ঢাকা ১১:৩৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

দেশের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ১২:০৩:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫
  • / ১২১ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বিএনপি‘র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।  রোববার (৬ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ফাউন্ডেশন ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (এফএসডিএস) আয়োজিত ‘জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে জাতীয় ঐক্য অপরিহার্য’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ আহ্বান জানান।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের একটা নিয়মের মধ্যে দিয়ে এবং নির্বাচনের মাধ্যমেই তো জনগণের অধিকার অর্জিত হবে। আপনারা সেই তিতুমীরের সময়টার কথা বলেন, সেই সময়ও তারা দেশের স্বার্থে কঠিন ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। তাহলে আমরা এখন কেন পারবো না? আসুন আমরা সবকিছু ভুলে গিয়ে দেশের স্বার্থে একসঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করি।

সেমিনারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা বলেছি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার ও সংসদ গঠনের মধ্য দিয়ে দেশের নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান ও জনকল্যাণ বৃদ্ধি করতে হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, প্রথমে আমি এফএসডিএসকে এমন আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানাই। রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব হলো জনগণের কাছে যাওয়া। তারপর জনগণের কথা শোনা এবং কাজ করা।

তিনি বলেন, দেশের নিরাপত্তার কথা বলছেন অথচ নির্বাচন নিয়ে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের চিন্তা নেই কেন? একটা সংসদ গঠন করে দেশের নিরাপত্তাসহ অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধান করতে হবে। আমি মনে করি দেশের স্বার্থে পাশের দেশের সঙ্গে যতটুকু সম্পর্ক প্রয়োজন ততটুকুই রাখতে হবে।

সেমিনারে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের সৌন্দর্য হলো একটা ভালো নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। আমাদের দেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সবসময় পাশের একটি রাষ্ট্রের মাথা ব্যথা থাকে। সেই কথা চিন্তা করে এদেশের নিরাপত্তা শক্তি বৃদ্ধিসহ সচেতন থাকতে হবে।

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমেদ আব্দুল কাদের বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব হবে দারিদ্র্য বিমোচন করা। সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে হবে। জনশক্তি উন্নয়নের লক্ষ্যে যুবকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। জাতির জন্য জাতীয় নিরাপত্তা পলিসি গ্রহণ করতে হবে।

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগেই যৌক্তিক সংস্কার হতে হবে। তাহলে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে।

তিনি বলেন, আমাদের ঐক্যের ক্ষেত্রে সবাইকেই একমত হতে হবে। কোনো একটি দলের কারণে আমরা যথাযথ সংস্কার ও ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারছি না। বাংলাদেশের নাগরিকরা আজ একটি রাজনৈতিক দলকে নিরাপদ মনে করছে না।

ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেন, জাতীয় ঐকমত্যে এক হতে হলে আমাদের ডেমোক্রেটিকভাবে সব দলকে এক হতে হবে এবং জাতীয় বাহিনী সেনাবাহিনীর মধ্যেও সংস্কার ও পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে। তাহলে দেশ অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হবে ও এগিয়ে যাবে।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও নির্বাচন নিয়ে বর্তমান সরকারকে ভাবতে হবে। এই দেশের দিকে ইন্ডিয়া ও আমেরিকা তাকিয়ে থাকে তাদের স্বার্থ রক্ষায়। জুলাই বিপ্লবের পরবর্তী যে নির্বাচনের আকাঙ্ক্ষা রয়েছে তা আমাদের ঐক্যের নামে যেনো নষ্ট না করি‌।

রামকৃষ্ণ মিশনের প্রধান উত্তম মজুমদার বলেন, নিরাপত্তা ও ঐক্য কাদের জন্য? আমি মনে করি নিরাপত্তা ও ঐক্য হতে হবে মানুষের কল্যাণের জন্য। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, মুসলিম সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে দেশের অর্থনীতি ও মানুষের কথা চিন্তা করে আমাদের সব দলমতের ঊর্ধ্বে থেকে ঐক্য হতে হবে। মনে রাখতে হবে মানবসেবাই হলো সবচেয়ে বড় ঐক্য ও নির্বাচন।

আয়োজক সংস্থার চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহি আকবরের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ ও অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহাদী আমীন, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার নওশাদ জমির, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, নাগরিক ঐক্যর সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, নাগরিক ঐক্যের ডা. জাহেদুর রহমান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের (আপ বাংলাদেশ) আলী আহসান জুনায়েদ, বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতির সভাপতি ড. এম. আকবর আলী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, অধ্যাপক ড. বোরহান উদ্দিন খান, অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক সম্পাদক মনির হায়দার, দৈনিক নয়া দিগন্ত সম্পাদক সালাহউদ্দিন বাবর প্রমুখ সেমিনারে অংশ নেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

দেশের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের

আপডেট সময় : ১২:০৩:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫

বিএনপি‘র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।  রোববার (৬ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ফাউন্ডেশন ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (এফএসডিএস) আয়োজিত ‘জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে জাতীয় ঐক্য অপরিহার্য’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ আহ্বান জানান।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের একটা নিয়মের মধ্যে দিয়ে এবং নির্বাচনের মাধ্যমেই তো জনগণের অধিকার অর্জিত হবে। আপনারা সেই তিতুমীরের সময়টার কথা বলেন, সেই সময়ও তারা দেশের স্বার্থে কঠিন ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। তাহলে আমরা এখন কেন পারবো না? আসুন আমরা সবকিছু ভুলে গিয়ে দেশের স্বার্থে একসঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করি।

সেমিনারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা বলেছি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার ও সংসদ গঠনের মধ্য দিয়ে দেশের নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান ও জনকল্যাণ বৃদ্ধি করতে হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, প্রথমে আমি এফএসডিএসকে এমন আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানাই। রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব হলো জনগণের কাছে যাওয়া। তারপর জনগণের কথা শোনা এবং কাজ করা।

তিনি বলেন, দেশের নিরাপত্তার কথা বলছেন অথচ নির্বাচন নিয়ে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের চিন্তা নেই কেন? একটা সংসদ গঠন করে দেশের নিরাপত্তাসহ অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধান করতে হবে। আমি মনে করি দেশের স্বার্থে পাশের দেশের সঙ্গে যতটুকু সম্পর্ক প্রয়োজন ততটুকুই রাখতে হবে।

সেমিনারে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের সৌন্দর্য হলো একটা ভালো নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। আমাদের দেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সবসময় পাশের একটি রাষ্ট্রের মাথা ব্যথা থাকে। সেই কথা চিন্তা করে এদেশের নিরাপত্তা শক্তি বৃদ্ধিসহ সচেতন থাকতে হবে।

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমেদ আব্দুল কাদের বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব হবে দারিদ্র্য বিমোচন করা। সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে হবে। জনশক্তি উন্নয়নের লক্ষ্যে যুবকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। জাতির জন্য জাতীয় নিরাপত্তা পলিসি গ্রহণ করতে হবে।

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগেই যৌক্তিক সংস্কার হতে হবে। তাহলে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে।

তিনি বলেন, আমাদের ঐক্যের ক্ষেত্রে সবাইকেই একমত হতে হবে। কোনো একটি দলের কারণে আমরা যথাযথ সংস্কার ও ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারছি না। বাংলাদেশের নাগরিকরা আজ একটি রাজনৈতিক দলকে নিরাপদ মনে করছে না।

ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেন, জাতীয় ঐকমত্যে এক হতে হলে আমাদের ডেমোক্রেটিকভাবে সব দলকে এক হতে হবে এবং জাতীয় বাহিনী সেনাবাহিনীর মধ্যেও সংস্কার ও পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে। তাহলে দেশ অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হবে ও এগিয়ে যাবে।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও নির্বাচন নিয়ে বর্তমান সরকারকে ভাবতে হবে। এই দেশের দিকে ইন্ডিয়া ও আমেরিকা তাকিয়ে থাকে তাদের স্বার্থ রক্ষায়। জুলাই বিপ্লবের পরবর্তী যে নির্বাচনের আকাঙ্ক্ষা রয়েছে তা আমাদের ঐক্যের নামে যেনো নষ্ট না করি‌।

রামকৃষ্ণ মিশনের প্রধান উত্তম মজুমদার বলেন, নিরাপত্তা ও ঐক্য কাদের জন্য? আমি মনে করি নিরাপত্তা ও ঐক্য হতে হবে মানুষের কল্যাণের জন্য। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, মুসলিম সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে দেশের অর্থনীতি ও মানুষের কথা চিন্তা করে আমাদের সব দলমতের ঊর্ধ্বে থেকে ঐক্য হতে হবে। মনে রাখতে হবে মানবসেবাই হলো সবচেয়ে বড় ঐক্য ও নির্বাচন।

আয়োজক সংস্থার চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহি আকবরের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ ও অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহাদী আমীন, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার নওশাদ জমির, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, নাগরিক ঐক্যর সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, নাগরিক ঐক্যের ডা. জাহেদুর রহমান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের (আপ বাংলাদেশ) আলী আহসান জুনায়েদ, বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতির সভাপতি ড. এম. আকবর আলী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, অধ্যাপক ড. বোরহান উদ্দিন খান, অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক সম্পাদক মনির হায়দার, দৈনিক নয়া দিগন্ত সম্পাদক সালাহউদ্দিন বাবর প্রমুখ সেমিনারে অংশ নেন।