জুলুম করে জুলুমকারিদের অন্যায়ের প্রতিশোধ নিতে চায় বিএনপি

- আপডেট সময় : ১২:৪৩:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
- / ৪৯ বার পড়া হয়েছে
বিগত সরকারের সময় জাতীয়তা বাদী দলের উপর নির্মম নির্যাতন, অত্যাচার ও জুলুম করা হয়েছিলো। দলের প্রধান তথা চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের ওপর জুলুম করা হয়। মারা যান খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে চলছে দেশ। জুনের মধ্যে হতে যাচ্ছে জাতীয় নির্বাচন। জাতীয়তাবাদি দল জনসংযোগ বাড়াতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় করছে সমােবেশ। আর সেখানে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখছেন দলের ভারাপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বুধবার রংপুর, নীলফামারী ও সৈয়দপুরের নেতাদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল কর্মশালায় যোগ দিয়ে নেতা কর্মীদের সতর্ক করে দিয়েছেন যেন আইন নিজেদের হাতে তুলে না নেয়। তিনি জানিয়েছেন, তার এবং তার মায়ের ওপর অত্যাচার, ভাইকে হত্যার প্রতিশোধ নেওয়া হবে শুধুমাত্র ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে।
তারেক রহমান বলেন, ‘জুলুম করে বিএনপি জুলুমকারীদের অন্যায়ের প্রতিশোধ নিতে চায় না। তারা (আওয়ামী লীগ) যা করেছে আমরা তা করতে চাই না। ৩১ দফা বাস্তবায়নই হবে সব জুলম নির্যাতনের প্রতিশোধ।’
তিনি বলেন, ‘দেশ গঠনের জন্য জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করাই এখন বিএনপির প্রধান কাজ। দেশের মানুষের জন্য কিছু করতে হলে তা বিএনপি করতে পারবে। দলের ওপর সাধারণ মানুষের যে আস্থা, তা ধরে রাখতে হবে।’
বিএনপির ৩১ দফা তৃণমূলের সবার কাছে পৌঁছে দিতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান দলের শীর্ষ এই নেতা। ক্ষমতায় গেলে বিএনপি শিক্ষিত বেকারদের জন্য ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করবে বলে জানিয়েছেন তারেক রহমান। এছাড়া কৃষিকে আধুনিকায়ন ও কৃষকদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান।
কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘উদ্যোক্তা তৈরির জন্য বিএনপি যুবকদের পাশে থাকবে এবং উদ্যোক্তাদের পণ্য বিদেশে রপ্তানি করা হবে। এর ফলে দেশের চাহিদা যেমন মিটবে, তেমনি আর্ন্তজাতিকভাবেও বাংলাদেশ সুনাম অর্জন করবে।’
রংপুরের কর্মশালায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপির ওপর জনগণ আস্থা রাখে। তারা মনে করে দেশ ও মানুষের জন্য কিছু করা সম্ভব হলে তা বিএনপিই করতে পারবে। তাই আমি বলছি, জনগণের আস্থা ধরে রাখতে হবে। বিএনপির ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের প্রতিশোধ হবে ৩১ দফা বাস্তবায়ন।’
‘আমার ওপর যে অত্যাচার-নির্যাতন হয়েছে, আমার মায়ের ওপর অত্যাচার হয়েছে, আমার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। আমি এসবের প্রতিশোধ নিতে চাই ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে,’ যোগ করেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, ‘আপনারা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন। রাজপথে মিছিল, মিটিং, সংগ্রাম করেছেন। এবার জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে দেশ গঠনের জন্য। আজ থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত প্রতিটি কর্মী এই ৩১ দফার বার্তা চারদিকে ছড়িয়ে দেবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা টিভির টকশোতে, সরকারি ব্যক্তিদের কাছে, রাজনৈতিক দলের নেতাদের কাছে সংস্কার নিয়ে কথা শুনি, যেগুলো ৩১ দফার মধ্যে রয়েছে। কিন্তু আজকের আলোচনায় প্রান্তিক মানুষের চাওয়াগুলো উঠে এসেছে। এগুলো নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।’
‘দেশ ও মানুষের কল্যাণে আমাদের কাজ করে যেতে হবে। গত ১৫ বছর স্বৈরাচার সরকার ক্ষমতাকে ধরে রাখতে নানা ট্যাগ দিয়ে জাতিকে বিভক্ত করে রাখার চেষ্টা করেছিল। জাতিকে এগিয়ে নিতে হলে চেষ্টা করতে হবে মতপার্থক্য কমিয়ে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে,’ যোগ করেন তিনি।
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘জাতি বিভাজিত হলে দেশ এগিয়ে যেতে পারবে না। আমরা ধর্ম বিবেচনা করব না, বাংলাদেশি হিসেবে বিবেচনা করব এবং সব ধর্মের মানুষের সম্প্রীতির দেশ গড়ে তুলব।’
কর্মসংস্থান নিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশে প্রায় ৩ কোটি নারী-পুরুষ বেকার। এত মানুষকে বেকার রেখে দেশকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে না। তাই কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র বাড়াতে হবে। সেটি সরকারি, বেসরকারিভাবে যেকোনোভাবেই হতে পারে। বিশেষ কোনো প্রকল্পে কর্মসংস্থান তৈরি, উদ্যোক্তা তৈরির মাধ্যমে হতে পারে।’
‘সমাজের অনেক গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি আছেন—যারা দেশের জন্য কাজ করতে চান। কিন্তু তারা রেগুলার রাজনীতিতে নেই। এমন শিক্ষক, সাংবাদিক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষকে সমাজের উন্নয়নে কাজ করার সুযোগ দেবে বিএনপি,’ বলেন তিনি।