ঢাকা ০২:১৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

চলতি মাসেই ছাত্র-জনতা আন্দোলনে শহীদদের তালিকা চূড়ান্ত

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:১০:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ১৮৯ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ডিডিএম প্রতিবেদক :
ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। সরকার পতনে প্রচুর সংখ্যক ছাত্র-জনতা পুলিশের গুলিতে নিহত হন। সেই রক্তের বিনিময় নতুনভাবে স্বাধীনতার স্বাদ পায় দেশের নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষ। নতুন করে দেশের দায়িত্ব গ্রহন করেন ড.ইউনুসের নেতৃত্বাধীণ অন্তর্বর্তীকালীণ সরকার। দায়িত্বগ্রহনে গত প্রায় একমাস হতে চলেছে, কিন্তু এখনো পর্যন্ত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত ও আহতদের সংখ্যা চূড়ান্ত হয়নি। আজ এই বিষয় নিয়ে মুখ খুলেছেন অন্তর্বর্তীকালীণ সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। তিনি জানিয়েছে চলতি মাসেই ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। দুপুরে গণভবন পরিদর্শন শেষে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
নাহিদ বলেন, ‘কেবিনেটে সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি জাদুঘরে রূপান্তর করা হবে। ৩৬ জুলাই অথবা ৫ আগস্ট জনগণ এটি জয় করেছে। অনেক রক্ত ও আত্মত্যাগের ভেতর দিয়ে আমরা এই ৫ আগস্টের মুহূর্ত পেয়েছি, ফলে সেটি জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া এবং জনগণের বিজয়কে ধারণ করে রাখার উদ্দেশ্যে এই গণভবনকে জাদুঘরে রূপান্তর করা হবে।’
‘আমরা পৃথিবীর বুকে একটি নিদর্শন রাখতে চাই, যে কোনো স্বৈরাচারী, ফ্যাসিস্ট, খুনি রাষ্ট্র নায়কদের কী পরিণতি হয়; জনগণই যে আসল ক্ষমতার মালিক সেটি নিদর্শন হিসেবে পৃথিবীর বুকে রাখার জন্য আমরা গণভবনকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি জাদুঘরে রূপান্তর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি সরকারের পক্ষ থেকে,’ বলেন তিনি।
নাহিদ আরো বলেন, ‘সেই উদ্দেশ্যে আজকে আমাদের প্রাথমিক পরিদর্শন ছিল। গণপূর্ত ও স্থাপত্য বিভাগের যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত আছেন, তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তাদের কাছ থেকে প্রাথমিক পরামর্শ নিয়েছি, আমাদের আকাঙ্ক্ষাগুলো বলেছি—আমরা কীভাবে দেখতে চাই। পাশাপাশি আনুষ্ঠানিক কমিটি করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হয়তো আগামীকালের মধ্যেই কমিটি হয়ে যাবে। কমিটি হলে আগামী সপ্তাহ থেকে আমরা কাজ শুরু করব, যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা এটি উদ্বোধন করতে পারি।’
জাদুঘরে ৩৬ দিনের অভ্যুত্থানের সামগ্রিক স্মৃতি ও দিনলিপি, আন্দোলনে শহীদদের তালিকা ও স্মৃতি এবং গত ১৬ বছরের নিপীড়ন-গুম-বিচারবহির্ভূত হত্যার চিত্র তুলে ধরা হবে বলেও এ সময় জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে নাহিদ বলেন, ‘যে স্থাপত্য ভগ্নাবশেষ অবস্থায় আছে, সেটিকে সেই অবস্থায় রেখেই জাদুঘর করা হবে। এখানে কিছু ডিজিটাল রিপ্রেজেন্টেশনও থাকবে। গত ১৬ বছরের একটি চিত্র আমরা তুলে ধরার চেষ্টা করব।’
তিনি বলেন, ‘এখানে প্রচুর দেয়াল লিখন আছে, গ্রাফিতি আছে। ছাত্র-জনতা যারা সেদিন এসেছিলেন, তারা তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আসবাবপত্র যেগুলো লুট হয়েছিল, মানুষ আবার রেখে গেছে। সেগুলো সংরক্ষণ করা হয়েছে। ভবনের চারিদিকে মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ রয়েছে। আমরা চেষ্টা করব সেই ক্ষোভ সংরক্ষণ করেই জাদুঘর করার।’
পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন কোথায় হবে সে ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না জানতে চাইলে নাহিদ গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের বিষয়ে পরবর্তীতে আলোচনা হবে। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যমুনাতেই থাকবেন।’
শহীদদের তালিকা প্রায় শেষের দিকে জানিয়ে নাহিদ বলেন, ‘শহীদ পরিবার নিয়ে আমরা এ মাসে একটি স্মরণ সভা করব। ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম চলছে, সেটির ঘোষণা হবে। আহত ও শহীদ পরিবারের প্রতি আমাদের আর্থিক ও অন্যান্য যে প্রতিশ্রুতি আছে, সেখান থেকে দেওয়া হবে এবং তালিকাটিও আমরা সেখান থেকে ঘোষণা করব। সেটিও এ মাসেই হবে।’
এ সময় যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

চলতি মাসেই ছাত্র-জনতা আন্দোলনে শহীদদের তালিকা চূড়ান্ত

আপডেট সময় : ০২:১০:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ডিডিএম প্রতিবেদক :
ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। সরকার পতনে প্রচুর সংখ্যক ছাত্র-জনতা পুলিশের গুলিতে নিহত হন। সেই রক্তের বিনিময় নতুনভাবে স্বাধীনতার স্বাদ পায় দেশের নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষ। নতুন করে দেশের দায়িত্ব গ্রহন করেন ড.ইউনুসের নেতৃত্বাধীণ অন্তর্বর্তীকালীণ সরকার। দায়িত্বগ্রহনে গত প্রায় একমাস হতে চলেছে, কিন্তু এখনো পর্যন্ত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত ও আহতদের সংখ্যা চূড়ান্ত হয়নি। আজ এই বিষয় নিয়ে মুখ খুলেছেন অন্তর্বর্তীকালীণ সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। তিনি জানিয়েছে চলতি মাসেই ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। দুপুরে গণভবন পরিদর্শন শেষে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
নাহিদ বলেন, ‘কেবিনেটে সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি জাদুঘরে রূপান্তর করা হবে। ৩৬ জুলাই অথবা ৫ আগস্ট জনগণ এটি জয় করেছে। অনেক রক্ত ও আত্মত্যাগের ভেতর দিয়ে আমরা এই ৫ আগস্টের মুহূর্ত পেয়েছি, ফলে সেটি জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া এবং জনগণের বিজয়কে ধারণ করে রাখার উদ্দেশ্যে এই গণভবনকে জাদুঘরে রূপান্তর করা হবে।’
‘আমরা পৃথিবীর বুকে একটি নিদর্শন রাখতে চাই, যে কোনো স্বৈরাচারী, ফ্যাসিস্ট, খুনি রাষ্ট্র নায়কদের কী পরিণতি হয়; জনগণই যে আসল ক্ষমতার মালিক সেটি নিদর্শন হিসেবে পৃথিবীর বুকে রাখার জন্য আমরা গণভবনকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি জাদুঘরে রূপান্তর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি সরকারের পক্ষ থেকে,’ বলেন তিনি।
নাহিদ আরো বলেন, ‘সেই উদ্দেশ্যে আজকে আমাদের প্রাথমিক পরিদর্শন ছিল। গণপূর্ত ও স্থাপত্য বিভাগের যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত আছেন, তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তাদের কাছ থেকে প্রাথমিক পরামর্শ নিয়েছি, আমাদের আকাঙ্ক্ষাগুলো বলেছি—আমরা কীভাবে দেখতে চাই। পাশাপাশি আনুষ্ঠানিক কমিটি করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হয়তো আগামীকালের মধ্যেই কমিটি হয়ে যাবে। কমিটি হলে আগামী সপ্তাহ থেকে আমরা কাজ শুরু করব, যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা এটি উদ্বোধন করতে পারি।’
জাদুঘরে ৩৬ দিনের অভ্যুত্থানের সামগ্রিক স্মৃতি ও দিনলিপি, আন্দোলনে শহীদদের তালিকা ও স্মৃতি এবং গত ১৬ বছরের নিপীড়ন-গুম-বিচারবহির্ভূত হত্যার চিত্র তুলে ধরা হবে বলেও এ সময় জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে নাহিদ বলেন, ‘যে স্থাপত্য ভগ্নাবশেষ অবস্থায় আছে, সেটিকে সেই অবস্থায় রেখেই জাদুঘর করা হবে। এখানে কিছু ডিজিটাল রিপ্রেজেন্টেশনও থাকবে। গত ১৬ বছরের একটি চিত্র আমরা তুলে ধরার চেষ্টা করব।’
তিনি বলেন, ‘এখানে প্রচুর দেয়াল লিখন আছে, গ্রাফিতি আছে। ছাত্র-জনতা যারা সেদিন এসেছিলেন, তারা তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আসবাবপত্র যেগুলো লুট হয়েছিল, মানুষ আবার রেখে গেছে। সেগুলো সংরক্ষণ করা হয়েছে। ভবনের চারিদিকে মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ রয়েছে। আমরা চেষ্টা করব সেই ক্ষোভ সংরক্ষণ করেই জাদুঘর করার।’
পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন কোথায় হবে সে ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না জানতে চাইলে নাহিদ গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের বিষয়ে পরবর্তীতে আলোচনা হবে। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যমুনাতেই থাকবেন।’
শহীদদের তালিকা প্রায় শেষের দিকে জানিয়ে নাহিদ বলেন, ‘শহীদ পরিবার নিয়ে আমরা এ মাসে একটি স্মরণ সভা করব। ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম চলছে, সেটির ঘোষণা হবে। আহত ও শহীদ পরিবারের প্রতি আমাদের আর্থিক ও অন্যান্য যে প্রতিশ্রুতি আছে, সেখান থেকে দেওয়া হবে এবং তালিকাটিও আমরা সেখান থেকে ঘোষণা করব। সেটিও এ মাসেই হবে।’
এ সময় যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান উপস্থিত ছিলেন।