ঢাকা ০৭:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার সকল বিষয় জানানো হবে: আলী রীয়াজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৪:১৯:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫
  • / ৪০ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠক হয়েছে শনিবার। যা কিনা ছিলো টক অব দ্য কান্ট্রি। দেশজুড়ে এখনো চলছে সে বিষয়গুলো নিয়ে রাজ্যের আলোচনা। পর্যায়ক্রমে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় অনেক বিষয় ঐক্যমত হলেও কিছু কিছু বিষয় সমঝোতা হয়নি, যা কিনা সাধারণ মানুষের সামনে আসেনি। স্বচ্ছতার স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার সকল বিষয় সাধারনের সামনে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। রোববার কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটে জাতীয় ঐকমত্যের বিষয়ে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের বিষয়টি তুলে ধরে আলী রীয়াজ বলেন, ‘সেখানে দলগতভাবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক বিষয়ে ঐক্যমত হয়েছে, কিছু মৌলিক বিষয়ে তা হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলোর রাজনৈতিক আদর্শিক অবস্থানের কারণে মতপার্থক্য থাকবে, সব বিষয়ে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে না, এটা বাস্তব।’

তিনি বলেন, পাশাপাশি আমরা নাগরিক সমাজের চিন্তাভাবনাগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে আজ এখানে আপনাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি এবং এই আলোচনার মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের কার্যক্রমের ব্যাপারে আপনাদের পরামর্শ নেব।

আলী রীয়াজ বলেন, যেসব বিষয়ে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা করা যায়নি সেগুলো স্বচ্ছতার জন্য এবং জনগণের পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের সহযোগিতা করার জন্য আমরা জানাব। আমরা মনে করি সেটা খুবই জরুরি। সেই বিবেচনা থেকেই আমরা এখন পর্যন্ত অগ্রসর হচ্ছি এবং সেক্ষেত্রে আপনাদের পরামর্শ আমাদের সাহায্য করবে।

আলী রীয়াজ বলেন, আমরা চেষ্টা করব যে জাতীয় সনদ তৈরি হচ্ছে তার পাশাপাশি যে প্রতিবেদন আমরা তৈরি করতে চাই সেখানে যেন এই মতামতগুলো থাকে।

সুশীল সমাজের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনার গুরুত্বের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা বারবার বলেছি যে জাতীয় ঐক্যমত্য গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনাই যথেষ্ট নয়, নাগরিক সমাজের মধ্যেও এ বিষয়ে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা করা দরকার। তাই নাগরিক সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণ সংস্কার কর্মসূচি থেকে বাদ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’

আলী রিয়াজ বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যমত কমিশন ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে গঠিত হওয়ার পর থেকে আমাদের সময় দেয়া হয়েছে ছয় মাস। সেই ছয় মাসের প্রায় মাঝামাঝি সময়ে আমরা পৌঁছেছি। এই সময়ে আমরা বিভিন্নভাবেই প্রতিবেদনগুলো প্রকাশ করা ছাড়াও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে যোগাযোগ করেছি। তারা তাদের মতামত দিয়েছেন। প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা ৩৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা একটা মাহেন্দ্রক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি। অমিত সম্ভাবনা তৈরি করেছি, কিন্তু যে কোনো সম্ভাবনা যেমন চ্যালেঞ্জ তৈরি করে। আবার এই পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জগুলো অত্যন্ত কঠিন। কেননা চেষ্টা হচ্ছে রাষ্ট্র কাঠামোর কিছু প্রাতিষ্ঠানিক এবং সেটা খুব সহজ হওয়ার কথা নয়। আমাদের প্রত্যাশা যে সমাজের বিভিন্ন অংশের মধ্যে এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের যে সুযোগ, সেই সুযোগকে আমরা গ্রহণ করতে পারব। ৫৩ বছর ধরে যে চেষ্টা সেই চেষ্টার পাশাপাশি গত ১৬ বছর ধরে যে সংগ্রাম সর্বোপরি জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে রক্তপাত, প্রাণনাশ, মানুষের আত্মদান সেগুলোর কাছে আমাদের দায় আছে। আমাদের দায়িত্ব সেই এবং দায়িত্বের জায়গা থেকেই আমরা আশা করি যে সবাই তাদের নিজস্ব জায়গা থেকে এই কাঠামোগত পরিবর্তনগুলো যতটা অর্জন করা সম্ভব, সেজন্য সক্রিয় থাকবে সেই আশা থেকেই আমাদের এই আলোচনা।’

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার সকল বিষয় জানানো হবে: আলী রীয়াজ

আপডেট সময় : ০৪:১৯:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠক হয়েছে শনিবার। যা কিনা ছিলো টক অব দ্য কান্ট্রি। দেশজুড়ে এখনো চলছে সে বিষয়গুলো নিয়ে রাজ্যের আলোচনা। পর্যায়ক্রমে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় অনেক বিষয় ঐক্যমত হলেও কিছু কিছু বিষয় সমঝোতা হয়নি, যা কিনা সাধারণ মানুষের সামনে আসেনি। স্বচ্ছতার স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার সকল বিষয় সাধারনের সামনে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। রোববার কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটে জাতীয় ঐকমত্যের বিষয়ে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের বিষয়টি তুলে ধরে আলী রীয়াজ বলেন, ‘সেখানে দলগতভাবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক বিষয়ে ঐক্যমত হয়েছে, কিছু মৌলিক বিষয়ে তা হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলোর রাজনৈতিক আদর্শিক অবস্থানের কারণে মতপার্থক্য থাকবে, সব বিষয়ে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে না, এটা বাস্তব।’

তিনি বলেন, পাশাপাশি আমরা নাগরিক সমাজের চিন্তাভাবনাগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে আজ এখানে আপনাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি এবং এই আলোচনার মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের কার্যক্রমের ব্যাপারে আপনাদের পরামর্শ নেব।

আলী রীয়াজ বলেন, যেসব বিষয়ে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা করা যায়নি সেগুলো স্বচ্ছতার জন্য এবং জনগণের পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের সহযোগিতা করার জন্য আমরা জানাব। আমরা মনে করি সেটা খুবই জরুরি। সেই বিবেচনা থেকেই আমরা এখন পর্যন্ত অগ্রসর হচ্ছি এবং সেক্ষেত্রে আপনাদের পরামর্শ আমাদের সাহায্য করবে।

আলী রীয়াজ বলেন, আমরা চেষ্টা করব যে জাতীয় সনদ তৈরি হচ্ছে তার পাশাপাশি যে প্রতিবেদন আমরা তৈরি করতে চাই সেখানে যেন এই মতামতগুলো থাকে।

সুশীল সমাজের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনার গুরুত্বের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা বারবার বলেছি যে জাতীয় ঐক্যমত্য গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনাই যথেষ্ট নয়, নাগরিক সমাজের মধ্যেও এ বিষয়ে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা করা দরকার। তাই নাগরিক সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণ সংস্কার কর্মসূচি থেকে বাদ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’

আলী রিয়াজ বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যমত কমিশন ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে গঠিত হওয়ার পর থেকে আমাদের সময় দেয়া হয়েছে ছয় মাস। সেই ছয় মাসের প্রায় মাঝামাঝি সময়ে আমরা পৌঁছেছি। এই সময়ে আমরা বিভিন্নভাবেই প্রতিবেদনগুলো প্রকাশ করা ছাড়াও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে যোগাযোগ করেছি। তারা তাদের মতামত দিয়েছেন। প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা ৩৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা একটা মাহেন্দ্রক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি। অমিত সম্ভাবনা তৈরি করেছি, কিন্তু যে কোনো সম্ভাবনা যেমন চ্যালেঞ্জ তৈরি করে। আবার এই পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জগুলো অত্যন্ত কঠিন। কেননা চেষ্টা হচ্ছে রাষ্ট্র কাঠামোর কিছু প্রাতিষ্ঠানিক এবং সেটা খুব সহজ হওয়ার কথা নয়। আমাদের প্রত্যাশা যে সমাজের বিভিন্ন অংশের মধ্যে এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের যে সুযোগ, সেই সুযোগকে আমরা গ্রহণ করতে পারব। ৫৩ বছর ধরে যে চেষ্টা সেই চেষ্টার পাশাপাশি গত ১৬ বছর ধরে যে সংগ্রাম সর্বোপরি জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে রক্তপাত, প্রাণনাশ, মানুষের আত্মদান সেগুলোর কাছে আমাদের দায় আছে। আমাদের দায়িত্ব সেই এবং দায়িত্বের জায়গা থেকেই আমরা আশা করি যে সবাই তাদের নিজস্ব জায়গা থেকে এই কাঠামোগত পরিবর্তনগুলো যতটা অর্জন করা সম্ভব, সেজন্য সক্রিয় থাকবে সেই আশা থেকেই আমাদের এই আলোচনা।’