ঢাকা ০৯:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ইনিংস হারের শঙ্কায় তৃতীয় দিন শেষ করলো বাংলাদেশ

ক্রীড়া ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৮:০৫:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
  • / ১৯৬ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কলম্বো টেস্টের ব্যাটিংয়ে আরেকটি বাজেদিন অতিবাহিত করলো টিম বাংলাদেশ। এ যেন উইকেটে আসা-যাওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন টাইগাররা। কত দ্রুত আউট হওয়া যায় সাদমান, এনামুল হক বিজয় বলুন আর অভিজ্ঞ মমিনুল,শান্ত আর মুশফিক বলুন, সবাই ব্যাট হাতে একই চরিত্রের অভিনেতা। এনামুল হক বিজয় তিন ইনিংস ব্যার্থতার পর চতুর্থ ইনিংসে যা কিছুটা রানের দেখা পেয়েছিলেন,তাতেও সইলো না। খেলছিলেন যেন টি-টুয়েন্টি‘র কোন ম্যাচ। ফলে যা হওয়ার, ডি সিলভার বলে কট আউট হয়ে বিদায় নিলেন ১৯ বলে ১৯ রান করে। এমন দৃশ্যে মাত্র ১১৫ রান তুলতেই টানা ৬ উইকেটের পতন হলো। এতে হতাশার মেঘ ক্রমান্বয়ে অন্ধকার নামিয়ে দিলো বাংলাদেশ শিবিরে। যেখান থেকে কেবল নিশ্চিত ইনিংস পরাজয়ের দু:স্বপ্ন দেখা যায়। আজ চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনেই হয়ত শান্তদের তাড়াহুড়ো ম্যাচ খেলার ফলাফলটা পেয়ে যাবেন। ভরসার জায়গা বলতে কেবল `অনিশ্চিয়তার খেলা’ ক্রিকেট। এই মিরাকল শব্দটি যদি পারে কিছু ঘটাতে,তাহলে হয়ত মুক্তি মিললেও মিলতে পারে। এড়াতে পারে ইনিংস পরাজয়ের লজ্জা।

কিন্তু আশঙ্কা বলছে সেটা কেবলই স্বপ্ন হতে পারে। কারণ দিন শেষে বাংলাদেশ ৪ উইকেট হাতে রেখে এখনো ৯৬ রান পিছিয়ে বাংলাদেশ। এমন ধারাবাহিকতা থাকলে হয়ত চতুর্থদিনের প্রথম প্রহরেই টিম বাংলাদেশের দ্রুত আউট হওয়ার ফলাফল ঘটবে।

টাইগারদের এমন ব্যাটিং দৃশ্যে ক্রিকেট অনুরাগীদের হতাশ করারই কথা। কলম্বো টেস্টে এই উইকেটেই হেসে খেলে রান তুলেছেন স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। একটা সেঞ্চুরি দুইটি প্রায় সেঞ্চুরির কাছাকাছি, বাংলাদেশের ২৪৭ রানের জবাবে তাদের সংগ্রহ দাড়ায় ৪৫৮ রানে। আর সেখানে একের পর এক ব্যাটিং ব্যর্থতার চিত্রই দেখা মিলেছে বাংলাদেশ শিবিরে।

গল টেস্টের পর যে আসা এবং সম্ভাবনা জেগে উঠেছিলো শান্তদের নিয়ে, কলম্বোতে যেন গলা টিপে হত্যা করা হলো। দুই ইনিংস মিলে বাংলাদেশের ব্যাটিং চিত্রে আপাতত এই কাহিনী পরিস্কার হয়ে উঠেছে।

কলম্বো টেস্টে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেটে ১১৫ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করেছে টাইগাররা। ইনিংস হার এড়াতে হলে আরও ৯৬ রান করতে হবে। ১৩ রান নিয়ে অপরাজিত আছেন লিটন।

মুশফিকুর রহিম এই দলে সবচেয়ে অভিজ্ঞ। তার ওপর ভরসা ছিল। শুরুটাও করেছিলেন ভালো। সেট হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ৫৩ বল খেলা ইনিংসটির সমাপ্তি ঘটলো প্রভাত জয়সুরিয়ার বলে বোল্ড হয়ে। ২৬ করে ফিরলেন মুশফিক। ১০০ তুলতেই ৫ উইকেট হারালো বাংলাদেশ। তখনই বলতে গেলে শেষ আশা।

এর আগে ২১১ রান পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আগের তিন ইনিংসের বেশি রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে ব্যাট করেও রান করতে পারেননি এনামুল হক বিজয়। ওই তিন ইনিংসে যথাক্রমে ০, ৪, ০ রানে আউট হয়েছিলেন তিনি।

আগের সব ব্যর্থতা ভুলতে কলম্বো টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে নতুন কৌশল অবলম্বন করেন বিজয়। রক্ষণাত্মক ভঙ্গিকে ছুঁড়ে ফেলে এবার তিনি বেছে নেন আক্রমণাত্মক স্টাইল। কিন্তু ডানহাতি ব্যাটারের নতুন ভঙ্গিও কাজে দিলো না। কয়েকটি বাউন্ডারি হাঁকালেও ইনিংস বড় করতে পারেননি বাংলাদেশ ওপেনার।

১৯ বলে ১৯ রান (২টি চার ও একটি ছক্কা) করে আউট হয়ে গেছেন বিজয়। শ্রীলঙ্কার পেসার আসিথা ফার্নান্দোর বলে শর্ট লেগ অঞ্চলে পাবন রত্মায়েকের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের ফেরত গেছেন এই ব্যাটার।

বিজয়ের আউটের পরপরই পড়েছে চা বিরতির ঘণ্টা। তার আগে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে ৬.৫ ওভারে ১ উইকেটে ৩১ রান করে বাংলাদেশ। সাদমান অপরাজিত ছিলেন ১২ রানে।

তবে বিরতির পরের ওভারেই উইকেট দিয়েছেন সাদমান। প্রভাত জয়সুরিয়ারে কভার ড্রাইভ করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন বাঁহাতি এই ওপেনার। করেছেন ১২ রান। ৩১ রানে ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

এরপর মুমিনুল হকও বেশিদূর এগোতে পারেননি। ধনঞ্জয়া ডি সিলভার বলে খোঁচা মেরে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। ১৫ রানেই থেমেছে মুমিনুলের ইনিংস।

অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত দলকে ভরসা দিতে পারেননি। তিনিও সেট হয়ে আউট। ১৯ রান করে ধনঞ্জয়া ডি সিলভার বলে এলবিডব্লিউ বাংলাদেশ দলপতি।

আজ শুক্রবার ২ উইকেটে ২৯০ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করে শ্রীলঙ্কা। শেষমেশ প্রথম ইনিংসে ৪৫৮ রানে গিয়ে থামে লঙ্কানরা। এতে ২১১ রানের লিডও পায় স্বাগতিকরা। এর আগে ব্যাটারদের ব্যর্থতায় প্রথম ইনিংসে ২৪৭ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ইনিংস হারের শঙ্কায় তৃতীয় দিন শেষ করলো বাংলাদেশ

আপডেট সময় : ০৮:০৫:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

কলম্বো টেস্টের ব্যাটিংয়ে আরেকটি বাজেদিন অতিবাহিত করলো টিম বাংলাদেশ। এ যেন উইকেটে আসা-যাওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন টাইগাররা। কত দ্রুত আউট হওয়া যায় সাদমান, এনামুল হক বিজয় বলুন আর অভিজ্ঞ মমিনুল,শান্ত আর মুশফিক বলুন, সবাই ব্যাট হাতে একই চরিত্রের অভিনেতা। এনামুল হক বিজয় তিন ইনিংস ব্যার্থতার পর চতুর্থ ইনিংসে যা কিছুটা রানের দেখা পেয়েছিলেন,তাতেও সইলো না। খেলছিলেন যেন টি-টুয়েন্টি‘র কোন ম্যাচ। ফলে যা হওয়ার, ডি সিলভার বলে কট আউট হয়ে বিদায় নিলেন ১৯ বলে ১৯ রান করে। এমন দৃশ্যে মাত্র ১১৫ রান তুলতেই টানা ৬ উইকেটের পতন হলো। এতে হতাশার মেঘ ক্রমান্বয়ে অন্ধকার নামিয়ে দিলো বাংলাদেশ শিবিরে। যেখান থেকে কেবল নিশ্চিত ইনিংস পরাজয়ের দু:স্বপ্ন দেখা যায়। আজ চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনেই হয়ত শান্তদের তাড়াহুড়ো ম্যাচ খেলার ফলাফলটা পেয়ে যাবেন। ভরসার জায়গা বলতে কেবল `অনিশ্চিয়তার খেলা’ ক্রিকেট। এই মিরাকল শব্দটি যদি পারে কিছু ঘটাতে,তাহলে হয়ত মুক্তি মিললেও মিলতে পারে। এড়াতে পারে ইনিংস পরাজয়ের লজ্জা।

কিন্তু আশঙ্কা বলছে সেটা কেবলই স্বপ্ন হতে পারে। কারণ দিন শেষে বাংলাদেশ ৪ উইকেট হাতে রেখে এখনো ৯৬ রান পিছিয়ে বাংলাদেশ। এমন ধারাবাহিকতা থাকলে হয়ত চতুর্থদিনের প্রথম প্রহরেই টিম বাংলাদেশের দ্রুত আউট হওয়ার ফলাফল ঘটবে।

টাইগারদের এমন ব্যাটিং দৃশ্যে ক্রিকেট অনুরাগীদের হতাশ করারই কথা। কলম্বো টেস্টে এই উইকেটেই হেসে খেলে রান তুলেছেন স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। একটা সেঞ্চুরি দুইটি প্রায় সেঞ্চুরির কাছাকাছি, বাংলাদেশের ২৪৭ রানের জবাবে তাদের সংগ্রহ দাড়ায় ৪৫৮ রানে। আর সেখানে একের পর এক ব্যাটিং ব্যর্থতার চিত্রই দেখা মিলেছে বাংলাদেশ শিবিরে।

গল টেস্টের পর যে আসা এবং সম্ভাবনা জেগে উঠেছিলো শান্তদের নিয়ে, কলম্বোতে যেন গলা টিপে হত্যা করা হলো। দুই ইনিংস মিলে বাংলাদেশের ব্যাটিং চিত্রে আপাতত এই কাহিনী পরিস্কার হয়ে উঠেছে।

কলম্বো টেস্টে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেটে ১১৫ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করেছে টাইগাররা। ইনিংস হার এড়াতে হলে আরও ৯৬ রান করতে হবে। ১৩ রান নিয়ে অপরাজিত আছেন লিটন।

মুশফিকুর রহিম এই দলে সবচেয়ে অভিজ্ঞ। তার ওপর ভরসা ছিল। শুরুটাও করেছিলেন ভালো। সেট হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ৫৩ বল খেলা ইনিংসটির সমাপ্তি ঘটলো প্রভাত জয়সুরিয়ার বলে বোল্ড হয়ে। ২৬ করে ফিরলেন মুশফিক। ১০০ তুলতেই ৫ উইকেট হারালো বাংলাদেশ। তখনই বলতে গেলে শেষ আশা।

এর আগে ২১১ রান পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আগের তিন ইনিংসের বেশি রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে ব্যাট করেও রান করতে পারেননি এনামুল হক বিজয়। ওই তিন ইনিংসে যথাক্রমে ০, ৪, ০ রানে আউট হয়েছিলেন তিনি।

আগের সব ব্যর্থতা ভুলতে কলম্বো টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে নতুন কৌশল অবলম্বন করেন বিজয়। রক্ষণাত্মক ভঙ্গিকে ছুঁড়ে ফেলে এবার তিনি বেছে নেন আক্রমণাত্মক স্টাইল। কিন্তু ডানহাতি ব্যাটারের নতুন ভঙ্গিও কাজে দিলো না। কয়েকটি বাউন্ডারি হাঁকালেও ইনিংস বড় করতে পারেননি বাংলাদেশ ওপেনার।

১৯ বলে ১৯ রান (২টি চার ও একটি ছক্কা) করে আউট হয়ে গেছেন বিজয়। শ্রীলঙ্কার পেসার আসিথা ফার্নান্দোর বলে শর্ট লেগ অঞ্চলে পাবন রত্মায়েকের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের ফেরত গেছেন এই ব্যাটার।

বিজয়ের আউটের পরপরই পড়েছে চা বিরতির ঘণ্টা। তার আগে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে ৬.৫ ওভারে ১ উইকেটে ৩১ রান করে বাংলাদেশ। সাদমান অপরাজিত ছিলেন ১২ রানে।

তবে বিরতির পরের ওভারেই উইকেট দিয়েছেন সাদমান। প্রভাত জয়সুরিয়ারে কভার ড্রাইভ করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন বাঁহাতি এই ওপেনার। করেছেন ১২ রান। ৩১ রানে ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

এরপর মুমিনুল হকও বেশিদূর এগোতে পারেননি। ধনঞ্জয়া ডি সিলভার বলে খোঁচা মেরে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। ১৫ রানেই থেমেছে মুমিনুলের ইনিংস।

অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত দলকে ভরসা দিতে পারেননি। তিনিও সেট হয়ে আউট। ১৯ রান করে ধনঞ্জয়া ডি সিলভার বলে এলবিডব্লিউ বাংলাদেশ দলপতি।

আজ শুক্রবার ২ উইকেটে ২৯০ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করে শ্রীলঙ্কা। শেষমেশ প্রথম ইনিংসে ৪৫৮ রানে গিয়ে থামে লঙ্কানরা। এতে ২১১ রানের লিডও পায় স্বাগতিকরা। এর আগে ব্যাটারদের ব্যর্থতায় প্রথম ইনিংসে ২৪৭ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।