খালেদা জিয়াকে বহন করতে জার্মানি থেকে আসছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, শারীরিক অবস্থার উন্নতি
- আপডেট সময় : ১১:৪৭:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫
- / ৪৬ বার পড়া হয়েছে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নিতে জার্মানি থেকে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায়ি এসেছে। কাতার সরকারের ব্যবস্থাপনায় শনিবার সন্ধ্যায় পাঠানো হচ্ছে এই এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। এরপর রাতে খালেদা জিয়াকে নিয়ে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা হতে পারে অ্যাম্বুলেন্সটি।
ঢাকায় কাতার দূতাবাসের জনসংযোগ কর্মকর্তা আসাদুর রহমান আসাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, কাতার সরকারের ব্যবস্থাপনায় জার্মানি থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় আসছে। শনিবার বিকেলে ওই এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। শনিবার বিকেলে বা রাতে অ্যাম্বুলেন্সটির খালেদা জিয়াকে নিয়ে রওনা দেওয়ার কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, কাতার রাজপরিবারের এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটিতে কারিগরি ত্রুটি থাকায় কাতারের আমির তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অন্য একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠাচ্ছেন, যা শনিবার বিকেল ৫টায় ঢাকায় অবতরণ করবে।
এদিকে বেগম খালেদা জিয়ার মেডিক্যাল বোর্ড জানিয়েছে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক তিনবারের এই প্রধানমন্ত্রীর শারিরীক অবস্থার অনেকটা উন্নতি হয়েছে। খালেদা জিয়ার এন্ডোস্কপি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে তার মেডিকেল বোর্ড। শুক্রবার (০৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৮টার দিকে এ তথ্য জানানো হয়। একই সঙ্গে খালেদা জিয়ার পাকস্থলীর রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়েছে বলেও জানিয়েছে মেডিকেল বোর্ড।
এদিকে অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নেয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকায় এসেছেন ডা. জুবাইদা রহমান। তিনি শুক্রবার সকালে লন্ডন থেকে বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে করে ঢাকায় পৌঁছান। সকাল পৌনে ১১টার দিকে তিনি ভিআইপি গেট দিয়ে বিমানবন্দর এলাকা ত্যাগ করেন।

সেখান থেকে সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হন। বেলা পৌনে ১২টার দিকে তাকে বহনকারী গাড়িবহর হাসপাতালে পৌঁছায়। সেখানে কিছুসময় কাটানোর পর দুপুরে হাসপাতাল থেকে ধানমন্ডির পৈতৃক বাসভবনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। পরে দুপুর ৩টার দিকে ধানমন্ডির বাসায় পৌঁছান ডা. জুবাইদা রহমান। এদিকে লন্ডনে হিথ্রো বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে গ্রহণ করবেন তার ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
অবিরাম নির্যাতনের কষাঘাতে অসুস্থ দেশনেত্রীর জীবন এখন চরম সংকটে বরে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। শুক্রবার (০৬ ডিসেম্বর) নিজের ফেসবুক আইডিতে দেয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ফেসবুক পোস্টে তারেক রহমান বলেন, শেখ হাসিনার দুঃশাসনে ‘গণতন্ত্রের মা’ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ওপর জেল-জুলুমসহ নানামাত্রিক নিপীড়ন চালানো হয়েছিল। অবিরাম নির্যাতনের ফলে অসুস্থ দেশনেত্রীর জীবন বর্তমানে চরম সংকটাপন্ন। আল্লাহর কাছে তার আশু সুস্থতা কামনা করছি। এছাড়াও জাতীয়তাবাদী শক্তির লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীকে সীমাহীন অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়েছিল। সারাদেশকে এক প্রকার অবরুদ্ধ করে ফেলা হয়েছিল।
পোস্টের শুরুতে তিনি বলেন, ‘অবিস্মরণীয় একটি দিন ৬ ডিসেম্বর। ১৯৯০ সালের এ দিনে রক্তাক্ত ও পিচ্ছিল সংগ্রামের মাধ্যমে স্বৈরশাসনের অবসান হয়েছিল। এরশাদ ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ পেশাগত বিশ্বস্ততা ও শপথ ভেঙে অস্ত্রের মুখে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আব্দুস সাত্তারকে ক্ষমতাচ্যুত করে গণতন্ত্র হত্যা করে অসাংবিধানিক শাসন জারি করেছিলেন।’
তিনি আরও বলেন, যে সাংবিধানিক রাজনীতি ছিল বহুদলীয় গণতন্ত্রের নিশ্চয়তা, যার সূচনা করেছিলেন স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। একনায়ক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছিলেন।
তারেক রহমান বলেন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘ নয় বছর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে নিরন্তর সংগ্রাম চালিয়ে আপোষহীন নেত্রী হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। তিনি গড়ে তোলেন এক দুর্বার গণআন্দোলন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর ছাত্র-জনতার মিলিত শক্তিতে স্বৈরাচারকে পরাজিত করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়।
তিনি আরও বলেন, সেই অর্জিত গণতন্ত্রের চেতনায় আবারও ছাত্র-জনতা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এক হিংস্র ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পরাস্ত করে। ঐতিহাসিকভাবে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ছিল গণতন্ত্রের ভয়ংকর শত্রু। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দুঃশাসনের অবসানের পর গণতন্ত্রের পূর্ণ পুনরুজ্জীবন এবং রাষ্ট্র ও সমাজে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় আমাদের নিরলস সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে।
তারেক রহমান বলেন, শেখ হাসিনার দুঃশাসনে ‘গণতন্ত্রের মা’ বেগম খালেদা জিয়ার ওপর জেল-জুলুমসহ নানামাত্রিক অত্যাচার চালানো হয়েছিল। অবিরাম নির্যাতনের কষাঘাতে অসুস্থ দেশনেত্রীর জীবন এখন চরম সংকটে। আল্লাহর কাছে তার দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। এছাড়াও জাতীয়তাবাদী শক্তির লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীকে সীমাহীন নির্যাতন–অত্যাচার করা হয়েছিল। সারাদেশকে অবরুদ্ধ করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, আজকের এ দিনে আমি ১৯৮২ থেকে ১৯৯০ সালের রক্তস্নাত স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে আত্মদানকারী বীর শহিদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই এবং তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এ স্মরণীয় দিনে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী গণতন্ত্রের হেফাজতকারী দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।
তারেক রহমান শেষ করেন এ আহ্বান দিয়ে গণতন্ত্রবিরোধী পরাজিত শক্তির যেন আর পুনরুত্থান না ঘটে সেজন্য গণতান্ত্রিক শক্তিকে সবসময় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আল্লাহ হাফেজ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।




















