ধর্ষণ মামলার বাদীকেই কারাগারে বিয়ে করলেন গায়ক নোবেল

- আপডেট সময় : ০৩:২৪:৪২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫
- / ৪৭ বার পড়া হয়েছে
ইডেন মহিলা কলেজের সেই ছাত্রীকে বিয়ে করেছেন গায়ক মাইনুল আহসান নোবেল। যিনি গায়ক নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও নির্যাতনে বাদী হয়ে মামলা করেছিলেন। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) কারা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে নোবেল ও বাদী পাত্রী ইসরাত জাহান প্রিয়ার উপস্থিতিতে তাদের বিয়ে হয়। ঢাকা বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) মো. জাহাঙ্গীর কবির এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কারাগার সূত্রে আরও জানা যায়, বিয়ের সময় উপস্থিত ছিলেন উভয় পক্ষে সাক্ষী নাজমা হোসেন, সাবিহা তারিন, মো. খলিলুর রহমান, জনাব মো. সাদেক উল্লাহ ভূইয়া। এর আগে, গতকাল বুধবার ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে নোবেলের কাবিনমূলে বিয়ের ব্যবস্থা করার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন আদালত।
গত ১৯ মে নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেন ওই তরুণী। সেদিন রাতেই নোবেলকে ডেমরা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরের দিন জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই আছেন।
সেসময় ফেইসবুকে ছড়ানো একটি ভিডিওতে এক তরুণীকে মারধর করে হাত ধরে টেনেহিঁচড়ে সিঁড়ি দিয়ে নামিয়ে নিতে দেখা যায় নোবেলকে। কয়েকজন বাধা দিতে দেখা গেলেও তাকে থামানো যায়নি।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই তরুণীর সঙ্গে নোবেলের পরিচয়ের পর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নোবেল তার স্টুডিও দেখানোর কথা বলে মেয়েটিকে ডেমরায় তার বাসায় নিয়ে যান। সেখানে তাকে আটকে রাখেন, মোবাইল ফোন ও টাকা কেড়ে নেন। এরপর নোবেল তাকে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করেন। কথামতো না চললে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয়ও দেখান নোবেল।
অভিযোগে আরও বলা হয়, আটকে রাখার পর থেকে বাদীকে মারধর করা হয়। দুই-তিন জনের সহায়তায় বাদীকে চুল ধরে টেনেহিঁচড়ে একটি কক্ষে আটকে রাখেন নোবেল। ওই ঘটনার ভিডিও ছড়ালে বাদীর বাবা-মা তাকে চিনতে পারে। এরপর তার পরিবার পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে।
মামলা বা গ্রেপ্তার নোবেলের জন্য নতুন নয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিতর্কিত পোস্ট, মাদকাসক্তি আর স্ত্রীকে নির্যাতনের মত অভিযোগে বহুবারই এই তরুণ গায়ক সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন।
অগ্রিম টাকা নিয়ে গান গাইতে না যাওয়ার অভিযোগে ২০২৩ সালের ১৯ মে ঢাকার মতিঝিল থানায় নোবেলের বিরুদ্ধে মামলা করেন সাফায়েত ইসলাম নামে এক ব্যক্তি।
পরদিন গোয়েন্দা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের মাধ্যমে এক দিনের হেফাজতে নেয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে নেওয়ার পর জামিন পান নোবেল।
২০১৯ সালে ভারতের জি-বাংলা টিভির রিয়েলিটি শো ‘সা রে গা মা পা’তে অংশ নিয়ে তৃতীয় হয়ে আলোচনায় আসেন নোবেল। তবে নানা কর্মকাণ্ডে তাকে নিয়ে বিতর্কও বাড়তে থাকে।
২০২৩ সালেরই ২৬ এপ্রিল কুড়িগ্রামে গান পরিবেশনের সময় মঞ্চে নোবেলের ‘অসংলগ্ন আচরণে’ ক্ষুব্ধ হয়ে জুতা ও পানির বোতল ছোড়ে দর্শক। আর তাতে পণ্ড হয় ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজের ৫০ বছর পূর্তি ও সুর্বণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
তবে সম্প্রতি বিভিন্ন কনসার্ট ও গণমাধ্যমের অনুষ্ঠানে প্রায়ই উপস্থিত হয়ে নিজের ‘স্বাভাবিক’ জীবনে ফিরে আসার জানান দিচ্ছিলেন নোবেল। এর মধ্যেই নতুন অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়ে তাকে জেলে যেতে হয়।