ঢাকা ০১:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

বিসিবির বিদায়ী সংবর্ধনায় তামিমের স্মৃতিচারণ

লুৎফুল আলম চৌধুরী
  • আপডেট সময় : ১২:৪২:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ১০৭ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গতবার ট্রফি জিতে বরিশাল যাওয়া হয়নি তামিম ইকবালদের। এবার সেটা মিস করতে চাইছেন না। দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জিতে জানালেন ৯ ফেব্রুয়ারী ট্রফি নিয়ে বরিশালে যাবেন তিনি। সেখানে বরিশালের সবাইকে উপস্থিত থাকতে অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, আমরা ৯ তারিখে আসছি বরিশালে। সবাইকে অনুরোধ করবো ৯ তারিখে শিরোপা উদযাপন করবো।

আনন্দের এই ক্ষণে বিদায়ের কিছুটা রক্তক্ষরণও যে হচ্ছে না তা বলা যাবে না। কদিন আগে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ইতি টানেন তামিমি। ইতিহাসের অন্যতম সফল এই ব্যাটারকে বিপিএলের ফাইনালের মঞ্চে ক্রেস্ট উপহার দিয়ে বিদায় জানিয়েছে বিসিবি।

বিদায়ের এই ক্ষণে স্মরণ করেছেন ফেলে আসা অতীত। এবং অতীতের সকল সতীর্থদের। সাকিব,মাশরাফিদের নামও । বলতে ভুলে যাননি।  স্ত্রী-সন্তানদের সাথে সহোদর ভাই নাফিস তার স্ত্রীকেও মাঠে নিয়ে যান। মঞ্চে যান দুই সতীর্থ মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহিমকে। পঞ্চপান্ডবের এই তিনজনই ছিলেন মাঠে। মাশরাফি ও সাকিব পতিত সরকারের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ায় রয়েছেন দেশান্তর।

পুরস্কার হাতে নিয়ে তামিম বলেন, ‘আমার জন্য এটা একটা দারুণ যাত্রা ছিল। ১৭ বছর ধরে আমরা দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছি। বাংলাদেশ আইসিসি ট্রফিতে যখন চ্যাম্পিয়ন হয় তখন আমার চাচা আকরাম খান ছিলেন দলের অধিনায়ক। সারা দেশের আনন্দ ছিল দেখার মতো। তখনই আমি ক্রিকেটার হওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। আমার বাবার স্বপ্ন ছিল যে, একদিন আমি আমার দেশের প্রতিনিধিত্ব করব। দুর্ভাগ্যবশত, তিনি আর পৃথিবীতে নেই, কিন্তু আমি নিশ্চিত যে আমি দেশের জন্য যা করেছি তাতে তিনি গর্বিত হতেন। আমি বাংলাদেশে যেখানেই খেলেছি, সেখানেই অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। আমার পরিবার, আমার চাচা আকরাম খান। তিনি আমাদের পথ দেখিয়েছিলেন। তারপর আমার চাচা এবং আম্মাকে নিয়ে ১৭ বছরের সমালোচনা (স্বজনপ্রীতির)। আমরা সবাই জানি সেটা কী ছিল। ক্রিকেট কখনো সহজ নয়। তুমি সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তির ছেলেও হতে পারো, কিন্তু যদি তুমি পারফর্ম না করো, এই খেলা তোমাকে কখনো রাখবে না। আমার পরিবারের জন্য তিনি যা করেছেন তার জন্য আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই। আমার স্ত্রী, আমার ছেলে, আমার কোচ – আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’

বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে তামিমের লম্বা যাত্রায় সাকিব-তামিম-মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা ছিলেন ঘনিষ্ঠ সঙ্গী। মাঠে ও বাইরে তাদের রসায়ন ছিল ঈর্ষণীয়। ২২ গজে তাদের আগেই পথচলাটা শুরু করলেও মাশরাফিও হয়ে পড়েন বন্ধুর মতো। যা বাংলাদেশের ক্রিকেটে পরিচিত ছিল ‘পঞ্চপাণ্ডব’ নামে। এর মাঝেও নির্দিষ্ট ক্রিকেটারের ভক্ত হয়ে আলাদাভাবে প্রচারণা দেখা যায়। ব্যক্তিগত সম্পর্কের বদৌলতে সাকিব-তামিমেরও দ্বৈরথ দেখা মেলে ভক্তদের মাঝে। সেসব দেয়াল ভেঙে সবাইকে বাংলাদেশের সমর্থক হওয়ারই আহবান জানালেন তামিম।

দেশের ক্রিকেটভক্তদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তামিম ইকবাল বলেন, ‘কোনো তামিমিয়ান নেই, কোনো সাকিবিয়ান নেই, কোনো মাশরাফিয়ান নেই। শুধু একটা জিনিস আছে, আর সেটা হলো বাংলাদেশ। এই বিষয়গুলো তরুণ প্রজন্মকে ধ্বংস করে দেয়, দয়া করে এসব (নির্দিষ্ট ক্রিকেটারের ভক্ত হওয়া) বন্ধ করুন। এটাই আমার শেষ কথা।’

প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় তামিমের। তিন সংস্করণ মিলে তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের জার্সিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৮৭ ম্যাচ ও ৪৪৮ ইনিংসে ১৫১৯২ রান করেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবমিলিয়ে ৯৪ ফিফটি ও ২৫টি সেঞ্চুরি করেছেন তামিম।

 

 

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

বিসিবির বিদায়ী সংবর্ধনায় তামিমের স্মৃতিচারণ

আপডেট সময় : ১২:৪২:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

গতবার ট্রফি জিতে বরিশাল যাওয়া হয়নি তামিম ইকবালদের। এবার সেটা মিস করতে চাইছেন না। দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জিতে জানালেন ৯ ফেব্রুয়ারী ট্রফি নিয়ে বরিশালে যাবেন তিনি। সেখানে বরিশালের সবাইকে উপস্থিত থাকতে অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, আমরা ৯ তারিখে আসছি বরিশালে। সবাইকে অনুরোধ করবো ৯ তারিখে শিরোপা উদযাপন করবো।

আনন্দের এই ক্ষণে বিদায়ের কিছুটা রক্তক্ষরণও যে হচ্ছে না তা বলা যাবে না। কদিন আগে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ইতি টানেন তামিমি। ইতিহাসের অন্যতম সফল এই ব্যাটারকে বিপিএলের ফাইনালের মঞ্চে ক্রেস্ট উপহার দিয়ে বিদায় জানিয়েছে বিসিবি।

বিদায়ের এই ক্ষণে স্মরণ করেছেন ফেলে আসা অতীত। এবং অতীতের সকল সতীর্থদের। সাকিব,মাশরাফিদের নামও । বলতে ভুলে যাননি।  স্ত্রী-সন্তানদের সাথে সহোদর ভাই নাফিস তার স্ত্রীকেও মাঠে নিয়ে যান। মঞ্চে যান দুই সতীর্থ মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহিমকে। পঞ্চপান্ডবের এই তিনজনই ছিলেন মাঠে। মাশরাফি ও সাকিব পতিত সরকারের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ায় রয়েছেন দেশান্তর।

পুরস্কার হাতে নিয়ে তামিম বলেন, ‘আমার জন্য এটা একটা দারুণ যাত্রা ছিল। ১৭ বছর ধরে আমরা দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছি। বাংলাদেশ আইসিসি ট্রফিতে যখন চ্যাম্পিয়ন হয় তখন আমার চাচা আকরাম খান ছিলেন দলের অধিনায়ক। সারা দেশের আনন্দ ছিল দেখার মতো। তখনই আমি ক্রিকেটার হওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। আমার বাবার স্বপ্ন ছিল যে, একদিন আমি আমার দেশের প্রতিনিধিত্ব করব। দুর্ভাগ্যবশত, তিনি আর পৃথিবীতে নেই, কিন্তু আমি নিশ্চিত যে আমি দেশের জন্য যা করেছি তাতে তিনি গর্বিত হতেন। আমি বাংলাদেশে যেখানেই খেলেছি, সেখানেই অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। আমার পরিবার, আমার চাচা আকরাম খান। তিনি আমাদের পথ দেখিয়েছিলেন। তারপর আমার চাচা এবং আম্মাকে নিয়ে ১৭ বছরের সমালোচনা (স্বজনপ্রীতির)। আমরা সবাই জানি সেটা কী ছিল। ক্রিকেট কখনো সহজ নয়। তুমি সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তির ছেলেও হতে পারো, কিন্তু যদি তুমি পারফর্ম না করো, এই খেলা তোমাকে কখনো রাখবে না। আমার পরিবারের জন্য তিনি যা করেছেন তার জন্য আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই। আমার স্ত্রী, আমার ছেলে, আমার কোচ – আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’

বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে তামিমের লম্বা যাত্রায় সাকিব-তামিম-মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা ছিলেন ঘনিষ্ঠ সঙ্গী। মাঠে ও বাইরে তাদের রসায়ন ছিল ঈর্ষণীয়। ২২ গজে তাদের আগেই পথচলাটা শুরু করলেও মাশরাফিও হয়ে পড়েন বন্ধুর মতো। যা বাংলাদেশের ক্রিকেটে পরিচিত ছিল ‘পঞ্চপাণ্ডব’ নামে। এর মাঝেও নির্দিষ্ট ক্রিকেটারের ভক্ত হয়ে আলাদাভাবে প্রচারণা দেখা যায়। ব্যক্তিগত সম্পর্কের বদৌলতে সাকিব-তামিমেরও দ্বৈরথ দেখা মেলে ভক্তদের মাঝে। সেসব দেয়াল ভেঙে সবাইকে বাংলাদেশের সমর্থক হওয়ারই আহবান জানালেন তামিম।

দেশের ক্রিকেটভক্তদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তামিম ইকবাল বলেন, ‘কোনো তামিমিয়ান নেই, কোনো সাকিবিয়ান নেই, কোনো মাশরাফিয়ান নেই। শুধু একটা জিনিস আছে, আর সেটা হলো বাংলাদেশ। এই বিষয়গুলো তরুণ প্রজন্মকে ধ্বংস করে দেয়, দয়া করে এসব (নির্দিষ্ট ক্রিকেটারের ভক্ত হওয়া) বন্ধ করুন। এটাই আমার শেষ কথা।’

প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় তামিমের। তিন সংস্করণ মিলে তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের জার্সিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৮৭ ম্যাচ ও ৪৪৮ ইনিংসে ১৫১৯২ রান করেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবমিলিয়ে ৯৪ ফিফটি ও ২৫টি সেঞ্চুরি করেছেন তামিম।