ইরান-ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলায় আতঙ্কিত বিশ্ব

- আপডেট সময় : ১২:১৭:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
- / ৪৪ বার পড়া হয়েছে
রোববার তেলআবিবে হামলা চালায় ইরান। এতে ইসরায়েলের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ কর সাধারণ মানুষ এর ভুক্তভোগী হচ্ছে। ইরানের ব্ল্যাস্টার ক্ষেপনাস্ত্র হামলার পর আজ ইরানের তেহরানের পশ্চিমাঞ্চলে একটি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। শহরের পূর্বাঞ্চলেও বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থার বরাত দিয়ে আজ সোমবার এ খবর জানিয়েছে আল জাজিরা।
ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টা-পাল্টি হামলায় গোটা বিশ্ব আতঙ্কিত। তাহলে কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা এখান থেকেই! থামছে না কেউ। যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ধনেই মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে এমন অশান্তি শুরু হয়েছে বলে ইরান থেকে অভিযোগ উঠে আসছে। এবং ইসরায়েলকে তারা ছায়া হিসেবে ব্যবহার করছে। এর প্রভাব বাংলাদেশের পোষাক শিল্পের ওপরেও পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিজিএমই এর নবনির্বাচিত সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু এমন আশঙ্কা দেখছেন। তিনি বলেছেন, ইরান-ইসরায়েল ‘যুদ্ধ’ বাংলাদেশের রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্পের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। কারণ, এ সংঘাতের ফলে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যেতে পারে। যা উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে দেবে এবং এর সরাসরি প্রভাব পড়বে তৈরি পোশাক খাতে।
এদিকে ইসরায়েলের হামলায় নগরবাসি এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক সতর্কবার্তায় তেহরানের তৃতীয় পৌর জেলার বাসিন্দাদের অবিলম্বে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও দাবি করেছেন, তেহরানের আকাশ বর্তমানে ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। রাজধানীর বেসামরিক জনগণকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
বিবিসি ও রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সতর্কবার্তা ও ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলাগুলোর পর রাজধানীর সংযোগ সড়কগুলোতে দীর্ঘ যানজট দেখা যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র মজুদ করে হাজারো বাসিন্দা শহর ছাড়তে শুরু করেছেন।
তবে জনসাধারণকে আতঙ্কিত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে ইরানি কর্তৃপক্ষ। তেহরান মোট ২২টি পৌর জেলায় বিভক্ত, তৃতীয় জেলাটি রাজধানীর উত্তর-পূর্ব দিকে অবস্থিত। এর মোট জনসংখ্যা তিন লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি।
ইরানের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর কেরমানশাহের একটি হাসপাতালেও ইসরায়েলের হামলার খবর পাওয়া গেছে। হামলায় হাসপাতালের একাংশের ছাদ ধসে পড়েছে। কয়েকজন রোগী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই হামলাকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন ও যুদ্ধাপরাধ বলে অভিহিত করেছে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-হ্যান্ডেলে জানিয়েছিল, ‘ইরানের সামরিক অবকাঠামোতে আঘাত হানতে আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে (ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী) অভিযান চালাবে।’
মানচিত্রে তেহরানের তিন নম্বর জেলার একটি অংশ চিহ্নিত করে নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য ‘চিহ্নিত এলাকা খালি করতে’ বলা হয়েছে। হামলায় ইতোমধ্যে ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি আক্রান্ত হয়েছে।
প্রচারিত ফুটেজে দেখা গেছে, একজন নারী উপস্থাপক যখন সরাসরি সম্প্রচারে ছিলেন, তখনই বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা যায়।
মেহের বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, ইরানি ব্রডকাস্টিং সিস্টেমের উপস্থাপক সাহার ইমামি খবর নেটওয়ার্কের সরাসরি সম্প্রচারে ফিরে এসেছেন।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজের সতর্ক বার্তার পর এই হামলা হলো। ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার কেন্দ্র আইআরআইবি চিহ্নিত এলাকার আওতাভুক্ত ছিল। তবে চ্যানেলটির সম্প্রচার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে।