এশিয়া কাপ থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিচ্ছে ভারত!

- আপডেট সময় : ১২:৪২:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫
- / ৩৯ বার পড়া হয়েছে
পাকিস্তান এবং ভারতের মধ্যে কুটণৈতিক দূরত্ব সেই জম্মলগ্ন থেকেই। দু’দেশের রাজনৈতিক সম্পর্কটা দা-কুমড়ার মতোই। সম্প্রতি সেই উত্তেজনা আরও চরমে। কশ্মিরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে পরস্পরের মধ্যে সম্পর্কের আরও অবনতি হয়। হিংসা-প্রতিহিংসা দেখা দেয়। যা কিনা যুদ্ধে পরিনত হয়। দু’দেশের সে উত্তেপটা দ ‘দেশের ক্রীড়াঙ্গনে শক্তভাবে অবস্থান নিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে আসন্ন এস এ গেমসে ভারতের উপস্থিতি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, আসন্ন এশিয়া কাপ ক্রিকেট থেকেও নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড।
পাকিস্তানের সঙ্গে আর কোনো টুর্নামেন্টে মুখোমুখি না হওয়ার সিদ্ধান্তও প্রাথমিকভাবে নিয়ে ফেলে ভারত। যে কারণে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল আগামী সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য এশিয়া কাপ নিয়ে।
এবার এশিয়া কাপের ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়লো। এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) সব ইভেন্ট থেকে নাম প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। এ খবর জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’।
শুধু পুরুষদের এশিয়া কাপ নয়, আগামী মাসে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিতব্য মহিলা ইমার্জিং এশিয়া কাপ থেকে ভারতের নাম প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছে গণমাধ্যমটি। নাম প্রত্যাহারের কারণ হিসেবে বিসিসিআই জানায়, যে সংস্থার প্রধান কর্মকর্তা একজন পাকিস্তানি মন্ত্রী, সে সংস্থার অধীনে কোনো টুর্নামেন্ট খেলবে না ভারত।
বর্তমানে এসিসির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি, যিনি একইসঙ্গে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যানও। সূত্র জানায়, পাকিস্তান ক্রিকেটকে আন্তর্জাতিকভাবে একঘরে করার একটি পদক্ষেপের অংশ হিসেবে বিসিসিআই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিসিসিআইয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘যে টুর্নামেন্টের আয়োজন এমন একজন করছেন যিনি পাকিস্তানের একজন মন্ত্রী, তাতে ভারতীয় দল অংশ নিতে পারে না। এটাই দেশের সাধারণ মনোভাব। আমরা মৌখিকভাবে এসিসি-কে জানিয়ে দিয়েছি যে আমরা আসন্ন মহিলা ইমার্জিং টিমস এশিয়া কাপ থেকে নাম প্রত্যাহার করছি এবং ভবিষ্যতে তাদের আয়োজিত ইভেন্টে অংশ নেওয়া আপাতত স্থগিত। আমরা ভারতের সরকারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।’
সেপ্টেম্বরে ভারতের মাটিতে আয়োজিত হওয়ার কথা ছিল পুরুষদের এশিয়া কাপ। এই টুর্নামেন্টে ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা অংশ নেওয়ার কথা। ভারতের এই সিদ্ধান্ত টুর্নামেন্ট পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রকট হয়েছে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইভেন্টগুলোর বেশিরভাগ স্পনসরই যেহেতু ভারত থেকে আসে, তাই বিসিসিআই ধারণা করছে, ভারতকে বাদ দিয়ে এশিয়া কাপ খুব বেশি জমবে না। তাছাড়া ভারত-পাকিস্তানের হাই-ভোল্টেজ ম্যাচ ছাড়া এই টুর্নামেন্ট ব্রডকাস্টারদের আগ্রহ হারাবে। ফলে সম্প্রচার স্বত্ব থেকে আয়ও কমে যাবে।
এসিসির পাঁচ পূর্ণ সদস্য—ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান—প্রত্যেকে সম্প্রচার আয়ের ১৫ শতাংশ করে পায়। আর বাকি অর্থ সহযোগী ও অনুমোদিত সদস্যদের মধ্যে ভাগ করা হয়।
২০২৩ সালের এশিয়া কাপেও ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার প্রভাব পড়ে। টুর্নামেন্টটি পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হলেও ভারত সীমান্ত পার হতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে হাইব্রিড মডেলে ভারতের ম্যাচগুলো শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত হবে।
এই একই চিত্র দেখা যায় ২০২৪ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও। আয়োজক ছিল পাকিস্তান। ভারত ফের হাইব্রিড মডেলের দাবি তোলে এবং তাদের ম্যাচগুলো দুবাইয়ে খেলে। ভারত ফাইনালে যাওয়ায় পাকিস্তান ফাইনাল আয়োজনের সুযোগ হারায়।
এর আগে ভারতের জয় শাহ এসিসির সভাপতি ছিলেন। গত বছর আইসিসি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে এসিসির পদ ছেড়ে যান তৎকালীন বিসিসিআই সেক্রেটারি। পরে মহসিন নকভি সেই চেয়ারে আসীন হন।