ঢাকা ০২:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় রাশিয়ার কৌশলী অবস্থান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:৪২:২৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫
  • / ৪৪ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

যুদ্ধে জড়াবে না বলে শেষ যুক্তরাষ্ট্র ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। ইরানের তিনটি পরমানু কেন্দ্রে হামলা দিয়েই যুক্তরাষ্ট্র জড়িয়ে পড়ে।  রাতের আঁধারে দেশটির ফোর্দো, নাতাঞ্জ আর ইসফাহানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্র এসব হামলা চালায়।

ইরান এর জবাবে পাল্টা হুশিয়ারি দিয়ে এসেছে। ধারনা করা হচ্ছে এই আক্রমনের ফলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ লেগে যাবার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। চীন এবং রাশিয়ার সহযোগিতা নিয়ে ইরান পাল্টা জবাব দিবে। যুক্তরাষ্ট্র আক্রমনের পর গত দু’দিনেও ইরান এর জবাব দেয়নি। আর তাই প্রশ্ন জেগেছে ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় রাশিয়ার ভূমিকা নিয়ে। তবে গত দু’দিনেই এটাই পরিস্কার যে রাশিয়া এই যুদ্ধে বেশ কৌশল অবলম্বন করছে। ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত থাকাতেই শুধু যুক্ত না হওয়ার কারণ নয়, ইসরায়েলের সিংহভাগই হচ্ছে রাশিয়ার ভাষায় কথা বলে থাকেন। এমন কি সিংহভাগ লোকই বৃহত্তর রাশিয়া থেকে আগত।   তবে সোমবার ইরান-রাশিয়ার বৈঠকে সব কিছু পরিস্কার হয়ে যাবে।

সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে সোমবার এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হবে বলে ক্রেমলিন নিশ্চিত করেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান হয়তো এখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করছে এবং সেই প্রক্রিয়ায় পুতিনকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে যুক্ত করতে চায়।

রাশিয়া এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের ইরানে পরমাণু স্থাপনাগুলোতে হামলা নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ হামলার কঠোর নিন্দা জানিয়েছে।

প্রেসিডেন্ট পুতিন আগেই পরিষ্কার করে বলেছেন, রাশিয়া এই সংঘাতে সামরিকভাবে জড়াবে না, কারণ তারা ইতোমধ্যেই ইউক্রেনে নিজস্ব সামরিক অভিযান চালাচ্ছে। তার মতে, ইরান-ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্রের এই উত্তেজনার কোনো সামরিক সমাধান নেই।

রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরেই ইরানের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক রক্ষা করে চলেছে। সাম্প্রতিক সংঘর্ষ শুরুর পরও রাশিয়া ইরানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, তবে ইসরায়েল নিয়ে খুব সতর্ক ও সংযত ভাষায় কথা বলছে।

এর কারণ, ইসরায়েলে ১৫ লাখেরও বেশি রুশভাষী মানুষ বাস করেন, যাদের অনেকে রাশিয়া বা সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে এসেছেন। পুতিন একবার বলেছিলেন— “ইসরায়েল প্রায় রুশভাষী একটি দেশ।”

এদিকে রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং বর্তমানে সিকিউরিটি কাউন্সিলের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানে হামলা চালিয়ে তেমন কিছু অর্জন করতে পারেনি।

তিনি আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প — যিনি এক সময় “শান্তির দূত” হিসেবে পরিচিত ছিলেন — এখন যুক্তরাষ্ট্রকে নতুন এক যুদ্ধে জড়িয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় রাশিয়ার কৌশলী অবস্থান

আপডেট সময় : ১১:৪২:২৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

যুদ্ধে জড়াবে না বলে শেষ যুক্তরাষ্ট্র ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। ইরানের তিনটি পরমানু কেন্দ্রে হামলা দিয়েই যুক্তরাষ্ট্র জড়িয়ে পড়ে।  রাতের আঁধারে দেশটির ফোর্দো, নাতাঞ্জ আর ইসফাহানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্র এসব হামলা চালায়।

ইরান এর জবাবে পাল্টা হুশিয়ারি দিয়ে এসেছে। ধারনা করা হচ্ছে এই আক্রমনের ফলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ লেগে যাবার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। চীন এবং রাশিয়ার সহযোগিতা নিয়ে ইরান পাল্টা জবাব দিবে। যুক্তরাষ্ট্র আক্রমনের পর গত দু’দিনেও ইরান এর জবাব দেয়নি। আর তাই প্রশ্ন জেগেছে ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় রাশিয়ার ভূমিকা নিয়ে। তবে গত দু’দিনেই এটাই পরিস্কার যে রাশিয়া এই যুদ্ধে বেশ কৌশল অবলম্বন করছে। ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত থাকাতেই শুধু যুক্ত না হওয়ার কারণ নয়, ইসরায়েলের সিংহভাগই হচ্ছে রাশিয়ার ভাষায় কথা বলে থাকেন। এমন কি সিংহভাগ লোকই বৃহত্তর রাশিয়া থেকে আগত।   তবে সোমবার ইরান-রাশিয়ার বৈঠকে সব কিছু পরিস্কার হয়ে যাবে।

সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে সোমবার এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হবে বলে ক্রেমলিন নিশ্চিত করেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান হয়তো এখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করছে এবং সেই প্রক্রিয়ায় পুতিনকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে যুক্ত করতে চায়।

রাশিয়া এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের ইরানে পরমাণু স্থাপনাগুলোতে হামলা নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ হামলার কঠোর নিন্দা জানিয়েছে।

প্রেসিডেন্ট পুতিন আগেই পরিষ্কার করে বলেছেন, রাশিয়া এই সংঘাতে সামরিকভাবে জড়াবে না, কারণ তারা ইতোমধ্যেই ইউক্রেনে নিজস্ব সামরিক অভিযান চালাচ্ছে। তার মতে, ইরান-ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্রের এই উত্তেজনার কোনো সামরিক সমাধান নেই।

রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরেই ইরানের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক রক্ষা করে চলেছে। সাম্প্রতিক সংঘর্ষ শুরুর পরও রাশিয়া ইরানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, তবে ইসরায়েল নিয়ে খুব সতর্ক ও সংযত ভাষায় কথা বলছে।

এর কারণ, ইসরায়েলে ১৫ লাখেরও বেশি রুশভাষী মানুষ বাস করেন, যাদের অনেকে রাশিয়া বা সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে এসেছেন। পুতিন একবার বলেছিলেন— “ইসরায়েল প্রায় রুশভাষী একটি দেশ।”

এদিকে রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং বর্তমানে সিকিউরিটি কাউন্সিলের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানে হামলা চালিয়ে তেমন কিছু অর্জন করতে পারেনি।

তিনি আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প — যিনি এক সময় “শান্তির দূত” হিসেবে পরিচিত ছিলেন — এখন যুক্তরাষ্ট্রকে নতুন এক যুদ্ধে জড়িয়েছেন।