ঢাকা ০৬:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

নির্বাচনের বিকল্প ভাবাটা হবে জাতির জন্য খুবই বিপজ্জনক: প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ১২:৫৮:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ৫২ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নির্বাচনের দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে ততই দেশে এক ধরনের বিশৃঙ্খলার দানা বাঁধার চেষ্টা চলছে। রাজনৈতিক বাতাসে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। একেকদিন দিন একেক ইস্যু লেগেই আছে। দু’দিন আগে আইন শৃ্খলাবাহিনী কতৃক গণঅধিকার পরিষদের প্রধান নুর হোসেন নুরু বেধড়ক পিটুনি খেয়েছেন। অনেকটা জীবন নাশের মুখেই পড়েছিলেন। চব্বিশে আন্দোলনের পর দেশের মাটিতে এমন পরিস্থিতিতে পড়েনি কোন রাজনৈতিক দল। এর আগে বুয়েট শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি আদায়ের আন্দোলনে কয়েকদিন ধরে অচলাবস্থার তৈরি হয় রাজধানী ঢাকা। পরপর এমন সব ঘটনা প্রবাহে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নির্বাচন না হওয়ার আশঙ্কা জম্মাতে থাকে। সাধারণ জনগনও আশঙ্কা করছেন নির্বাচন আদো হবে তো? অনেকেই আবার প্রধান উপদেষ্টা এবং সেনাপ্রধানকে দুই মেরুতে বিভক্ত করে রেখেছেন। এমন সব গুঞ্জনের মধ্যে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী কতৃক নুরুকে আক্রমন সন্দেহ বাড়িয়ে দেয়।

অদ্ভূতপরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টার সাথে দেখা করেছেন রাজনৈতিক দলগুলো। সেখানে বর্তমান পরিস্থিতি এবং সরকারের করণীয় নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়।  জেনে নেয়া হয়  রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত।

সবার কথা শোনার পর রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনের ব্যাপারে আবারো আশ্বস্থ্য করেছেন ড.মুহাম্মদ ইউনুস। তিনি পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছেন ঘোষনা অনুযায়ী ফেব্রুয়ারিতেই ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ জন্য সরকার সকল ধরনের প্রস্তুতিতে এগিয়ে চলেছে।
তিনি বলেছেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। কেউ যদি নির্বাচন নিয়ে বিকল্প কোনো কিছু ভাবে সেটা জাতির জন্য খুবই বিপজ্জনক হবে।

রোববার (৩১ আগস্ট) রাতে প্রধান উপদেষ্টার বরাত দিয়ে তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকের এ তথ্য জানিয়েছেন। এদিন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে জামায়াত, এনসিপি ও বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা।

বৈঠকের বরাত দিয়ে প্রেস সচিব বলেন, প্রধান উপদেষ্টা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, তিনি জাতির উদ্দেশে ভাষণে নির্বাচনের যে সময় ঘোষণা করেছেন নির্বাচন সেই সময়ের মধ্যে হবে। অর্থাৎ, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে উৎসবমুখর পরিবেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

শফিকুল আলম বলেন, সব রাজনৈতিক দলকে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন নিয়ে আবারও তার প্রতিশ্রুতি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, নির্বাচন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। কেউ যদি নির্বাচন নিয়ে কোনো বিকল্প ভাবে সেটা এই জাতির জন্য খুবই বিপজ্জনক হবে।

এদিকে বিষয়টিতে আশ্বস্থ্যন হয়েছে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করছেন নির্বাচন বানচাল বা বিলম্ব করার ষঢ়যন্ত্র নিয়ে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের আশঙ্কা নির্বাচনকে বিলম্বিত করার লক্ষ্যে একটি চক্রান্ত কাজ করছে। তবে আশঙ্কা করার কারণ নেই। নির্বাচন কমিশন যে শিডিউল ঘোষণা করেছে, সেই সময়ই নির্বাচন হবে। প্রধান উপদেষ্টা আমাদের সে কথাই বলেছেন।’

অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামের নায়েব আমির আবুতাহেরের কন্ঠে হতাশা ঝরতে দেখা যায়। তিনি জানান, সরকার এখনো দেশ থেকে চাঁদাবাজি ঠেকাতে পারেনি কিভাবে একটি সুষ্ঠ নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করবে।

তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে কথা বলেছেন। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারা একমত পোষণ করেছেন, তবে কার্যকারিতার বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করেছেন।

জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, দেশ একটি নীলনকশার নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে কি না, সে বিষয়ে জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। সরকার লন্ডনে একটি দলের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছিল, যা একটি নজিরবিহীন ঘটনা। এতে সরকারের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং একটি দলকে সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

জুলাই ঘোষণাপত্রের দিন (৫ আগস্ট) নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা কোনো একটা চাপে পড়ে করা হয়েছে বলেও সাংবাদিকদের জানান সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

নির্বাচনের বিকল্প ভাবাটা হবে জাতির জন্য খুবই বিপজ্জনক: প্রধান উপদেষ্টা

আপডেট সময় : ১২:৫৮:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নির্বাচনের দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে ততই দেশে এক ধরনের বিশৃঙ্খলার দানা বাঁধার চেষ্টা চলছে। রাজনৈতিক বাতাসে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। একেকদিন দিন একেক ইস্যু লেগেই আছে। দু’দিন আগে আইন শৃ্খলাবাহিনী কতৃক গণঅধিকার পরিষদের প্রধান নুর হোসেন নুরু বেধড়ক পিটুনি খেয়েছেন। অনেকটা জীবন নাশের মুখেই পড়েছিলেন। চব্বিশে আন্দোলনের পর দেশের মাটিতে এমন পরিস্থিতিতে পড়েনি কোন রাজনৈতিক দল। এর আগে বুয়েট শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি আদায়ের আন্দোলনে কয়েকদিন ধরে অচলাবস্থার তৈরি হয় রাজধানী ঢাকা। পরপর এমন সব ঘটনা প্রবাহে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নির্বাচন না হওয়ার আশঙ্কা জম্মাতে থাকে। সাধারণ জনগনও আশঙ্কা করছেন নির্বাচন আদো হবে তো? অনেকেই আবার প্রধান উপদেষ্টা এবং সেনাপ্রধানকে দুই মেরুতে বিভক্ত করে রেখেছেন। এমন সব গুঞ্জনের মধ্যে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী কতৃক নুরুকে আক্রমন সন্দেহ বাড়িয়ে দেয়।

অদ্ভূতপরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টার সাথে দেখা করেছেন রাজনৈতিক দলগুলো। সেখানে বর্তমান পরিস্থিতি এবং সরকারের করণীয় নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়।  জেনে নেয়া হয়  রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত।

সবার কথা শোনার পর রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনের ব্যাপারে আবারো আশ্বস্থ্য করেছেন ড.মুহাম্মদ ইউনুস। তিনি পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছেন ঘোষনা অনুযায়ী ফেব্রুয়ারিতেই ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ জন্য সরকার সকল ধরনের প্রস্তুতিতে এগিয়ে চলেছে।
তিনি বলেছেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। কেউ যদি নির্বাচন নিয়ে বিকল্প কোনো কিছু ভাবে সেটা জাতির জন্য খুবই বিপজ্জনক হবে।

রোববার (৩১ আগস্ট) রাতে প্রধান উপদেষ্টার বরাত দিয়ে তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকের এ তথ্য জানিয়েছেন। এদিন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে জামায়াত, এনসিপি ও বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা।

বৈঠকের বরাত দিয়ে প্রেস সচিব বলেন, প্রধান উপদেষ্টা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, তিনি জাতির উদ্দেশে ভাষণে নির্বাচনের যে সময় ঘোষণা করেছেন নির্বাচন সেই সময়ের মধ্যে হবে। অর্থাৎ, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে উৎসবমুখর পরিবেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

শফিকুল আলম বলেন, সব রাজনৈতিক দলকে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন নিয়ে আবারও তার প্রতিশ্রুতি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, নির্বাচন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। কেউ যদি নির্বাচন নিয়ে কোনো বিকল্প ভাবে সেটা এই জাতির জন্য খুবই বিপজ্জনক হবে।

এদিকে বিষয়টিতে আশ্বস্থ্যন হয়েছে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করছেন নির্বাচন বানচাল বা বিলম্ব করার ষঢ়যন্ত্র নিয়ে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের আশঙ্কা নির্বাচনকে বিলম্বিত করার লক্ষ্যে একটি চক্রান্ত কাজ করছে। তবে আশঙ্কা করার কারণ নেই। নির্বাচন কমিশন যে শিডিউল ঘোষণা করেছে, সেই সময়ই নির্বাচন হবে। প্রধান উপদেষ্টা আমাদের সে কথাই বলেছেন।’

অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামের নায়েব আমির আবুতাহেরের কন্ঠে হতাশা ঝরতে দেখা যায়। তিনি জানান, সরকার এখনো দেশ থেকে চাঁদাবাজি ঠেকাতে পারেনি কিভাবে একটি সুষ্ঠ নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করবে।

তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে কথা বলেছেন। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারা একমত পোষণ করেছেন, তবে কার্যকারিতার বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করেছেন।

জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, দেশ একটি নীলনকশার নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে কি না, সে বিষয়ে জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। সরকার লন্ডনে একটি দলের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছিল, যা একটি নজিরবিহীন ঘটনা। এতে সরকারের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং একটি দলকে সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

জুলাই ঘোষণাপত্রের দিন (৫ আগস্ট) নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা কোনো একটা চাপে পড়ে করা হয়েছে বলেও সাংবাদিকদের জানান সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের।