিক ভাষা শিক্ষার সুযোগ,লাইব্রেরি আধুনিকায়ন ও নিরাপদ ক্যাম্পাস।

সমাবেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তারেক রহমান বলেন, গত দেড় দশকে ৪ কোটির বেশি নতুন ভোটার ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। সামনে জাতীয় নির্বাচন। এবার তোমাদের হারানো অধিকার ফিরে পাওয়ার সময়। ধানের শীষ প্রতীকে প্রথম ভোট হবে তোমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার হাতিয়ার।

তিনি বলেন, চলো, আজ আমরা সবাই একসঙ্গে প্রতিজ্ঞা করি— আমাদের প্রথম ভোট হবে বাংলাদেশ পুনর্গঠনের জন্য। আমাদের প্রথম ভোট হবে শহীদদের রক্তের মর্যাদা রাখার জন্য। আমাদের প্রথম ভোট হোক ধানের শীষের জন্য।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এই দেশের ছাত্রসমাজই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। তোমরাই গড়ে তুলবে শহীদদের স্বপ্নের সেই বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, শুধু রাজনৈতিক আন্দোলন নয়, আমাদের প্রয়োজন শিক্ষিত, দক্ষ, প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন একটি প্রজন্ম, যারা জ্ঞান ও মানবিকতা দিয়ে দেশকে নেতৃত্ব দেবে।
ছাত্রদলের হাজারো নেতাকর্মী জেল, নির্যাতন, খুন-গুম এবং হামলার শিকার হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে শতাধিক ছাত্রদলকর্মী শহীদ হয়েছেন, গ্রেফতার হয়েছেন দুই হাজারেরও বেশি। কিন্তু এই ত্যাগ বৃথা যাবে না।

দেশের তরুণদের সামনে অনেকগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্বপ্ন জাগানোর চেষ্টা করছেন তারেক রহমান। ক্ষমতায় আসলে তার দল সে অঙ্গিকারগুলো পূরণ করবেন বলে জানিয়েছেন।

শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে গুণগত পরিবর্তনের অঙ্গীকার
তারেক রহমান বলেন, ভবিষ্যতের শিক্ষানীতিতে আমরা চাই স্কুল থেকেই ব্যবহারিক ও কারিগরি শিক্ষার সংযোগ, যেন একজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় শেষে চাকরির জন্য পথে বসে না থেকে নিজের দক্ষতা দিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে।
তিনি বলেন, বিএনপি পরিকল্পনা করছে স্কুল পর্যায়ে আইটি, ডেন্টাল হাইজিন, মেডিকেল টেকনিশিয়ান ও অন্যান্য কারিগরি শিক্ষা চালু করার। এর পাশাপাশি থাকবে একাধিক ভাষা শিক্ষার সুযোগ— ইংরেজির পাশাপাশি আরবি, জার্মান, ফরাসি, জাপানি ও চীনা ভাষা শেখার সুযোগ থাকবে।

ই-কমার্স ও উদ্যোক্তা উন্নয়নে বিস্তৃত পরিকল্পনা
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, আজকের তরুণ প্রজন্মের জন্য দেশের প্রতিটি জেলায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প স্থাপনে সহায়তা করা হবে, যেন তারা নিজেরাই উদ্যোক্তা হয়ে অন্যদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে।
বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের পণ্যের সরবরাহ বাড়াতে বিশ্বমানের ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

আউটসোর্সিং বৈদেশিক আয় দেশে আনার নীতিগত উদ্যোগ
ফ্রিল্যান্সাররা বৈদেশিক মুদ্রায় আয় করলেও অনেকেই তা দেশে আনতে পারছেন না—এ সমস্যা সমাধানে বিএনপি সরকার গঠন করলে আন্তর্জাতিক লেনদেন নিরাপদ করতে জরুরি নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে বলে আশ্বাস দেন তারেক রহমান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক গৌরব ফিরিয়ে আনতে হলে গবেষণার পরিবেশ, আবাসন সংকট এবং খাবারের মান উন্নয়ন জরুরি। আমরা চাই প্রতিটি ক্যাম্পাস হোক নিরাপদ ও মুক্ত চিন্তার স্থান।

একাধিক ভাষা শিক্ষার সুযোগ
ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গ্লোবালাইজেশনের সুযোগ কাজে লাগাতে বিএনপি একাধিক ভাষা শিক্ষার ব্যবস্থা করতে চায় বলে জানান তারেক রহমান। তিনি বলেন, বাংলা ও ইংরেজির পাশাপাশি আরবি, জার্মান, ফ্রেঞ্চ, জাপানি শেখার সুযোগ সৃষ্টি হবে।
তারেক বলেন, একজন শিক্ষার্থীর জন্য একাধিক ভাষাজ্ঞান তাকে কর্মসংস্থানে এগিয়ে রাখবে। আমরা চাচ্ছি ছাত্র-ছাত্রীদের এমনভাবে তৈরি করতে যেন তারা বিশ্বে যেখানেই যাক না কেন, সহজেই টিকে থাকতে পারে।

লাইব্রেরি আধুনিকায়ন ও নিরাপদ ক্যাম্পাস
শিক্ষার্থীদের নিরাপদ ও মানসম্মত শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে তিনি বলেন, লাইব্রেরিগুলোকে অনলাইন-অফলাইন উভয় প্ল্যাটফর্মে আধুনিকায়ন করতে হবে। হলগুলোর আবাসন ও খাবারের মান বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, শিক্ষায় খরচ নয়, এটি রাষ্ট্রের বিনিয়োগ।

ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছিরের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ড. আসাদুজ্জামান খান রিপন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক আমান উল্লাহ আমান প্রমুখ বক্তৃতা করেন।