ঢাকা ১২:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

পাকিস্তান আর্মির কাছে ইমরান খান জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:৫৩:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ৪৬ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আইএসপিআরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান দেশের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) রাওয়ালপিন্ডিতে দীর্ঘ দুই ঘণ্টারও বেশি সময়ের সংবাদ সম্মেলনে ইমরান খানকে তিনি ‘মানসিকভাবে অসুস্থ’, ‘বিভ্রান্ত’ ও ‘জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি’ বলে আখ্যা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে আইএসপিআর প্রধান বলেন, ইমরান খান ও তার দল সেনাবাহিনী বিরোধী বর্ণনা ছড়াচ্ছে, বিদেশি শক্তির সাথে সমন্বয় করছে, বিশৃঙ্খলা উসকে দিচ্ছে ও ধারাবাহিকভাবে সেনাবাহিনীকে টার্গেট করছে। ইমরানের নাম উল্লেখ না করেও জেনারেল চৌধুরী বলেন, তার অহংকার এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে তিনি মনে করেন, ‘আমি না হলে কিছুই হবে না।’ তিনি নিজের চিন্তায় বন্দি, বিভ্রান্ত এক মানসিকতার মানুষ, যার প্রচারিত বর্ণনা এখন জাতীয় নিরাপত্তার ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী বলেন, সেনাবাহিনী বা তার নেতৃত্বকে আক্রমণ মানে ‘আরেকটি সেনাবাহিনী তৈরির সুযোগ করে দেওয়া’, আর ইমরান খান বারবার সংবিধান, আইন ও নিয়ম-বিধির বাইরে গিয়ে সেনাবাহিনীকে লক্ষ্যবস্তু করছেন। আদিয়ালা জেলে প্রতিবার বৈঠকের পর তিনি সেনাবাহিনীকে নিয়ে নতুন বর্ণনা দেন বলেও অভিযোগ করেন আইএসপিআর মহাপরিচালক।

জেনারেল চৌধুরী বলেন, এই মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তি দুই দিন আগে যে টুইট করেছেন, তাতে মনে হয় তিনি মনে করেন, পাকিস্তানে তার বাইরে কিছুই নেই। ব্যক্তিগত অহংকার জাতীয় স্বার্থের ওপরে তুলে তিনি সেনাবাহিনী বিরোধী প্রচারণা চালাচ্ছেন।

তার অভিযোগ, ইমরান খান সাংগঠনিকভাবে সোশ্যাল মিডিয়া ট্রল নেটওয়ার্ক পরিচালনা করেছেন, বিদেশি গণমাধ্যম, বিশেষ করে ভারত ও আফগানিস্তানের সংবাদমাধ্যম তার বক্তব্যকে সমন্বিতভাবে প্রচার করছে। তিনি আরও বলেন, ইমরান নিজেকে বলতে গেলে শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

জাতীয় নিরাপত্তার নামে কড়া সতর্কবার্তা দিয়ে জেনারেল চৌধুরী বলেন, সেনাবাহিনীকে আক্রমণ করা হলে ‘যথাযথ প্রতিক্রিয়া’ জানানো হবে। তিনি বলেন, ইমরান প্রথমে রেমিট্যান্স বন্ধের বর্ণনা দেন, এরপর সেনা কর্মকর্তাদের টার্গেট করতে বলেন, যারা ভারতের বিরুদ্ধে মে মাসের চার দিনের যুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছিল।

তিনি বলেন, খাইবার পাখতুনখোয়ায় প্রতিদিন পুলিশ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে প্রাণ দিচ্ছে, অথচ ইমরান দাবি করছেন, গোয়েন্দা অভিযান বন্ধ রাখা উচিত। তার যুক্তিতে, ভারত আক্রমণ করলেও তিনি ভিক্ষার থালা হাতে নিয়ে আলোচনার আহ্বান জানাতেন।

জেনারেল চৌধুরী বলেন, পাকিস্তানে রাষ্ট্র ও নির্বাচিত সরকারই সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ; সেনাবাহিনী তাদের অধীন একটি প্রতিষ্ঠান। অবশ্যই সবার মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে, কিন্তু তা জাতীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যায় না।

তিনি সব গণমাধ্যমকে সত্য-মিথ্যা নির্ভুলভাবে প্রকাশের আহ্বান জানান। খাদ্য নিরাপত্তা, পানির সংকট, জনসংখ্যা বৃদ্ধি- এসব প্রকৃত সমস্যা নিয়ে বিতর্ক হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনের শেষে তিনি বলেন, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র সফল হতে দেওয়া হবে না। আমরা এক দৃঢ় কাঠামো ‘বুনিয়ান-উন-মারসুস’ (গলিত সীসা ঢালা অটল প্রাচীর)। পাকিস্তান থাকবে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীও থাকবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

পাকিস্তান আর্মির কাছে ইমরান খান জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি

আপডেট সময় : ১১:৫৩:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আইএসপিআরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান দেশের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) রাওয়ালপিন্ডিতে দীর্ঘ দুই ঘণ্টারও বেশি সময়ের সংবাদ সম্মেলনে ইমরান খানকে তিনি ‘মানসিকভাবে অসুস্থ’, ‘বিভ্রান্ত’ ও ‘জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি’ বলে আখ্যা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে আইএসপিআর প্রধান বলেন, ইমরান খান ও তার দল সেনাবাহিনী বিরোধী বর্ণনা ছড়াচ্ছে, বিদেশি শক্তির সাথে সমন্বয় করছে, বিশৃঙ্খলা উসকে দিচ্ছে ও ধারাবাহিকভাবে সেনাবাহিনীকে টার্গেট করছে। ইমরানের নাম উল্লেখ না করেও জেনারেল চৌধুরী বলেন, তার অহংকার এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে তিনি মনে করেন, ‘আমি না হলে কিছুই হবে না।’ তিনি নিজের চিন্তায় বন্দি, বিভ্রান্ত এক মানসিকতার মানুষ, যার প্রচারিত বর্ণনা এখন জাতীয় নিরাপত্তার ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী বলেন, সেনাবাহিনী বা তার নেতৃত্বকে আক্রমণ মানে ‘আরেকটি সেনাবাহিনী তৈরির সুযোগ করে দেওয়া’, আর ইমরান খান বারবার সংবিধান, আইন ও নিয়ম-বিধির বাইরে গিয়ে সেনাবাহিনীকে লক্ষ্যবস্তু করছেন। আদিয়ালা জেলে প্রতিবার বৈঠকের পর তিনি সেনাবাহিনীকে নিয়ে নতুন বর্ণনা দেন বলেও অভিযোগ করেন আইএসপিআর মহাপরিচালক।

জেনারেল চৌধুরী বলেন, এই মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তি দুই দিন আগে যে টুইট করেছেন, তাতে মনে হয় তিনি মনে করেন, পাকিস্তানে তার বাইরে কিছুই নেই। ব্যক্তিগত অহংকার জাতীয় স্বার্থের ওপরে তুলে তিনি সেনাবাহিনী বিরোধী প্রচারণা চালাচ্ছেন।

তার অভিযোগ, ইমরান খান সাংগঠনিকভাবে সোশ্যাল মিডিয়া ট্রল নেটওয়ার্ক পরিচালনা করেছেন, বিদেশি গণমাধ্যম, বিশেষ করে ভারত ও আফগানিস্তানের সংবাদমাধ্যম তার বক্তব্যকে সমন্বিতভাবে প্রচার করছে। তিনি আরও বলেন, ইমরান নিজেকে বলতে গেলে শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

জাতীয় নিরাপত্তার নামে কড়া সতর্কবার্তা দিয়ে জেনারেল চৌধুরী বলেন, সেনাবাহিনীকে আক্রমণ করা হলে ‘যথাযথ প্রতিক্রিয়া’ জানানো হবে। তিনি বলেন, ইমরান প্রথমে রেমিট্যান্স বন্ধের বর্ণনা দেন, এরপর সেনা কর্মকর্তাদের টার্গেট করতে বলেন, যারা ভারতের বিরুদ্ধে মে মাসের চার দিনের যুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছিল।

তিনি বলেন, খাইবার পাখতুনখোয়ায় প্রতিদিন পুলিশ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে প্রাণ দিচ্ছে, অথচ ইমরান দাবি করছেন, গোয়েন্দা অভিযান বন্ধ রাখা উচিত। তার যুক্তিতে, ভারত আক্রমণ করলেও তিনি ভিক্ষার থালা হাতে নিয়ে আলোচনার আহ্বান জানাতেন।

জেনারেল চৌধুরী বলেন, পাকিস্তানে রাষ্ট্র ও নির্বাচিত সরকারই সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ; সেনাবাহিনী তাদের অধীন একটি প্রতিষ্ঠান। অবশ্যই সবার মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে, কিন্তু তা জাতীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যায় না।

তিনি সব গণমাধ্যমকে সত্য-মিথ্যা নির্ভুলভাবে প্রকাশের আহ্বান জানান। খাদ্য নিরাপত্তা, পানির সংকট, জনসংখ্যা বৃদ্ধি- এসব প্রকৃত সমস্যা নিয়ে বিতর্ক হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনের শেষে তিনি বলেন, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র সফল হতে দেওয়া হবে না। আমরা এক দৃঢ় কাঠামো ‘বুনিয়ান-উন-মারসুস’ (গলিত সীসা ঢালা অটল প্রাচীর)। পাকিস্তান থাকবে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীও থাকবে।