পাক-ভারত যুদ্ধাভাবে উদ্বেগ জাতিসংঘ

- আপডেট সময় : ১২:৫৬:২৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫
- / ৪১ বার পড়া হয়েছে
কাশ্মীরের পহেলগাম হামলার জবাব দিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছে ভারতের মোদি সরকার। বার্তা সংস্থা এএফপি ভারত সরকারের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে। নয়াদিল্লি এই হামলার জন্য তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে দায়ী করেছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার এক সপ্তাহ পর গতকাল মোদি সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা প্রধানদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। বৈঠকে তিনি সশস্ত্র বাহিনীকে বলেছেন, “সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ার পদ্ধতি, লক্ষ্যবস্তু এবং সময় নির্ধারণের সম্পূর্ণ কার্যকরী স্বাধীনতা তাদের রয়েছে”।
এদিকে ইসলামাবাদে সোমবার পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমরা আমাদের বাহিনী জোরদার করেছি কারণ এটি এখন আসন্ন। সুতরাং সেই পরিস্থিতিতে, কিছু কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তাই সেই সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়েছে।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী তারার বলেন, ‘ভারত পেহেলগামের ঘটনায় জড়িত থাকার ভিত্তিহীন ও বানোয়াট অভিযোগের অজুহাত দেখিয়ে আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিতে চায়, এমন বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য পাকিস্তানের কাছে আছে।’
পাকিস্তান ও ভারতের এমন মুখোমুখি অবস্থানে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছেন। মাত্র এক সপ্তাহ আগে জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬জন পর্যটক নিহত হন। এর দ্বায় ভারত সরকার পাকিস্তানের উপর চাপাচ্ছে বলে অভিযোগ পাকিস্তান সরকারের।
নিউইয়র্ক থেকে ইউএন নিউজ জানায়, নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে তিনি (গুতেরেস) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের সঙ্গে টেলিফোনে আলাদাভাবে কথা বলেছেন এবং দিনের শুরুতে তিনি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গেও কথা বলেছেন।’
ফোনালাপের সময় জাতিসংঘ প্রধান ২২শে এপ্রিলের সন্ত্রাসী হামলার প্রতি আবারও তীব্র নিন্দা জানান এবং ‘আইনি উপায়ে এই হামলার জন্য ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা অর্জনের গুরুত্ব’ উল্লেখ করেন।
ডুজারিক আরও বলেন, ‘তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং এমন সংঘর্ষ এড়ানোর অনুরোধ করেছেন যার পরিণতি দুঃখজনক হতে পারে।’
জাতিসংঘের মহাসচিব যেকোনো উত্তেজনা প্রশমন প্রচেষ্টার সমর্থনে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাবও দিয়েছেন। ওই দিন বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের বেশির ভাগ পর্যটক। নয়াদিল্লির অভিযোগ, হামলার সঙ্গে ইসলামাবাদ জড়িত। তবে ইসলামাবাদ এই অভিযোগ নাকচ করেছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেন।
তবে এরই মধ্যে হামলার জেরে পাকিস্তানের সঙ্গে করা ৬৫ বছরের পুরোনো সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করাসহ নানা পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। জবাবে পাকিস্তানও পাল্টা বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে। এর পর থেকে উভয় দেশের মধ্যে উত্তেজনা চলছে।
পেহেলগামের হামলার পর ভারত দুজন সন্দেহভাজন হামলাকারীর পরিচয় প্রকাশ করেছে। নয়াদিল্লির দাবি, হামলাকারীরা পাকিস্তানি নাগরিক। তবে ওই হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা বারবার অস্বীকার করেছে পাকিস্তান। আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় এই হামলার নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে ইসলামাবাদ।