বাংলাদেশের ফুটবলের পালে হঠাৎ ঢেউ লেগেছে। জাতীয় দলের খেলা দেখতে দর্শক উত্তেজনা চরমে। এখনো আটদিন বাকি। কিন্তু সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচটির টিকিটের জন্য এখনি হাহাকার শুরু হয়ে গেছে। এদিকে দেশের হয়ে লড়তে আজই ঢাকায় পা রেখেছেন ইংলিশ লিগ লিস্টার সিটির খেলোয়াড় হামজা চৌধুরী। ৪ জুন কানাডা থেকে আসছেন সোমিত সোম। তিনিও কানাডা বয়স ভিত্তিক জাতীয় দলের খেলোয়াড়। দেশের হয়ে এসব তারকা খেলোয়াড়দের আগমনে দর্শক হাইফ আকাশ ছোঁয়া। প্রত্যাশাও বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। যাদের  বিরুদ্ধে গোল কম হজেমের দু:স্বপ্ন ছিলো এতোদিন। এখন তাদের বিরুদ্ধে জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন বাংলাদেশের ফুটবল ভক্তরা।  মাঠে যে দর্শক উপস্থিতি তিল ধারণের ঠাই হবে না সেটা আগেই অনুমেয়। আর তাই ফুটবল ফেডারেশনের কাছে আগে থেকেই মাঠের মালিক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) দশ শতাংশ লেবি’র কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। ম্যাচ শেষে যেন তাদের পাওনাটা সঠিক ভাবে বুঝিয়ে দেয়া হয়।

সিঙ্গাপুর ম্যাচে টিকিটের সর্বনিম্ন মূল্য ৪০০ টাকা। বাফুফের দাবি, সাধারণ গ্যালারীর ১৮ হাজার ৩০০ টিকিটই অনলাইনে ছাড়া হয়েছে এবং সব টিকিটই বিক্রিত। ফলে এখান থেকেই ৭৩ লাখ ২০ হাজার টাকা আয় হওয়ার কথা ফেডারেশনের।

আন্তর্জাতিক ম্যাচের আয়ের অন্যতম উৎস টিভি রাইটস। বাফুফে এই ম্যাচের স্বত্ত্ব ‘টি স্পোর্টসে’র কাছে বিক্রি করেছে। টিভি রাইটস কত টাকা বিক্রি করেছে এটা গণমাধ্যমের কাছে প্রকাশ করেনি। টিভি রাইটস বিক্রির উপর এনএনসি ১৫ শতাংশ অর্থ চেয়েছে।

এ ছাড়াও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এবার জাতীয় স্টেডিয়ামে ডিজিটাল বোর্ড বসিয়েছে। বাফুফে ম্যাচ চলাকালীন সাইডলাইনের পাশে ডিজিটাল বোর্ডে বিজ্ঞাপন প্রচার করতে পারবে। সেই বিজ্ঞাপনের উপর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ৫০ শতাংশ অর্থ দাবি করেছে

এদিকে টিকিট না পাওয়ায় ফূটবল সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ ঝরছে। ফুটবল অনুরাগীদের ক্ষোভ কোথায় কিভাবে টিকিট বিক্রি করলো বাফুফে? আমরা তো শত চেষ্টা করেও কোন টিকিট কিনতে পারলাম না। অথচ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন জানিয়ে দিয়েছে তারা সব টিকিট অন লাইনে সেল করে দিয়েছে।

অনলাইনে শত চেষ্টা করেও টিকিট না পেয়ে  ফুটবল পাগল সমর্থকরা বাফুফে ভবনের সামনে  বিক্ষোভ করেন। টিকিট না পাওয়ার প্রত্যাশায় তারা প্লাকার্ড,ব্যানের নিজেদের অভিযোগগুলো তুলে ধরেন। সাধারণ দর্শকরাই হচ্ছে খেলার প্রাণ, তারাই যদি টিকিট না পান তাহলে সেটা হবে কষ্টের এমন বক্তব্য শোনা যায় অনেকের কন্ঠে। সত্যিকার অর্থে  দুঃসময়ে থাকা প্রকৃত ফুটবল সমর্থকদের বড় অংশ এবার সিঙ্গাপুর ম্যাচে গ্যালারীতে দেখা নিয়ে ঘোর অনিশ্চয়তায় আছেন। টিকিটের জন্য এমন হাহাকার ফুটবলে গত দুই দশক আগে দেখা গিয়েছিলো। আর এ সুযোগটাই বাজেভাবে কাজে লাগাচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ী বাফুফে টিকিটিং পার্টনার  টিকিফাই।

বাফুফে এ টিকিটিং পূর্ণাঙ্গভাবে অনলাইনে করেছে। টিকিফাই প্ল্যাটফর্ম সাইবার আক্রমণের শিকার হয়েছিল। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে অনেক সমর্থক টিকিট কাটতে পারেননি। এরপরও নাকি বেশ অল্প সময়ের মধ্যে সকল টিকিট বিক্রি হয়েছে। সমর্থকরা বাফুফের টিকিটিং পার্টনার টিকিফাইকে নিয়ে নানা সমালোচনা করেছে।

এদিকে হামজা দেশে পা রাখতেই ফুটবল উত্তেজনা আরো উচ্ছতায় পৌছায়। লন্ডন থেকে দুপুরে তিনি বাংলাদেশে এসেই বিকালে অনুশীলনে যোগ দেন। চির চেনা সেই হাসিমুখ খানা তার লেগেই আছে।

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) আজ এক ভিডিও বার্তায় হামজার বক্তব্য প্রকাশ করেছে, যেখানে তিনি বলেন, ‘হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম সবাইকে। আবারও এমন উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য ভক্ত, মিডিয়া এবং সাংবাদিক বন্ধুদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। দলের সঙ্গে দেখা করতে এবং দুটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের প্রস্তুতি নিতে মুখিয়ে আছি। ইনশাআল্লাহ, আমরা সফল হব এবং আপনাদের সবাইকে মাঠে আমাদের পাশে পাব বলে আশা করছি।’