ঢাকা ১২:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

যুক্তরাষ্ট্রের বাজেটে ঘাটতি ৬শত বিলিয়ন ডলার,ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বায়িত্ব ছেড়েছেন ইলনমাস্ক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:৫১:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
  • / ৪০ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ইলন মাস্ক একজন দক্ষিণ আফ্রিকান-আমেরিকান উদ্যোক্তা, প্রকৌশলী এবং বিনিয়োগকারী। তিনি পেপ্যাল, স্পেসএক্স, টেসলা, নিউরালিঙ্ক এবং বোরিং কোম্পানির মতো উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও। তিনি প্রযুক্তি, মহাকাশ গবেষণা, এবং পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ক্ষেত্রে তার কাজের জন্য সুপরিচিত। যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে দ্বায়িত্ব বুজে নেবার পর তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন। বিশ্বের শীর্ষ ধনী। 

টেসলার এই প্রধান নির্বাহী মার্কিন প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু দায়িত্ব নিয়েই তিনি বেশ কয়েকটি ফেডারেল সংস্থাকে বিপর্যস্ত করে তোলেন। শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পের একটি নতুন বিল নিয়ে হতাশা প্রকাশের পর এবার মার্কিন প্রশাসন থেকেই সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন তিনি।

ইলন মাস্কের দায়িত্ব ছাড়ার বিষয়টি হোয়াইট হাউজের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ইলন মাস্ক প্রশাসন ছেড়ে যাচ্ছেন। আজ রাত থেকেই এ প্রক্রিয়া শুরু হবে।

এর আগে গতকাল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করেন ইলন মাস্ক। ওই পোস্টে তিনি লেখেন, ট্রাম্প প্রশাসনের সরকারি দক্ষতা বিভাগের অংশ হিসেবে তার বিশেষ সরকারি কর্মকর্তার দায়িত্ব শেষ হয়ে আসছে।

তার দায়িত্ব ছাড়ার বিষয়টি বেশ তড়িঘড়ি করেই হচ্ছে এবং এটি বেশ অপ্রীতিকর ছিল। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত একটি সূত্রের মতে, পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার আগে তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনাও করেননি।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের অন্যতম একটি আর্থিক নীতি নিয়ে প্রকাশ্যে সমালোচনা করার একদিন পরেই তার দায়িত্ব ছাড়ার বিষয়টি সামনে এলো।

গত সপ্তাহে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে স্বল্প ভোটের ব্যবধানে পাস হয়েছে ট্রাম্পের ‘বিগ, বিউটিফুল বিল’। এই বিলে বহু ট্রিলিয়ন ডলারের কর ছাড় এবং প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বৃদ্ধির অঙ্গীকার রয়েছে। এখন এটি সিনেটে পাঠানো হবে।

মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাস্ক বলেছেন, আমি হতাশ, কারণ বিলটি আসলে বাজেট ঘাটতি বাড়িয়ে দিচ্ছে, কমাচ্ছে না।

ট্রাম্পের এই বিলের কারণে আগামী অর্থবছর যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট ঘাটতি আনুমানিক ৬০০ বিলিয়ন ডলার বাড়তে পারে বলে অর্থনৈতিক বিশ্লেষণে ধারণা দেওয়া হয়েছে।

মাস্ক আরও বলেন, এই বিল ‘ডোজ’ টিমের কাজকেও নস্যাৎ করছে। ডোজ (ডিওজিই) হলো ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি’—সরকারি ব্যয় কমাতে ট্রাম্প প্রশাসনের গঠিত উপদেষ্টা সংস্থা, যার নেতৃত্বে ছিলেন মাস্ক নিজেই। এই সংস্থার অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তা বন্ধসহ অনেক খাতের খরচ কমানো শুরু হয়েছিল।

মাস্ক আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, তিনি ডোজ-এর দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াবেন। সরকারের খরচ এক ট্রিলিয়ন ডলার কমাতে চুক্তি বাতিল ও সরকারি কর্মী সংখ্যা কমানোর লক্ষ্য ছিল তার। ডোজ-এর ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, এরই মধ্যে প্রায় ১৭৫ বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হয়েছে। তবে এ দাবির পূর্ণ প্রমাণ মেলেনি।

মাস্ক এর আগে জানিয়েছিলেন যে, ভবিষ্যতে রাজনৈতিক অনুদান অনেক কমিয়ে দেবেন এবং অন্তত আরও পাঁচ বছর তিনি টেসলার নেতৃত্বে থাকবেন।
ডোজ-এর প্রধান হিসেবে কাজ করার সময় মাস্ক ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। ফেডারেল কর্মীদের ছাঁটাই এবং বিদেশি সহায়তা কমানোর উদ্যোগ তাকে বিতর্কিত করে তোলে। টেসলার বিক্রিতে প্রভাব পড়ে, দেখা দেয় বিক্ষোভ ও বয়কট। তবে এসব বিষয় নিয়ে মাস্কের দাবি, তিনি যা করেছেন, তা প্রয়োজনীয় ছিল।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

যুক্তরাষ্ট্রের বাজেটে ঘাটতি ৬শত বিলিয়ন ডলার,ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বায়িত্ব ছেড়েছেন ইলনমাস্ক

আপডেট সময় : ১২:৫১:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

ইলন মাস্ক একজন দক্ষিণ আফ্রিকান-আমেরিকান উদ্যোক্তা, প্রকৌশলী এবং বিনিয়োগকারী। তিনি পেপ্যাল, স্পেসএক্স, টেসলা, নিউরালিঙ্ক এবং বোরিং কোম্পানির মতো উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও। তিনি প্রযুক্তি, মহাকাশ গবেষণা, এবং পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ক্ষেত্রে তার কাজের জন্য সুপরিচিত। যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে দ্বায়িত্ব বুজে নেবার পর তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন। বিশ্বের শীর্ষ ধনী। 

টেসলার এই প্রধান নির্বাহী মার্কিন প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু দায়িত্ব নিয়েই তিনি বেশ কয়েকটি ফেডারেল সংস্থাকে বিপর্যস্ত করে তোলেন। শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পের একটি নতুন বিল নিয়ে হতাশা প্রকাশের পর এবার মার্কিন প্রশাসন থেকেই সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন তিনি।

ইলন মাস্কের দায়িত্ব ছাড়ার বিষয়টি হোয়াইট হাউজের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ইলন মাস্ক প্রশাসন ছেড়ে যাচ্ছেন। আজ রাত থেকেই এ প্রক্রিয়া শুরু হবে।

এর আগে গতকাল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করেন ইলন মাস্ক। ওই পোস্টে তিনি লেখেন, ট্রাম্প প্রশাসনের সরকারি দক্ষতা বিভাগের অংশ হিসেবে তার বিশেষ সরকারি কর্মকর্তার দায়িত্ব শেষ হয়ে আসছে।

তার দায়িত্ব ছাড়ার বিষয়টি বেশ তড়িঘড়ি করেই হচ্ছে এবং এটি বেশ অপ্রীতিকর ছিল। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত একটি সূত্রের মতে, পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার আগে তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনাও করেননি।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের অন্যতম একটি আর্থিক নীতি নিয়ে প্রকাশ্যে সমালোচনা করার একদিন পরেই তার দায়িত্ব ছাড়ার বিষয়টি সামনে এলো।

গত সপ্তাহে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে স্বল্প ভোটের ব্যবধানে পাস হয়েছে ট্রাম্পের ‘বিগ, বিউটিফুল বিল’। এই বিলে বহু ট্রিলিয়ন ডলারের কর ছাড় এবং প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বৃদ্ধির অঙ্গীকার রয়েছে। এখন এটি সিনেটে পাঠানো হবে।

মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাস্ক বলেছেন, আমি হতাশ, কারণ বিলটি আসলে বাজেট ঘাটতি বাড়িয়ে দিচ্ছে, কমাচ্ছে না।

ট্রাম্পের এই বিলের কারণে আগামী অর্থবছর যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট ঘাটতি আনুমানিক ৬০০ বিলিয়ন ডলার বাড়তে পারে বলে অর্থনৈতিক বিশ্লেষণে ধারণা দেওয়া হয়েছে।

মাস্ক আরও বলেন, এই বিল ‘ডোজ’ টিমের কাজকেও নস্যাৎ করছে। ডোজ (ডিওজিই) হলো ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি’—সরকারি ব্যয় কমাতে ট্রাম্প প্রশাসনের গঠিত উপদেষ্টা সংস্থা, যার নেতৃত্বে ছিলেন মাস্ক নিজেই। এই সংস্থার অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তা বন্ধসহ অনেক খাতের খরচ কমানো শুরু হয়েছিল।

মাস্ক আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, তিনি ডোজ-এর দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াবেন। সরকারের খরচ এক ট্রিলিয়ন ডলার কমাতে চুক্তি বাতিল ও সরকারি কর্মী সংখ্যা কমানোর লক্ষ্য ছিল তার। ডোজ-এর ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, এরই মধ্যে প্রায় ১৭৫ বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হয়েছে। তবে এ দাবির পূর্ণ প্রমাণ মেলেনি।

মাস্ক এর আগে জানিয়েছিলেন যে, ভবিষ্যতে রাজনৈতিক অনুদান অনেক কমিয়ে দেবেন এবং অন্তত আরও পাঁচ বছর তিনি টেসলার নেতৃত্বে থাকবেন।
ডোজ-এর প্রধান হিসেবে কাজ করার সময় মাস্ক ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। ফেডারেল কর্মীদের ছাঁটাই এবং বিদেশি সহায়তা কমানোর উদ্যোগ তাকে বিতর্কিত করে তোলে। টেসলার বিক্রিতে প্রভাব পড়ে, দেখা দেয় বিক্ষোভ ও বয়কট। তবে এসব বিষয় নিয়ে মাস্কের দাবি, তিনি যা করেছেন, তা প্রয়োজনীয় ছিল।