মঙ্গগলবার গল টেস্ট শুরু,ভরসায় মুশফিক-মমিনুলরা

- আপডেট সময় : ০১:২৫:২৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
- / ৪৪ বার পড়া হয়েছে
শ্রীলঙ্কার মাটিতে মঙ্গলবার টেস্টে নতুন চক্র দিয়ে শুরু বাংলাদেশের। এটি আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৫-২৭ চক্র। এই যাত্রায় শুরুটা কেমন করবে বাংলাদেশ? মাঠের লড়াইয়ের এ নিয়ে ক্রিকেট অনুরাগীদের মধ্যে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে। তবে ভালো করতে পারবে বলে আশাবাদী বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হওয়ার আগে গলে সোমবার সংবাদ সম্মেলনে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।
যদিও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসটা কখনোই সুখকর ছিলো না। দেশের মাটি ও শ্রীলঙ্কায় ২৬ টেস্টে বাংলাদেশ জিতেছে মাত্র একটিতে। সেটা ২০১৭ সালে কলম্বোর পি সারা ওভালে নিজেদের শততম টেস্টে। লঙ্কানদের ৪ উইকেটে হারোনাটাই ছিলো একমাত্র সাফল্যর স্বাদ।
বিপরীতে বাংলাদেশের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার টেস্ট জয় ২০টি। ৫টি টেস্ট অমীমাংসিতভাবে শেষ হয়। এছাড়া শ্রীলঙ্কার মাটিতে দুটি টেস্ট (২০১৩ সালের মার্চে গলে আর ২০২১ সালের এপ্রিলে পাল্লেকেল্লেতে) ড্র করার রেকর্ড রয়েছে টাইগারদের। এর বাইরে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২২ সালে ঘরের মাঠে চট্টগ্রামে ৩টি টেস্ট হার এড়িয়ে অমীমাংসিত রেখেছে টিম বাংলাদেশ।
যদিও ভরসার জায়গা একটাই,লঙ্কার মাটিতে পরীক্ষিত চার ব্যাটার রয়েছেন দলে। যারা পূর্বে ভালো খেলেছিলেন। এর হচ্ছেন মুশফিকুর রহিম, মুমিনুল হক, লিটন দাস আর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। এই চার ব্যাটারের দিকেই তাকিয়ে আছে বাংলাদেশ।
টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সর্বাধিক ১৩ সেঞ্চুরিয়ানের মালিক মুমিনুল হক শ্রীলঙ্কার বিপেক্ষেই হাঁকিয়েছেন ৪ সেঞ্চুরি। যার তিনটি যথাক্রমে ১০০*, ১৭৬, ১০৫ দেশের মাটিতে এবং চট্টগ্রামে। অন্যটি ২০২১ সালের এপ্রিলে পাল্লেকেল্লেতে ১২৭। টেস্টে ১১ সেঞ্চিুরিয়ানের মালিক অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম সর্বাধিক ৩ সেঞ্চুরি হাঁকান শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। এর দুটি দেশের মাটিতে (২০২২ সালে চট্টগ্রামে ১০৫ ও একই বছর মিরপুরের শেরে বাংলায় ১৭৫*) আর একটি শ্রীলঙ্কার মাটিতে (২০১৩ সালের ৮ মার্চ গলে ২০০)।
এছাড়া অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও লিটন দাসের টেস্ট ক্যারিয়ারের সবচেয়ে লম্বা ইনিংস এই শ্রীলঙ্কার সাথে। ২০২২ সালের মে মাসে চট্টগ্রামে লিটন দাসের ১৪১ রানের বড় টেস্ট ইনিংস। আর নাজমুল হোসেন শান্ত ২০২১ সালে পাল্লেকেল্লেতে লঙ্কানদের সাথে উপহার দিয়েছেন ক্যারিয়ারসেরা ১৬৩ রানের ইনিংস।
র্তমান দলের কোনো বোলারের পরিসংখ্যান অবশ্য ওই ৪ ব্যাটারের মতো ভালো না। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম ৯ টেস্টে পেয়েছেন ৩০ উইকেট। সেরা ৫/৭২। অন্যদিকে মেহেদী হাসান মিরাজের ৮ টেস্টে ২৪ উইকেট। এ অফস্পিনারের লঙ্কানদের সাথে সেরা বোলিং ৪/৭৪।
অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত অবশ্য ব্যাটারদের ট্র্যাক রেকর্ডকে ভালো খেলার রসদ মনে করছেন। কিন্তু গল টেস্টের শেষ পরিণতি কিন্তু আশার আলো দেখাচ্ছে না। ইতিহাস জানাচ্ছে, এই গল স্টেডিয়ামে ২০১৭ সালের মার্চে সর্বশেষ টেস্ট খেলতে নেমে লঙ্কানদের কাছে নাকানি চুবানি খেয়েছিল মুশফিকুর রহিমের দল। ২৫৯ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছিল টাইগাররা।
যদিও শ্রীলঙ্কার মাটিতে লঙ্কানদের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট ড্র করার রেকর্ডটি এই গলের ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামেই। সেটা ২০১৩ সালে। মুশফিকুর রহিমের অসাধারন ডাবল সেঞ্চুরি (২০০), মোহাম্মদ আশরাফুলের ১৯০, নাসির হোসেনের ১০০ আর মুমিনুল হকের হাফসেঞ্চুরিতে (৫৫) ভর করে টেস্ট ড্র করার কৃতিত্ব দেখায় টাইগাররা।
কিন্তু সে কৃতিত্ব ম্লান হয়ে যায় ২০১৭ সালে। মুশফিকুর রহিম ছাড়া কেউ গলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের শেষ টেস্টে কিছুই করতে পারেননি। মুমিনুল আর লিটন দুজনই ব্যর্থতার ঘানি টেনেছেন। মুমিনুল যথাক্রমে ৭ ও ৫ রান করে আউট হয়েছিলেন। লিটন দাসের স্কোর ছিল ৫ ও ৩৫।
মুশফিকুর রহিম প্রথম ইনিংসে ৮৫ আর পরের ইনিংসে ৩৪ রান করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। প্রথম ইনিংসে লঙ্কান ব্যাটার কুশল মেন্ডিসের ১৯৪ রানের অসাধারণ ইনিংস এবং শেষ পর্যন্ত বাঁহাতি স্পিনার রঙ্গনা হেরাথের (৬/৫৯) স্পিন ঘূর্ণির কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করে বাংলাদেশ। এখন দেখার বিষয়, এবার গলে কী করে শান্তর দল!
এরপরেও বাংলাদেশ অধিনায়ক মনে করেন, তারা গল টেস্ট থেকেই ভালো সূচনা করবেন।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, এই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ভালোভাবে শুরু করার জন্য এটা আমাদের জন্য বড় সুযোগ। আমরা বাংলাদেশে কিছু অনুশীলন করেছি, তাই প্রস্তুতিও ভালো। আমি আশা করি, আমরা খুব ভালোভাবে প্রতিযোগিতা শুরু করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি সিরিজ, প্রতিটি ম্যাচ নতুনভাবে শুরু করতে হয়। আমি, মুশফিক ভাই ও লিটন এখানে আগেও ভালো স্মৃতি অর্জন করেছি, যা অবশ্যই আমাদের আত্মবিশ্বাস দেবে। তবে আমাদের একেবারে নতুনভাবে শুরু করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, আমরা যারা টপ অর্ডারে ব্যাট করব, তারা ভালো সূচনা দিতে পারব।’