ঢাকা ০৫:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

হাতকড়া পরিয়ে ৩৯জন বাংলাদেশীকে দেশে ফেরত পাঠ‍ালো যুক্তরাষ্ট্র

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৮:৫৪:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ অগাস্ট ২০২৫
  • / ৪৪ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সুখের সন্ধ্যানে অবৈধপথে বাংলাদেশীরা পাড়ি জমিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে। সমুদ্র পথে জীবনের ঝুকি নিয়ে। মেক্সিক গহীন জঙ্গল,কাটাতারের বেড়া অতিক্রম করে পৌছেও যান স্বপ্নের দেশে। কেউ আবার দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশ হয়ে পৌছোন আমেরিকায়। তাতেও একেক জনের গুনতে হয়েছে বিশাল অংকের টাকা। ধার দেনা করে কেউ ত্রিশ লাখ কেউ চল্লিশ টাকা খরচ করেছেন। কিন্তু আমেরিকায়  পৌছায়েও সেখানে তাদের সুখ বেশিদিন থাকেনি।আশ্রয় পার্থনা চাইতে গিয়ে উল্টো বিপদে পড়েছেন। আদালত ও অভিবাসন কতৃপক্ষ তাদের সেই আবেদন খারিজ করে দিয়ে সবাইকে দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় মার্কিন প্রশাসন।

আজ শনিবার ভোর বেলায় ৩৯জনকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাঠানো হয়।বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন বিভাগের এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেন বিষয়টি। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, একটি বিশেষ সামরিক বিমানে (সি-১৭) করে তাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে।দীর্ঘ ৬০ ঘণ্টার যাত্রা শেষে তারা ঢাকায় পৌঁছান। দেশে ফেরার পর ব্র্যাকের পক্ষ থেকে তাদের পরিবহন সহায়তা দেওয়া হয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক থেকে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।

ফেরত আসাদের অভিযোগ, দীর্ঘ যাত্রার পুরোটা সময় তাদেরকে হাতকড়া পরিয়ে রাখা হয়। তাদের একজন বলেন, আমরা অপরাধী নই, আমরা তো আশ্রয় চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের সঙ্গে ভয়ংকর বন্দিদের মতো আচরণ করা হয়েছে।

৩৯ জনের যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত আসা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম ও ইয়ুথ প্লাটফর্মের সহযোগী পরিচালক শরিফুল হাসান বলেন, আমরা যতটা জেনেছি, ফেরত আসাদের কেউ কেউ ঘরবাড়ি বিক্রি করেছেন, ধার-দেনা  করে মেক্সিকো বা দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশ হয়ে অনিয়মিত পন্থায় পাড়ি জমিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে।

ডনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় আসার পর যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন কর্তৃপক্ষের ব্যাপক কড়াকডির মধ্যে এ দফায় তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হল। এর আগেও যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে থাকার অভিযোগে কয়েক দফায় বেশ কিছু সংখ্যক বাংলাদিশেকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়।এ দফায় প্রথমে ৬০ জনের একটি তালিকা দেওয়া হলেও তাদের মধ্যে ৩৯ জনকে ঢাকায় ফেরত পাঠানো হয় বলে এক কর্মকর্তা বলেন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শামীম খান মিডিয়া কর্মীদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্র একটি তালিকা পাঠিয়েছিল। এর প্রেক্ষিতে বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে যাচাই করে নিশ্চিত হওয়া গেছে তারা বাংলাদেশ। এরপর উড়োজাহাজ থেকে নামার অনুমতি দেওয়া হয়।

প্রথম দফায় ট্রাম্প প্রশাসনের ৪১ জনকে ফেরত পাঠানোর তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, এর আগে তাদের জানিয়ে দেওয়া হয় বাংলাদেশি হিসেবে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কাউকে গ্রহণ করা হবে না।“মূলত এসব বাংলাদেশির সেখানে বসবাসের জন্য বৈধ কোনো কাগজ ছিল না।”

ট্রাম্প প্রশাসন শুধু বাংলাদেশি নয় অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রেও এমনটি করছে, যোগ করেন তিনি।তবে ফেরত আসা এসব বাংলাদেশি কত দিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছিলেন তাৎক্ষণিকভাবে তা বলতে পারেননি তিনি।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় দফায় ট্রাম্প জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ অভিবাসীদের তাড়াতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেন। কড়াকড়ির মধ্যে বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের হাতকড়া পরিয়ে ফেরত পাঠাতে শুরু করে দেশটি, যা নিয়ে দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন ট্রাম্প।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

হাতকড়া পরিয়ে ৩৯জন বাংলাদেশীকে দেশে ফেরত পাঠ‍ালো যুক্তরাষ্ট্র

আপডেট সময় : ০৮:৫৪:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ অগাস্ট ২০২৫

সুখের সন্ধ্যানে অবৈধপথে বাংলাদেশীরা পাড়ি জমিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে। সমুদ্র পথে জীবনের ঝুকি নিয়ে। মেক্সিক গহীন জঙ্গল,কাটাতারের বেড়া অতিক্রম করে পৌছেও যান স্বপ্নের দেশে। কেউ আবার দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশ হয়ে পৌছোন আমেরিকায়। তাতেও একেক জনের গুনতে হয়েছে বিশাল অংকের টাকা। ধার দেনা করে কেউ ত্রিশ লাখ কেউ চল্লিশ টাকা খরচ করেছেন। কিন্তু আমেরিকায়  পৌছায়েও সেখানে তাদের সুখ বেশিদিন থাকেনি।আশ্রয় পার্থনা চাইতে গিয়ে উল্টো বিপদে পড়েছেন। আদালত ও অভিবাসন কতৃপক্ষ তাদের সেই আবেদন খারিজ করে দিয়ে সবাইকে দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় মার্কিন প্রশাসন।

আজ শনিবার ভোর বেলায় ৩৯জনকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাঠানো হয়।বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন বিভাগের এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেন বিষয়টি। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, একটি বিশেষ সামরিক বিমানে (সি-১৭) করে তাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে।দীর্ঘ ৬০ ঘণ্টার যাত্রা শেষে তারা ঢাকায় পৌঁছান। দেশে ফেরার পর ব্র্যাকের পক্ষ থেকে তাদের পরিবহন সহায়তা দেওয়া হয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক থেকে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।

ফেরত আসাদের অভিযোগ, দীর্ঘ যাত্রার পুরোটা সময় তাদেরকে হাতকড়া পরিয়ে রাখা হয়। তাদের একজন বলেন, আমরা অপরাধী নই, আমরা তো আশ্রয় চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের সঙ্গে ভয়ংকর বন্দিদের মতো আচরণ করা হয়েছে।

৩৯ জনের যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত আসা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম ও ইয়ুথ প্লাটফর্মের সহযোগী পরিচালক শরিফুল হাসান বলেন, আমরা যতটা জেনেছি, ফেরত আসাদের কেউ কেউ ঘরবাড়ি বিক্রি করেছেন, ধার-দেনা  করে মেক্সিকো বা দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশ হয়ে অনিয়মিত পন্থায় পাড়ি জমিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে।

ডনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় আসার পর যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন কর্তৃপক্ষের ব্যাপক কড়াকডির মধ্যে এ দফায় তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হল। এর আগেও যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে থাকার অভিযোগে কয়েক দফায় বেশ কিছু সংখ্যক বাংলাদিশেকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়।এ দফায় প্রথমে ৬০ জনের একটি তালিকা দেওয়া হলেও তাদের মধ্যে ৩৯ জনকে ঢাকায় ফেরত পাঠানো হয় বলে এক কর্মকর্তা বলেন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শামীম খান মিডিয়া কর্মীদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্র একটি তালিকা পাঠিয়েছিল। এর প্রেক্ষিতে বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে যাচাই করে নিশ্চিত হওয়া গেছে তারা বাংলাদেশ। এরপর উড়োজাহাজ থেকে নামার অনুমতি দেওয়া হয়।

প্রথম দফায় ট্রাম্প প্রশাসনের ৪১ জনকে ফেরত পাঠানোর তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, এর আগে তাদের জানিয়ে দেওয়া হয় বাংলাদেশি হিসেবে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কাউকে গ্রহণ করা হবে না।“মূলত এসব বাংলাদেশির সেখানে বসবাসের জন্য বৈধ কোনো কাগজ ছিল না।”

ট্রাম্প প্রশাসন শুধু বাংলাদেশি নয় অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রেও এমনটি করছে, যোগ করেন তিনি।তবে ফেরত আসা এসব বাংলাদেশি কত দিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছিলেন তাৎক্ষণিকভাবে তা বলতে পারেননি তিনি।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় দফায় ট্রাম্প জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ অভিবাসীদের তাড়াতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেন। কড়াকড়ির মধ্যে বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের হাতকড়া পরিয়ে ফেরত পাঠাতে শুরু করে দেশটি, যা নিয়ে দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন ট্রাম্প।