যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের শিক্ষার্থী ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞা
- আপডেট সময় : ১০:২৬:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫
- / ৫২ বার পড়া হয়েছে
উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত বাংলাদেশ-পাকিস্তানসহ বেশ কয়েকটি দেশ থেকে শিক্ষার্থী নিয়োগে বিধি নিষেধ আরোপ করেছে যুক্তরাজ্য। ভিসার অপব্যবহার ও যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের কঠোর এই নিয়মের ফরে বাংলাদেশ-পাকিস্তান থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি সীমিত করতে শুরু করেছে যুক্তরাজ্যের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়। এই তালিকায় রয়েছে অন্তত নয়টি বিশ্ববিদ্যালয়।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) জিও নিউজের খবরে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর প্রকৃত শিক্ষার্থী ভর্তি নিশ্চিত করার চাপ বাড়তে থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর পেছনে অন্যতম কারণ হিসেবে উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে আশ্রয় (অ্যাসাইলাম) আবেদনের উদ্বেগজনক বৃদ্ধি।
এই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাজ্যের সীমান্ত নিরাপত্তামন্ত্রী ডেম অ্যাঞ্জেলা ঈগল সতর্ক করে বলেন, ‘ভিসা ব্যবস্থাকে ব্রিটেনে বসবাসের পেছনের দরজা হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।’ গত মাসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত এক বছরে আশ্রয়প্রার্থীর তালিকায় শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তান।
এই সিদ্ধান্তের আওতায় যেসব বিশ্ববিদ্যালয় পরিবর্তন এনেছে, তার মধ্যে ইউনিভার্সিটি অব চেস্টার উল্লেখযোগ্য। প্রতিষ্ঠানটি ‘সাম্প্রতিক ও অপ্রত্যাশিত হারে ভিসা প্রত্যাখ্যান বৃদ্ধির কারণে ২০২৬ সালের শরৎকাল (অটাম) পর্যন্ত পাকিস্তান থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, ইউনিভার্সিটি অব উলভারহ্যাম্পটন পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে স্নাতক শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করেছে। একইভাবে ইউনিভার্সিটি অব ইস্ট লন্ডন পাকিস্তান থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে।
সান্ডারল্যান্ড ও কভেন্ট্রি বিশ্ববিদ্যালয়ও শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে দেশ দুটি থেকে। ইউনিভার্সিটি অব সান্ডারল্যান্ড জানিয়েছে, তারা শিক্ষার্থী ভিসা ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও শুদ্ধতা রক্ষায় কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে এবং এ জন্য তারা কোনো ক্ষমা চাইবে না।
চলতি বছরের শুরুতে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তর শিক্ষার্থী স্পনসর লাইসেন্স বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় তিনটি বেসিক কমপ্লায়েন্স অ্যাসেসমেন্ট নীতিমালায় পরিবর্তন আনে। এই সংস্কার ছিল যুক্তরাজ্যের সামগ্রিক অভিবাসন নীতি সংস্কারের অংশ, যার লক্ষ্য ভিসা অপব্যবহার রোধ ও নিট অভিবাসন কমানো, যা বর্তমানে গত চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে।
সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হওয়া নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিশ্চিত করতে হবে যে তাদের ভিসা আবেদনের প্রত্যাখ্যান হার ৫ শতাংশের বেশি হবে না, যা আগে ছিল ১০ শতাংশ।
কিন্তু ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক বছরে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের (ডিপেন্ডেন্ট বাদে) শিক্ষার্থী ভিসা প্রত্যাখ্যানের হার যথাক্রমে ১৮ শতাংশ ও ২২ শতাংশ, যা নতুন সীমার অনেক ওপরে। একই সময়ে স্বরাষ্ট্র দপ্তর মোট ২৩ হাজার ৩৬টি আবেদন বাতিল করেছে, যার অর্ধেকই এই দুই দেশের শিক্ষার্থীদের।
যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের উচ্চ মূল্য দেয়। তবে একই সঙ্গে তারা বলেছে, ‘আমরা নিয়ম কঠোর করছি, যাতে কেবল প্রকৃত শিক্ষার্থীরাই আসতে পারে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে।’



















