ম্যাচ, সিরিজ দলনেতা সবই খোঁয়ালেন শান্ত

- আপডেট সময় : ০১:১১:৪৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
- / ৭৯ বার পড়া হয়েছে
ইনিংস ও ৭৮ রানের পরাজয়ে ম্যাচের সঙ্গে সিরিজও হারালো বাংলাদেশ। দলনেতা শান্তও ছেড়েছেন নেতৃত্ব। বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের ২৫ বছরের ইতিহাসে আরেকটি পরাজয় সঙ্গী হয়েছে। তবে বাংলাদেশ যে হারবে ম্যাচের চিত্রে সেটা আগের দিনেই মোটামুটি নিশ্চিত হওয়ায় যায়। কিন্তু তাই বলে অধিনায়ক শান্ত নিজ থেকে কেন নেতৃত্ব ছাড়লেন! এটিই এখন দিনশেষে ক্রিকেট পাড়ায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।
ম্যাচ শেষে তিনি নিজেই দাবি তুলেছেন টেস্টে বাংলাদেশ আগের চেয়ে অনেক উন্নতি করেছে। সত্যি কি তাই! গল টেস্টে সুন্দর একটি ড্র করার পর যারা দ্বিতীয় টেস্টের ব্যাট ধরাই ভুলে যান, সেটা কি করে ভালো হবার প্রশংসা কুড়ায়! নাকি বলার জন্যই বলা। কলম্বো টেস্টে একজন ক্রিকেটারকেই দেখা গেলো না যে তারা টেস্টে খেলতে নামছে। দুই ইনিংসে স্কোর শিটের দৃশ্য যা ইচ্ছে তা। একটা ইনিংসও যদি ব্যাট হাতে ঘুরে দাড়ানো যেতো তা না হয় স্বস্তি মিলানো যেতো, এমন আক্ষেপ একজন ক্রিকেট অনুরাগীর। তিনি বলেন, আমাদের ক্রিকেটে এতো এতো টাকা খরচ করে তাহলে কি হলো। সবাই শুধু আখের গোছানোতেই থাকেন ব্যস্ত, যেন ক্রিকেট উন্নয়নের দৃষ্টি দেবার সময় নাই। যা কিছুটা বলা হয় সব মুখে মুখে। গত সতেরটি বছর পাপনের স্বৈরাচারীরর ফলাফল যেন পেতে শুরু করলো ক্রিকেটেও।
অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের বিদায়ের পর যেন এখন ক্রিকেটে হাল ধরার নাবিক শুন্য প্রায়। আর সেখানে দলনেতা বলছেন বাংলাদেশ আগের চেয়ে উন্নতি করেছে। উদাহারণ হিসেবে শেষ দুই বছর টেনে আনলেন। তিনি বলেন, ‘আপনি যদি শেষ দুই-এক বছরের টেস্ট দল দেখেন, আমরা দেশের বাইরে এসে জিতছি বা ড্র করছি। আগের থেকে যদি আপনি বলেন, আগের থেকে ভালো হয়েছে। তবে ধারাবাহিকতার জায়গায় ঘাটতি আছে। খেলায় হারজিত থাকবে।’
অবশ্য পরক্ষণে আক্ষেপের সুরেও আবার বলেন, ‘আমার মনে হয় যে, প্রথম টেস্টটি আমরা যেভাবে ডমিনেট করে খেললাম, এই টেস্টটা আরেকটু ভালো খেলতে পারতামম ডমিনেট করে খেলতে পারতাম তাহলে উন্নতির জায়গাটা আমরা দেখতে পেতাম।’
তবে একটা কথা সত্য, যার শেষ ভালো তার সব ভালো। বাংলাদেশ ক্রিকেট দল শুরুটা ভালোভাবে আরম্ভ করলেও শেষটা ছিলো চরম বাজে। আর তাই সমালোচনা হওয়াই স্বাভাবিক নয় কি!
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ২৪৭ রান সংগ্রহ করে। জবাবে শ্রীলঙ্কা তাদের প্রথম ইনিংসে জবাবটা দেয় ৪৫৮ রান তুলে। ২১১ রান পিছিয়ে বাংলাদেশ যেন দ্বিতীয় ইনিংসে খেই হারিয়ে ফেলে। ব্যাটাররা শুরু থেকেই পড়ে যান চাপে। সেখান থেকে আর মুক্তি মিলেনি। চতুর্থ দিনেই দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১৩৩ রানেই শেষ। লজ্জাজনক ইনিংস পরাজয়ের সঙ্গে সিরিজও খোঁয়ালো বাংলাদেশ।
দলের এমন পরাজয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন সাবেক নির্বাচক এবং জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার। পাশাপাশি আক্ষেপ করলেন সুন্দর একটি সুযোগ হাতছাড়া করার। তিনি বলেন, আমরা একটা বড় সুযোগ হাত ছাড়া করলামে। তিনি আরো বলেন, আমিরা বলি না যে আমরা মিস করেছি। আমার মনে হয় এই টেস্টে বাংলাদেশ অনেক বড় একটা মিস করলো।’ বাশারের মতে, কলম্বোতে প্রথম দুইদিন ব্যাটারদের অনুকুলে ছিলো। প্রথমে ব্যাট করার সুযোগ পেয়ে বড় স্কোর গড়ারও চান্স ছিলো। কিন্তু আমরা ভালো ব্যাটিং করতে পারিনি। দুই ইনিংস মিলে শ্রীলঙ্কার সামনে দুইশত রানের টার্গেট দিতে পারলে পিচের শেষ দু’দিনের আচরণ বলছে ম্যাচটিতে ভালো রেজাল্ট নিয়ে আসতে পারতো। ‘
তিনি বলেন, প্রথম টেস্টে দুই ইনিংস মিলে তিন সেঞ্চুরি। অথচ এই টেস্টে একটা ফিফটিও মারতে পারলো না। গলের বাংলাদেশকে কলম্বোতে খুঁজেও পাওয়া গেলো না। বাজে ব্যাটিংয়ের চরম মাশুল দিয়ে ইনিংস ব্যবধানে হারলো নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
যদিও হান্নান সরকারের ব্যাখ্যায় আছে অন্যটা। তার কথাতে বেরিয়ে আসছে উইকেট এবং আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পারায় বাংলাদেশ পরপর দুই টেস্টে ভালো খেলতে পারে না। ক্রিকেটাররা এখনো পর্যন্ত মানিয়ে নিতে পারছেন না বলেই এক টেস্টে ভালো খেলছে তো পরের টেস্টে ডাব্বা মারছেন। হান্নানের এই ব্যাখ্যা অনন্তকালের।
প্রসঙ্গটি এসেছে শান্ত কেন নেতৃত্ব ছাড়লেন? তাহলে কি ওয়ান ডে দলনেতা থেকে তাকে সরানোর জ্বেদেই সরে গেলেন। যদিও তিনি জানালেন অন্য কথা। নাজমুল হোসেন শান্ত বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি। আমি টেস্ট ফরম্যাটে আর এই দায়িত্ব পালন করতে চাই না। আমি সবাইকে পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, এটা ব্যক্তিগত কোনো কিছু নয়। পুরোপুরি দলের ভালোর জন্য আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং আমি মনে করি এটাতে দলের ভালো কিছুই হবে।’
তবে তিনি যে কারণেই নেতৃত্ব ছাড়েন না কেন, সবাই বলাবলি করছেন ম্যাচ,সিরিজ, নেতৃত্ব সবই খোয়ালেন শান্ত।