ঢাকা ০৩:০৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ব্রেন স্ট্রোকের পর স্বাভাবিক হয়ে ওঠার ওষুধ আবিষ্কার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:২৫:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৪৯ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ব্রেন স্ট্রোক করা মানেই একজন ব্যক্তির জীবন সেখানেই প্রায় শেষ। সুস্থ্য হওয়ার আশা ছেড়ে দেয়া হয়। যে ক‘দিন বেঁচে থাকতে হয় পরের উপর নির্ভরতা থেকে। অসহায় এক জীবন নেমে আসে ভূক্তভোগী মানব জীবনে। শারীরিক ভাবে অক্ষম হয়ে পড়।  অনেকের হাত অবশ হয়ে যায়। অনেকের পা অবশ হয়ে যায়। বা অনেকে কথা বলার ক্ষমতা হারান। তার স্বাভাবিক জীবন নষ্ট হয়ে যায়। ব্রেন স্ট্রোকের ধাক্কা থেকে সেরে ওঠার অন্যতম উপায় হলো শারীরিক থেরাপি। তবে অনেকের ক্ষেত্রে এটি সম্ভব হয় না। বা অনেকে দীর্ঘদিন থেরাপি চালিয়ে যেতেও পারেন না।

তবে এবার সুখবর আছে এই রোগে ভুক্তভোগীদের জন্য।  ইউসিএলএ হেলথ গবেষণা চালিয়ে এমন এক ওষুধ খুঁজে পেয়েছে যেটি শারীরিক থেরাপির মতো কাজ করে। একটি ইঁদুরের ওপর গবেষণা চালিয়ে এমন যুগান্তকারী ফলাফল পেয়েছেন তারা।

গবেষণার ফলাফলটি প্রকাশ করা হয়েছে ন্যাচার কমিউনিকেশন জার্নালে। বিজ্ঞানীরা ইঁদুরের ওপর দুটি ওষুধের পরীক্ষা চালিয়েছেন। এরমধ্যে একটি ওষুধ স্ট্রোক করা ইঁদুরের নড়াচড়ার নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই উন্নত করেছে।

গবেষণার নেতৃত্বে ছিলেন ডাক্তার এস. থমাস কারমাইকেল। তিনি বলেছেন, “আমরা স্ট্রোকের রোগীদের জন্য এমন ওষুধ চাই যেটি পুনর্বাসনের মতো একই কাজ করবে। পুনর্বাসনের মাধ্যমে সেরে উঠতে যে পরিমাণ শ্রম প্রয়োজন বেশিরভাগ রোগী সেটি ধরে রাখতে পারে না। অন্যান্য রোগের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত ওষুধ থাকলেও স্ট্রোকের চিকিৎসায় ওষুধ নেই।”

ডাক্তার কারমাইকেল জানিয়েছেন, স্ট্রোকের পর শারীরিক থেরাপির কীভাবে ব্রেনকে সেরে উঠতে সহায়তা করে সেটি তারা পর্যবেক্ষণ করেছেন। আর এটির ওপর এমন একটি ওষুধ তৈরির চেষ্টা করেছেন যেটি থেরাপির মতো কাজ করবে।

তারা খুঁজে পেয়েছেন স্ট্রোক ব্রেনের কিছু কোষকে অন্য কোষগুলো থেকে আলাদা করে ফেলে। যা মানুষের বা অন্যান্য প্রাণীর চলাচলের ওপর প্রভাব ফেলে। তারা আরও দেখেছেন ‘পারভেলবুমিন নিউরন’ নামের একটি কোষে স্ট্রোক হলে কিছু কোষ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই নিউরনগুলো একটি ব্রেন ছন্দ তৈরি করতে সহায়তা করে। যা চলাচলের অন্যান্য নিউরনকে সংযুক্ত করে। স্ট্রোক করলে এ ছন্দটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে সফল পুনর্বাসনের মাধ্যমে মানুষ ও ইঁদুরের মধ্যে এ ছন্দগুলো পুনর্স্থাপন করা সম্ভব হয়।

গবেষক দলটি খুঁজে পেয়েছে তাদের এই ওষুধ, পারভালবুমিন নিউরনসে পুনর্জীবিত করে ব্রেনের ছন্দকে পুনর্স্থাপন করতে সহায়তা করতে পারে। ডিডিএল-৯২০ নামে একটি ওষুধ, পরীক্ষা চালানো ইঁদুরের নড়াচড়ার নিয়ন্ত্রণকে বেশ ভালো করতে সক্ষম হয়েছে।

এই গবেষণাটি দুটি কারণে গুরুত্বপূর্ণ : এটি দেখিয়েছে কীভাবে পুনর্বাসন ব্রেনের ওপর প্রভাব ফেলে। এবং এটির আদলে একটি সম্ভাব্য ওষুধ শনাক্ত করা যায়। যেটি শারীরিক থেরাপির মতো কাজ করবে। ডিডিএল-৯২০ নামের এই ওষুধটির কার্যকারিতা প্রমাণ
ও মানুষের ওপর প্রয়োগের আগে আরও গবেষণা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে ইউসিএএল হেলথ। সূত্র: ইউসিএলএ

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ব্রেন স্ট্রোকের পর স্বাভাবিক হয়ে ওঠার ওষুধ আবিষ্কার

আপডেট সময় : ০১:২৫:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

ব্রেন স্ট্রোক করা মানেই একজন ব্যক্তির জীবন সেখানেই প্রায় শেষ। সুস্থ্য হওয়ার আশা ছেড়ে দেয়া হয়। যে ক‘দিন বেঁচে থাকতে হয় পরের উপর নির্ভরতা থেকে। অসহায় এক জীবন নেমে আসে ভূক্তভোগী মানব জীবনে। শারীরিক ভাবে অক্ষম হয়ে পড়।  অনেকের হাত অবশ হয়ে যায়। অনেকের পা অবশ হয়ে যায়। বা অনেকে কথা বলার ক্ষমতা হারান। তার স্বাভাবিক জীবন নষ্ট হয়ে যায়। ব্রেন স্ট্রোকের ধাক্কা থেকে সেরে ওঠার অন্যতম উপায় হলো শারীরিক থেরাপি। তবে অনেকের ক্ষেত্রে এটি সম্ভব হয় না। বা অনেকে দীর্ঘদিন থেরাপি চালিয়ে যেতেও পারেন না।

তবে এবার সুখবর আছে এই রোগে ভুক্তভোগীদের জন্য।  ইউসিএলএ হেলথ গবেষণা চালিয়ে এমন এক ওষুধ খুঁজে পেয়েছে যেটি শারীরিক থেরাপির মতো কাজ করে। একটি ইঁদুরের ওপর গবেষণা চালিয়ে এমন যুগান্তকারী ফলাফল পেয়েছেন তারা।

গবেষণার ফলাফলটি প্রকাশ করা হয়েছে ন্যাচার কমিউনিকেশন জার্নালে। বিজ্ঞানীরা ইঁদুরের ওপর দুটি ওষুধের পরীক্ষা চালিয়েছেন। এরমধ্যে একটি ওষুধ স্ট্রোক করা ইঁদুরের নড়াচড়ার নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই উন্নত করেছে।

গবেষণার নেতৃত্বে ছিলেন ডাক্তার এস. থমাস কারমাইকেল। তিনি বলেছেন, “আমরা স্ট্রোকের রোগীদের জন্য এমন ওষুধ চাই যেটি পুনর্বাসনের মতো একই কাজ করবে। পুনর্বাসনের মাধ্যমে সেরে উঠতে যে পরিমাণ শ্রম প্রয়োজন বেশিরভাগ রোগী সেটি ধরে রাখতে পারে না। অন্যান্য রোগের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত ওষুধ থাকলেও স্ট্রোকের চিকিৎসায় ওষুধ নেই।”

ডাক্তার কারমাইকেল জানিয়েছেন, স্ট্রোকের পর শারীরিক থেরাপির কীভাবে ব্রেনকে সেরে উঠতে সহায়তা করে সেটি তারা পর্যবেক্ষণ করেছেন। আর এটির ওপর এমন একটি ওষুধ তৈরির চেষ্টা করেছেন যেটি থেরাপির মতো কাজ করবে।

তারা খুঁজে পেয়েছেন স্ট্রোক ব্রেনের কিছু কোষকে অন্য কোষগুলো থেকে আলাদা করে ফেলে। যা মানুষের বা অন্যান্য প্রাণীর চলাচলের ওপর প্রভাব ফেলে। তারা আরও দেখেছেন ‘পারভেলবুমিন নিউরন’ নামের একটি কোষে স্ট্রোক হলে কিছু কোষ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই নিউরনগুলো একটি ব্রেন ছন্দ তৈরি করতে সহায়তা করে। যা চলাচলের অন্যান্য নিউরনকে সংযুক্ত করে। স্ট্রোক করলে এ ছন্দটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে সফল পুনর্বাসনের মাধ্যমে মানুষ ও ইঁদুরের মধ্যে এ ছন্দগুলো পুনর্স্থাপন করা সম্ভব হয়।

গবেষক দলটি খুঁজে পেয়েছে তাদের এই ওষুধ, পারভালবুমিন নিউরনসে পুনর্জীবিত করে ব্রেনের ছন্দকে পুনর্স্থাপন করতে সহায়তা করতে পারে। ডিডিএল-৯২০ নামে একটি ওষুধ, পরীক্ষা চালানো ইঁদুরের নড়াচড়ার নিয়ন্ত্রণকে বেশ ভালো করতে সক্ষম হয়েছে।

এই গবেষণাটি দুটি কারণে গুরুত্বপূর্ণ : এটি দেখিয়েছে কীভাবে পুনর্বাসন ব্রেনের ওপর প্রভাব ফেলে। এবং এটির আদলে একটি সম্ভাব্য ওষুধ শনাক্ত করা যায়। যেটি শারীরিক থেরাপির মতো কাজ করবে। ডিডিএল-৯২০ নামের এই ওষুধটির কার্যকারিতা প্রমাণ
ও মানুষের ওপর প্রয়োগের আগে আরও গবেষণা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে ইউসিএএল হেলথ। সূত্র: ইউসিএলএ