কোন সাংবাদিক দায়িত্বশীল ও পেশাদার না হলে তিনি আইনি সুরক্ষা পেতে পারেন না : তথ্য উপদেষ্টা

- আপডেট সময় : ১২:১৩:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫
- / ৪০ বার পড়া হয়েছে
তথ্য উপদেস্টা মো.মাহফুজ আলম বলেছেন,’কোনো সাংবাদিক দায়িত্বশীল ও পেশাদার না হলে তিনি আইনি সুরক্ষা পেতে পারেন না।’ তিনি বলেন, সাংবাদিকদের জন্য সুরক্ষা আইনের পাশাপাশি সাংবাদিকতার দায়িত্ব ও নৈতিকতাবিষয়ক আইন হওয়া প্রয়োজন।
আজ মঙ্গলবার তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘ফ্যাসিবাদের ১৫ বছরে গণমাধ্যমের বাস্তবতা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ওই সময় অনেক সাংবাদিক ভয়ে নয়, বরং লোভে পড়ে ফ্যাসিবাদী সরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন। তারা সাংবাদিকতার চেয়ে শেখ পরিবারের ভাবমূর্তি রক্ষায় অনেক বেশি তৎপর ছিলেন। ফ্যাসিবাদী সরকারের দালালি করে অনেক সাংবাদিক বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদের মধ্যে থাকায় অনেক সাংবাদিকের মধ্যে এক ধরনের সেলফ-সেন্সরশিপ কাজ করছে। এই অবস্থা দ্রুত পরিবর্তন হওয়া প্রয়োজন।’
মাহফুজ আলম বলেন, সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের অনেক সতর্ক থাকা প্রয়োজন। অসত্য সংবাদ প্রকাশের ফলে অনেকের জীবন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। গণমাধ্যমে বিদ্যমান সংকট সমাধানে সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক ঐকমত্য ছাড়া গণমাধ্যমের উন্নয়ন সম্ভব নয়।
এ সময় তিনি গণমাধ্যমে ইতিবাচক পরিবেশ সৃষ্টিতে কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান। গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ বলেন, এখন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরকারের পক্ষ থেকে টেলিফোন করে চাপ দেওয়া হচ্ছে না—এটি গণমাধ্যমের জন্য ইতিবাচক দিক।
সাংবাদিকতার অপব্যবহারকে ‘দুর্বৃত্তায়ন’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, সাংবাদিকতার অপব্যবহার অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। তিনি গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান।
মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ আল মামুন। এতে তিনি বিগত সরকারের আমলে গণমাধ্যমের অপেশাদার আচরণের চিত্র তুলে ধরে বলেন, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সময় শিকারি সাংবাদিকতার মাধ্যমে মানুষকে অপরাধী বানিয়ে শাস্তি দেওয়া হতো। এক ধরনের ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করাই ছিল শিকারি সাংবাদিকতার মূল উদ্দেশ্য।
গত ১৫ বছর সরকার কীভাবে গণমাধ্যমকে প্রভাবিত করেছে, সে বিষয়েও মূল প্রবন্ধে আলোকপাত করা হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. কাউসার আহাম্মদ, প্রধান তথ্য অফিসার মো. নিজামূল কবীর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহসহ আরও অনেকে।