মাজারের গাবগাছের নীচে গামছা পরে ঘুমিয়ে অভিনেতা সমু চৌধুরী

- আপডেট সময় : ০৯:০৪:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫
- / ৪৪ বার পড়া হয়েছে
না, এটি কোন অভিনয়ের দৃশ্য নয়। এক সময়ের রুপালী পর্দা কাঁপানো অভিনেতা সমু চৌধুরীর বাস্তব চিত্র। তাকে একটি গামছা পরা অবস্থায় গফরগাঁও মাজারের গাবগাছের নিচে একটি মাদুরে শুয়ে থাকতে দেখা যায়। যা কিনা ফেসবুকে ভাইরাল হতেই নেট জগতে হৈচৈ পড়ে যায়। একসময়ের জনপ্রিয় এই নেতাকে শতচেষ্টা করেও থানায় নিতে পারছেন না পুলিশ। এ অবস্থায় লোকজন ভিড় জমিয়েছেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ ও সেনাবাহিনী। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সন্ধ্যা ৭টার দিকে এ তথ্য পাগলা থানা থেকে জানা যায়।
কিন্তু কেন তার এই পরিনতি? এমন প্রশ্নের উত্তর মিলেনি। তবে তার কথার ধরণে পুলিশ মনে করছেন মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে আছেন তিনি।
পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, ‘বিকেলে মুখী শাহ্ মিসকিনের মাজারের পাশে গাবগাছের নিচে গামছা পরে ঘুমন্ত অবস্থায় অভিনেতা সমু চৌধুরীকে পাওয়া গেছে এমন তথ্য পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। সমু চৌধুরীর এক ভাই একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে চাকরি করেন। তিনি সমু চৌধুরীকে নিয়ে যেতে এখনো এই এলাকায় আসেননি। এছাড়া সমু চৌধুরীর খোঁজ পেয়ে অভিনয়শিল্পী সংঘের কয়েকজন অভিনেতাও বিকেলে ঢাকা থেকে রওনা হয়েছেন। তারাও এখনো পৌঁছাননি। সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় সমু চৌধুরীকে বুঝিয়ে থানায় নিতে চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু তিনি যেতে রাজি হচ্ছেন না।’
ওসি বলেন, ‘সমু চৌধুরী এখনো মাজারের পাশেই অবস্থান করছেন। তাকে দেখতে লোকজন ভিড় জমিয়েছেন। তাই পুলিশসহ সেনাবাহিনীও এখানে অবস্থান করছে। ঢাকায় উনার সহকর্মী ও পরিবারের লোকজন বিষয়টি জেনেছেন। তারা সেখানে আসছেন। মাজার থেকেই তারা অভিনেতাকে ঢাকায় নিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।”
সমু চৌধুরী কীভাবে এখানে এসেছেন, কখন এসেছেন- এ বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি বলেও জানান ওসি ফেরদৌস আলম।
ছোট পর্দার অভিনয় শিল্পীদের সংগঠন অভিনয় শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক এস এ সালাম সুমন বলেন, “সোশাল মিডিয়ায় বিষয়টি আমাদের চোখে পড়ার পর আমরা স্থানীয় কিছু মানুষ সেখানে পাঠাই, ঘটনার সত্যতা এবং পরিচয় নিশ্চিত করে পাগলা থানায় যোগাযোগ করি। থানা থেকে স্পেশাল ফোর্স গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।
পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে কি-না জানতে চাইলে রাশেদ মামুন অপু বলেন, “পরিবার বলতে উনার বৃদ্ধ মা, আমরা উনার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। উনার বাড়ি খুলনায়। তিনি কীভাবে সেখানে গিয়েছেন তা আমরা জানতে পারিনি।”
এরআগে বিকেলে মুখী শাহ্ মিসকিনের মাজারের পাশে গাবগাছের নিচে গামছা পরে সমু চৌধুরীর শুয়ে থাকায় ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে প্রথমে খালি গায়ে গামছা পরা অবস্থায় সমু চৌধুরীকে দেখা যায়। পরে অবশ্য টাউজার ও গেঞ্জি পরা অবস্থায় উপস্থিত স্থানীয় লোকজন ও পুলিশের সামনে তাকে বলতে শোনা যায়, আমি মাজারে এসেছি। খুবই সুন্দর জায়গা। মানুষগুলো খুব ভালো। এখানে এত সহজ-সরল মানুষের দেখা পাওয়া যায়। এমন আরও অনেক কথাবার্তা বলে হেসে হাততালি দেন সমু চৌধুরী। সবার ধারণা, সমু চৌধুরী মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে একা একা মাজারে চলে এসেছেন।
নব্বইয়ের দশকে টেলিভিশন নাটকে দর্শক মাতিয়েছিলেন এই মঞ্চ অভিনেতা। মাঝে অভিমান করে অভিনয় ছেড়ে গ্রামের বাড়ি যশোরে চলে গিয়েছিলেন। পরে শিল্পী ঐক্য জোটের মাধ্যমে আবারও অভিনয়ে ফিরে আসেন।