ঢাকা ০১:৫৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

হাজারো প্রাণের উচ্ছ্বাসে শেষ হলো বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা

আবিদা আলম
  • আপডেট সময় : ০২:২৮:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৪৭ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

হাজারো প্রাণের উচ্ছ্বাসে শেষ হলো বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা। তবে এবারে শোভা যাত্রায় স্থান পায়নি মঙ্গল নামক শব্দটি, রুপ নিয়েছে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভা যাত্রায়’। ব্যতিক্রমী এই আনন্দ মিছিলের সবচেয়ে বড় আকর্ষনটা ছিলো ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া ফ্যাসিস্ট শেখ হাছিনার দ্বৈত্যকৃতি মুখাবয়ব ছবি। সবাই বলাবলি করছিলেন, আপা ফিরে এসেছেন দ্বৈত্যৃরুপে

একই সাথে দেশের বিভিন্ন জেলাতেও আনন্দ শোভযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এবারের আনন্দ মিছিলে চেষ্টা করা হয়েছে হারিয়ে যাওয়া আবহ বাংলার প্রকৃত সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনা। গত কয়েক দশক ধরে পাশবর্তী দেশ ভারতের সংস্কৃতিতে হারিয়ে যেতে থাকে দেশের সংস্কৃতি। বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে পৌরাণিক ও সাম্প্রদায়িক মোটিফ ঢুকিয়ে ভারতীয় সাংস্কৃতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে। চারুকলার আয়োজিত ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’ এখন হয়ে উঠে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’, যেখানে হিন্দু ধর্মীয় প্রতীক ও বিকৃত কার্টুনের ছড়াছড়ি। অথচ সম্রাট আকবরের শাসনামল থেকেই বাংলা নববর্ষ শুরু হয়।

তাই বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ এর পহেলা বৈশাখ উৎযাপনে  মুসলমানদের চিরায়ত ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়েছে গরু জবাই করে জেয়াফত আয়োজনের মধ্য দিয়ে। একই সাথে আনন্দ শোভা যাত্রা মিছিলে অংশগ্রহনকারীদের পক্ষ থেকে এও দাবি উঠেছে,মূয়ুর পেঁচা হাঁস নয়, বাউল মুর্শেদীর ফেরাও। তুলে ধরা হয় মুসলিম,হিন্দু,বৌদ্ধ ও খ্রীষ্টানদের সংস্কৃতিও।

সোমবার সকাল ৯টার দিকে চারুকলা প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হওয়া এই বর্ণাঢ্য ও আনন্দঘন শোভাযাত্রায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নিয়েছেন। শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী—চাকমা, মারমা, সাঁওতাল ও গারো। অংশ নিয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় নারী ফুটবল দলও।

শোভাযাত্রাটি শাহবাগ মোড়, টিএসসি মোড়, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও দোয়েল চত্বর ঘুরে বাংলা একাডেমির সামনের রাস্তা দিয়ে চারুকলা অনুষদে ফিরে শেষ হবে। এবারের শোভাযাত্রার মোটিফগুলোর মধ্যে ছিল অন্যতম হচ্ছে শান্তির প্রতীক কবুতর এবং ‘ফ্যাসিবাদের প্রতিকৃতি’—যেখানে ফুটে উঠেছে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখাবয়ব। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ও ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে এবারের শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য বিষয় ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’।

পহেলা বৈশাখ দেশের সবচেয়ে বর্ণিল উৎসবগুলোর একটি, যেখানে বাঙালি জাতি পুরোনো বছরকে বিদায় জানিয়ে বরণ করে নতুন বছরকে। জাতির ঐক্য ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের প্রতীক এই উৎসব ধর্ম, গোত্র, শ্রেণি বা মত নির্বিশেষে সবাই উদযাপন করে।

এদিকে প্রতি বছর নববর্ষ যেন বর্ষারও আগমন বার্তা বহন করছে। সংস্কৃতিমনাদের বিশ্বাস এদিনে চৈত্রের খরতাপের পর বর্ষায় মুছে যাবে পুরানো দিনের সকল গ্লানি। তাইতো গানের কলিতে ভেসে উঠে’ আল্লাহ মেঘ দে,পানি দে,ছায়া দে.রে তুই আল্লাহ মেঘ দে..’

এদিকে আজ আবহাওয়া বার্তার পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে,আগামী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একইসঙ্গে সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এছাড়া মৌলভীবাজার, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, ফেনী, কক্সবাজার, বান্দরবান ও পটুয়াখালী জেলাসমূহের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এসময়ে কিছু কিছু জায়গা থেকে তাপপ্রবাহ প্রশমিত হতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

হাজারো প্রাণের উচ্ছ্বাসে শেষ হলো বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা

আপডেট সময় : ০২:২৮:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

হাজারো প্রাণের উচ্ছ্বাসে শেষ হলো বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা। তবে এবারে শোভা যাত্রায় স্থান পায়নি মঙ্গল নামক শব্দটি, রুপ নিয়েছে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভা যাত্রায়’। ব্যতিক্রমী এই আনন্দ মিছিলের সবচেয়ে বড় আকর্ষনটা ছিলো ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া ফ্যাসিস্ট শেখ হাছিনার দ্বৈত্যকৃতি মুখাবয়ব ছবি। সবাই বলাবলি করছিলেন, আপা ফিরে এসেছেন দ্বৈত্যৃরুপে

একই সাথে দেশের বিভিন্ন জেলাতেও আনন্দ শোভযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এবারের আনন্দ মিছিলে চেষ্টা করা হয়েছে হারিয়ে যাওয়া আবহ বাংলার প্রকৃত সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনা। গত কয়েক দশক ধরে পাশবর্তী দেশ ভারতের সংস্কৃতিতে হারিয়ে যেতে থাকে দেশের সংস্কৃতি। বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে পৌরাণিক ও সাম্প্রদায়িক মোটিফ ঢুকিয়ে ভারতীয় সাংস্কৃতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে। চারুকলার আয়োজিত ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’ এখন হয়ে উঠে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’, যেখানে হিন্দু ধর্মীয় প্রতীক ও বিকৃত কার্টুনের ছড়াছড়ি। অথচ সম্রাট আকবরের শাসনামল থেকেই বাংলা নববর্ষ শুরু হয়।

তাই বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ এর পহেলা বৈশাখ উৎযাপনে  মুসলমানদের চিরায়ত ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়েছে গরু জবাই করে জেয়াফত আয়োজনের মধ্য দিয়ে। একই সাথে আনন্দ শোভা যাত্রা মিছিলে অংশগ্রহনকারীদের পক্ষ থেকে এও দাবি উঠেছে,মূয়ুর পেঁচা হাঁস নয়, বাউল মুর্শেদীর ফেরাও। তুলে ধরা হয় মুসলিম,হিন্দু,বৌদ্ধ ও খ্রীষ্টানদের সংস্কৃতিও।

সোমবার সকাল ৯টার দিকে চারুকলা প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হওয়া এই বর্ণাঢ্য ও আনন্দঘন শোভাযাত্রায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নিয়েছেন। শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী—চাকমা, মারমা, সাঁওতাল ও গারো। অংশ নিয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় নারী ফুটবল দলও।

শোভাযাত্রাটি শাহবাগ মোড়, টিএসসি মোড়, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও দোয়েল চত্বর ঘুরে বাংলা একাডেমির সামনের রাস্তা দিয়ে চারুকলা অনুষদে ফিরে শেষ হবে। এবারের শোভাযাত্রার মোটিফগুলোর মধ্যে ছিল অন্যতম হচ্ছে শান্তির প্রতীক কবুতর এবং ‘ফ্যাসিবাদের প্রতিকৃতি’—যেখানে ফুটে উঠেছে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখাবয়ব। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ও ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে এবারের শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য বিষয় ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’।

পহেলা বৈশাখ দেশের সবচেয়ে বর্ণিল উৎসবগুলোর একটি, যেখানে বাঙালি জাতি পুরোনো বছরকে বিদায় জানিয়ে বরণ করে নতুন বছরকে। জাতির ঐক্য ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের প্রতীক এই উৎসব ধর্ম, গোত্র, শ্রেণি বা মত নির্বিশেষে সবাই উদযাপন করে।

এদিকে প্রতি বছর নববর্ষ যেন বর্ষারও আগমন বার্তা বহন করছে। সংস্কৃতিমনাদের বিশ্বাস এদিনে চৈত্রের খরতাপের পর বর্ষায় মুছে যাবে পুরানো দিনের সকল গ্লানি। তাইতো গানের কলিতে ভেসে উঠে’ আল্লাহ মেঘ দে,পানি দে,ছায়া দে.রে তুই আল্লাহ মেঘ দে..’

এদিকে আজ আবহাওয়া বার্তার পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে,আগামী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একইসঙ্গে সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এছাড়া মৌলভীবাজার, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, ফেনী, কক্সবাজার, বান্দরবান ও পটুয়াখালী জেলাসমূহের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এসময়ে কিছু কিছু জায়গা থেকে তাপপ্রবাহ প্রশমিত হতে পারে।