গ্যাসের দাম বৃদ্ধিতে নতুন বিনিয়োগে বাধাগ্রস্ত হতে পারে

- আপডেট সময় : ১০:২৭:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫
- / ৫৫ বার পড়া হয়েছে
গ্যাসের দাম কমানো নিয়ে অনেক দিন থেকেই শিল্প-কলকারখানার মালিকদের মধ্যে এক ধরণের অসন্তাষ বিরাজ করছে। এমনিতে সেই করোণার শুরু থেকে দেশের অর্থনীতি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়েছে। এরপর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনও পারেনি সে বড় ক্ষতির হাত থেকে দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে। গ্যাসের দাম না কমায় ব্যাবসায়ীরা সবচে বড় ক্ষতি গ্রস্ত হন। সেখানে অন্তবর্তী সরকার কতৃক নতুন শিল্পের জন্য আবারো গ্যাসের বৃদ্ধিতে ব্যবসায়ীদের এবার মাথায় হাত! এ সরকার নতুন শিল্পের জন্য গ্যাসের দাম ৩৩ শতাংশ বাড়িয়েছে। ফলে ব্যবসায়ীদের তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। হতাশ হয়ে পড়েছে তারা।
ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা মনে করন,এতে নতুন শিল্পে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে। তারা বলছেন, যেখানে নতুন সরকার একদিকে সার্বিক বিনিয়োগ বাড়ানোর চেষ্টা করছে, ঠিক ওই সময় এ গ্যাসের দাম বাড়ানো ‘উল্টো নীতি’ নেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত। এতে নতুন বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে। এছাড়া প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআইও কমবে।
রোববার (১৩ এপ্রিল) নতুন শিল্প ও ক্যাপটিভ বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাসের দাম ৩৩ শতাংশ বাড়িয়েছে সরকার। এতে শিল্পে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ঘনমিটারপ্রতি ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪০ টাকা এবং ক্যাপটিভে ৩১ টাকা ৭৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৪২ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। পাশাপাশি এখন যারা অনুমোদিত লোডের বেশি গ্যাস ব্যবহার করছেন- সেসব শিল্প প্রতিষ্ঠানকেও ৩০ টাকার পরিবর্তে ৪০ টাকা দরে বিল দিতে হবে। নতুন দর চলতি (এপ্রিল) মাসের বিল থেকেই কার্যকর হবে।
এ পরিস্থিতিতে দেশের নিট পোশাক রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি জানান, আমরা আগের দরের বিল পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছি। সেটা পরিশোধ করাই ছিলো চ্যালেঞ্জিং। সেখানে নতুন করে দাম বাড়ালে বিনিয়োগকারীরা শিল্প স্থাপনে আগ্রহ হারাবেন। তিনি বলেন, সরকার একদিকে বিনিয়োগ বাড়ানোর কথা বলছে, আবার বিনিয়োগ ঝুঁকিতে ফেলার মতো সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
নতুন শিল্পের পাশাপাশি এখন যারা অনুমোদিত লোডের বেশি গ্যাস ব্যবহার করছেন- তাদের বেশি বিল দিতে হবে। যে কারণে চলমান অনেক শিল্পের খরচ বাড়বে। অনেক পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়বে, কাঁচামালের দাম বাড়বে। শেষে পণ্যের দাম বাড়বে, যা সবাইকে ভোগাবে।
হুমায়ুন রশীদ বলেন, দাম বাড়লেও এ দেশে গ্যাসের সরবরাহ ঠিক থাকে না। যে কারণে নতুন উদ্যোক্তাদের গ্যাসের মোটা খরচের পাশাপাশি বিকল্প জ্বালানির জন্য প্রচুর ব্যয় করতে হয়। সরবরাহ ঠিক থাকলেও দাম কিছুটা গ্রহণযোগ্য মনে হতো। কিন্তু সেটা নেই। সবকিছু মিলিয়ে এ সিদ্ধান্তে অনেকে শিল্প সম্প্রসারণের আগ্রহ হারাবেন।
ব্যবস্থায় বিশেজ্ঞদের মতে,খরচ বাড়ানোর সাথে সাথে ওই খাতের প্রতিযোগিতা কমিয়ে যায়। এতে পোষাক শিল্পের উপর আঘাতটা বেশি পড়তে পারে। কারণ অন্যান্য প্রতিযোগি দেশের চাইতে বাংলাদেশ পোশাক শিল্পের ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ার সম্ভাবনা বেশি।
সম্প্রতি দুটি বিপর্যয় বশত করেছে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের উপর। তার একটি হচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্কের হার বাড়িয়ে দেয়া, অন্যটি হচ্ছে ভারতের ট্রান্সশিপটমেন্ট ইস্যু। এ নিয়ে যখন দেশের ব্যবসায়ীরা চিন্তার সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে ঠিক তখনি গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি সমন্বয় করা কঠিন হবে ব্যবসায়ীদের জন্য। বিশেষ করে ছোট ও মাঝারি কারখানাগুলোর মালিকরা বড় সমস্যায় পড়বেন।