স্বৈরাচারের ভাষা বাদ দিন, না হলে বুঝে নেব ফ্যাসিবাদ আপনাদের মনেও,অসুস্থ্য হয়ে হাসপাতালে জামায়াতের আমির,দেখতে গেলেন মির্জা ফখরুল

- আপডেট সময় : ০১:২৩:৩৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫
- / ৪২ বার পড়া হয়েছে
জাতীয় ঐক্যের নামে অহংকার, তুচ্ছতাচ্ছিল্য আর অরাজনৈতিক ভাষা ব্যবহারকারীদের প্রতি কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, আবু সাঈদরা যদি বুক পেতে না দিত, হয়ত আজকের বাংলাদেশ আমরা দেখতাম না। অনেকের জীবন হয়ত ফ্যাসিবাদীদের হাতে চলে যেত। আজকে যারা বিভিন্নভাবে দাবিদাওয়া তুলে ধরছেন, তখন তারা কোথায় থাকতেন? সুতরাং অহংকার করে, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে কাউকে ছোট করে কথা না বলি। না হলে আমরা বুঝে নেব, স্বৈরাচারী বীজ তাদের মনে বাসা বেঁধেছে।
শনিবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত জাতীয় সমাবেশের সমাপনীতে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জামায়াত আমির আরও বলেন, জাতীয় ঐক্যকে ধারণ করুন। অহংকার নয়, সংযম দেখান। অতীতে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই ছিল। সেই লড়াইয়ে আমরা জিতেছি। এখন আগামীর বাংলাদেশে আরেকটা লড়াই হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে। দুর্নীতিকে মূলোৎপাটনে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। জামায়াতে ইসলামী সেই লড়াইয়ে ছিল, থাকবে এবং জয়লাভ করবে ইনশাআল্লাহ।
বক্তব্যের শুরুতে তিন নেতাকর্মীর মৃত্যুর খবর দিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আজকের সমাবেশে অংশ নিতে গিয়ে আমাদের তিন ভাই ইন্তেকাল করেছেন। আল্লাহ তাদের জান্নাত দিন। পরিবারকে ধৈর্য ধরার তাওফিক দিন।
তিনি বলেন, জাতির সামনে আমাদের অনেক করণীয়। অতীতে বুক পেতে দিয়ে জামায়াতকর্মীরা শহীদ হয়েছে। আজ যারা নতুন কথা বলছেন, তাদের অতীতের অবস্থান ইতিহাসে নেই। সুতরাং আমরা জাতীয় ঐক্য চাই। কিন্তু কাউকে ছোট করে কথা বলার অধিকার নেই।
তিনি বলেন, জামায়াত ক্ষমতায় এলে মালিক নয়, সেবক হবে। তিনি আরও বলেন, আজ যারা ক্ষমতায় গিয়ে জনগণের ওপর জুলুম করে, টেন্ডার, চাঁদা, দুর্নীতির ভাগ নেয়, প্লট-ফ্ল্যাট ভাগ করে নেয়– তারা জনগণের নয়, নিজেদের সেবায় ব্যস্ত। আমরা যদি রাষ্ট্রের দায়িত্ব নিই, তবে কারো প্লট কিংবা বাড়ি করে দেব না, বরং পাবলিক রিপোর্ট দেব। কে কী কাজ করল, কত টাকা খরচ হলো জনগণকে জানাব।
মহাসমাবেশে বক্তব্য রাখার এক পর্যায়ে জামায়েতের আমির ডা. শফিকুর রহমান অসুস্থ হয়ে মঞ্চে পড়ে যান। বিকেল ৫টা ২০ মিনিটের দিকে সমাবেশস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ ঘটনা ঘটে। দুইবার অসুস্থ হয়ে মঞ্চে পড়ে যান তিনি। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে জামায়াতের চিকিৎসকরা তাকে চিকিৎসা দেওয়া শুরু করেন। এ সময় তিনি মঞ্চে বসেই উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন।
পরে ধানমন্ডির একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে তার শারীরিক সব ধরনের পরীক্ষা করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল। চেকআপে গুরুতর কিছু ধরা পড়েনি বা সমস্যা দেখা যায়নি বলে জানান তারা।
পরে সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে একটি বার্তা দেন জামায়াত আমির। বার্তায় জামায়াত আমির বলেন, আমার খারাপ লাগে, এত বড় একটা অয়োজনে আপনারা সারা দিন ধরে ছিলেন, জাতির জন্য আমি মনের কথা স্বাভাবিকভাবে তুলে ধরতে পারিনি। এটা আল্লাহর ইচ্ছা। এরপরও শেষমেষ দুটি কথা বলার চেষ্টা করেছি। আগামীতে সুযোগ আসবে আরও কথা বলা যাবে।
তিনি আরও বলেন, আপনাদের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে যারা আমার এ সাময়িক অবস্থা দেখে কষ্ট পেয়েছেন, সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন, দোয়া করেছেন, সবাইকে সালাম ও কৃতজ্ঞতা জানাই। শুধু দোয়া করবেন যত দিন বেঁচে থাকি, আল্লাহ যেন মানুষের কল্যাণের জন্যই বাঁচিয়ে রাখে। আমার দ্বারা দেশ ও জাতির যেন কোনো ক্ষতি না হয়।
এদিকে অসুস্থ্যতার খবর শুনে বিনএপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানকে দেখতে হাসপাতালে যান।। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।