ঢাকা ০৭:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

নিজের ঘরে প্রবেশের আদব সমুহ

ডিডিএম ধর্ম ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:০৯:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪
  • / ৩২৮ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ইসলাম শুধু অন্যের ঘরে প্রবেশের শিষ্টাচারের কথা বলে না, নিজের ঘরে প্রবেশেও কিছু আদব বা শিষ্টাচার মেনে চলার শিক্ষা দেয়। অন্যের ঘরে মালিককে সালাম দিয়ে নিজের পরিচয় দেয়ার পর অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করা আদব। নিজের ঘরে প্রবেশের ক্ষেত্রেও কিছু আদব রয়েছে। নিচে সেগুলো তুলে ধরা হলো।

মা-বোনের ঘরে অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করা
মা-বাবা, ভাই-বোনের রুমে প্রবেশের সময় অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করা সুন্নত। আলকামা থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-কে জিজ্ঞাসা করল, আমি কি মায়ের কাছে গেলে অনুমতি নিব? বললেন, সব অবস্থায় তোমার তাকে দেখা পছন্দ হবে না। (আদাবুল মুফরাদ, বর্ণনা: ১০৫৯)

আতা ইবনে আবি রাবাহ থেকে বর্ণিত, আমি ইবনে আব্বাস (রা.)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, বোনের কাছে গেলে কি আমি অনুমতি নিব? বললেন, হ্যাঁ। বর্ণনাকারী বলেন, আমি আবার জিজ্ঞাসা করলাম, আমার প্রতিপালনে দুটি বোন আছে, আমি তাদের দেখাশোনা করি এবং তাদের জন্য খরচ করি, তাদের কাছে গেলেও কি আমার অনুমতি নিতে হবে? বললেন, হ্যাঁ। তোমার কি তাদেরকে বিবস্ত্র দেখা পছন্দ হবে? এরপর তিনি সূরা নূরের ৫৮ ও ৫৯ নং আয়াত পাঠ করে বলেন, সকলের জন্য অনুমতি নেওয়া জরুরি। (আদাবুল মুফরাদ, বর্ণনা: ১০৬৩)

ঘরে শুধু স্ত্রী থাকলে গলা খাঁকারি দেওয়া
নিজ ঘরে (যে ঘরে ব্যক্তি একা থাকে) প্রবেশের ক্ষেত্রে ব্যক্তি সম্পূর্ণ স্বাধীন। আর যে ঘরে স্বামী-স্ত্রী একা থাকে সেটা তাদের নিজস্ব ঘর। এতে প্রবেশের জন্য তাদের পরস্পরের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে উত্তম হলো অকস্মাৎ ঢুকে না পড়া, বরং গলা খাঁকারি, পায়ের আওয়াজ অথবা অন্যকোনো উপায়ে অবগত করে প্রবেশ করা। জয়নব সাকাফি রা. (আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.-এর স্ত্রী) বলেন, আবদুল্লাহ যখন কোনো প্রয়োজন সেরে দরজায় এসে পৌঁছতেন তখন গলা খাঁকারি দিতেন এবং থুথু ফেলতেন। যাতে অকস্মাৎ আমাদেরকে এমন কোনো অবস্থায় দেখে না ফেলেন যা তার খারাপ লাগবে। (তাফসিরে তাবারি: ১৭/২৪৫; তাফসীরে ইবনে কাসির: ৬/৪১-৪২)

সালাম দিয়ে প্রবেশ করা
ঘরে কেউ থাকুক বা না থাকুক সালাম দিয়ে প্রবেশ করা সুন্নত। আবু মালিক আল-আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘যখন কেউ নিজ ঘরে প্রবেশ করবে তখন সে যেন (নিচে উল্লেখিত) দোয়াটি বলে। অতঃপর সে যেন তার পরিবারের লোকদের সালাম দেয়। (আবু দাউদ: ৫০৯৬)

দোয়া পড়ে ঘরে প্রবেশ করা
ঘরে প্রবেশের দোয়া- اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَ الْمَوْلِجِ وَخَيْرَ الْمَخْرَجِ بِسْمِ اللَّهِ وَلَجْنَا وَبِسْمِ اللَّهِ خَرَجْنَا وَعَلَى اللَّهِ رَبِّنَا تَوَكَّلْنَا উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাল মাউলিজি, ওয়া খাইরাল মাখরাজি; বিসমিল্লাহি ওয়ালাজনা, ওয়া বিসমিল্লাহি খারাজনা; ওয়া আলাল্লাহি রাব্বিনা তাওয়াক্কালনা। অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আগমন ও প্রস্থানের কল্যাণ চাই। আপনার নামে আমি প্রবেশ করি ও বের হই এবং আমাদের রব আল্লাহর উপর ভরসা করি।

উল্লেখ্য, কোনো নারী অন্য নারীর বা পুরুষের ঘরে গেলেও অনুমতি নেবে। কারণ, এই বিধান নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য। আর কেউ তর ঘরে কাউকে ডেকে পাঠালে আলাদা করে অনুমতি নিতে হবে না। ডেকে পাঠানোটাই তার অনুমতি বিবেচিত হবে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (স.) বলেন, কারো কাছে দূতের আগমন তার জন্য অনুমতি গণ্য হবে। (সুনানে আবু দাউদ: ৫১৮৯)

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

নিজের ঘরে প্রবেশের আদব সমুহ

আপডেট সময় : ০৯:০৯:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

ইসলাম শুধু অন্যের ঘরে প্রবেশের শিষ্টাচারের কথা বলে না, নিজের ঘরে প্রবেশেও কিছু আদব বা শিষ্টাচার মেনে চলার শিক্ষা দেয়। অন্যের ঘরে মালিককে সালাম দিয়ে নিজের পরিচয় দেয়ার পর অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করা আদব। নিজের ঘরে প্রবেশের ক্ষেত্রেও কিছু আদব রয়েছে। নিচে সেগুলো তুলে ধরা হলো।

মা-বোনের ঘরে অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করা
মা-বাবা, ভাই-বোনের রুমে প্রবেশের সময় অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করা সুন্নত। আলকামা থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-কে জিজ্ঞাসা করল, আমি কি মায়ের কাছে গেলে অনুমতি নিব? বললেন, সব অবস্থায় তোমার তাকে দেখা পছন্দ হবে না। (আদাবুল মুফরাদ, বর্ণনা: ১০৫৯)

আতা ইবনে আবি রাবাহ থেকে বর্ণিত, আমি ইবনে আব্বাস (রা.)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, বোনের কাছে গেলে কি আমি অনুমতি নিব? বললেন, হ্যাঁ। বর্ণনাকারী বলেন, আমি আবার জিজ্ঞাসা করলাম, আমার প্রতিপালনে দুটি বোন আছে, আমি তাদের দেখাশোনা করি এবং তাদের জন্য খরচ করি, তাদের কাছে গেলেও কি আমার অনুমতি নিতে হবে? বললেন, হ্যাঁ। তোমার কি তাদেরকে বিবস্ত্র দেখা পছন্দ হবে? এরপর তিনি সূরা নূরের ৫৮ ও ৫৯ নং আয়াত পাঠ করে বলেন, সকলের জন্য অনুমতি নেওয়া জরুরি। (আদাবুল মুফরাদ, বর্ণনা: ১০৬৩)

ঘরে শুধু স্ত্রী থাকলে গলা খাঁকারি দেওয়া
নিজ ঘরে (যে ঘরে ব্যক্তি একা থাকে) প্রবেশের ক্ষেত্রে ব্যক্তি সম্পূর্ণ স্বাধীন। আর যে ঘরে স্বামী-স্ত্রী একা থাকে সেটা তাদের নিজস্ব ঘর। এতে প্রবেশের জন্য তাদের পরস্পরের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে উত্তম হলো অকস্মাৎ ঢুকে না পড়া, বরং গলা খাঁকারি, পায়ের আওয়াজ অথবা অন্যকোনো উপায়ে অবগত করে প্রবেশ করা। জয়নব সাকাফি রা. (আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.-এর স্ত্রী) বলেন, আবদুল্লাহ যখন কোনো প্রয়োজন সেরে দরজায় এসে পৌঁছতেন তখন গলা খাঁকারি দিতেন এবং থুথু ফেলতেন। যাতে অকস্মাৎ আমাদেরকে এমন কোনো অবস্থায় দেখে না ফেলেন যা তার খারাপ লাগবে। (তাফসিরে তাবারি: ১৭/২৪৫; তাফসীরে ইবনে কাসির: ৬/৪১-৪২)

সালাম দিয়ে প্রবেশ করা
ঘরে কেউ থাকুক বা না থাকুক সালাম দিয়ে প্রবেশ করা সুন্নত। আবু মালিক আল-আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘যখন কেউ নিজ ঘরে প্রবেশ করবে তখন সে যেন (নিচে উল্লেখিত) দোয়াটি বলে। অতঃপর সে যেন তার পরিবারের লোকদের সালাম দেয়। (আবু দাউদ: ৫০৯৬)

দোয়া পড়ে ঘরে প্রবেশ করা
ঘরে প্রবেশের দোয়া- اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَ الْمَوْلِجِ وَخَيْرَ الْمَخْرَجِ بِسْمِ اللَّهِ وَلَجْنَا وَبِسْمِ اللَّهِ خَرَجْنَا وَعَلَى اللَّهِ رَبِّنَا تَوَكَّلْنَا উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাল মাউলিজি, ওয়া খাইরাল মাখরাজি; বিসমিল্লাহি ওয়ালাজনা, ওয়া বিসমিল্লাহি খারাজনা; ওয়া আলাল্লাহি রাব্বিনা তাওয়াক্কালনা। অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আগমন ও প্রস্থানের কল্যাণ চাই। আপনার নামে আমি প্রবেশ করি ও বের হই এবং আমাদের রব আল্লাহর উপর ভরসা করি।

উল্লেখ্য, কোনো নারী অন্য নারীর বা পুরুষের ঘরে গেলেও অনুমতি নেবে। কারণ, এই বিধান নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য। আর কেউ তর ঘরে কাউকে ডেকে পাঠালে আলাদা করে অনুমতি নিতে হবে না। ডেকে পাঠানোটাই তার অনুমতি বিবেচিত হবে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (স.) বলেন, কারো কাছে দূতের আগমন তার জন্য অনুমতি গণ্য হবে। (সুনানে আবু দাউদ: ৫১৮৯)