ঢাকা ০২:২৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

কুষ্টিয়ায় নওফেল ও সবুরের নকল সিগারেটের কারখানা, হাজার হাজার কোটি টাকার কর ফাঁকি

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৫:৪১:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
  • / ৪২ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নকল করে হুবুহু বিদেশী সিগারেট তৈরি করে বাজারজাত করা হচ্ছে। কুষ্টিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে রয়েছে এ সকল কারখানা। নতুনে এই কৌশলে ব্যবসা করছেন আওয়ামী লীগ নেতাদের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। তামাক ব্যবসার আড়ালে এই সিন্ডিকেট জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে কারখানা নির্মাণ করে তৈরি করছে নামিদামি ব্র্যান্ডের নকল সিগারেট।

এ সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে রয়েছেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও তার ব্যবসায়িক পার্টনার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সবুর লিটন। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পালিয়ে গেছেন নওফেল ও লিটন। আত্মগোপনে থেকেও তারা নানা কৌশল টিকিয়ে রেখেছেন নকল সিগারেট তৈরির ব্যবসা। পরিবর্তন করেছেন কোম্পানির নাম। অভিযোগ উঠেছে, আওয়ামী লীগের পরিবর্তে এই অবৈধ ব্যবসার শেল্টার দিচ্ছেন বিএনপি নেতারা। স্থানীয় বিএনপি নেতাদের ছত্রছায়ায় কুষ্টিয়ার তিন উপজেলায় নওফেল ও লিটন সিন্ডিকেট নতুন কৌশলে একাধিক অফিস ও কারখানা চালু করেছে। এমনকি তাদের কোম্পানিতে বিএনপির একাধিক নেতাকর্মীদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলেও একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে বিদেশি নামিদামি কোম্পানির নকল সিগারেট তৈরি ও নকল ব্যান্ডরোল লাগিয়ে বাজারে সরবরাহ করে আসছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র আব্দুস সবুর লিটন। তিনি চট্টগ্রামের রামপুর ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং রামপুর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও খালিশপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। তার এই অবৈধ ব্যবসার সারথি সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

অভিযোগ রয়েছে, বিজয় ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো ও তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকোর মাধ্যমে নওফেল ও লিটন রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে লোপাট করেছেন হাজার হাজার কোটি টাকা। ৫ আগস্টের পর ঢাকায় তাদের একাধিক কারখানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ এই রাজস্ব ফাঁকির প্রামাণ পায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর সাবেক মন্ত্রী নওফেল ও সাবেক প্যানেল মেয়র লিটন পালিয়ে গেলেও কুষ্টিয়া অঞ্চলে থেমে নেই তাদের অবৈধ ব্যবসা। পরিবর্তিত পেক্ষাপটে বিএনপি নেতাদের ছত্রছায়ায় আবারো বেপরোয়া আওয়ামীপন্থি এই সিন্ডিকেট। রাতারাতি পরিবর্তন করা হয়েছে বিজয় ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো ও তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকোর নাম। ‘তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো’ হয়ে গেছে ‘জেনুইন ট্যোবাকো’। অফিস-কারখানায় ঝুলানো হয়েছে নতুন নামের সাইন বোর্ড। তবে নতুন নামে কার্যক্রম শুরু হলেও একই অফিসে একই কর্মকর্তারা কর্মরত রয়েছেন। কুষ্টিয়ায় অবস্থিত অফিস ও কারখানাগুলোর নামও পরিবর্তন করা হয়েছে।

জেনুইন লিফ টোব্যাকো কোম্পানির একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাথে কথা বলে এ সব তথ্য জানা গেছে। কেউ-ই নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি। তারা বলেন, বর্তমানে কুষ্টিয়া অঞ্চলে জেনুইন লিফ টোব্যাকো কোম্পানির সব কিছু দেখভাল করেন তিনজন কর্মকর্তা। তারা হলেন, সিইও জাহিদ, জিএম বেলাল হোসেন ও নির্বাহী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান। এ অঞ্চলে নওফেল সিন্ডিকেটের সকল কার্যক্রম পরিচালনা করছেন এই তিন কর্মকর্তা।

কুষ্টিয়ার ত্রিমোহনী এলাকায় জেনুইন লিফ টোব্যাকোর অফিসে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, অফিসে কোনো কর্মকর্তা নেই। নিরাপত্তাকর্মীসহ কয়েকজন কর্মচারী রয়েছেন। তারা জানান, বেশ কিছু দিন কোনো স্যার অফিসে আসছেন না। এর বেশি কিছু তারা বলতে রাজি হননি। তবে সবার চোখে-মুখে ছিল ভয় ও আতঙ্কের ছাপ।

স্থানীয় যুবক মিলনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ভবনটি ভাড়া নিয়ে কয়েক বছর ধরে অফিসের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো নামে একটি তামাক কোম্পানি। হঠাৎ ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকোর সাইন বোর্ড নামিয়ে জেনুইন লিফ টোব্যাকোর সাইন বোর্ড টাঙানো হয়। নাম পরিবর্তন হলেও অফিসের আসবারপত্র পরিবর্তন করা হয়নি এবং যারা এখানে কর্মরত ছিলেন তারাই রয়েছে।

স্থানীয় আরও একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা যায়, ৫ আগস্টের আগে কোম্পানির নাম ছিল তারা টোব্যাকো। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে কোম্পানির নাম পরিবর্তন করা হলেও কর্মকর্তা কর্মচারীদের পরিবর্তন করা হয়নি। এই কোম্পানির পুরোনো কর্মকর্তা বেলাল হোসেন সব কিছু দেখভাল করেন।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর, মিরপুর ও ভেড়ামারা উপজেলায় একাধিক গোপন কারখানায় নামিদামি ব্যান্ডের নকল সিগারেট তৈরি করছে ‘জেনুইন টোব্যাকো’। দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুন্ডি ইউনিয়নের প্রতাপপুর এলাকায় এবং আড়িয়া ইউনিয়নের বড়গাংদিয়ার জহুরাগঞ্জ মাঠে মধ্যে নকল সিগারেট তৈরির কারখানা স্থাপন করেছেন সাবেক মন্ত্রী নওফেলর ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়িক পার্টনার লিটন। উপজেলা বিএনপির দুই প্রভাবশালী নেতার ছত্রছায়ায় কারখানার মধ্যে অনেকটা প্রকাশ্যে তৈরি করা হচ্ছে নকল সিগারেট। বিএনপি নেতাদের হুমকিতে এসব বিষয়ে স্থানীয় কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার ১২ মাইল নামক স্থানেও রয়েছে ‘জেনুইন টোব্যাকো’ কোম্পানির কারখানা। কুষ্টিয়া ত্রিমোহনী এলাকায় মনছুর ভবন ভাড়া নিয়ে তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকোর অফিস করা হয়েছিল। কিন্তু ৫ আগস্টের হঠাৎ ওই সাইন বোর্ড নামিয়ে জেনুইন টোব্যাকোর সাইন বোর্ড ঝুলানো হয়েছে।

এদিকে শহরের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে বিলাসবহুল সাফিনা টাওয়ারে গ্যারেজসহ ৭টি ইউনিট ভাড়া নেয় জেনুইন টোব্যাকো কোম্পানি। বিদেশি বায়ারদের রাখার নামে এখানে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চলে। শহরের ছয় রাস্তার মোড়সহ একাধিক স্থানে আলিশান অফিস রয়েছে নকল সিগারেট সিন্ডিকেটের। এসব অফিসে রাজনৈতিক দলের নেতাসহ জেলার প্রভাবশালীদের গোপনে যাতায়াত রয়েছে। এসব অফিস থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা হয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থাকে। যার কারণে নির্বিঘ্নে গোল্ডলিফ, বেনসনসহ বিশ্বের নামিদামি ব্র্যান্ডের সিগারেট তৈরি করে বাজারজাত করছে চক্রটি। ৫ আগস্টের আগে একইভাবে আওয়ামী লীগ নেতাদের ম্যানেজ করে এই দুই কোম্পানি বিপুল পরিমাণ তামাক ক্রয় এবং গোল্ডলিফ ও বেনসনের মতো নামিদামি ব্র্যান্ডের সিগারেট তৈরি করেছে চক্রটি।

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান হাবলু মোল্লা বলেন, তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকোর সাথে আমার কোন ব্যবসায়িক সম্পর্ক নেই। তবে আমার জমিতে তারা ইন্টারন্যাশনাল ওয়্যার হাউজ নির্মাণ করে তামাক ক্রয় করে। আমি নিজেও তাদের কাছে তামাক বিক্রয় করি। পরে মজুতকৃত তামাক তারা বিদেশে রপ্তানি করে। তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকোর নাম পরিবর্তন করে কিছুদিন আগে জেনুইন টোব্যাকো কোম্পানি নামকরণ করা হয়েছে বলেও স্বীকার করেন এই বিএনপি নেতা।

অন্যদিকে তামাক ব্যবসার আড়ালে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতা ও তাদের সম্পদ রক্ষায় মাঠে নেমেছে নওফেল-লিটন সিন্ডিকেট। শক্তিশালী এ সিন্ডিকেটের হেফাজতে রয়েছে সাবেক এমপি ও মন্ত্রীদের একাধিক নামিদামি গাড়ি। গত ১০ জুন রাতে কুষ্টিয়া শহরের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে সাফিনা টাওয়ারের গ্যারেজ থেকে ভারতে নিহত সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের কোটি টাকা দামের ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো ব্র্যান্ডের গাড়ি উদ্ধার করে পুলিশ। ওই গ্যারেজটি ভাড়া নিয়েছিল আব্দুস সবুর লিটনের মালিকানাধীন তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো। টাওয়ারের মালিকের সাথে ভাড়ার চুক্তিপত্রে জেনুইন টোব্যাকো কোম্পানির পক্ষে স্বাক্ষর করেন মেহেরপুর জেলার গাংনী পৌরসভার বাঁশবাড়িয়া দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান খোকন। আনারের গাড়িটি মোস্তাফিজুর রহমানের ভাড়া করা পার্কিং স্পেসেই ছিল।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই মোস্তাফিজুর রহমান গাংনী পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি। গাড়িটি নওফেলের মাধ্যমে আব্দুস সবুর লিটনের মালিকানাধীন জেনুইন টোব্যাকো কোম্পানির লোকজন এখানে নিয়ে এসেছে । ঘটনার পর থেকে কোম্পানির সিইও জাহিদ, জিএম বেলাল হোসেন ও নির্বাহী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান গা ঢাকা দিয়েছেন। তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি। কর্মকর্তা সকলের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। তাদের অফিসে গিয়ে কেয়ারটেকার ও দারোয়ানকে ছাড়া কাউকে পাওয়া যায়নি।

তবে জেনুইন লিফ টোব্যাকো কোম্পাানর পাবলিক রিলেশন অফিসার এ এম সালেহীন তৌহিদ বলেন, কোম্পানির বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। আমি নতুন যোগদান করেছি, কিছুই জানি না। স্যাররা কোথায় আছে তাও বলতে পারবো না।

পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সামনের ভবনের নিরাপত্তাকর্মী আশিকুর রহমান বলেন, গত বছরের ১ জুলাই মোস্তাফিজুর রহমান নামে এক ব্যক্তি ভবনের তিনটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। পরে আরও চারটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। তিনি তামাক কোম্পানিতে বড় পদে রয়েছেন।

দৌলতপুরের বিএনপি নেতা ও তামাক ব্যবসায়ী আসাদুজ্জান আসাদ বলেন, আমি তারা কোম্পানির সাথে কোন ব্যবসা করি না। গত বছর করেছিলাম। কিন্তু লেনদেন ভালো না হওয়ায় এবার ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছি। এ বছর বিএনপির অন্য নেতা তাদের সাথে ব্যবসা করছেন।

তামাক ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের অভিযোগ- কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের প্রতাবপুর এলাকায় ভারগন টোব্যাকোর আড়ালে নকল গোল্ডলিফ ও বেনসন সিগারেট তৈরি করা হয়৷ বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এমপি ও নেতাদের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে বছরের পর বছর ধরে নকল সিগারেট তৈরি করে বাজারজাত করে আসছে ভারগন টোব্যাকোর স্বত্বাধিকারী রাইসুল হক পবন। সবাইকে ম্যানেজ করে বেশ কয়েক বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ভরপুর নকল সিগারেট তৈরি ও বাজারজাত করে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। বিভিন্ন জায়গায় গড়ে তুলেছেন নকল সিগারেট তৈরির শক্তিশালী সিন্ডিকেট। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দৌলতপুরের আওয়ামী লীগের নেতাদের ছত্রছায়ায় নকল সিগারেট তৈরি করেছেন।

৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পরও আওয়ামী লীগের দোসর পবনের নকল সিগারেট তৈরির কারখানা বন্ধ হয়নি। কোটি টাকার বিনিময়ে উপজেলার প্রভাবশালী বিএনপি নেতাদের ম্যানেজ করেছেন। বর্তমানে তাদের ছত্রছায়ায় নকল সিগারেট তৈরি করা হয়। অবৈধভাবে নকল সিগারেট তৈরির মাধ্যমে দেশ-বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন পবন। অবৈধ সিগারেট উৎপাদনের দায়ে বেশ কয়েকবার এ কোম্পানির নামে মামলা হয়। এছাড়াও একাধিকবার অভিযান চালিয়ে নকল সিগারেট এবং ব্যান্ডরোল উদ্ধার করা হয়। এছাড়া কোম্পানির কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পবন আগে আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রী-নেতাদের হেফাজতে ছিলেন। বর্তমানে বিএনপির প্রভাবশালী নেতার হেফাজতে রয়েছেন। সব কিছু ম্যানেজ করে নির্বিঘ্নে নকল সিগারেটের কারবার চালিয়ে যাচ্ছেন পবন।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ভারগন টোব্যাকোর স্বত্বাধিকারী রাইসুল হক পবনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেন নি।
কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) ফয়সাল মাহমুদ বলেন, এ ধরনের কোনো সিন্ডিকেটের সুনির্দিষ্ট তথ্য পুলিশের কাছে নেই। তবে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে কাজ করছে পুলিশ। গাড়িটি কারা কীভাবে এখানে এনেছে, সব কিছু মাথায় নিয়েই পুলিশ কাজ করছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

কুষ্টিয়ায় নওফেল ও সবুরের নকল সিগারেটের কারখানা, হাজার হাজার কোটি টাকার কর ফাঁকি

আপডেট সময় : ০৫:৪১:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫

নকল করে হুবুহু বিদেশী সিগারেট তৈরি করে বাজারজাত করা হচ্ছে। কুষ্টিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে রয়েছে এ সকল কারখানা। নতুনে এই কৌশলে ব্যবসা করছেন আওয়ামী লীগ নেতাদের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। তামাক ব্যবসার আড়ালে এই সিন্ডিকেট জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে কারখানা নির্মাণ করে তৈরি করছে নামিদামি ব্র্যান্ডের নকল সিগারেট।

এ সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে রয়েছেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও তার ব্যবসায়িক পার্টনার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সবুর লিটন। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পালিয়ে গেছেন নওফেল ও লিটন। আত্মগোপনে থেকেও তারা নানা কৌশল টিকিয়ে রেখেছেন নকল সিগারেট তৈরির ব্যবসা। পরিবর্তন করেছেন কোম্পানির নাম। অভিযোগ উঠেছে, আওয়ামী লীগের পরিবর্তে এই অবৈধ ব্যবসার শেল্টার দিচ্ছেন বিএনপি নেতারা। স্থানীয় বিএনপি নেতাদের ছত্রছায়ায় কুষ্টিয়ার তিন উপজেলায় নওফেল ও লিটন সিন্ডিকেট নতুন কৌশলে একাধিক অফিস ও কারখানা চালু করেছে। এমনকি তাদের কোম্পানিতে বিএনপির একাধিক নেতাকর্মীদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলেও একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে বিদেশি নামিদামি কোম্পানির নকল সিগারেট তৈরি ও নকল ব্যান্ডরোল লাগিয়ে বাজারে সরবরাহ করে আসছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র আব্দুস সবুর লিটন। তিনি চট্টগ্রামের রামপুর ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং রামপুর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও খালিশপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। তার এই অবৈধ ব্যবসার সারথি সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

অভিযোগ রয়েছে, বিজয় ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো ও তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকোর মাধ্যমে নওফেল ও লিটন রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে লোপাট করেছেন হাজার হাজার কোটি টাকা। ৫ আগস্টের পর ঢাকায় তাদের একাধিক কারখানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ এই রাজস্ব ফাঁকির প্রামাণ পায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর সাবেক মন্ত্রী নওফেল ও সাবেক প্যানেল মেয়র লিটন পালিয়ে গেলেও কুষ্টিয়া অঞ্চলে থেমে নেই তাদের অবৈধ ব্যবসা। পরিবর্তিত পেক্ষাপটে বিএনপি নেতাদের ছত্রছায়ায় আবারো বেপরোয়া আওয়ামীপন্থি এই সিন্ডিকেট। রাতারাতি পরিবর্তন করা হয়েছে বিজয় ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো ও তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকোর নাম। ‘তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো’ হয়ে গেছে ‘জেনুইন ট্যোবাকো’। অফিস-কারখানায় ঝুলানো হয়েছে নতুন নামের সাইন বোর্ড। তবে নতুন নামে কার্যক্রম শুরু হলেও একই অফিসে একই কর্মকর্তারা কর্মরত রয়েছেন। কুষ্টিয়ায় অবস্থিত অফিস ও কারখানাগুলোর নামও পরিবর্তন করা হয়েছে।

জেনুইন লিফ টোব্যাকো কোম্পানির একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাথে কথা বলে এ সব তথ্য জানা গেছে। কেউ-ই নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি। তারা বলেন, বর্তমানে কুষ্টিয়া অঞ্চলে জেনুইন লিফ টোব্যাকো কোম্পানির সব কিছু দেখভাল করেন তিনজন কর্মকর্তা। তারা হলেন, সিইও জাহিদ, জিএম বেলাল হোসেন ও নির্বাহী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান। এ অঞ্চলে নওফেল সিন্ডিকেটের সকল কার্যক্রম পরিচালনা করছেন এই তিন কর্মকর্তা।

কুষ্টিয়ার ত্রিমোহনী এলাকায় জেনুইন লিফ টোব্যাকোর অফিসে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, অফিসে কোনো কর্মকর্তা নেই। নিরাপত্তাকর্মীসহ কয়েকজন কর্মচারী রয়েছেন। তারা জানান, বেশ কিছু দিন কোনো স্যার অফিসে আসছেন না। এর বেশি কিছু তারা বলতে রাজি হননি। তবে সবার চোখে-মুখে ছিল ভয় ও আতঙ্কের ছাপ।

স্থানীয় যুবক মিলনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ভবনটি ভাড়া নিয়ে কয়েক বছর ধরে অফিসের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো নামে একটি তামাক কোম্পানি। হঠাৎ ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকোর সাইন বোর্ড নামিয়ে জেনুইন লিফ টোব্যাকোর সাইন বোর্ড টাঙানো হয়। নাম পরিবর্তন হলেও অফিসের আসবারপত্র পরিবর্তন করা হয়নি এবং যারা এখানে কর্মরত ছিলেন তারাই রয়েছে।

স্থানীয় আরও একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা যায়, ৫ আগস্টের আগে কোম্পানির নাম ছিল তারা টোব্যাকো। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে কোম্পানির নাম পরিবর্তন করা হলেও কর্মকর্তা কর্মচারীদের পরিবর্তন করা হয়নি। এই কোম্পানির পুরোনো কর্মকর্তা বেলাল হোসেন সব কিছু দেখভাল করেন।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর, মিরপুর ও ভেড়ামারা উপজেলায় একাধিক গোপন কারখানায় নামিদামি ব্যান্ডের নকল সিগারেট তৈরি করছে ‘জেনুইন টোব্যাকো’। দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুন্ডি ইউনিয়নের প্রতাপপুর এলাকায় এবং আড়িয়া ইউনিয়নের বড়গাংদিয়ার জহুরাগঞ্জ মাঠে মধ্যে নকল সিগারেট তৈরির কারখানা স্থাপন করেছেন সাবেক মন্ত্রী নওফেলর ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়িক পার্টনার লিটন। উপজেলা বিএনপির দুই প্রভাবশালী নেতার ছত্রছায়ায় কারখানার মধ্যে অনেকটা প্রকাশ্যে তৈরি করা হচ্ছে নকল সিগারেট। বিএনপি নেতাদের হুমকিতে এসব বিষয়ে স্থানীয় কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার ১২ মাইল নামক স্থানেও রয়েছে ‘জেনুইন টোব্যাকো’ কোম্পানির কারখানা। কুষ্টিয়া ত্রিমোহনী এলাকায় মনছুর ভবন ভাড়া নিয়ে তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকোর অফিস করা হয়েছিল। কিন্তু ৫ আগস্টের হঠাৎ ওই সাইন বোর্ড নামিয়ে জেনুইন টোব্যাকোর সাইন বোর্ড ঝুলানো হয়েছে।

এদিকে শহরের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে বিলাসবহুল সাফিনা টাওয়ারে গ্যারেজসহ ৭টি ইউনিট ভাড়া নেয় জেনুইন টোব্যাকো কোম্পানি। বিদেশি বায়ারদের রাখার নামে এখানে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চলে। শহরের ছয় রাস্তার মোড়সহ একাধিক স্থানে আলিশান অফিস রয়েছে নকল সিগারেট সিন্ডিকেটের। এসব অফিসে রাজনৈতিক দলের নেতাসহ জেলার প্রভাবশালীদের গোপনে যাতায়াত রয়েছে। এসব অফিস থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা হয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থাকে। যার কারণে নির্বিঘ্নে গোল্ডলিফ, বেনসনসহ বিশ্বের নামিদামি ব্র্যান্ডের সিগারেট তৈরি করে বাজারজাত করছে চক্রটি। ৫ আগস্টের আগে একইভাবে আওয়ামী লীগ নেতাদের ম্যানেজ করে এই দুই কোম্পানি বিপুল পরিমাণ তামাক ক্রয় এবং গোল্ডলিফ ও বেনসনের মতো নামিদামি ব্র্যান্ডের সিগারেট তৈরি করেছে চক্রটি।

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান হাবলু মোল্লা বলেন, তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকোর সাথে আমার কোন ব্যবসায়িক সম্পর্ক নেই। তবে আমার জমিতে তারা ইন্টারন্যাশনাল ওয়্যার হাউজ নির্মাণ করে তামাক ক্রয় করে। আমি নিজেও তাদের কাছে তামাক বিক্রয় করি। পরে মজুতকৃত তামাক তারা বিদেশে রপ্তানি করে। তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকোর নাম পরিবর্তন করে কিছুদিন আগে জেনুইন টোব্যাকো কোম্পানি নামকরণ করা হয়েছে বলেও স্বীকার করেন এই বিএনপি নেতা।

অন্যদিকে তামাক ব্যবসার আড়ালে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতা ও তাদের সম্পদ রক্ষায় মাঠে নেমেছে নওফেল-লিটন সিন্ডিকেট। শক্তিশালী এ সিন্ডিকেটের হেফাজতে রয়েছে সাবেক এমপি ও মন্ত্রীদের একাধিক নামিদামি গাড়ি। গত ১০ জুন রাতে কুষ্টিয়া শহরের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে সাফিনা টাওয়ারের গ্যারেজ থেকে ভারতে নিহত সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের কোটি টাকা দামের ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো ব্র্যান্ডের গাড়ি উদ্ধার করে পুলিশ। ওই গ্যারেজটি ভাড়া নিয়েছিল আব্দুস সবুর লিটনের মালিকানাধীন তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো। টাওয়ারের মালিকের সাথে ভাড়ার চুক্তিপত্রে জেনুইন টোব্যাকো কোম্পানির পক্ষে স্বাক্ষর করেন মেহেরপুর জেলার গাংনী পৌরসভার বাঁশবাড়িয়া দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান খোকন। আনারের গাড়িটি মোস্তাফিজুর রহমানের ভাড়া করা পার্কিং স্পেসেই ছিল।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই মোস্তাফিজুর রহমান গাংনী পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি। গাড়িটি নওফেলের মাধ্যমে আব্দুস সবুর লিটনের মালিকানাধীন জেনুইন টোব্যাকো কোম্পানির লোকজন এখানে নিয়ে এসেছে । ঘটনার পর থেকে কোম্পানির সিইও জাহিদ, জিএম বেলাল হোসেন ও নির্বাহী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান গা ঢাকা দিয়েছেন। তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি। কর্মকর্তা সকলের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। তাদের অফিসে গিয়ে কেয়ারটেকার ও দারোয়ানকে ছাড়া কাউকে পাওয়া যায়নি।

তবে জেনুইন লিফ টোব্যাকো কোম্পাানর পাবলিক রিলেশন অফিসার এ এম সালেহীন তৌহিদ বলেন, কোম্পানির বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। আমি নতুন যোগদান করেছি, কিছুই জানি না। স্যাররা কোথায় আছে তাও বলতে পারবো না।

পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সামনের ভবনের নিরাপত্তাকর্মী আশিকুর রহমান বলেন, গত বছরের ১ জুলাই মোস্তাফিজুর রহমান নামে এক ব্যক্তি ভবনের তিনটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। পরে আরও চারটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। তিনি তামাক কোম্পানিতে বড় পদে রয়েছেন।

দৌলতপুরের বিএনপি নেতা ও তামাক ব্যবসায়ী আসাদুজ্জান আসাদ বলেন, আমি তারা কোম্পানির সাথে কোন ব্যবসা করি না। গত বছর করেছিলাম। কিন্তু লেনদেন ভালো না হওয়ায় এবার ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছি। এ বছর বিএনপির অন্য নেতা তাদের সাথে ব্যবসা করছেন।

তামাক ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের অভিযোগ- কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের প্রতাবপুর এলাকায় ভারগন টোব্যাকোর আড়ালে নকল গোল্ডলিফ ও বেনসন সিগারেট তৈরি করা হয়৷ বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এমপি ও নেতাদের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে বছরের পর বছর ধরে নকল সিগারেট তৈরি করে বাজারজাত করে আসছে ভারগন টোব্যাকোর স্বত্বাধিকারী রাইসুল হক পবন। সবাইকে ম্যানেজ করে বেশ কয়েক বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ভরপুর নকল সিগারেট তৈরি ও বাজারজাত করে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। বিভিন্ন জায়গায় গড়ে তুলেছেন নকল সিগারেট তৈরির শক্তিশালী সিন্ডিকেট। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দৌলতপুরের আওয়ামী লীগের নেতাদের ছত্রছায়ায় নকল সিগারেট তৈরি করেছেন।

৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পরও আওয়ামী লীগের দোসর পবনের নকল সিগারেট তৈরির কারখানা বন্ধ হয়নি। কোটি টাকার বিনিময়ে উপজেলার প্রভাবশালী বিএনপি নেতাদের ম্যানেজ করেছেন। বর্তমানে তাদের ছত্রছায়ায় নকল সিগারেট তৈরি করা হয়। অবৈধভাবে নকল সিগারেট তৈরির মাধ্যমে দেশ-বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন পবন। অবৈধ সিগারেট উৎপাদনের দায়ে বেশ কয়েকবার এ কোম্পানির নামে মামলা হয়। এছাড়াও একাধিকবার অভিযান চালিয়ে নকল সিগারেট এবং ব্যান্ডরোল উদ্ধার করা হয়। এছাড়া কোম্পানির কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পবন আগে আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রী-নেতাদের হেফাজতে ছিলেন। বর্তমানে বিএনপির প্রভাবশালী নেতার হেফাজতে রয়েছেন। সব কিছু ম্যানেজ করে নির্বিঘ্নে নকল সিগারেটের কারবার চালিয়ে যাচ্ছেন পবন।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ভারগন টোব্যাকোর স্বত্বাধিকারী রাইসুল হক পবনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেন নি।
কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) ফয়সাল মাহমুদ বলেন, এ ধরনের কোনো সিন্ডিকেটের সুনির্দিষ্ট তথ্য পুলিশের কাছে নেই। তবে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে কাজ করছে পুলিশ। গাড়িটি কারা কীভাবে এখানে এনেছে, সব কিছু মাথায় নিয়েই পুলিশ কাজ করছে।