ফজলু চাইলেন ৭দিনের, বিএনপি দিয়েছে আরও ২৪ ঘন্টা সময়

- আপডেট সময় : ০৮:১৮:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫
- / ৪১ বার পড়া হয়েছে
বেশ কিছুদিন ধরে রাজনীতির আকাশ ভারি হওয়ার মতো বিএনপি‘র দুই নেতা অনর্গল কথা বলে যাচ্ছেন। যা কিনা সহজভাবে দেখছেন না জুলাই আন্দোলনের সমর্থকরা। তাদের কাছে মনে হচ্ছিলো বিপএনপি‘র দুই নেতা ফজলুর রহমান ও রুমিন ফারহানা যে সব বক্তব্য রাখছেন তা জুলাই আন্দোলনের বিপক্ষে যাচ্ছে এবং আওয়ামী লীগকে সমর্থন যোগাচ্ছে। বিষয়টি ভালো চোখে দেখেনি বিএনপি‘র হাইকোমান্ডও।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানের বিপক্ষে এই ক্রমাগত বিতর্কিত ও বিভ্রান্তিকর মন্তব্যের অভিযোগে তাকে শোকজ করেছে বিএনপি। পাশাপাশি ২৪ ঘন্টার মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেয়া হয়।
যদিও ফজলুর রহমান কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দেয়ার জন্য সাতদিনের সময় চেয়ে আবেদন করেছেন। সে প্রেক্ষিতে তাকে আরও ২৪ ঘন্টা সময় বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সোমবার (২৫ আগস্ট) বিএনপির দপ্তর সূত্র জানিয়েছে এ তথ্য।
সূত্র জানায়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নোটিশের জবাব না দিলে কিংবা জবাব সন্তোষজনক না হলে অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে। ইতোমধ্যে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে দল ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের চার হাজারের বেশি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে বহিষ্কারসহ বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে বিএনপি।
উল্লেখ্য, শোকজে বলা হয়, ‘আপনি জুলাই-আগস্ট ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান নিয়ে ক্রমাগত কুরুচিপূর্ণ ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে আসছেন এবং আত্মদানকারী শহীদদের নিয়ে যে বক্তব্য দিচ্ছেন তা সম্পূর্ণরূপে দলীয় আদর্শ ও গণঅভ্যুত্থানের চেতনার পরিপন্থি। আপনার বক্তব্য দলের সুনাম ক্ষুণ্ন করার সুপরিকল্পিত চক্রান্তের প্রয়াস বলে অনেকেই মনে করে। এমনকি আপনি জনগণের ধর্মীয় অনুভূতিতেও আঘাত দিয়ে কথা বলছেন।’
সুতরাং এ ধরনের উদ্ভট ও শৃঙ্খলাপরিপন্থি বক্তব্যের কারণে কেন আপনার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তার যথাযথ কারণ আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি লিখিত জবাব কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য আপনাকে নির্দেশ দেওয়া হলো।’
এদিকে বিএনপি‘র দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ফজলুর রহমানের পক্ষ থেকে শোকজের জবাব দিতে ৭ দিন সময় চাওয়া হয়। কিন্তু দলের পক্ষ থেকে ২৪ ঘণ্টা সময় বাড়ানো হয়।
বিএনপি’র কাছে আবেদন জমাদানের আগে অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান সংবাদ কর্মীদের জানান, আমার বয়স ৭৪ বছর। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। বারো শো লোকের কমান্ডার ছিলাম। আমরা স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছি। অথচ স্বাধীন এই দেশে আমার বাসার নীচে কিছু ছেলে-পেলে আমার বিরুদ্ধে বাজেভাবে মিছিল করেছে। আমি ভাড়া বাসায় থাকি,তারা আমার বাসায় প্রবেশের চেষ্টা করেছে। মব জাস্টিস করার চেষ্টা করেছে। আমার কি তাহলে বেঁচে থাকার অধিকার নেই? আমি নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি। তিনি বলেন, এগুলো মনে হচ্ছে ছাত্র শিবিরের ছেলেরা করেছে। তবে আমি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। তাদের ফোন করার কয়েক মিনিটের মধ্যেই তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আনেন।
তবে তাকে যে অভিযোগে শোকজ করা হয়েছে তা তিনি করেননি মত প্রকাশ করেছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিলো কালো শক্তি ৫ আগস্ট ঘটিয়েছে। কিন্তু তিনি এমন বক্তব্য দেননি বলে দাবি তুলেছেন।
অ্যাডভোকেট মো. ফজলুর রহমান বলেছেন, আমাকে প্রমাণ দেখান, আমি কোথায় এ কথা বলেছি। পুরো বক্তব্যটা বাজাতে হবে। শুধু ইউটিউবের দুই লাইন বললে হবে না। এমন কোনো বক্তব্য আমি দিইনি। পুরো ভিডিও দেখে প্রমাণ করতে পারলে আমি ক্ষমা চাইবো।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টের এনেক্স ভবনের সামনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, জামায়াত কালোশক্তি, ৫ আগস্ট ঘটিয়েছে— এমন কথা আমি বলিনি। এটা বানানো হতে পারে। আমার সব বক্তব্য আপনারা শুনুন।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন তো অনেক কিছু বানানো হচ্ছে, এটা বানানো হতে পারে। যদি প্রমাণ হয় আমি এটা বলেছি তাহলে ক্ষমা চাইবো।
বিএনপির পক্ষ থেকে দেওয়া কারণ দর্শানো নোটিশের বিষয়ে ফজলুর রহমান বলেন, রোববার রাত ৯টার দিকে আমি নোটিশ পেয়েছি। একজন বার্তাবাহক নোটিশ আমার বাসায় পৌঁছে দিয়ে গেছে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি নোটিশের জবাব দেওয়ার।