ঢাকা ০৪:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

পাথর লুটে প্রশাসনের যোগসাজস দেখছেন পরিবেশ উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৮:৩৬:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫
  • / ৪৭ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সিলেটের সাদা পাথর নিয়ে এখনো চলছে রাজ্যের আলোচনা। এই স্থানটি বাংলাদেশের পর্যটকদের জন্য দারুণ একটি জায়গা। দেশের দূর দূরান্ত থেকে মানুষ কিছুটা বিনোদনের জন্য ছুটে যান সাদা পাথরের দেশে। সেই প্রাকৃতিক সৌন্দয্যটা নির্ভর করেছিল  পাথর গড়িয়ে মেঘালয় থেকে পানির স্ত্রোত অবলকন করা। বাংলাদেশ সীমানায় পাথর এসে পড়ে। পরবরবতীতে ধীরে ধীরে বড় আকার হয়ে ওঠে পাথর।

অথচ সিলেটের সেই সাদা পাথরের পাথরগুলো তুলে নিয়ে গেলো সিলেটের কিছু পাথর খেকো। প্রাকৃতিক সৌন্দয্যের একখন্ড জায়গা এখন ক্ষতস্থানের ন্যয় দৃশ্যমান। এ নিয়ে সরকারের ব্যর্থতা খুঁজছেন এক শ্রেণীর লোক। বিশেষ করে পরিবেশ উপদেষ্টাকে রামধোলাই করা হচ্ছে সোসাল মিডিয়ায়। আজ পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে পেয়েই মিডিয়ার নানামুখী প্রশ্ন ওঠে আসে। তারই জবাব দিতে গিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, পাথর ঘটনায় প্রশা্সনের যোগসাজস রয়েছে। তিনি বলেন, এবার সর্বদলীয় ঐক্যের কারণে প্রশাসনের নিশ্চয়ই যোগসাজশ ছিল। তা না হলে এখন তারা কীভাবে বের করতে পারে যে পাথরগুলো কোথায়? আবার নীরবতাও ছিল, তারা হয়তো অতটা ঝুঁকি নিতে পারছিল না।

রোববার (১৭ আগস্ট) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।রিজওয়ানা হাসান বলেন, পাথর কতটুকু তুললো, লুট হলো, নিয়ে গেলো- এটি আমার মন্ত্রণালয়ের দেখার কথা নয়। যেহেতু আমি একজন পরিবেশ কর্মী এবং সরকারে আছি। আমি দায়িত্ব নেবো কিন্তু পাথর লুট হয়ে যাওয়ার দায়টা আমাকে দিয়েন না।

রিজওয়ানা বলেন, এখন দেখা যাচ্ছে তারা মামলা করছে, সেখানে আদৌ যারা দোষী তাদের কতটুকু তালিকাভুক্ত করছেন সেটা আমাদের দেখতে হবে।

উপদেষ্টা বলেন, যখন আমরা দুই উপদেষ্টা সেখানে গেলাম এবং আক্রান্ত হলাম। তারপর আমরা চলে আসলাম, তারপরে কিন্তু তিন দিনব্যাপী ব্যাপক অভিযান হলো। সব পাথর ভাঙার মেশিনের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হলো। কিন্তু, তার চার-পাঁচ দিন পর সব রাজনৈতিক দল এক হয়ে চাপ প্রয়োগ করা হলো, তারা সেখানে ঘোষণা দিলেন যে পাথর তুলতে দিতে হবে। পরিবহন মালিকরা বললেন যে তারা ধর্মঘট করবেন। যদিও এই ধর্মঘট তাদের জন্য নতুন নয়।

যখন ২০২০ সালে পাথর তোলা বন্ধ করে দেওয়া হলো, সেই সময় করোনার মধ্যে তারা দুই দুইবার পরিবহন ধর্মঘট করেছেন। তাদের যদি সত্যিকার অর্থে জনগণের জন্য বিন্দুমাত্র মায়া থাকতো করোনার এমন সংকটের মুহূর্তে নিজের ব্যবসায়িক স্বার্থের জন্য ধর্মঘট ডাকতে পারতেন?

সেই সময় আমরাও সোচ্চার ছিলাম, প্রশাসনকে আমাদের সঙ্গে আনতে পেরেছিলাম। এবার হলো কী- সর্বদলীয় ঐক্যের কথা যে আমি বলেছিলাম, সর্বদলীয় ঐক্যের কারণে প্রশাসনে নিশ্চয়ই যোগসাজশ ছিল। তাহলে তারা এখন বের করতে পারে পাথরগুলো কোথায়? আবার নীরবতাও ছিল। তারা হয়তো অতটা ঝুঁকি নিতে পারছিলেন না।

উপদেষ্টা বলেন, আজ মানুষ তার শক্তি দেখিয়েছে। লুটেরা চক্রের বিরুদ্ধে যখন মানুষ দাঁড়িয়ে যায়, তখন যতই রাজনৈতিক শক্তি ওটাকে সাপোর্ট করুক না কেন, মানুষের শক্তিটাই আসলে জয়ী হয়ে আসবে।
তিনি বলেন, আমি জনগণকে ধন্যবাদ জানাই তারা তীব্র প্রতিবাদটা করেছে। যার ফলে আজ যে অবস্থাটা সৃষ্টি হয়েছে এতে ভবিষ্যতে পাথর লুটবার আগে দুবার চিন্তা করবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

পাথর লুটে প্রশাসনের যোগসাজস দেখছেন পরিবেশ উপদেষ্টা

আপডেট সময় : ০৮:৩৬:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫

সিলেটের সাদা পাথর নিয়ে এখনো চলছে রাজ্যের আলোচনা। এই স্থানটি বাংলাদেশের পর্যটকদের জন্য দারুণ একটি জায়গা। দেশের দূর দূরান্ত থেকে মানুষ কিছুটা বিনোদনের জন্য ছুটে যান সাদা পাথরের দেশে। সেই প্রাকৃতিক সৌন্দয্যটা নির্ভর করেছিল  পাথর গড়িয়ে মেঘালয় থেকে পানির স্ত্রোত অবলকন করা। বাংলাদেশ সীমানায় পাথর এসে পড়ে। পরবরবতীতে ধীরে ধীরে বড় আকার হয়ে ওঠে পাথর।

অথচ সিলেটের সেই সাদা পাথরের পাথরগুলো তুলে নিয়ে গেলো সিলেটের কিছু পাথর খেকো। প্রাকৃতিক সৌন্দয্যের একখন্ড জায়গা এখন ক্ষতস্থানের ন্যয় দৃশ্যমান। এ নিয়ে সরকারের ব্যর্থতা খুঁজছেন এক শ্রেণীর লোক। বিশেষ করে পরিবেশ উপদেষ্টাকে রামধোলাই করা হচ্ছে সোসাল মিডিয়ায়। আজ পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে পেয়েই মিডিয়ার নানামুখী প্রশ্ন ওঠে আসে। তারই জবাব দিতে গিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, পাথর ঘটনায় প্রশা্সনের যোগসাজস রয়েছে। তিনি বলেন, এবার সর্বদলীয় ঐক্যের কারণে প্রশাসনের নিশ্চয়ই যোগসাজশ ছিল। তা না হলে এখন তারা কীভাবে বের করতে পারে যে পাথরগুলো কোথায়? আবার নীরবতাও ছিল, তারা হয়তো অতটা ঝুঁকি নিতে পারছিল না।

রোববার (১৭ আগস্ট) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।রিজওয়ানা হাসান বলেন, পাথর কতটুকু তুললো, লুট হলো, নিয়ে গেলো- এটি আমার মন্ত্রণালয়ের দেখার কথা নয়। যেহেতু আমি একজন পরিবেশ কর্মী এবং সরকারে আছি। আমি দায়িত্ব নেবো কিন্তু পাথর লুট হয়ে যাওয়ার দায়টা আমাকে দিয়েন না।

রিজওয়ানা বলেন, এখন দেখা যাচ্ছে তারা মামলা করছে, সেখানে আদৌ যারা দোষী তাদের কতটুকু তালিকাভুক্ত করছেন সেটা আমাদের দেখতে হবে।

উপদেষ্টা বলেন, যখন আমরা দুই উপদেষ্টা সেখানে গেলাম এবং আক্রান্ত হলাম। তারপর আমরা চলে আসলাম, তারপরে কিন্তু তিন দিনব্যাপী ব্যাপক অভিযান হলো। সব পাথর ভাঙার মেশিনের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হলো। কিন্তু, তার চার-পাঁচ দিন পর সব রাজনৈতিক দল এক হয়ে চাপ প্রয়োগ করা হলো, তারা সেখানে ঘোষণা দিলেন যে পাথর তুলতে দিতে হবে। পরিবহন মালিকরা বললেন যে তারা ধর্মঘট করবেন। যদিও এই ধর্মঘট তাদের জন্য নতুন নয়।

যখন ২০২০ সালে পাথর তোলা বন্ধ করে দেওয়া হলো, সেই সময় করোনার মধ্যে তারা দুই দুইবার পরিবহন ধর্মঘট করেছেন। তাদের যদি সত্যিকার অর্থে জনগণের জন্য বিন্দুমাত্র মায়া থাকতো করোনার এমন সংকটের মুহূর্তে নিজের ব্যবসায়িক স্বার্থের জন্য ধর্মঘট ডাকতে পারতেন?

সেই সময় আমরাও সোচ্চার ছিলাম, প্রশাসনকে আমাদের সঙ্গে আনতে পেরেছিলাম। এবার হলো কী- সর্বদলীয় ঐক্যের কথা যে আমি বলেছিলাম, সর্বদলীয় ঐক্যের কারণে প্রশাসনে নিশ্চয়ই যোগসাজশ ছিল। তাহলে তারা এখন বের করতে পারে পাথরগুলো কোথায়? আবার নীরবতাও ছিল। তারা হয়তো অতটা ঝুঁকি নিতে পারছিলেন না।

উপদেষ্টা বলেন, আজ মানুষ তার শক্তি দেখিয়েছে। লুটেরা চক্রের বিরুদ্ধে যখন মানুষ দাঁড়িয়ে যায়, তখন যতই রাজনৈতিক শক্তি ওটাকে সাপোর্ট করুক না কেন, মানুষের শক্তিটাই আসলে জয়ী হয়ে আসবে।
তিনি বলেন, আমি জনগণকে ধন্যবাদ জানাই তারা তীব্র প্রতিবাদটা করেছে। যার ফলে আজ যে অবস্থাটা সৃষ্টি হয়েছে এতে ভবিষ্যতে পাথর লুটবার আগে দুবার চিন্তা করবে।