ঢাকা ০২:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

সাদমান-শান্ত‘র ফিফটি, বড় টার্গেটের পথে বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৬:৪২:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫
  • / ৮২ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গল টেস্টের চতুর্থদিন দাপুটে শেষ করলো বাংলাদেশ। তবে তৃতীয়দিনে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার ব্যাটিংয়ে যে ভীতি তৈরি হয়েছিলো টাইগারদের, আজ চতুর্থদিনে সে চিত্র দলে যায়। বদলে দিয়েছেন বাংলাদেশের পেসাররা। ম্যাচটিকে নিজেদের অনুকুলে আনতে আপ্রান চেষ্টায় বোলিং-ব্যাটিংয়ে বেশ উজ্জীবিত শান্তবাহিনী। প্রতিপক্ষের রানের গতি থামিয়ে দিয়ে দ্বীপ রাষ্ট্রে নিজেরা উড়তে চাচ্ছেন রানের আকাশে। দিনশেষে ১৮৭ রানের লীড নিয়ে টাইগাররা শনিবার গল টেস্টের ফয়সালা নির্ধারণ করবেন হয়ত।এর আগে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে গড়া ৪৯৫ রানের জবাবে শ্রীলঙ্কার ইনিংস থেমে যায় আরও পিছনে থাকতেই, ৪৮৫ রানে। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে অনেকটা ওয়ানডে মুডে খেলতে থাকা বাংলাদেশ দিন শেষে ৩ উইকেটে ১৭৭ রান সংগ্রহ করেছে।  নাজমুল হোসেন শান্ত ৫৬ আর মুশফিকুর রহিম ২২ রানেব্যাটিং করছেন।

দু’জনেই প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি হাাঁকিয়েছেন। এই ইনিংসেও ভরসার কান্ডারি হয়ে উঠছেন। শনিবার দু‘জনের ব্যাটিং শৈলীতেই পরিস্কার হয়ে যাবে ম্যাচটি জয়ের পথে ছুটছে নাকি ড্রয়ের পথে হাঁটছে। তবে দিনের প্রথম সেশনে যদি সাড়ে তিনশ রানের লক্ষ্য দেয়া যায়, তাহলে টাইগারদের অনুকুলেই ম্যাচের ভাগ্য ন্যুয়ে পড়ার সম্ভাবনা বেশি। যদিও আপাত দৃষ্টিতে ম্যাচের ভাগ্যকে ড্রয়ের দিকেই হেলান দিয়ে আছে। যেহেতু অনিশ্চয়তার খেলা ক্রিকেট। তাইতো যে কোন ঘটনাই ঘটে যেতে পারে। বাইশ গজের লড়াইয়ের নাটক এবং মহানাটকের উপর নির্ভর করছে সব।

কিন্তু বাংলাদেশ রানের গতি ঠিক রাখলেও ওপেনিংয়ে এনামুল হক বিজয়ের রানে না ফেরাটা হতাশার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আসলেই হতাশার আচরণ শুরু হয়ে যায় তার ব্যাটিংয়ে। প্রথম ইনিংসের ন্যায় এই ইনিংসেও তিনি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। প্রথম ইনিংসে দশ বল খেলে রান তুলতে পারেন নি। এবার অবশ্য রান তুলেছেন, ২০ বলে ৪ রান।

যদিও অপর ওপেনার সাদমান ইসলাম প্রথম ইনিংসে ব্যর্থতা কাটিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে নিজেকে ফেরাতে পেরেছেন। মারকুটে হাফসেঞ্চুরি হাঁকালেন। ১২৬ বলে ৭৮ রানে এলবি হয়ে আউট হন।

বাংলাদেশ চতুর্থদিনটা শুরু করে ১০ রানের লিড নিয়ে। ইনিংসের অষ্টম ওভারে লঙ্কান অর্থোডক্স স্পিনার প্রভাত জয়সুরিয়ার বলে উইকেটরক্ষক কুশল মেন্ডিসের হাতে ক্যাচ হন বিজয়। প্রথম ইনিংসে পেসার আসিথা ফার্নান্ডোর বলে উইকেট বিলিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।

এরপর মুমিনুল হককে বেশ আত্মবিশ্বাসী দেখালেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ৪০ বল খেলে ১৪ রানে থামেন মুমিনুল। থারিন্ডু রত্নায়েকেকে সুইপ করতে গেলে বল ব্যাটের পর হেলমেটে লেগে ওপরে উঠে যায়, দুর্ভাগ্যজনকভাবে সাজঘরে ফেরেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। ২ উইকেটে ৬৫ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের চা-বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।

বিরতির পরই টেস্ট ক্যারিয়ারের সপ্তম ফিফটি তুলে নেন সাদমান। সবশেষ ৭ ইনিংসে এটি তার তৃতীয় পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস। এর মধ্যে আছে একটি সেঞ্চুরিও। এবারও সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন সাদমান। কিন্তু ব্যক্তিগত ৭৬ রানে থারিন্ডু রথনায়েকের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরতে হয়েছে তাকে। ১২৬ বলের ইনিংসে ৭টি বাউন্ডারি হাঁকান এই ওপেনার।

এর আগে আজ শুক্রবার ৪ উইকেটে ৩৬৮ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করে শ্রীলঙ্কা। উইকেটে আসেন গতকালের অপরাজিত দুই ব্যাটার কামিন্দু মেন্ডিস ও ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা।

দিনের শুরুতেই শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে আউট করেন নাঈম হাসান। দিনের তৃতীয় ওভারের শেষ বলে ধনাঞ্জয়াকে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের ক্যাচ বানান ডানহাতি টাইগার স্পিনার।

৩৬ বলে ১৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন ধনাঞ্জয়া। ডাউন লেগের বল লঙ্কান অধিনায়কের ব্যাট হালকাভাবে ছুঁয়ে লিটনের গ্লাভসে জমা হয়। দলীয় ৩৭৭ রানে ৫ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা।

স্বাগতিকদের স্কোরবোর্ডে ৯ রান যোগ হতেই আবার আঘাত হানেন হাসান মাহমুদ। দিনের অষ্টম ওভারের শেষ বলে কুশল মেন্ডিসকে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের ক্যাচ বানান টাইগার পেসার। ১৭ বলে ৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন লঙ্কান উইকেটরক্ষক ব্যাটার। দলীয় ৩৮৬ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা।

এরপর সপ্তম উইকেটে ৮৪ রানের জুটি করে দলকে বাংলাদেশের কাছাকাছি নিয়ে আসেন মিলান রত্মায়েকে ও কামিন্দু মেন্ডিস।

মিলানকে ব্যক্তিগত ৩৯ রানের মাথায় বোল্ড করে জু্টি ভাঙেন হাসান। এরপর উইকেটে আঠার মতো লেগে থাকা কামিন্দুকে (১৪৮ বলে ৮৭) লিটনের ক্যাচ বানান নাঈম। পরবর্তী দুই ব্যাটার থারিন্দু রত্নায়েকে ও আসিথা ফার্নান্ডোকে বোল্ড করে ৪৮৫ রানে লঙ্কানদের প্রথম ইনিংসের ইতি টেনে দেন ডানহাতি টাইগার স্পিনার।

১২১ রানে ৫ উইকেট শিকার করেন অফস্পিনার নাঈম হাসান। ৩ উইকেট নেন পেসার হাসান মাহমুদ। একটি করে উইকেট তাইজুল ইসলাম ও মুমিনুল হকের।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

সাদমান-শান্ত‘র ফিফটি, বড় টার্গেটের পথে বাংলাদেশ

আপডেট সময় : ০৬:৪২:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫

গল টেস্টের চতুর্থদিন দাপুটে শেষ করলো বাংলাদেশ। তবে তৃতীয়দিনে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার ব্যাটিংয়ে যে ভীতি তৈরি হয়েছিলো টাইগারদের, আজ চতুর্থদিনে সে চিত্র দলে যায়। বদলে দিয়েছেন বাংলাদেশের পেসাররা। ম্যাচটিকে নিজেদের অনুকুলে আনতে আপ্রান চেষ্টায় বোলিং-ব্যাটিংয়ে বেশ উজ্জীবিত শান্তবাহিনী। প্রতিপক্ষের রানের গতি থামিয়ে দিয়ে দ্বীপ রাষ্ট্রে নিজেরা উড়তে চাচ্ছেন রানের আকাশে। দিনশেষে ১৮৭ রানের লীড নিয়ে টাইগাররা শনিবার গল টেস্টের ফয়সালা নির্ধারণ করবেন হয়ত।এর আগে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে গড়া ৪৯৫ রানের জবাবে শ্রীলঙ্কার ইনিংস থেমে যায় আরও পিছনে থাকতেই, ৪৮৫ রানে। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে অনেকটা ওয়ানডে মুডে খেলতে থাকা বাংলাদেশ দিন শেষে ৩ উইকেটে ১৭৭ রান সংগ্রহ করেছে।  নাজমুল হোসেন শান্ত ৫৬ আর মুশফিকুর রহিম ২২ রানেব্যাটিং করছেন।

দু’জনেই প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি হাাঁকিয়েছেন। এই ইনিংসেও ভরসার কান্ডারি হয়ে উঠছেন। শনিবার দু‘জনের ব্যাটিং শৈলীতেই পরিস্কার হয়ে যাবে ম্যাচটি জয়ের পথে ছুটছে নাকি ড্রয়ের পথে হাঁটছে। তবে দিনের প্রথম সেশনে যদি সাড়ে তিনশ রানের লক্ষ্য দেয়া যায়, তাহলে টাইগারদের অনুকুলেই ম্যাচের ভাগ্য ন্যুয়ে পড়ার সম্ভাবনা বেশি। যদিও আপাত দৃষ্টিতে ম্যাচের ভাগ্যকে ড্রয়ের দিকেই হেলান দিয়ে আছে। যেহেতু অনিশ্চয়তার খেলা ক্রিকেট। তাইতো যে কোন ঘটনাই ঘটে যেতে পারে। বাইশ গজের লড়াইয়ের নাটক এবং মহানাটকের উপর নির্ভর করছে সব।

কিন্তু বাংলাদেশ রানের গতি ঠিক রাখলেও ওপেনিংয়ে এনামুল হক বিজয়ের রানে না ফেরাটা হতাশার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আসলেই হতাশার আচরণ শুরু হয়ে যায় তার ব্যাটিংয়ে। প্রথম ইনিংসের ন্যায় এই ইনিংসেও তিনি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। প্রথম ইনিংসে দশ বল খেলে রান তুলতে পারেন নি। এবার অবশ্য রান তুলেছেন, ২০ বলে ৪ রান।

যদিও অপর ওপেনার সাদমান ইসলাম প্রথম ইনিংসে ব্যর্থতা কাটিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে নিজেকে ফেরাতে পেরেছেন। মারকুটে হাফসেঞ্চুরি হাঁকালেন। ১২৬ বলে ৭৮ রানে এলবি হয়ে আউট হন।

বাংলাদেশ চতুর্থদিনটা শুরু করে ১০ রানের লিড নিয়ে। ইনিংসের অষ্টম ওভারে লঙ্কান অর্থোডক্স স্পিনার প্রভাত জয়সুরিয়ার বলে উইকেটরক্ষক কুশল মেন্ডিসের হাতে ক্যাচ হন বিজয়। প্রথম ইনিংসে পেসার আসিথা ফার্নান্ডোর বলে উইকেট বিলিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।

এরপর মুমিনুল হককে বেশ আত্মবিশ্বাসী দেখালেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ৪০ বল খেলে ১৪ রানে থামেন মুমিনুল। থারিন্ডু রত্নায়েকেকে সুইপ করতে গেলে বল ব্যাটের পর হেলমেটে লেগে ওপরে উঠে যায়, দুর্ভাগ্যজনকভাবে সাজঘরে ফেরেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। ২ উইকেটে ৬৫ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের চা-বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।

বিরতির পরই টেস্ট ক্যারিয়ারের সপ্তম ফিফটি তুলে নেন সাদমান। সবশেষ ৭ ইনিংসে এটি তার তৃতীয় পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস। এর মধ্যে আছে একটি সেঞ্চুরিও। এবারও সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন সাদমান। কিন্তু ব্যক্তিগত ৭৬ রানে থারিন্ডু রথনায়েকের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরতে হয়েছে তাকে। ১২৬ বলের ইনিংসে ৭টি বাউন্ডারি হাঁকান এই ওপেনার।

এর আগে আজ শুক্রবার ৪ উইকেটে ৩৬৮ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করে শ্রীলঙ্কা। উইকেটে আসেন গতকালের অপরাজিত দুই ব্যাটার কামিন্দু মেন্ডিস ও ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা।

দিনের শুরুতেই শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে আউট করেন নাঈম হাসান। দিনের তৃতীয় ওভারের শেষ বলে ধনাঞ্জয়াকে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের ক্যাচ বানান ডানহাতি টাইগার স্পিনার।

৩৬ বলে ১৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন ধনাঞ্জয়া। ডাউন লেগের বল লঙ্কান অধিনায়কের ব্যাট হালকাভাবে ছুঁয়ে লিটনের গ্লাভসে জমা হয়। দলীয় ৩৭৭ রানে ৫ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা।

স্বাগতিকদের স্কোরবোর্ডে ৯ রান যোগ হতেই আবার আঘাত হানেন হাসান মাহমুদ। দিনের অষ্টম ওভারের শেষ বলে কুশল মেন্ডিসকে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের ক্যাচ বানান টাইগার পেসার। ১৭ বলে ৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন লঙ্কান উইকেটরক্ষক ব্যাটার। দলীয় ৩৮৬ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা।

এরপর সপ্তম উইকেটে ৮৪ রানের জুটি করে দলকে বাংলাদেশের কাছাকাছি নিয়ে আসেন মিলান রত্মায়েকে ও কামিন্দু মেন্ডিস।

মিলানকে ব্যক্তিগত ৩৯ রানের মাথায় বোল্ড করে জু্টি ভাঙেন হাসান। এরপর উইকেটে আঠার মতো লেগে থাকা কামিন্দুকে (১৪৮ বলে ৮৭) লিটনের ক্যাচ বানান নাঈম। পরবর্তী দুই ব্যাটার থারিন্দু রত্নায়েকে ও আসিথা ফার্নান্ডোকে বোল্ড করে ৪৮৫ রানে লঙ্কানদের প্রথম ইনিংসের ইতি টেনে দেন ডানহাতি টাইগার স্পিনার।

১২১ রানে ৫ উইকেট শিকার করেন অফস্পিনার নাঈম হাসান। ৩ উইকেট নেন পেসার হাসান মাহমুদ। একটি করে উইকেট তাইজুল ইসলাম ও মুমিনুল হকের।