সহজ ম্যাচ কঠিন করে জিতল বাংলাদেশের ছেলেরা
- আপডেট সময় : ১০:০১:৪৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩ অক্টোবর ২০২৫
- / ১২০ বার পড়া হয়েছে
আফগানিস্তানের ১৫২ রানের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশের ওপেনিং জুটিতে মারকুটে ব্যাটিয়ে ১০৯ রান সংগ্রহ। তানজিম সাকিব এবং পারভেজ ইমন দুজনই হাফসেঞ্চুরি করেছেন। এমন একটি সুন্দর সূচনার পরেও আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ জয়ের সম্ভাবনা নড়বড়ে হয়ে উঠেছিলো। এ যেন বিশাল সমুদ্র পাড়ি দিয়ে আসা একদল নাবিক ঠিক কিনারায় উত্তাল ঢেউয়ের কবলে পড়লো। অনিশ্চিত হয়ে উঠলো তাদের তীরে ভীড়া। অবশেষে তীরে ওঠা হলেও বেরিয়ে যায় নাভিশ্বাস। কম্পন ধরে যায় মূহুর্তে। আতঙ্ক হয়ে উঠেন রশিদ খানের গুগলি। শুরুতে আফগান বোলারদের বেধড়ক পিটুনি হটাৎ উল্টে যায়। ভুলেই যায় টাইগাররা কিছুক্ষণ আগের ব্যাটিং শৈলী। যেন ব্যাটই ধরতে পারছে না। রশিদ খানের আঘাতে ক্ষনিকের মথ্যে তছনছ হয়ে যায় বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন। মাত্র ৮ রান যোগ করতেই পড়ে যায় ৫ উইকেট। যেখানে রশিদ খান একাই দখল করেন চারটি। অবশ্য আফগানিস্তানের সেই ঝড় বেশিক্ষণ থাকেনি। কোন মতে ঘুরে দাড়াতেই আবারো বাংলাদেশের ব্যাটাররা শুরুর নিশানা খুঁজে পান। হাল ধরেন নুরুল হাসান সোহান ও রিশাদ। আজমত উল্লাহ ওভারে টপাটপ চার-ছক্কা মেরে আতঙ্ক দূর করে দেন। আট বল হাতে থাকতেই দলকে ম্যাচ জয় উপহার দেন। উন্নিশতম ওভারে বাংলাদেশ ৬ উইকেটে ১৫৩ রান করে। আফগানিস্তানকে হারলো ৪ উইকেটে।
তানজিদ তামিম আর পারভেজ ইমনের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের জয়টা ছিলো যেন সময়ের অপেক্ষামাত্র। উদ্বোধনী জুটিতেই শতরানের গন্ডি পেরিয়ে যান। আফগানিস্তানের বোলারদের নাস্তানাবুদ করে সহজ জয়ের দিকেই এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। শেষ দিকে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৫১ বলে ৪৩ রান, হাতে সবকটি উইকেট। সহজ জয়ের অপেক্ষায় সবাই। তবে দলটা যখন বাংলাদেশ, কিছুটা নাটকীয় না হলে জমে কিভাবে! ৯ রানের ব্যবধানে টপঅর্ডারের ৬ ব্যাটারকে হারিয়ে সহজ ম্যাচ থেকে প্রায় ছিটকে যাচ্ছিল টাইগাররা।
রশিদ খানের বল যেন বাংলাদেশ দলের কাছে দুঃস্বপ্নের মতো হয়ে এসেছিল। এই স্পিনারের ৪ উইকেট শিকারে টাইগাররা জয় থেকে প্রায় ছিটকে যাচ্ছিল। ১০৯ রান থেকে ১১৮ রান পর্যন্ত বাংলাদেশ দল হারিয়ে বসে ৬ উইকেট। এরপর নুরুল হাসান সোহান এবং রিশাদ হোসেনের ব্যাটে কোনো রকমে রক্ষা।
শারজায় আফগানদের দেওয়া ১৫২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৮ বল থাকতে ৪ উইকেটের জয় তুলে নিয়েছে টাইগাররা। মাঝারি রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ দলের শুরুটা ছিল স্বপ্নের মতো। দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম এবং পারভেজ হোসেন ইমন যেন নিজেদের খোলস ছেড়ে খেলেছেন। দুইজনই আফগান বোলারদের বেদম পিটিয়ে তুলে নেন অর্ধ-শতক। তামিম ৫১ এবং ইমন ফিরে যান ৫৪ রান করে।
এরপর সাইফ হাসান, শামীম পাটোয়ারী, জাকের আলি অনিকরা ছিলেন যাওয়া আসার মিছিলে। তানজিম সাকিবও ব্যর্থ হন ব্যাট হাতে। একসময় মনেই হচ্ছিল যেন ফসকে গেল হাত থেকে ম্যাচটা। তবে সোহান এবং রিশাদ ঠান্ডা মাথায় ম্যাচ শেষ করে মাঠ ছেড়েছেন। সোহান ১৩ বলে ২৩ এবং রিশাদ ৯ বলে ১৪ করে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে দিনের শুরুতে শারজাহতে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৫১ রান সংগ্রহ করে আফগানিস্তান। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪০ রান করেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ। এদিন শুরুতেই বাংলাদেশকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন নাসুম আহমেদ। ইব্রাহিম জাদরানকে বোল্ড করেছেন এই অফ স্পিনার। সাজঘরে ফেরার আগে ১০ বলে ১৫ রান করেন তিনি। ব্যর্থ হন আরেক ওপেনার সাদিকুল্লাহ আতালও, করেন ১২ বলে ১০ রান।
এরপর দারউইস রাসুলি-মোহাম্মদ ইশাকরা দ্রুতই ফিরেন। এ দুজনের কেউই দুই অঙ্কের রান ছুঁতে পারেননি। তাতে ৪০ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে আফগানিস্তান। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই ও রহমানুল্লাহ গুরবাজ। ১৮ বলে ১৮ রান করে গুরবাজ আউট হলে ভাঙে বড় হতে থাকা পঞ্চম উইকেট জুটি। এরপর গুরবাজও ফিরেছেন ৪০ রানে।
যদিও শেষদিকে রীতিমতো ঝড় তোলেন মোহাম্মদ নবি। তাসকিনকে ১৮তম ওভারে তিন ছক্কা হাঁকান তিনি। যদিও সেই ওভারেই আউট হন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। ২৫ বলে ৩৮ রান করেছেন তিনি। এছাড়া ১২ বলে অপরাজিত ১৭ রান করেন শরাফুদ্দিন আশরাফ।




















