ঢাকা ১০:০৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত থেমে নেই, চলছে কথার হুঙ্কার, আক্রমন-পাল্টা আক্রমন

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৮:৩৩:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫
  • / ৮৮ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার সংঘাত থেমে নেই। চলছে কথার লড়াই এবং আক্রমন ও পাল্টা আক্রমন। গত ছয়দিনের সংঘাতে ইরান ও ইসরায়েলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সাধারণ মানুষ দিক-বিদিক। আক্রমনটা প্রথমে ইসরায়েল থেকেই করা হয়েছে। পারমানবিক অস্ত্রের দোহাই দিয়ে তারা ইরানের বিভিন্ন স্থাপনায় আচমকা হামলা চালায়। ধ্বংস করে দেয়া হয় বিভিন্ন স্থাপনা। মেরে ফেলা হয় ইরানের বহু বিজ্ঞানী ও সামরিক কমান্ডারদের। যা কিনা আন্তর্জাতিক আদলতের দৃষ্টিতে চরম অপরাধ। যুদ্ধপরাধী আখ্যাও লাভ করেছেন ইসরায়েল প্রধানমন্ত্রী আকেজান্ডার নেতানিয়াহু। কিন্তু তিনি এবিষয়গুলোকে তোয়াক্কা করেন না। ইরানকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র আখ্যাদিয়ে তারা একের পর এক হামলা চালায়। এমন কি ইরানের প্রেসিডেন্ট আয়াতুল্লাহ খামেনীকেও হত্যার হুঙ্কার দেন। পাল্টা আক্রমনে ইরান ইসরায়েলে এ যাবতকালের ভয়াবহ মিসাইল হামলা চালায়। যা কিনা ইসরায়েলের বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন স্থাপনা তছনছ হয়ে যায়। ওই এক হামলায় নেতানিয়াহু অনেকটা দূর্বল হয়ে পড়েছেন বলে বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশ পায়।

যদিও ইরান প্রত্যাশা করছে আক্রমন বন্ধ করে ইসরায়েল আলোচনার টেবিলে বসবে। কিন্তু সে দিকে তারা কোন দৃষ্টিপাতই দিচ্ছে না। উল্টো ইরানকে আরও শক্তিশালী হামলার নির্দেশ দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

আল জাজিরার সূত্র মতে, ইরানের ‘সরকারি অবকাঠামোগুলোতে’ আরও শক্তিশালী হামলা চালানো নির্দেশ দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ। শুক্রবার (২০ জুন) এক বিবৃতিতে এই নির্দেশ দেন তিনি।
বিবৃতিতে ইসরায়েল কাৎজ বলেন, আমরা ইরান সরকারের প্রতিটি প্রতীক, মিলিশিয়া ও বিপ্লবী গার্ডের মতো ‘ক্ষমতার প্রতীক ও দমনমুলক ব্যবস্থাগুলোর’ ওপর আঘাত হানবো।

তার এই ঘোষণা ইসরায়েলের যুদ্ধনীতিতে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। শুরুতে ইসরায়েল শুধু ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় সীমিত হামলা চালানোর পরিকল্পনা করলেও, এখন স্পষ্টভাবে ইরানের ক্ষমতার ভিত্তিতে আঘাত হানার পরিকল্পনা করছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন প্রকাশ্য ‘রেজিম চেঞ্জ’ বা ‘ক্ষমতার পালাবদল’ ঘটানোর উদ্দেশ্যে হামলার ঘোষণা ইরানকে আরও আগ্রাসী প্রতিক্রিয়ায় প্ররোচিত করতে পারে ও এই যুদ্ধ পুরো মধ্যপ্রাচ্যে বিস্তৃত হতে পারে।

অন্যদিকে ইসরায়েল হামলা বন্ধ না করলে আরও কঠোর জবাব দেয়ার হুঙ্কার দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেকশিয়ান। তিনি বলেন, আমরা সবসময় শান্তি ও স্থিতিশীলতার পক্ষে ছিলাম। কিন্তু বর্তমানে স্থায়ী শান্তি শুধু তখনই সম্ভব, যদি জায়োনিস্ট শত্রু (ইসরায়েল) তার আগ্রাসন বন্ধ করে ও সন্ত্রাসী উসকানির সমাপ্তিতে দৃঢ় নিশ্চয়তা দেয়। আমরা সংঘাত চাই না, তবে জবাবদিহিতা ছাড়া শান্তি অসম্ভব।

পেজেশকিয়ানের এই বক্তব্যের পরেই ইরানের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলো লক্ষ্য করে আরও শক্তিশালী হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ।

বিবৃতিতে ইসরায়েল কাৎজ বলেন, আমরা ইরান সরকারের প্রতিটি প্রতীক, মিলিশিয়া ও বিপ্লবী গার্ডের মতো ‘ক্ষমতার প্রতীক ও দমনমুলক ব্যবস্থাগুলোর’ ওপর আঘাত হানবো।
তার এই ঘোষণা ইসরায়েলের যুদ্ধনীতিতে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। শুরুতে ইসরায়েল শুধু ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় সীমিত হামলা চালানোর পরিকল্পনা করলেও, এখন স্পষ্টভাবে ইরানের ক্ষমতার ভিত্তিতে আঘাত হানার পরিকল্পনা করছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) কাৎজ বলেছিলেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যা করাটাই এখন আমাদের মূল লক্ষ্য।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন প্রকাশ্য ‘রেজিম চেঞ্জ’ বা ‘ক্ষমতার পালাবদল’ ঘটানোর উদ্দেশ্যে হামলার ঘোষণা ইরানকে আরও আগ্রাসী প্রতিক্রিয়ায় প্ররোচিত করতে পারে ও এই যুদ্ধ পুরো মধ্যপ্রাচ্যে বিস্তৃত হতে পারে।

বিসিবি তথ্যে বলা হয়েছে ইসরায়েল যদি আগ্রাসন বন্ধ না করে তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কোন আলোচনা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আইআরএনএকে তিনি এ কথা বলেন।

আরাঘচি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আলোচনা চায় ও বেশ কয়েকবার বার্তা পাঠিয়েছে। কিন্তু আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি যে, আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আলোচনার কোনো সুযোগ নেই। এই অপরাধের অংশীদার হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের কোনো আলোচনা নেই।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত থেমে নেই, চলছে কথার হুঙ্কার, আক্রমন-পাল্টা আক্রমন

আপডেট সময় : ০৮:৩৩:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার সংঘাত থেমে নেই। চলছে কথার লড়াই এবং আক্রমন ও পাল্টা আক্রমন। গত ছয়দিনের সংঘাতে ইরান ও ইসরায়েলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সাধারণ মানুষ দিক-বিদিক। আক্রমনটা প্রথমে ইসরায়েল থেকেই করা হয়েছে। পারমানবিক অস্ত্রের দোহাই দিয়ে তারা ইরানের বিভিন্ন স্থাপনায় আচমকা হামলা চালায়। ধ্বংস করে দেয়া হয় বিভিন্ন স্থাপনা। মেরে ফেলা হয় ইরানের বহু বিজ্ঞানী ও সামরিক কমান্ডারদের। যা কিনা আন্তর্জাতিক আদলতের দৃষ্টিতে চরম অপরাধ। যুদ্ধপরাধী আখ্যাও লাভ করেছেন ইসরায়েল প্রধানমন্ত্রী আকেজান্ডার নেতানিয়াহু। কিন্তু তিনি এবিষয়গুলোকে তোয়াক্কা করেন না। ইরানকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র আখ্যাদিয়ে তারা একের পর এক হামলা চালায়। এমন কি ইরানের প্রেসিডেন্ট আয়াতুল্লাহ খামেনীকেও হত্যার হুঙ্কার দেন। পাল্টা আক্রমনে ইরান ইসরায়েলে এ যাবতকালের ভয়াবহ মিসাইল হামলা চালায়। যা কিনা ইসরায়েলের বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন স্থাপনা তছনছ হয়ে যায়। ওই এক হামলায় নেতানিয়াহু অনেকটা দূর্বল হয়ে পড়েছেন বলে বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশ পায়।

যদিও ইরান প্রত্যাশা করছে আক্রমন বন্ধ করে ইসরায়েল আলোচনার টেবিলে বসবে। কিন্তু সে দিকে তারা কোন দৃষ্টিপাতই দিচ্ছে না। উল্টো ইরানকে আরও শক্তিশালী হামলার নির্দেশ দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

আল জাজিরার সূত্র মতে, ইরানের ‘সরকারি অবকাঠামোগুলোতে’ আরও শক্তিশালী হামলা চালানো নির্দেশ দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ। শুক্রবার (২০ জুন) এক বিবৃতিতে এই নির্দেশ দেন তিনি।
বিবৃতিতে ইসরায়েল কাৎজ বলেন, আমরা ইরান সরকারের প্রতিটি প্রতীক, মিলিশিয়া ও বিপ্লবী গার্ডের মতো ‘ক্ষমতার প্রতীক ও দমনমুলক ব্যবস্থাগুলোর’ ওপর আঘাত হানবো।

তার এই ঘোষণা ইসরায়েলের যুদ্ধনীতিতে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। শুরুতে ইসরায়েল শুধু ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় সীমিত হামলা চালানোর পরিকল্পনা করলেও, এখন স্পষ্টভাবে ইরানের ক্ষমতার ভিত্তিতে আঘাত হানার পরিকল্পনা করছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন প্রকাশ্য ‘রেজিম চেঞ্জ’ বা ‘ক্ষমতার পালাবদল’ ঘটানোর উদ্দেশ্যে হামলার ঘোষণা ইরানকে আরও আগ্রাসী প্রতিক্রিয়ায় প্ররোচিত করতে পারে ও এই যুদ্ধ পুরো মধ্যপ্রাচ্যে বিস্তৃত হতে পারে।

অন্যদিকে ইসরায়েল হামলা বন্ধ না করলে আরও কঠোর জবাব দেয়ার হুঙ্কার দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেকশিয়ান। তিনি বলেন, আমরা সবসময় শান্তি ও স্থিতিশীলতার পক্ষে ছিলাম। কিন্তু বর্তমানে স্থায়ী শান্তি শুধু তখনই সম্ভব, যদি জায়োনিস্ট শত্রু (ইসরায়েল) তার আগ্রাসন বন্ধ করে ও সন্ত্রাসী উসকানির সমাপ্তিতে দৃঢ় নিশ্চয়তা দেয়। আমরা সংঘাত চাই না, তবে জবাবদিহিতা ছাড়া শান্তি অসম্ভব।

পেজেশকিয়ানের এই বক্তব্যের পরেই ইরানের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলো লক্ষ্য করে আরও শক্তিশালী হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ।

বিবৃতিতে ইসরায়েল কাৎজ বলেন, আমরা ইরান সরকারের প্রতিটি প্রতীক, মিলিশিয়া ও বিপ্লবী গার্ডের মতো ‘ক্ষমতার প্রতীক ও দমনমুলক ব্যবস্থাগুলোর’ ওপর আঘাত হানবো।
তার এই ঘোষণা ইসরায়েলের যুদ্ধনীতিতে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। শুরুতে ইসরায়েল শুধু ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় সীমিত হামলা চালানোর পরিকল্পনা করলেও, এখন স্পষ্টভাবে ইরানের ক্ষমতার ভিত্তিতে আঘাত হানার পরিকল্পনা করছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) কাৎজ বলেছিলেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যা করাটাই এখন আমাদের মূল লক্ষ্য।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন প্রকাশ্য ‘রেজিম চেঞ্জ’ বা ‘ক্ষমতার পালাবদল’ ঘটানোর উদ্দেশ্যে হামলার ঘোষণা ইরানকে আরও আগ্রাসী প্রতিক্রিয়ায় প্ররোচিত করতে পারে ও এই যুদ্ধ পুরো মধ্যপ্রাচ্যে বিস্তৃত হতে পারে।

বিসিবি তথ্যে বলা হয়েছে ইসরায়েল যদি আগ্রাসন বন্ধ না করে তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কোন আলোচনা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আইআরএনএকে তিনি এ কথা বলেন।

আরাঘচি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আলোচনা চায় ও বেশ কয়েকবার বার্তা পাঠিয়েছে। কিন্তু আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি যে, আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আলোচনার কোনো সুযোগ নেই। এই অপরাধের অংশীদার হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের কোনো আলোচনা নেই।