ঢাকা ০১:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

লেখুনিতে নির্দেশ না মানায় হোয়াই হাউসে ঢুকতে পারেনি এপির সাংবাদিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৮:০৭:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৮৭ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি)  সাংবাদিককে হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসের একটি অনুষ্ঠানের সংবাদ সংগ্রহ করতে দেওয়া হয়নি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশ মেনে সংস্থাটি তাদের সব লেখায় মেক্সিকো উপসাগরের নাম বদলে ‘গালফ অব আমেরিকা’ না করাতেই এই বিপত্তি। আজ বুধবার এপির এক প্রতিবেদনে এ বিষয়টি জানানো হয়েছে।

ওই ভুক্তভোগী সাংবাদিকের নাম প্রকাশ করেনি এপি। তিনি মঙ্গলবার বিকেলে যথারীতি হোয়াইট হাউসের এক অনুষ্ঠানে প্রবেশ করার চেষ্টা করলে তাকে বাধা দেওয়া হয় এবং জানানো হয়, তিনি হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করতে পারবেন না। পরবর্তীতে, সন্ধ্যার সময় হোয়াইট হাউসের কূটনীতিক কক্ষে অপর এক অনুষ্ঠানেও এপির অপর এক সাংবাদিককে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই নিষেধাজ্ঞা অস্বাভাবিক ও নজিরবিহীন।

গতকাল মঙ্গলবার ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা এপিকে হুশিয়ার দেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ মেনে মেক্সিকো উপসাগরের নাম এখন থেকে গালফ অব মেক্সিকোর বদলে গালফ অব আমেরিকা লিখতে হবে।

এপির সম্পাদকীয় নীতি অনুসারে এখনো গালফ অব মেক্সিকোই লেখা হচ্ছে এবং এ ভাবে বার্তা সংস্থাটিকে অন্য কিছু লিখতে বাধ্য করা ‘সাংবিধানিক অধিকারের’ লঙ্ঘন হতে পারে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এপির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও নির্বাহী সম্পাদক জুলি পেইস ট্রাম্প প্রশাসনের এই উদ্যোগকে গ্রহণযোগ্য নয় বলে মত দেন।

এক বিবৃতিতে জুলি বলেন, ‘এটা খুবই উদ্বেগজনক যে ট্রাম্প প্রশাসন এপিকে নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার চর্চা অব্যাহত রাখার জন্য শাস্তি দিচ্ছে।’

‘এপি তাদের প্রতিবেদনে কী লিখেছে, সেটার ভিত্তিতে সাংবাদিকদের ওভাল অফিসে প্রবেশে বিধিনিষেধ দেওয়া শুধু স্বাধীন ও নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপের উদ্যোগই নয়, একইসঙ্গে এটি (মার্কিন সংবিধানের) প্রথম সংশোধনীরও লঙ্ঘন’ , যোগ করেন তিনি।

ট্রাম্প প্রশাসন তাৎক্ষণিকভাবে এসব উদ্যোগের বিষয়ে কোনো ঘোষণা দেয়নি। অন্য কোনো সংবাদমাধ্যম বা সাংবাদিক এ ধরনের ঘটনার শিকার হয়েছেন কী না, সেটাও জানা যায়নি  গণমাধ্যমের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈরিতার বিষয়টি নতুন নয়। আবাসন ব্যবসায়ী থাকাকালীন সময় থেকে শুরু করে প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম মেয়াদে এবং প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবেও একাধিকবার সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি তিক্ততায় জড়িয়েছেন।

২০ জানুয়ারি শপথ নেওয়ার আগেই ট্রাম্প গালফ অব মেক্সিকোর নাম বদলানোর কথা জানান। ইতোমধ্যে তিনি এ বিষয়ে একটি নির্বাহী আদেশে সই দিয়েছেন। মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ও অন্যান্যরা বিষয়টি হালকা দৃষ্টিতেই দেখছেন।

বিশেষজ্ঞদের মত, কাগজেকলমে নাম বদলালেও মানুষ এই উপসাগরকে মেক্সিকো উপসাগর নামেই অভিহিত করবে। প্রায় ৪০০ বছর আগে এই উপসাগরের নামকরণ হয়েছে। এর বেশিরভাগ অংশ যুক্তরাষ্ট্রে সীমান্তে হলেও মেক্সিকোর তীরেও এর উল্লেখযোগ্য অংশ পড়েছে।

ট্রাম্পের শপথের তিন দিন পর এপি জানিয়েছিল, তারা গালফ অব মেক্সিকো নামটিই ব্যবহার করবে থাকবে। এপি এ ক্ষেত্রে যুক্তি দেয়, বৈশ্বিক সংবাদমাধ্যম হিসেবে তারা কোনো জায়গার নাম ও ভৌগলিক বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে সর্বজনবিদিত ও বেশিরভাগ মানুষ সহজে চিনতে ও বুঝতে পারে, এমন ভাষা ব্যবহার অব্যাহত রাখবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

লেখুনিতে নির্দেশ না মানায় হোয়াই হাউসে ঢুকতে পারেনি এপির সাংবাদিক

আপডেট সময় : ০৮:০৭:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি)  সাংবাদিককে হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসের একটি অনুষ্ঠানের সংবাদ সংগ্রহ করতে দেওয়া হয়নি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশ মেনে সংস্থাটি তাদের সব লেখায় মেক্সিকো উপসাগরের নাম বদলে ‘গালফ অব আমেরিকা’ না করাতেই এই বিপত্তি। আজ বুধবার এপির এক প্রতিবেদনে এ বিষয়টি জানানো হয়েছে।

ওই ভুক্তভোগী সাংবাদিকের নাম প্রকাশ করেনি এপি। তিনি মঙ্গলবার বিকেলে যথারীতি হোয়াইট হাউসের এক অনুষ্ঠানে প্রবেশ করার চেষ্টা করলে তাকে বাধা দেওয়া হয় এবং জানানো হয়, তিনি হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করতে পারবেন না। পরবর্তীতে, সন্ধ্যার সময় হোয়াইট হাউসের কূটনীতিক কক্ষে অপর এক অনুষ্ঠানেও এপির অপর এক সাংবাদিককে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই নিষেধাজ্ঞা অস্বাভাবিক ও নজিরবিহীন।

গতকাল মঙ্গলবার ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা এপিকে হুশিয়ার দেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ মেনে মেক্সিকো উপসাগরের নাম এখন থেকে গালফ অব মেক্সিকোর বদলে গালফ অব আমেরিকা লিখতে হবে।

এপির সম্পাদকীয় নীতি অনুসারে এখনো গালফ অব মেক্সিকোই লেখা হচ্ছে এবং এ ভাবে বার্তা সংস্থাটিকে অন্য কিছু লিখতে বাধ্য করা ‘সাংবিধানিক অধিকারের’ লঙ্ঘন হতে পারে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এপির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও নির্বাহী সম্পাদক জুলি পেইস ট্রাম্প প্রশাসনের এই উদ্যোগকে গ্রহণযোগ্য নয় বলে মত দেন।

এক বিবৃতিতে জুলি বলেন, ‘এটা খুবই উদ্বেগজনক যে ট্রাম্প প্রশাসন এপিকে নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার চর্চা অব্যাহত রাখার জন্য শাস্তি দিচ্ছে।’

‘এপি তাদের প্রতিবেদনে কী লিখেছে, সেটার ভিত্তিতে সাংবাদিকদের ওভাল অফিসে প্রবেশে বিধিনিষেধ দেওয়া শুধু স্বাধীন ও নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপের উদ্যোগই নয়, একইসঙ্গে এটি (মার্কিন সংবিধানের) প্রথম সংশোধনীরও লঙ্ঘন’ , যোগ করেন তিনি।

ট্রাম্প প্রশাসন তাৎক্ষণিকভাবে এসব উদ্যোগের বিষয়ে কোনো ঘোষণা দেয়নি। অন্য কোনো সংবাদমাধ্যম বা সাংবাদিক এ ধরনের ঘটনার শিকার হয়েছেন কী না, সেটাও জানা যায়নি  গণমাধ্যমের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈরিতার বিষয়টি নতুন নয়। আবাসন ব্যবসায়ী থাকাকালীন সময় থেকে শুরু করে প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম মেয়াদে এবং প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবেও একাধিকবার সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি তিক্ততায় জড়িয়েছেন।

২০ জানুয়ারি শপথ নেওয়ার আগেই ট্রাম্প গালফ অব মেক্সিকোর নাম বদলানোর কথা জানান। ইতোমধ্যে তিনি এ বিষয়ে একটি নির্বাহী আদেশে সই দিয়েছেন। মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ও অন্যান্যরা বিষয়টি হালকা দৃষ্টিতেই দেখছেন।

বিশেষজ্ঞদের মত, কাগজেকলমে নাম বদলালেও মানুষ এই উপসাগরকে মেক্সিকো উপসাগর নামেই অভিহিত করবে। প্রায় ৪০০ বছর আগে এই উপসাগরের নামকরণ হয়েছে। এর বেশিরভাগ অংশ যুক্তরাষ্ট্রে সীমান্তে হলেও মেক্সিকোর তীরেও এর উল্লেখযোগ্য অংশ পড়েছে।

ট্রাম্পের শপথের তিন দিন পর এপি জানিয়েছিল, তারা গালফ অব মেক্সিকো নামটিই ব্যবহার করবে থাকবে। এপি এ ক্ষেত্রে যুক্তি দেয়, বৈশ্বিক সংবাদমাধ্যম হিসেবে তারা কোনো জায়গার নাম ও ভৌগলিক বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে সর্বজনবিদিত ও বেশিরভাগ মানুষ সহজে চিনতে ও বুঝতে পারে, এমন ভাষা ব্যবহার অব্যাহত রাখবে।