ঢাকা ০৩:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

মোহামেডানের শিরোপা জয়েও নকীবের কপালে চিন্তার ভাঁজ

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০১:৪১:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫
  • / ৪৮ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কুমিল্লায় প্রিমিয়ার ফুটবল লীগের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে আবাহনী লিমিটেড ও ফটিস এফসি’র মধ্যকার লড়াই চলছে। প্রযুক্তির এই যুগে মোহামেডান ক্লাবে তখন প্রায় প্রত্যেক খেলোয়াড় হাতের মোবাইলে দেখচ্ছেন ম্যাচটি। পাশ দিয়ে কে গেলো,কি হচ্ছে সে দিকে নজর নেই। যেন কুমিল্লা মাঠের পুরো উত্তেজনার ঢেউ মতিঝিল ক্লাবপাড়ায় উপচে পড়ছে। ফটিস এই ম্যাচে জেতা মানেই যে তিন ম্যাচ হাতে থাকতেই মোহামেডানের লিগ শিরোপা নিশ্চিত! হয়েছেও তাই। উত্তেজনাকর এই ম্যাচে দশজনের ফটিসের কাছে আবাহনী ২-১ গোলে হেরে যায়।

ফটিসের এই বিজয়ের উৎসবটা হয়ে গেলো মোহামেডান ক্লাবে। রেফারির শেষ বাঁশি বেজে উঠতেই ক্লাব টেন্টে থাকা সোলায়মান দিয়াবাত সতীর্থথের সে কি আলিঙ্গন। গত পাঁচ বছর মোহামেডানের হয়ে খেলে তার নেতৃত্বে এই প্রথম লিগ শিরোপা পেলো মোহামেডান। ২৩ বছর সাদাকালো দলটি প্রথমবারের মতো শিরোপা ঘরে তুললো। ঘুচলো তারা দীর্ঘদিনের শিরোপা ঘরে তোলার আক্ষেপ। বিকেলে সাদাকালো দলটি ক্ষণিকের জন্য রঙিন হয়ে ওঠলো।

একটা সময় শিরোপা ছাড়া অন্য ভাবনা ছিলো না মোহামেডানের। সে দলটিই কিনা ২৩ বছর পর জিতল পেশাদার লীগের প্রথম শিরোপা। তার একটাই কারণ পেশাদার লীগে এখনো অপেশাদারেই ঘুরপাক খাচ্ছে জনপ্রিয় সাদাকালো দলটি। মোহামেডানের এক সময়ের মাঠের সৈনিক তুখোড় স্ট্রাইকার ইমতিয়াজ আহমেদ নকীব ব্যক্ত করেছেন সে প্রতিক্রিয়া। বর্তমানে তিনি দলের ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিজয়ের এই দিনে খুব একটা হাস্যজ্জল হতে দেখা যায়নি তাকে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আগামী মৌসুমের জন্য কিভাবে দলগড়বেন, সেই টেনশান এখনি পেয়ে বসেছে। ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাবটির নিজস্ব কোন তহবিল নেই। এখনো সেই আগের জামানার মতোই অনুদান নির্ভশীল। দু’একজন সংগঠকের প্রবল চেষ্টায় বছরে কোনভাবে ১০/১২ কোটি টাকার যোগান আসে। তাও কিনা অনিশ্চিতার দোলাচলে। ম্যানেজারের দায়িত্বপালন করতে গিয়ে বেতন তো দূরের কথা নিজের পকেট থেকেও ৫ লাখ টাকা খরচ করতে হয়েছে নকীবকে। একে-ওকে ধরে মোট লাখ পনের মতো যোগানও দিয়েছেন। তাই নির্দিধায় বলে দিয়েছেন, আমরা পেশাদার লিগ চ্যাম্পিয়ন হলেও এখনো পেশাদার হয়ে উঠতে পারিনি। এই জায়গাটা ঠিক করতে পারলে মোহামেডান সঠিকভাবেই এগুতে পারবে।’

তবে একটা দলের ভিতর যদি ডিসিপ্লিন থাকে তাহলে সে দলটি ভালো করবেই,সে প্রমান দিয়েছে এবার মোহামেডান, জানালেন নকীব। অল্প বাজেট দিয়েও তাদের ডিসিপ্লিন নির্ভর সফলতার দেখা পেয়েছে বলে দাবী তার।

প্রশ্ন আসছে তিন ম্যাচ আগে মোহামেডানের শিরোপা নিশ্চিত নিয়ে। প্রকৃত অর্থে মোহামেডান শিরোপা নিশ্চিত করতে দরকার ছিলো পরের তিন ম্যাচে তিন পয়েন্ট। তবে এই ম্যাচে আবাহনী হেরে গেলে সেটার আর দরকার নেই। তাই ফটিসের জয়ে মুখিয়ে ছিলে সাদাকালো শিবির। হয়েছেও তাই। আবাহনীর শনির দশা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। ফলে মোহামেডানের বৃহস্পতি হয়ে গেলে তুঙ্গে।

পেনাল্টি থেকে ওমর বাবুর গোলে লিড নিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করে ফর্টিস। ৭৭ মিনিটে সাজেদ হাসান জুম্মনের গোলে ফর্টিস যখন ব্যবধান ২-০ করেন তখন নিজেদের কক্ষ থেকে বের হতে থাকেন মোহামেডানের খেলোয়াড়রা।

কক্ষের সামনেই তখন মোবাইলে ডুবে ছিলেন মোহামেডানের অধিনায়ক মালির সোলেমান দিয়াবাতে। সাথে ছিলেন ক্লাবের আরেক বিদেশি বুরকিনা ফাসোর মুনজির কুলদিয়ানি। ততক্ষণে মোহামেডান ক্লাবে ভীড় জমিয়েছেন গণমাধ্যমকর্মীরা।

‘হাই দিয়াবাতে’- বলে অনেকে মোহামেডান অধিনায়কের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইলেও মোবাইল থেকে চোখ তুলছিলেন এই মালির স্ট্রাইকার। মোহামেডানের ঘরের ছেলে হয়ে যাওয়া দিয়াবাতের রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষা তখন।

হাতাহাতি করে ফর্টিসের মনজুর রহমান লালকার্ড পেলে ১০ জনের দলের পরিণত হয় এগিয়ে থাকা দলটি। সেই সুযোগে ৭৭ মিনিটে ইয়াসিন খানের গোলে ব্যবধান কমায় আবাহনী। মোহামেডান ক্লাবে তখন পিনপতন নিরবতা। ১০ জনের ফর্টিস কি ২-১ গোলে লিডটা ধরে রাখতে পারবে?

টেনশন মোহামেডানের খেলোয়াড়, কোচ ও সমর্থকদের। খেলা ইনজুরি সময়ে গড়ালে ৫ মিনিটের সঙ্কেত দেন চতুর্থ রেফারি। অপেক্ষা বাড়তে থাকে মোহামেডানের। তখন ক্লাব প্রাঙ্গণে শুরু হয় ক্ষণ গননা। আর ৫ মিনিট, আর ৪ মিনিট। এভাবে ৩, ২, ১, ০ এর পর আরো কয়েক সেকেন্ড খেলা চললো।

কুমিল্লার মাঠে রেফারি যখন লম্বা বাশি বাজিয়ে খেলা শেষ করলেন তখন উল্লাসে ফেটে পড়লো ঢাকার মতিঝিলের মোহামেডান ক্লাব প্রাঙ্গন। ৯৫ মিনিট পর উঠে দাঁড়ালেন দিয়াবাতে, জড়িয়ে ধরলেন মনজুর কুলদিয়ানিকে। মুহূর্তের মধ্যে সমর্থকরা দিয়াবাতেকে ঘিরে ধরে স্লোগান তুললেন মোহামেডান…, মোহামেডান।

আবাহনীর হারে ১৫ ম্যাচে ৩৮ পয়েন্ট নিয়ে প্রথমবারের মতো পেশাদার লিগের শিরোপা নিশ্চিত হলো মোহামেডানের। কুমিল্লার ভাষাশহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়াম থেকে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার উচ্ছ্বাস বিদ্যুৎ গতিতে ছড়িয়ে পড়লো দেশজুড়ে মোহামেডান সমর্থকদের মধ্যে।

২০০৭ সালে পেশাদার লিগ শুরু হয়েছে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী ৬ বার শিরোপা ধরে তুলেছে, ২০১৮ সালে শীর্ষ লিগে নাম লিখিয়ে বসুন্ধরা কিংস চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ৫ বার। ৩ বার শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব, ১ বার শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র। অথচ দেশের ফুটবল ইতিহাসে অনেক কীর্তি গড়া মোহামেডানের ঘরে নেই পেশাদার লিগের শিরোপা।

লিগ আসে লিগ যায়, শূন্য থাকে মোহামেডানের প্রাপ্তির খাতা। ক্লাবে এত ট্রফি। তারপরও বড় শূন্যতা ছিল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা ছুঁতে না পারায়। দীর্ঘ ১৮ বছরে তাদের অর্জন ছিল চারবার রানার্সআপ হওয়া। দেড় যুগ অপেক্ষার পর সোনার হরিণ হয়ে যাওয়া পেশাদার লিগের ট্রফি ধরা দিলো সাদাকালোদের হাতে। শনিবারের সন্ধ্যাটা রঙিন হলো মতিঝিলের ক্লাবটিতে।

পেশাদার লিগ প্রবর্তনের আগে শীর্ষ আসর ছিল ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। ২০০২ সালে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ জিতেছিল মোহামেডান। দীর্ঘ ২৩ বছর পর তাদের ঘরে গেলো আরেকটি লিগের শিরোপা।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

মোহামেডানের শিরোপা জয়েও নকীবের কপালে চিন্তার ভাঁজ

আপডেট সময় : ০১:৪১:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

কুমিল্লায় প্রিমিয়ার ফুটবল লীগের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে আবাহনী লিমিটেড ও ফটিস এফসি’র মধ্যকার লড়াই চলছে। প্রযুক্তির এই যুগে মোহামেডান ক্লাবে তখন প্রায় প্রত্যেক খেলোয়াড় হাতের মোবাইলে দেখচ্ছেন ম্যাচটি। পাশ দিয়ে কে গেলো,কি হচ্ছে সে দিকে নজর নেই। যেন কুমিল্লা মাঠের পুরো উত্তেজনার ঢেউ মতিঝিল ক্লাবপাড়ায় উপচে পড়ছে। ফটিস এই ম্যাচে জেতা মানেই যে তিন ম্যাচ হাতে থাকতেই মোহামেডানের লিগ শিরোপা নিশ্চিত! হয়েছেও তাই। উত্তেজনাকর এই ম্যাচে দশজনের ফটিসের কাছে আবাহনী ২-১ গোলে হেরে যায়।

ফটিসের এই বিজয়ের উৎসবটা হয়ে গেলো মোহামেডান ক্লাবে। রেফারির শেষ বাঁশি বেজে উঠতেই ক্লাব টেন্টে থাকা সোলায়মান দিয়াবাত সতীর্থথের সে কি আলিঙ্গন। গত পাঁচ বছর মোহামেডানের হয়ে খেলে তার নেতৃত্বে এই প্রথম লিগ শিরোপা পেলো মোহামেডান। ২৩ বছর সাদাকালো দলটি প্রথমবারের মতো শিরোপা ঘরে তুললো। ঘুচলো তারা দীর্ঘদিনের শিরোপা ঘরে তোলার আক্ষেপ। বিকেলে সাদাকালো দলটি ক্ষণিকের জন্য রঙিন হয়ে ওঠলো।

একটা সময় শিরোপা ছাড়া অন্য ভাবনা ছিলো না মোহামেডানের। সে দলটিই কিনা ২৩ বছর পর জিতল পেশাদার লীগের প্রথম শিরোপা। তার একটাই কারণ পেশাদার লীগে এখনো অপেশাদারেই ঘুরপাক খাচ্ছে জনপ্রিয় সাদাকালো দলটি। মোহামেডানের এক সময়ের মাঠের সৈনিক তুখোড় স্ট্রাইকার ইমতিয়াজ আহমেদ নকীব ব্যক্ত করেছেন সে প্রতিক্রিয়া। বর্তমানে তিনি দলের ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিজয়ের এই দিনে খুব একটা হাস্যজ্জল হতে দেখা যায়নি তাকে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আগামী মৌসুমের জন্য কিভাবে দলগড়বেন, সেই টেনশান এখনি পেয়ে বসেছে। ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাবটির নিজস্ব কোন তহবিল নেই। এখনো সেই আগের জামানার মতোই অনুদান নির্ভশীল। দু’একজন সংগঠকের প্রবল চেষ্টায় বছরে কোনভাবে ১০/১২ কোটি টাকার যোগান আসে। তাও কিনা অনিশ্চিতার দোলাচলে। ম্যানেজারের দায়িত্বপালন করতে গিয়ে বেতন তো দূরের কথা নিজের পকেট থেকেও ৫ লাখ টাকা খরচ করতে হয়েছে নকীবকে। একে-ওকে ধরে মোট লাখ পনের মতো যোগানও দিয়েছেন। তাই নির্দিধায় বলে দিয়েছেন, আমরা পেশাদার লিগ চ্যাম্পিয়ন হলেও এখনো পেশাদার হয়ে উঠতে পারিনি। এই জায়গাটা ঠিক করতে পারলে মোহামেডান সঠিকভাবেই এগুতে পারবে।’

তবে একটা দলের ভিতর যদি ডিসিপ্লিন থাকে তাহলে সে দলটি ভালো করবেই,সে প্রমান দিয়েছে এবার মোহামেডান, জানালেন নকীব। অল্প বাজেট দিয়েও তাদের ডিসিপ্লিন নির্ভর সফলতার দেখা পেয়েছে বলে দাবী তার।

প্রশ্ন আসছে তিন ম্যাচ আগে মোহামেডানের শিরোপা নিশ্চিত নিয়ে। প্রকৃত অর্থে মোহামেডান শিরোপা নিশ্চিত করতে দরকার ছিলো পরের তিন ম্যাচে তিন পয়েন্ট। তবে এই ম্যাচে আবাহনী হেরে গেলে সেটার আর দরকার নেই। তাই ফটিসের জয়ে মুখিয়ে ছিলে সাদাকালো শিবির। হয়েছেও তাই। আবাহনীর শনির দশা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। ফলে মোহামেডানের বৃহস্পতি হয়ে গেলে তুঙ্গে।

পেনাল্টি থেকে ওমর বাবুর গোলে লিড নিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করে ফর্টিস। ৭৭ মিনিটে সাজেদ হাসান জুম্মনের গোলে ফর্টিস যখন ব্যবধান ২-০ করেন তখন নিজেদের কক্ষ থেকে বের হতে থাকেন মোহামেডানের খেলোয়াড়রা।

কক্ষের সামনেই তখন মোবাইলে ডুবে ছিলেন মোহামেডানের অধিনায়ক মালির সোলেমান দিয়াবাতে। সাথে ছিলেন ক্লাবের আরেক বিদেশি বুরকিনা ফাসোর মুনজির কুলদিয়ানি। ততক্ষণে মোহামেডান ক্লাবে ভীড় জমিয়েছেন গণমাধ্যমকর্মীরা।

‘হাই দিয়াবাতে’- বলে অনেকে মোহামেডান অধিনায়কের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইলেও মোবাইল থেকে চোখ তুলছিলেন এই মালির স্ট্রাইকার। মোহামেডানের ঘরের ছেলে হয়ে যাওয়া দিয়াবাতের রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষা তখন।

হাতাহাতি করে ফর্টিসের মনজুর রহমান লালকার্ড পেলে ১০ জনের দলের পরিণত হয় এগিয়ে থাকা দলটি। সেই সুযোগে ৭৭ মিনিটে ইয়াসিন খানের গোলে ব্যবধান কমায় আবাহনী। মোহামেডান ক্লাবে তখন পিনপতন নিরবতা। ১০ জনের ফর্টিস কি ২-১ গোলে লিডটা ধরে রাখতে পারবে?

টেনশন মোহামেডানের খেলোয়াড়, কোচ ও সমর্থকদের। খেলা ইনজুরি সময়ে গড়ালে ৫ মিনিটের সঙ্কেত দেন চতুর্থ রেফারি। অপেক্ষা বাড়তে থাকে মোহামেডানের। তখন ক্লাব প্রাঙ্গণে শুরু হয় ক্ষণ গননা। আর ৫ মিনিট, আর ৪ মিনিট। এভাবে ৩, ২, ১, ০ এর পর আরো কয়েক সেকেন্ড খেলা চললো।

কুমিল্লার মাঠে রেফারি যখন লম্বা বাশি বাজিয়ে খেলা শেষ করলেন তখন উল্লাসে ফেটে পড়লো ঢাকার মতিঝিলের মোহামেডান ক্লাব প্রাঙ্গন। ৯৫ মিনিট পর উঠে দাঁড়ালেন দিয়াবাতে, জড়িয়ে ধরলেন মনজুর কুলদিয়ানিকে। মুহূর্তের মধ্যে সমর্থকরা দিয়াবাতেকে ঘিরে ধরে স্লোগান তুললেন মোহামেডান…, মোহামেডান।

আবাহনীর হারে ১৫ ম্যাচে ৩৮ পয়েন্ট নিয়ে প্রথমবারের মতো পেশাদার লিগের শিরোপা নিশ্চিত হলো মোহামেডানের। কুমিল্লার ভাষাশহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়াম থেকে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার উচ্ছ্বাস বিদ্যুৎ গতিতে ছড়িয়ে পড়লো দেশজুড়ে মোহামেডান সমর্থকদের মধ্যে।

২০০৭ সালে পেশাদার লিগ শুরু হয়েছে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী ৬ বার শিরোপা ধরে তুলেছে, ২০১৮ সালে শীর্ষ লিগে নাম লিখিয়ে বসুন্ধরা কিংস চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ৫ বার। ৩ বার শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব, ১ বার শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র। অথচ দেশের ফুটবল ইতিহাসে অনেক কীর্তি গড়া মোহামেডানের ঘরে নেই পেশাদার লিগের শিরোপা।

লিগ আসে লিগ যায়, শূন্য থাকে মোহামেডানের প্রাপ্তির খাতা। ক্লাবে এত ট্রফি। তারপরও বড় শূন্যতা ছিল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা ছুঁতে না পারায়। দীর্ঘ ১৮ বছরে তাদের অর্জন ছিল চারবার রানার্সআপ হওয়া। দেড় যুগ অপেক্ষার পর সোনার হরিণ হয়ে যাওয়া পেশাদার লিগের ট্রফি ধরা দিলো সাদাকালোদের হাতে। শনিবারের সন্ধ্যাটা রঙিন হলো মতিঝিলের ক্লাবটিতে।

পেশাদার লিগ প্রবর্তনের আগে শীর্ষ আসর ছিল ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। ২০০২ সালে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ জিতেছিল মোহামেডান। দীর্ঘ ২৩ বছর পর তাদের ঘরে গেলো আরেকটি লিগের শিরোপা।