সারা দেশে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার। একইসঙ্গে ফল প্রকাশে বিলম্ব যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। আজ বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকালে রাজধানীর ভাসানটেক সরকারি কলেজ ও সরকারি বাঙলা কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, পরীক্ষার প্রথম দিন থেকেই কেন্দ্রগুলোতে সুষ্ঠু পরিবেশ বিরাজ করছে। পরীক্ষার্থীরা সময়মতো কেন্দ্রে পৌঁছেছে এবং নির্ধারিত নিয়মে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, শিক্ষা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় একটি সুশৃঙ্খল পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে।

তিনি বলেন, সরকার প্রশ্নফাঁসের গুজব ঠেকাতে এবং নকলমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো সমস্যার কথা শোনা যায়নি। এ সময় সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের অধ্যক্ষ, কেন্দ্র সচিব, কক্ষ পরিদর্শক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

কিন্তু  বিভিন্ন কেন্দ্রে ঘুরে শিক্ষা উপদেষ্টার কথার সাথে গড়মিলের দেখা গেছে। উপদেষ্টা যে দুটি কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন,সেগুলো ছাড়া রাজধানীর একাধিত কেন্দ্রতে স্বাস্থ্য বিধি মানা হয়নি। মাস্ক কিংবা স্যানিটেরাইজ ব্যবহার করা হয়নি। তবে কিছু কিছু কেন্দ্র বেশ সতর্ক ছিলো। তারা কেন্দ্রে প্রবেশের পথেই শিক্ষার্থীদের স্যানিটেরাইজ দিতে দেখা যায়।

রাজধানীসহ সারাদেশে করোনাভাইরাস ও ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব যখন একসঙ্গে বাড়ছে তখন এইচএসসি পরীক্ষা ঘিরে দেখা গেছে স্বাস্থ্যবিধি না মানার হিড়িক। সিদ্ধেশ্বরী কলেজ কেন্দ্রের গেটে দায়িত্বরত একাধিক নিরাপত্তাকর্মী  জানিয়েছেন, কিছু অভিভাবক স্বাস্থ্যবিধি মানলেও বেশিরভাগই মাস্ক ছাড়া কেন্দ্রে আসছেন। তারা বারবার বলার পরও কেউ শুনছেন না।

এদিকে ভ্যাপসা গরমে কেন্দ্রের সামনে অপেক্ষমান অভিভাবকদের অবস্থাও ছিল বেশ অস্বস্তিকর। অনেকেই বাসা থেকে হাতপাখা এনেছেন, কেউ কেউ আবার কেন্দ্রে বিতরণ করা লিফলেট দিয়ে গায়ে বাতাস দেওয়ার চেষ্টা করছেন। দীর্ঘ সময় বসে থাকতে থাকতে কেউ কেউ গল্প-আড্ডায় ব্যস্ত, কেউ আবার সন্তানদের ফলাফল ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে একে অন্যের সঙ্গে আড্ডা-আলোচনায় মেতেছেন।

এছাড়া পরীক্ষার প্রথম দিনে তেমন বড় কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেনি। তবে সিলেট সরকারী কলেজে জাল প্রবেশপত্র নিয়ে পরীক্ষা দিতে এসে আটক হন এক ছাত্র। একই নম্বরের প্রবেশপত্র নিয়ে মদন মোহন কলেজের দুই শিক্ষার্থীর হাতে দেখতে পান দ্বায়িত্বপ্রাপ্তরা।  পরবর্তীতের সিলেট শিক্ষা বোর্ডের মাধ্যমে প্রকৃত পরীক্ষার্থীর প্রবেশপত্র নির্ধারণ করা হয়। এতে মোছা.ফাজিয়া আক্তারের প্রবেশপত্র জাল বলে প্রমানিত হয়। এবং মোছা.মাহমিনা আক্তারের প্রবেশপত্র সঠিক বলে বিবেচিত হয়।

দেশের নয়টি শিক্ষাবোর্ড, কারিগরি শিক্ষাবোর্ড ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২০২৬ সালের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় এ বছর মোট ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। ২ হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। গত বছরের তুলনায় এবার পরীক্ষার্থী কমেছে ৮১ হাজার ৮৮২ জন।