বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ভারতের `পুস ইন‘ থেমে নেই, বেড়েছে আগের চেয়ে

- আপডেট সময় : ১১:৫২:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
- / ৪০ বার পড়া হয়েছে
গত ৫ আগস্ট পতিত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছে ভারত। শুধু তাই নয়, এরপর থেকে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে একের পর এক অশান্তি চালিয়ে যাচ্ছে পাশ্ববর্ দেশের সরকার। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীন রাজনীতে হস্তক্ষেপ করাটা পুরানো স্বভাব। দেশটি ড.ইউনুস সরকারকে বিতর্কীত করার জন্য সকল ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত করে চলেছে। এটি এখন সাধারণ মানুষের আলোচনায় ওঠে আসছে। এখানেই ক্ষান্ত থাকছে ভারত, বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে প্রতিনিয়ত পুস ইন‘ করে চলেছে তারা। গত৭-৯ মে, এই সময়টুকুর মধ্যেই তিনশতাধিক মানুষকে বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে পুস ইন করেছে ভারতের বিএসএফ। সে সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। আজ বৃহস্পতিবারও বাংলাদেশের পাঁচটি সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে ১০৪জনকে পুস ইন করেছে। জিলাগুলো হচ্ছে যথাক্রমে-পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, মৌলভীবাজার, ফেনী, কুমিল্লা ও খাগড়াছড়ি । নীচে পাঠকদের সামনে বিভিন্ন জেলা দিয়ে পুস ইন করা হয়েছে এমন সংখ্যা উপস্থাপন করা হয়েছে…
আজ ভোরে পঞ্চগড় সদর উপজেলার জয়ধরভাঙ্গা বড়বাড়ি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের পর ২১ জনকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এর মধ্যে ১৪ শিশু রয়েছে, যাদের বয়স তিন মাস থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। এছাড়া, ২২ বছর বয়সী এক যুবক এবং ছয়জন নারী, যারা ১৯ থেকে ৫৫ বছর বয়সী। তাদের বাড়ি খুলনা ও নড়াইল জেলায়। এদেরকে ‘জয়ধরভাঙ্গা বর্ডার আউটপোস্টের (বিওপি) সদস্যরা ৭৭৫/১০-এস পিলারের কাছ থেকে আটক করা হয়েছে।
এর আগেও ঠাকুরগাঁও এবং পঞ্চগড় সীমান্ত দিয়ে একইভাবে আরও ২৮ জনকে বাংলাদেশে পাঠিয়েছিল ভারত।
গত রাতে লালমনির হাটের পাটগ্রাম উপজেলার ধবলসুটি ও ঝালাঙ্গী সীমান্ত দিয়ে ১১ নারী, দুইজন পুরুষ ও সাত শিশুসহ মোট ২০ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
বিজিবি ৬১ ব্যাটালিয়নের ধবলসুটি বিওপি (বর্ডার আউটপোস্ট) ক্যাম্পে ওদের আটক করেছে। পরবর্তীতে তাদের থানায় হস্তান্ত করা হয়।
মৌলভীবাজার জিলায় আজ সকালে কুলাউড়া উপজেলার মুরইছড়া সীমান্ত দিয়ে কুড়িগ্রাম জেলার সাতজন—দুইজন পুরুষ, দুইজন নারী ও তিন শিশু বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বিজিবি ৪৬ ব্যাটালিয়ন ওদের আটকে করেছে। গত আট দিনের মধ্যে এই সীমান্তে দ্বিতীয়বারের মতো এমন ঘটনা ঘটলো।
ফেনী জিলায় গত রাতে ছাগলনাইয়া ও ফুলগাজী উপজেলার সীমান্ত দিয়ে বিএসএফ নারী ও শিশুসহ ৩৯ জনকে ফেরত পাঠিয়েছে। বিজিবি ৪ ব্যাটালিয়ন থেকে এই তথ্য জানা যায়। এদের কাগজপত্র যাচাইয়ের পর ১২ জনকে ফুলগাজী থানায় এবং আরও ১২ জনকে ছাগলনাইয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি ১৫ জনের ব্যাপারে প্রক্রিয়া চলছে।’
‘ইতোমধ্যে ১২ জনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে, বাকি ১৫ জনের হস্তান্তর প্রক্রিয়া চলছে,’ বলেন ফুলগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ লুৎফর রহমান।
একটি সূত্র জানিয়েছে, ভারত থেকে যাদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তাদের কেউ কেউ ২০০৭ সাল থেকে সেখানে বসবাস করছিলেন এবং তাদের বেশিরভাগই ইটভাটায় কাজ করতেন। ফেনীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) সাইফুল ইসলাম বলেছেন, ‘বিএসএফের মাধ্যমে ফেরত আসা ৩৯ জনের ব্যাপারে আইনি প্রক্রিয়া চলছে।’
এদিকে কুমিল্লা সদর উপজেলার গোলাবাড়ি সীমান্ত দিয়েেআজ সকালে বিএসএফ নারী, পুরুষ ও শিশুসহ ১৩ বাংলাদেশি নাগরিককে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়েছে।
বিজিবি কুমিল্লা ১০ ব্যাটালিয়নের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মীর আলী ইজাজ বলেন, ‘অবৈধভাবে প্রবেশের সময় বিজিবির ৬০তম টহল দল ১৩ জনকে আটক করেছে।’তাদের মধ্যে তিনজন পুরুষ, তিনজন নারী ও সাত শিশু রয়েছে।
ঠাকুরগাঁও এবং দিনাজপুর জিলায় এদিন ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার বৈরচুনা সীমান্ত থেকে ৬৩ ও ৪৫ বছর বয়সী দুই নারী এবং দিনাজপুরের বিরল উপজেলার রামচন্দ্রপুর সীমান্ত এলাকা থেকে ২৪ ও ১৬ বছর বয়সী দুই ভাইকে আটক করেছে বিজিবি।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চারজনই জানিয়েছেন যে, তারা দালালের মাধ্যমে কাজের জন্য ভারতের গুজরাটে গিয়েছিলেন এবং সেখানে পাঁচ থেকে ১০ বছর ছিলেন—জানিয়েছেন একজন বিজিবি কর্মকর্তা।
আজ ভোরে খাগড়াছড়ির রামগড় সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়ার পর পাঁচজনকে আটক করেছে বিজিবি। পাঁচজনকে সাময়িকভাবে রামগড় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। বিজিবি, স্থানীয় প্রশাসন ও রামগড় পুলিশ যৌথভাবে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছে, বলেন তিনি।