ঢাকা ০৩:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

করোনা,ডেঙ্গুর সঙ্গে চোখ রাঙাচ্ছে চিকনগুনিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৮:৩৯:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
  • / ১০০ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বর্ষার শুরুতেই ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব লক্ষণ করা যায়। কিন্তু শেষ হয়েও হলো না করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত রোগ। নানা ভাবে মানব দেহে প্রবেশ করছে করোনা। এই রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবা নিতে ভর্তি হচ্ছেন রুগীরা। তথ্য মতে গত ২১ জুন করোনায় পাঁচ জনের মৃত্যু হয়।

এদিকে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে দুইজন মারা গেছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ৪০ জন। এছাড়া ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৫৯ জন।

শুক্রবার (২৭ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ১৫৯ জনের মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১০৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১২ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১৫ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ছয়জন, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ছয়জন ও সিলেটে দুইজন রয়েছেন। আর চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার ২২২ জন। তাদের মধ্যে ৫২ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৭ দশমিক ৪ শতাংশ নারী।

ঠিক একই সময়ে মশাবাহিত আরেকটি রোগ চিকুনগুনিয়া ফিরে আসার আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানী ও জনস্বাস্থ্যবিদেরা। আইসিডিডিআরবি বলছে, চলতি মাসে রক্তের ৮২ শতাংশ নমুনায় চিকুনগুনিয়া শনাক্ত করেছে তারা। ঢাকা এবং এর আশ-পাশে চিকনগুনিয়ায় আক্রান্ত হওয়া রুগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

ঠিক এই সময় এই তিন রোগ করোনা,ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া এক সঙ্গে বেড়ে গেলে তা হয়ে উঠবে অত্যন্ত আশঙ্কা জনক। বিশেষজ্ঞরাও তাই মনে করছেন।  তাই সম্ভাব্য সংকট মোকাবিলায় হাসপাতালগুলোতে বিশেষ প্রস্তুতি রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। সেইসঙ্গে কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে করোনা ও ডেঙ্গু পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখা এবং সম্ভব হলে সবখানে আলাদা অবজারভেশন ওয়ার্ড তৈরির তাগিদ দিয়েছেন তারা।

এর পাশাপাশি পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনগুলোতে ‘সততার সঙ্গে’ মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম জোরদার করা এবং এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেয়া জরুরী হয়ে উঠেছে।

প্রায় দেড় বছর পর আবারো করোনা দেখা দিয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের জানুয়ারির শুরু থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত মোট ৫১৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর ভেতর মারা গেছেন ১৯ জন।

এবার করোনার নতুন কিছু ধরন শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। থাইল্যান্ড, চীনের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও দ্রুত সংক্রমিত নতুন ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে।

এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ভারত এবং ভাইরাস ছড়ানো অন্যান্য দেশে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে বলেছে। পাশাপাশি ঝুঁকি মোকাবিলায় সব স্থল ও বিমানবন্দরে হেলথ স্ক্রিনিং ও নজরদারি বাড়াতে বলেছে।

তথ্য মতে, ২০২৩ সালে সারাদেশে ডেঙ্গুতে এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু ও আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ৫৭৫ জনের এবং আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

করোনা,ডেঙ্গুর সঙ্গে চোখ রাঙাচ্ছে চিকনগুনিয়া

আপডেট সময় : ০৮:৩৯:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

বর্ষার শুরুতেই ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব লক্ষণ করা যায়। কিন্তু শেষ হয়েও হলো না করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত রোগ। নানা ভাবে মানব দেহে প্রবেশ করছে করোনা। এই রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবা নিতে ভর্তি হচ্ছেন রুগীরা। তথ্য মতে গত ২১ জুন করোনায় পাঁচ জনের মৃত্যু হয়।

এদিকে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে দুইজন মারা গেছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ৪০ জন। এছাড়া ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৫৯ জন।

শুক্রবার (২৭ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ১৫৯ জনের মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১০৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১২ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১৫ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ছয়জন, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ছয়জন ও সিলেটে দুইজন রয়েছেন। আর চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার ২২২ জন। তাদের মধ্যে ৫২ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৭ দশমিক ৪ শতাংশ নারী।

ঠিক একই সময়ে মশাবাহিত আরেকটি রোগ চিকুনগুনিয়া ফিরে আসার আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানী ও জনস্বাস্থ্যবিদেরা। আইসিডিডিআরবি বলছে, চলতি মাসে রক্তের ৮২ শতাংশ নমুনায় চিকুনগুনিয়া শনাক্ত করেছে তারা। ঢাকা এবং এর আশ-পাশে চিকনগুনিয়ায় আক্রান্ত হওয়া রুগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

ঠিক এই সময় এই তিন রোগ করোনা,ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া এক সঙ্গে বেড়ে গেলে তা হয়ে উঠবে অত্যন্ত আশঙ্কা জনক। বিশেষজ্ঞরাও তাই মনে করছেন।  তাই সম্ভাব্য সংকট মোকাবিলায় হাসপাতালগুলোতে বিশেষ প্রস্তুতি রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। সেইসঙ্গে কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে করোনা ও ডেঙ্গু পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখা এবং সম্ভব হলে সবখানে আলাদা অবজারভেশন ওয়ার্ড তৈরির তাগিদ দিয়েছেন তারা।

এর পাশাপাশি পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনগুলোতে ‘সততার সঙ্গে’ মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম জোরদার করা এবং এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেয়া জরুরী হয়ে উঠেছে।

প্রায় দেড় বছর পর আবারো করোনা দেখা দিয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের জানুয়ারির শুরু থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত মোট ৫১৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর ভেতর মারা গেছেন ১৯ জন।

এবার করোনার নতুন কিছু ধরন শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। থাইল্যান্ড, চীনের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও দ্রুত সংক্রমিত নতুন ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে।

এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ভারত এবং ভাইরাস ছড়ানো অন্যান্য দেশে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে বলেছে। পাশাপাশি ঝুঁকি মোকাবিলায় সব স্থল ও বিমানবন্দরে হেলথ স্ক্রিনিং ও নজরদারি বাড়াতে বলেছে।

তথ্য মতে, ২০২৩ সালে সারাদেশে ডেঙ্গুতে এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু ও আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ৫৭৫ জনের এবং আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন।