ঢাকা ০২:৫৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

৪ দফা দাবিতে কাকরাইল মোড়ে গণঅনশনে বসেছেন জবি শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৬:৪১:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫
  • / ৪০ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

চার দফার দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কাকরাইল মোড়ে অনশন শুরু করেছেন। দাবিগুলো হচ্ছে যথাক্রমে-আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করেই অনুমোদন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন।

এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘দাবি আদায় করতে গিয়ে আমাদের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এমনকি সাংবাদিকও আহত হয়েছেন। জাতীয় বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ আমাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করছেন। কিন্তু এই সরকারের আমাদের রক্তের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিতি হয়েও তারা শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার মেনে নিতে চাইছেন না।’

কাকরাইল মোড়ে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে অনশনে বসেন। সাবেক শিক্ষার্থীরা তাদের দেখাশোনা করছেন স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল হয়েছে কাকরাইল মসজিদ মোড়।

সব মিলিয়ে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের সমাবেশে জবি ঐক্যের পক্ষ থেকে গণঅনশনের ঘোষণা দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহতাব লিমন।তিনি বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন এমন জায়গায় এসে পৌঁছেছে যে, আমাদের আর পেছনে ফেরার জায়গা নেই। বিজয় না নিয়ে আমরা ফিরছি না।’

উপরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো উল্লেখ করা হলেও প্রশ্ন থেকে যায় অনেক, কেন তারা অন্তর্বর্তী সরকারের সময় উঠে পড়ে নেমেছে? স্থিতিশীল কিংবা গণতান্ত্রিক সরকার আসলেই তো করতে পারে।  এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জবি’র একজন শিক্ষক অধ্যাপক  মোহাম্মদ বিলাল হোসাইনের ফেসবুক থেকে জানা গেলো তাদের কষ্টের কথাগুলো। সেখানে তিনি যা লিখেছেন তা হুবুহু তুলে ধরা হলো-

‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠা হয়েছে। ক্যাম্পাসের বর্তমান অবকাঠামোগত অবস্থাকে কলেজের অবকাঠামোর সাথে তুলনা করা যায়। গতকাল উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলতেছিলেন- এটির অবকাঠামোগত অবস্থা ঢাকা কলেজের চেয়েও দূর্বল।
পুরান ঢাকায় ১১ একর জমির উপর বর্তমান ক্যাম্পাস। ২০০৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর, প্রথম দিকে নতুন একটি মাত্র বিল্ডিং তোলা হয়েছে। এরপর আর কোন উন্নয়ন কাজ হয়নি। ঢাকার বুকে ১৮ হাজার শিক্ষার্থীর একটা বিশ্ববিদ্যালয়কে গত রেজিমে এতটা অবহেলা করা হয়েছে যে, পুরাতন বিল্ডিং গুলোর কোন সংস্কার পর্যন্ত করা হয়নি, নতুন কোনো অবকাঠামো তৈরি করা হয়নি।
আমরা একটা রুমে তিন/চারজন প্রফেসর গাদাগাদি করে বসি। শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ক্লাস রুম নাই। দালানগুলো খসে খসে পড়ছে। ক্লাস রুমের সুবিধাদি নাই। একই ফ্লোরে কয়েকটি বিভাগ। যেকোনো সময় ছাদ ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম। শিক্ষার্থীদের আবাসনের ব্যবস্থা নাই। বৃত্তির কোনো ব্যবস্থা নাই। পুরান ঢাকায় শিক্ষার্থীরা মানবেতর জীবনযাপন করছে।
ঢাকার বুকে দুটি বড় বিশ্ববিদ্যালয়, অথচ ঢাবিতে বার্ষিক বাজেট নয়শ কোটি আর জবির বাজেট দেড়শ কোটি টাকা। ফলে বেতন ভাতার বাহিরে কোনো উন্নয়ন কাজ হয়না। জবির প্রয়োজন বিবেচনায় বাজেট দেয়া হয়না। বরং প্রতি বছর ৫-১০% থোক বৃদ্ধি হয়। ফলে যাদের আটশ কোটি বরাদ্দ তাদের বাড়ে ৮০ কোটি, আর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাড়ে ১০-১৫ কোটি।
সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে ২৪ এর জুলাই বিপ্লবের পর জবির শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করে। ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীকে ২য় ক্যাম্পাসের কাজ সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে। এখন প্রসেস চলছে। জবির বার্ষিক বাজেট বৃদ্ধি, আবাসন বৃত্তি ও জবির কাজকে অগ্রাধিকার প্রকল্পে নেয়ার তিন দাবি নিয়ে বর্তমান আন্দোলন।
জবির প্রতি করা বৈষম্য পূর্ববতী রেজিমের, এটা আমরা জানি। আমরা বর্তমান সরকারকে তার জন্য দোষারোপ করছিনা। আমাদের দাবী এবারের ২০২৫-২০২৬ বাজেটে জবির প্রতি যে বৈষম্য হয়ে আসছে সেটি দূর করেন। আমাদের ৩০৬ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট কাটসাট ছাড়া গ্রহণ করে নেন। তাহলে শিক্ষার্থীদের যে আবাসন ভাতা/বৃত্তি দাবি সেটিও পূরণ হবে। জবির ২য় ক্যাম্পাসের কাজ অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে গ্রহণ করুন।’

এদিকে এসব দাবি নিয়ে গত বুধবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করার জন্য যাওয়ার সময় কাকরাইল মোড়ে তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এরপর শিক্ষার্থীরা সেখানেই অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন এবং জানান যে, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা না করে তারা ফিরে যাবেন না এবং শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার বিচার নিশ্চিত করাও দাবির অন্তর্ভুক্ত করেন।

পরে সেদিন রাতে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম তাদের সঙ্গে কথা বলতে এলে, তার দিকে বোতল ছুঁড়ে মারাকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। তারা বিকেলে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বিশ্ববিদ্যালয় ‘শাটডাউন’ ঘোষণা দেন। রাতে আলোচনার জন্য উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম এবং ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমিন শিক্ষা উপদেষ্টা ও উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাসায় দীর্ঘসময় বৈঠক করলেও, কোনো সমাধান আসেনি।

তিনি জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে ‘জবি ঐক্যের’ পক্ষ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো। তিনি আরও জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কাকরাইল মোড়েই অবস্থান করবেন শিক্ষার্থীরা।

রইছউদ্দীন বলেন, আমরা সরকারের কাছে আমাদের অধিকার আদায়ের দাবি জানিয়েছিলাম। তারা আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বেধড়ক মেরেছে কিন্তু আমাদের অধিকারের বিষয়ে কর্ণপাত করেনি। এমনকি ৩৫ ঘণ্টা পার হলেও কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি প্রশাসন। সরকার থেকে কোনো বার্তা আসেনি।

তিনি বলেন, দাবি আদায়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কাল জুমার পর গণঅনশন শুরু করবেন। এতে সাবেক ও বর্তমান জবিয়ানদের অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে আন্দোলনস্থলে জবিয়ান সমাবেশ শুরু হবে।

এছাড়া, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির আন্দোলনে পুলিশ কতৃক শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে ১৪ মে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কালো দিবস পালনের ঘোষণা দেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

৪ দফা দাবিতে কাকরাইল মোড়ে গণঅনশনে বসেছেন জবি শিক্ষার্থীরা

আপডেট সময় : ০৬:৪১:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫

চার দফার দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কাকরাইল মোড়ে অনশন শুরু করেছেন। দাবিগুলো হচ্ছে যথাক্রমে-আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করেই অনুমোদন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন।

এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘দাবি আদায় করতে গিয়ে আমাদের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এমনকি সাংবাদিকও আহত হয়েছেন। জাতীয় বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ আমাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করছেন। কিন্তু এই সরকারের আমাদের রক্তের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিতি হয়েও তারা শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার মেনে নিতে চাইছেন না।’

কাকরাইল মোড়ে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে অনশনে বসেন। সাবেক শিক্ষার্থীরা তাদের দেখাশোনা করছেন স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল হয়েছে কাকরাইল মসজিদ মোড়।

সব মিলিয়ে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের সমাবেশে জবি ঐক্যের পক্ষ থেকে গণঅনশনের ঘোষণা দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহতাব লিমন।তিনি বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন এমন জায়গায় এসে পৌঁছেছে যে, আমাদের আর পেছনে ফেরার জায়গা নেই। বিজয় না নিয়ে আমরা ফিরছি না।’

উপরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো উল্লেখ করা হলেও প্রশ্ন থেকে যায় অনেক, কেন তারা অন্তর্বর্তী সরকারের সময় উঠে পড়ে নেমেছে? স্থিতিশীল কিংবা গণতান্ত্রিক সরকার আসলেই তো করতে পারে।  এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জবি’র একজন শিক্ষক অধ্যাপক  মোহাম্মদ বিলাল হোসাইনের ফেসবুক থেকে জানা গেলো তাদের কষ্টের কথাগুলো। সেখানে তিনি যা লিখেছেন তা হুবুহু তুলে ধরা হলো-

‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠা হয়েছে। ক্যাম্পাসের বর্তমান অবকাঠামোগত অবস্থাকে কলেজের অবকাঠামোর সাথে তুলনা করা যায়। গতকাল উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলতেছিলেন- এটির অবকাঠামোগত অবস্থা ঢাকা কলেজের চেয়েও দূর্বল।
পুরান ঢাকায় ১১ একর জমির উপর বর্তমান ক্যাম্পাস। ২০০৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর, প্রথম দিকে নতুন একটি মাত্র বিল্ডিং তোলা হয়েছে। এরপর আর কোন উন্নয়ন কাজ হয়নি। ঢাকার বুকে ১৮ হাজার শিক্ষার্থীর একটা বিশ্ববিদ্যালয়কে গত রেজিমে এতটা অবহেলা করা হয়েছে যে, পুরাতন বিল্ডিং গুলোর কোন সংস্কার পর্যন্ত করা হয়নি, নতুন কোনো অবকাঠামো তৈরি করা হয়নি।
আমরা একটা রুমে তিন/চারজন প্রফেসর গাদাগাদি করে বসি। শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ক্লাস রুম নাই। দালানগুলো খসে খসে পড়ছে। ক্লাস রুমের সুবিধাদি নাই। একই ফ্লোরে কয়েকটি বিভাগ। যেকোনো সময় ছাদ ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম। শিক্ষার্থীদের আবাসনের ব্যবস্থা নাই। বৃত্তির কোনো ব্যবস্থা নাই। পুরান ঢাকায় শিক্ষার্থীরা মানবেতর জীবনযাপন করছে।
ঢাকার বুকে দুটি বড় বিশ্ববিদ্যালয়, অথচ ঢাবিতে বার্ষিক বাজেট নয়শ কোটি আর জবির বাজেট দেড়শ কোটি টাকা। ফলে বেতন ভাতার বাহিরে কোনো উন্নয়ন কাজ হয়না। জবির প্রয়োজন বিবেচনায় বাজেট দেয়া হয়না। বরং প্রতি বছর ৫-১০% থোক বৃদ্ধি হয়। ফলে যাদের আটশ কোটি বরাদ্দ তাদের বাড়ে ৮০ কোটি, আর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাড়ে ১০-১৫ কোটি।
সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে ২৪ এর জুলাই বিপ্লবের পর জবির শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করে। ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীকে ২য় ক্যাম্পাসের কাজ সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে। এখন প্রসেস চলছে। জবির বার্ষিক বাজেট বৃদ্ধি, আবাসন বৃত্তি ও জবির কাজকে অগ্রাধিকার প্রকল্পে নেয়ার তিন দাবি নিয়ে বর্তমান আন্দোলন।
জবির প্রতি করা বৈষম্য পূর্ববতী রেজিমের, এটা আমরা জানি। আমরা বর্তমান সরকারকে তার জন্য দোষারোপ করছিনা। আমাদের দাবী এবারের ২০২৫-২০২৬ বাজেটে জবির প্রতি যে বৈষম্য হয়ে আসছে সেটি দূর করেন। আমাদের ৩০৬ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট কাটসাট ছাড়া গ্রহণ করে নেন। তাহলে শিক্ষার্থীদের যে আবাসন ভাতা/বৃত্তি দাবি সেটিও পূরণ হবে। জবির ২য় ক্যাম্পাসের কাজ অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে গ্রহণ করুন।’

এদিকে এসব দাবি নিয়ে গত বুধবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করার জন্য যাওয়ার সময় কাকরাইল মোড়ে তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এরপর শিক্ষার্থীরা সেখানেই অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন এবং জানান যে, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা না করে তারা ফিরে যাবেন না এবং শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার বিচার নিশ্চিত করাও দাবির অন্তর্ভুক্ত করেন।

পরে সেদিন রাতে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম তাদের সঙ্গে কথা বলতে এলে, তার দিকে বোতল ছুঁড়ে মারাকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। তারা বিকেলে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বিশ্ববিদ্যালয় ‘শাটডাউন’ ঘোষণা দেন। রাতে আলোচনার জন্য উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম এবং ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমিন শিক্ষা উপদেষ্টা ও উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাসায় দীর্ঘসময় বৈঠক করলেও, কোনো সমাধান আসেনি।

তিনি জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে ‘জবি ঐক্যের’ পক্ষ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো। তিনি আরও জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কাকরাইল মোড়েই অবস্থান করবেন শিক্ষার্থীরা।

রইছউদ্দীন বলেন, আমরা সরকারের কাছে আমাদের অধিকার আদায়ের দাবি জানিয়েছিলাম। তারা আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বেধড়ক মেরেছে কিন্তু আমাদের অধিকারের বিষয়ে কর্ণপাত করেনি। এমনকি ৩৫ ঘণ্টা পার হলেও কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি প্রশাসন। সরকার থেকে কোনো বার্তা আসেনি।

তিনি বলেন, দাবি আদায়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কাল জুমার পর গণঅনশন শুরু করবেন। এতে সাবেক ও বর্তমান জবিয়ানদের অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে আন্দোলনস্থলে জবিয়ান সমাবেশ শুরু হবে।

এছাড়া, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির আন্দোলনে পুলিশ কতৃক শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে ১৪ মে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কালো দিবস পালনের ঘোষণা দেন তিনি।