সাতক্ষীরায় বৃষ্টিতে লাখো মানুষের দূর্ভোগ, ভেসে গেছে ছিংড়ি ঘের

- আপডেট সময় : ১০:০৫:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫
- / ৪৮ বার পড়া হয়েছে
টানা বৃষ্টিতে সাতক্ষীরা শহরসহ গ্রামীণ জনপদ পানিতে ডুবে গেছে। ভেসে গেছে ছিংড়ি মাছের ঘের। টানা আট দিনের বৃষ্টিতে সাতক্ষীরা পৌরসভার প্রায় ১১টি ইউনিয়ন জলাবদ্ধ পানির নীচে ডুবে আছে। এতে ঘরবাড়ি, রান্নাঘর, গোয়ালঘর এমনকী সুপেয় পানির উৎস টিউবওয়েলও তলিয়ে গেছে। নষ্ট হয়েছে ফসল ও মাছের ঘের।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিস জানায়, ১ থেকে ৮ জুলাই সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত জেলায় ২৯০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। পৌরসভার ইটাগাছা, কামালনগর, পলাশপোল, মেহেদীবাগ, রসুলপুর, বদ্দিপুর কলোনি, রইচপুর, রাজারবাগান, পার-মাছখোলা, গদাইবিলসহ অন্তত এক ডজন ওয়ার্ডে পানিতে তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর। ডুবে গেছে টিউবওয়েল। ভেঙে পড়েছে স্যানিটেশন ব্যবস্থা।
জলাবদ্ধতার কারণ হিসেবে স্থানীয়দের মতে, অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা মৎস্য ঘেরগুলো পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে দিয়েছে। এটা প্রতি বছর হচ্ছে অথচ কোনো স্থায়ী সমাধান নেই। ঘের মালিকরা বিলের মুখ বন্ধ করে দেয়ায় পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে গোটা এলাকা।
জেলা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক আজাদ হোসেন বেলাল জানান, ‘প্রতিবছর একই দুর্ভোগের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। অথচ প্রশাসন ও পৌরসভা শুধু আশ্বাস দিয়ে থেমে থাকে। আধুনিক ড্রেনেজ না হলে জলাবদ্ধতা কাটবে না।’
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইশতিয়াক আহম্মেদ বলেন, ‘৯টি ওয়ার্ডে অস্থায়ী পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা হয়েছে। শহরের খাল ও ড্রেন উন্নয়নে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। যেসব ঘের মালিক পানি আটকে রেখেছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শোয়াইব আহমাদ বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৫০ কিলোমিটার খাল ও সেচনালা সংস্কার করা হয়েছে। প্রাণসায়ের খালে পানি ফেলতে পারলে শহরের জলাবদ্ধতা অনেকটা কমবে। ঘের মালিকদের নিষ্কাশনের পথ খুলে দিতে বলা হয়েছে।
টানা বৃষ্টিতে আশাশুনি উপজেলার কুল্যা, দরগাহপুর, শ্রীউলা, বুধহাটা, খাজরা, প্রতাপনগর, বড়দল, আনুলিয়া, শোভনালীসহ ১১টি ইউনিয়নে পানি ঢুকেছে ঘরবাড়িতে। ডুবে গেছে রান্নাঘর, টিউবওয়েল, পুকুর, মাছের ঘের ও সবজির ক্ষেত।
প্রভাষক ইয়াহিয়া ইকবাল মনে করেন, ঘেরের পাশে নেটপাটা অপসারণ, পুরোনো ম্যাপ অনুযায়ী নদী-খাল খনন, বিকল স্লুইস গেট সংস্কার ও দুর্নীতি দমন ছাড়া কোনো স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, বেশিরভাগ এলাকায় টিউবওয়েল ডুবে গেছে। ফলে সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। স্যানিটেশন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। অনেক পরিবার রান্না বন্ধ করে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে অন্যত্র যাচ্ছে।