ঢাকা ০২:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

  জিম্বাবুয়ের কাছে হারের লজ্জা, হতাশ বাশার-আশরাফুলরা

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০১:৩৮:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৫০ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দিন ব্যাপী ব্যাপক সমালোচনা টাইগারদের ঘিরে। ঘরে মাঠে জিম্বাবুয়ের কাছে যেনতেন হার। রীতিমতো লজ্জাজনকভাবে ৩ উইকেটের ব্যবধানে পরাজয়। সিলেটের এই পরাজয় ক্রিকেট অনুরাগীদের হৃদয়ে শুধু আঘাত করেনি, আহত হয়েছেন ক্রিকেট সংলিষ্টরাও। সাবেক নির্বাচক হাবিবুল বাশার মন্তব্য ছুড়লেন, নিজেদের মাঠে ১০০ ওভারই ব্যাট করতে পারি না, জিতবো কি করে।

যে জিম্বাবুয়ে সর্বশেষ ১০ টেস্টে জিততে পারেনি। যে জিম্বাবুয়ে ঘরের মাঠে আয়ারল্যান্ড আর আফগানিস্তানসহ মোট (শেষ ১০ টেস্টের মধ্যে) ৮টিতেই হেরেছে। ঘরের মাঠে টেস্ট র‌্যাংকিংয়ের সবার তলানিতে থাকা সেই জিম্বাবুয়ের কাছে ৩ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ।এরচেয়ে ব্যর্থতার, গ্লানির, হতাশার আর কি হতে পারে? আক্ষেপ সবার। ব্যর্থতার জন্য উইকেটকে দায়ী করছেন না বাশার। ক্রিকেটারদের ব্যর্থতাকেই দায়ী করছেন। অন্যদিকে মোহাম্মদ আশরাফুলের বক্তব্যে ব্যর্থতার কারণ ছিলো জিম্বাবুয়েকে খাটো করে দেখা।

টেস্টের তলানীতে থাকা জিম্বাবুয়ে অবশেষে জয়ের দেখা পেলো এটা তাদের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের জন্য হতাশার। ছয় বছর আগে এই সিলেট  স্টেডিয়ামে আরেকবার শনির দশা ভর করেছিলো।  ২০১৮ সালের নভেম্বরে এই ভেন্যুতেই জিম্বাবুয়ের কাছে ১৫১ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ। ২০১৩ সালের পর আট টেস্টে যেটি ছিল জিম্বাবুয়ের কাছে প্রথম টেস্ট হার। আরও একবার এই সিলেটেই হারের লজ্জা সঙ্গী হলো টাইগারদের।

বোলাররা বিশেষ করে মেহেদী হাসান মিরাজ তার জাদুকরী ঘূর্ণিতে চেষ্টা করেছেন। কিন্তু বোর্ডে পুঁজি ছিল না জয় তুলে নেওয়ার মতো। জিম্বাবুয়ের সামনে লক্ষ্য ছিল মাত্র ১৭৪ রানের।

১ উইকেটেই ১১২ রান তুলে ফেলা জিম্বাবুয়ের জন্য কাজটা কঠিন করে ফেলেছিলেন মিরাজ। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি বাংলাদেশের। ৩ উইকেট হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় জিম্বাবুয়ে।

জয়ের ভিত গড়ে দেন দুই ওপেনার ব্রায়ান বেনেট আর বেন কারেন। ৯৫ রানের জুটি গড়েন তারা। ৪৪ করা কারেনকে ফিরিয়ে জুটিটি ভাঙেন মিরাজ। এরপর নিক ওয়েলশ (১০) হন তাইজুল ইসলামের বলে এলবিডব্লিউ। তখনও সহজ জয়ের পথেই ছিল জিম্বাবুয়ে।

সেখান থেকে মিরাজ ঘূর্ণি জাদু দেখান। শন উইলিয়ামস (৯), ব্রায়ান বেনেটকে (৫৪) সাজঘরের পথ দেখান মিরাজ। তাইজুল ফেরান অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিনকে (১০)।

এরপর মায়াশা মায়াভো (১) আর ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে (১২) বোল্ড করে জয়ের আশা জাগান মিরাজ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর অসাধ্য সাধন হয়নি। ওয়েসলে মাদভেরে অপরাজিত থাকেন ১৯ রানে, রিচার্ড এনগারাভা ৪ রান নিয়ে বিজয়ীর বেশে মাঠ ছাড়েন।

মিরাজ ৫০ রান দিয়ে একাই শিকার করেন ৫টি উইকেট। প্রথম ইনিংসেও ৫ উইকেট নিয়েছিলেন এই অফস্পিনার। এর আগে ৪ উইকেটে ১৯৪ রান নিয়ে দিন শুরু করা বাংলাদেশ অলআউট হয়ে যায় ২৫৫ রানেই। নাজমুল হোসেন শান্ত আগের দিনের সঙ্গে কোনো রান যোগ না করেই ৬০ করেই আউট হন। জাকের আলী শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে গেছেন।

শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হওয়ার আগে তিনি করেন ৫৮ রান। ১১১ বলের লড়াকু ইনিংসে ৪টি বাউন্ডারির সঙ্গে ১টি ছক্কা হাঁকান জাকের। জিম্বাবুয়ের পেসার ব্লেসিং মুজারবানি ৭২ রানে নেন ৬ উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৬১ ওভারে ১৯১/১০ (মুমিনুল ৫৬, শান্ত ৪০, জাকের ২৮; ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ৩/২১)
জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংস: ৮০.২ ওভারে ২৭৩/১০ (বেনেট ৫৭, উইলিয়ামস ৫৯, মায়াভো ৩৫; মিরাজ ৫/৫২, নাহিদ রানা ৩/৭৪)

বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস: ৭৯.২ ওভারে ২৫৫/১০ (শান্ত ৬০, জাকের ৫৮, মুমিনুল ৪৭, জয় ৩৩; মুজারবানি ৬/৭২)
জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংস: ৫০.১ ওভারে ১৭৪/৭ (বেনেট ৫৪, কারেন ৪৪; মিরাজ ৫/৫০, তাইজুল ২/৭০)।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

  জিম্বাবুয়ের কাছে হারের লজ্জা, হতাশ বাশার-আশরাফুলরা

আপডেট সময় : ০১:৩৮:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

দিন ব্যাপী ব্যাপক সমালোচনা টাইগারদের ঘিরে। ঘরে মাঠে জিম্বাবুয়ের কাছে যেনতেন হার। রীতিমতো লজ্জাজনকভাবে ৩ উইকেটের ব্যবধানে পরাজয়। সিলেটের এই পরাজয় ক্রিকেট অনুরাগীদের হৃদয়ে শুধু আঘাত করেনি, আহত হয়েছেন ক্রিকেট সংলিষ্টরাও। সাবেক নির্বাচক হাবিবুল বাশার মন্তব্য ছুড়লেন, নিজেদের মাঠে ১০০ ওভারই ব্যাট করতে পারি না, জিতবো কি করে।

যে জিম্বাবুয়ে সর্বশেষ ১০ টেস্টে জিততে পারেনি। যে জিম্বাবুয়ে ঘরের মাঠে আয়ারল্যান্ড আর আফগানিস্তানসহ মোট (শেষ ১০ টেস্টের মধ্যে) ৮টিতেই হেরেছে। ঘরের মাঠে টেস্ট র‌্যাংকিংয়ের সবার তলানিতে থাকা সেই জিম্বাবুয়ের কাছে ৩ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ।এরচেয়ে ব্যর্থতার, গ্লানির, হতাশার আর কি হতে পারে? আক্ষেপ সবার। ব্যর্থতার জন্য উইকেটকে দায়ী করছেন না বাশার। ক্রিকেটারদের ব্যর্থতাকেই দায়ী করছেন। অন্যদিকে মোহাম্মদ আশরাফুলের বক্তব্যে ব্যর্থতার কারণ ছিলো জিম্বাবুয়েকে খাটো করে দেখা।

টেস্টের তলানীতে থাকা জিম্বাবুয়ে অবশেষে জয়ের দেখা পেলো এটা তাদের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের জন্য হতাশার। ছয় বছর আগে এই সিলেট  স্টেডিয়ামে আরেকবার শনির দশা ভর করেছিলো।  ২০১৮ সালের নভেম্বরে এই ভেন্যুতেই জিম্বাবুয়ের কাছে ১৫১ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ। ২০১৩ সালের পর আট টেস্টে যেটি ছিল জিম্বাবুয়ের কাছে প্রথম টেস্ট হার। আরও একবার এই সিলেটেই হারের লজ্জা সঙ্গী হলো টাইগারদের।

বোলাররা বিশেষ করে মেহেদী হাসান মিরাজ তার জাদুকরী ঘূর্ণিতে চেষ্টা করেছেন। কিন্তু বোর্ডে পুঁজি ছিল না জয় তুলে নেওয়ার মতো। জিম্বাবুয়ের সামনে লক্ষ্য ছিল মাত্র ১৭৪ রানের।

১ উইকেটেই ১১২ রান তুলে ফেলা জিম্বাবুয়ের জন্য কাজটা কঠিন করে ফেলেছিলেন মিরাজ। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি বাংলাদেশের। ৩ উইকেট হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় জিম্বাবুয়ে।

জয়ের ভিত গড়ে দেন দুই ওপেনার ব্রায়ান বেনেট আর বেন কারেন। ৯৫ রানের জুটি গড়েন তারা। ৪৪ করা কারেনকে ফিরিয়ে জুটিটি ভাঙেন মিরাজ। এরপর নিক ওয়েলশ (১০) হন তাইজুল ইসলামের বলে এলবিডব্লিউ। তখনও সহজ জয়ের পথেই ছিল জিম্বাবুয়ে।

সেখান থেকে মিরাজ ঘূর্ণি জাদু দেখান। শন উইলিয়ামস (৯), ব্রায়ান বেনেটকে (৫৪) সাজঘরের পথ দেখান মিরাজ। তাইজুল ফেরান অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিনকে (১০)।

এরপর মায়াশা মায়াভো (১) আর ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে (১২) বোল্ড করে জয়ের আশা জাগান মিরাজ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর অসাধ্য সাধন হয়নি। ওয়েসলে মাদভেরে অপরাজিত থাকেন ১৯ রানে, রিচার্ড এনগারাভা ৪ রান নিয়ে বিজয়ীর বেশে মাঠ ছাড়েন।

মিরাজ ৫০ রান দিয়ে একাই শিকার করেন ৫টি উইকেট। প্রথম ইনিংসেও ৫ উইকেট নিয়েছিলেন এই অফস্পিনার। এর আগে ৪ উইকেটে ১৯৪ রান নিয়ে দিন শুরু করা বাংলাদেশ অলআউট হয়ে যায় ২৫৫ রানেই। নাজমুল হোসেন শান্ত আগের দিনের সঙ্গে কোনো রান যোগ না করেই ৬০ করেই আউট হন। জাকের আলী শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে গেছেন।

শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হওয়ার আগে তিনি করেন ৫৮ রান। ১১১ বলের লড়াকু ইনিংসে ৪টি বাউন্ডারির সঙ্গে ১টি ছক্কা হাঁকান জাকের। জিম্বাবুয়ের পেসার ব্লেসিং মুজারবানি ৭২ রানে নেন ৬ উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৬১ ওভারে ১৯১/১০ (মুমিনুল ৫৬, শান্ত ৪০, জাকের ২৮; ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ৩/২১)
জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংস: ৮০.২ ওভারে ২৭৩/১০ (বেনেট ৫৭, উইলিয়ামস ৫৯, মায়াভো ৩৫; মিরাজ ৫/৫২, নাহিদ রানা ৩/৭৪)

বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস: ৭৯.২ ওভারে ২৫৫/১০ (শান্ত ৬০, জাকের ৫৮, মুমিনুল ৪৭, জয় ৩৩; মুজারবানি ৬/৭২)
জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংস: ৫০.১ ওভারে ১৭৪/৭ (বেনেট ৫৪, কারেন ৪৪; মিরাজ ৫/৫০, তাইজুল ২/৭০)।