ঢাকা ০৭:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

পহেলগাম ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তানে চলছে যুদ্ধ প্রস্তুতি,রাতভর গোলাগুলি

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৩:০৪:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৫৭ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার ঘটনায় জাতিসংঘ ভারত ও পাকিস্তানকে সর্বোচ্চ সংযম ধরার আহবান জানিয়েছে। কিন্তু এরপরেও পারমানবিক শক্তিধর এই দুটি দেশ রাতভর কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা জুড়ে (এলওসি) গুলি বিনিময় করেছেন দুই দেশের সেনারা। ‘শত্রুভাবাপন্ন’ প্রতিবেশী দেশ দুটির কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে আজ শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

গত মঙ্গলবার ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ পর্যটক নিহত হন। এর দুই দিন পর ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলির এই ঘটনা ঘটল।

এএফপি জানায়, প্রায় দুই যুগেরও বেশি সময়ের মধ্যে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর বন্দুকধারীর এমন ন্যাক্কারজনক হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ’-কে সমর্থনের অভিযোগ এনেছে ভারত। এতে দেশ দুটির সম্পর্ক সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে।

পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরের সরকারি কর্মকর্তা সৈয়দ আশফাক গিলানি আজ এএফপিকে বলেন, ‘কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর বিভিন্ন স্থানে সেনারা গুলি বিনিময় করেছে।’ ‘তবে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর কোনো গুলি চালানো হয়নি’, বলেন তিনি।

ভারতীয় সেনাবাহিনীও বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে, ছোট অস্ত্রের সীমিত গুলি চালানো হয়েছে। তবে গোলাগুলি শুরু করে পাকিস্তান। বিপরীতে ‘কার্যকর প্রতিক্রিয়া’ দেখানো হয়েছে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক গতকাল নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘অর্থপূর্ণ পারস্পরিক সম্পৃক্ততার মাধ্যমে দেশ দুটির সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান হতে পারে এবং হওয়া উচিত।’

‘আমরা উভয় সরকারের কাছেই সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাচ্ছি। পরিস্থিতির আর যেন কোনো অবনতি না হয়’, বলেন তিনি।

ভারতীয় পুলিশ তিনজন পলাতক বন্দুকধারীর মধ্যে দুজনকে ‘পাকিস্তানি’ হিসেবে শনাক্ত করার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের খুঁজে বের করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

এই হামলার পর প্রথম বক্তব্যে মোদি বলেন, ‘আমি সমগ্র বিশ্বকে জানাচ্ছি: ভারত প্রতিটি সন্ত্রাসী ও তাদের মদদদাতাদের চিহ্নিত করবে, ট্র্যাক করবে এবং শাস্তি দেবে।’ ‘আমরা পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত তাদের খুঁজব’, বলেন তিনি।

এদিকে নিজেদের কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে ইসলামাবাদ পেহেলগাম হামলার সঙ্গে পাকিস্তানকে যুক্ত করার প্রচেষ্টাকে ‘অর্থহীন’ বলে আখ্যায়িত করেছে। পাশাপাশি ভারতের যেকোনো পদক্ষেপের পাল্টা জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) বৈঠক শেষে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব এবং জনগণের নিরাপত্তার জন্য যেকোনো হুমকিকে অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে মোকাবিলা করা হবে।’

 

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

পহেলগাম ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তানে চলছে যুদ্ধ প্রস্তুতি,রাতভর গোলাগুলি

আপডেট সময় : ০৩:০৪:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার ঘটনায় জাতিসংঘ ভারত ও পাকিস্তানকে সর্বোচ্চ সংযম ধরার আহবান জানিয়েছে। কিন্তু এরপরেও পারমানবিক শক্তিধর এই দুটি দেশ রাতভর কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা জুড়ে (এলওসি) গুলি বিনিময় করেছেন দুই দেশের সেনারা। ‘শত্রুভাবাপন্ন’ প্রতিবেশী দেশ দুটির কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে আজ শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

গত মঙ্গলবার ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ পর্যটক নিহত হন। এর দুই দিন পর ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলির এই ঘটনা ঘটল।

এএফপি জানায়, প্রায় দুই যুগেরও বেশি সময়ের মধ্যে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর বন্দুকধারীর এমন ন্যাক্কারজনক হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ’-কে সমর্থনের অভিযোগ এনেছে ভারত। এতে দেশ দুটির সম্পর্ক সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে।

পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরের সরকারি কর্মকর্তা সৈয়দ আশফাক গিলানি আজ এএফপিকে বলেন, ‘কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর বিভিন্ন স্থানে সেনারা গুলি বিনিময় করেছে।’ ‘তবে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর কোনো গুলি চালানো হয়নি’, বলেন তিনি।

ভারতীয় সেনাবাহিনীও বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে, ছোট অস্ত্রের সীমিত গুলি চালানো হয়েছে। তবে গোলাগুলি শুরু করে পাকিস্তান। বিপরীতে ‘কার্যকর প্রতিক্রিয়া’ দেখানো হয়েছে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক গতকাল নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘অর্থপূর্ণ পারস্পরিক সম্পৃক্ততার মাধ্যমে দেশ দুটির সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান হতে পারে এবং হওয়া উচিত।’

‘আমরা উভয় সরকারের কাছেই সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাচ্ছি। পরিস্থিতির আর যেন কোনো অবনতি না হয়’, বলেন তিনি।

ভারতীয় পুলিশ তিনজন পলাতক বন্দুকধারীর মধ্যে দুজনকে ‘পাকিস্তানি’ হিসেবে শনাক্ত করার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের খুঁজে বের করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

এই হামলার পর প্রথম বক্তব্যে মোদি বলেন, ‘আমি সমগ্র বিশ্বকে জানাচ্ছি: ভারত প্রতিটি সন্ত্রাসী ও তাদের মদদদাতাদের চিহ্নিত করবে, ট্র্যাক করবে এবং শাস্তি দেবে।’ ‘আমরা পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত তাদের খুঁজব’, বলেন তিনি।

এদিকে নিজেদের কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে ইসলামাবাদ পেহেলগাম হামলার সঙ্গে পাকিস্তানকে যুক্ত করার প্রচেষ্টাকে ‘অর্থহীন’ বলে আখ্যায়িত করেছে। পাশাপাশি ভারতের যেকোনো পদক্ষেপের পাল্টা জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) বৈঠক শেষে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব এবং জনগণের নিরাপত্তার জন্য যেকোনো হুমকিকে অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে মোকাবিলা করা হবে।’