ঢাকা ০৬:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

দেশজুড়ে সংঘর্ষ, বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:১৩:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ অগাস্ট ২০২৪
  • / ১৯৮ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

# আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা, নিহত ৮৮

ডিডিএম প্রতিবেদক : 
রাজধানী ঢাকাসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচি চলছে। সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করছে ছাত্র-জনতা। বিক্ষোভে উত্তাল গোটা দেশ। গতকাল রোববার সকাল থেকেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। ত্রিমুখী সংঘর্ষে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ৮৮ জন নিহত হবার খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন শতশত।
এই রিপোর্ট পর্যন্ত গতকাল পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ঢাকায় নিহত হয়েছেন ৫জন,ফেনীতে ৭ জন, নরসিংদীতে ৬, মুন্সীগঞ্জে ৪, বগুড়ায় ৪, মাগুরায় ৪, ভোলায় ৩, পাবনায় ৩, কুমিল্লায় ২, সিরাজগঞ্জে ১৩, ধামরাইয়ে ১, রংপুরে ৫, বরিশালে ২, সিলেটে ৩, জয়পুরহাটে ১, কিশোরগঞ্জ ৪, লক্ষীপুরে ৫জনসহ মোট ৮০ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন শতাধিক।
মৃত্যুর বড় মিছিলের পরেও মিলছে না কোন সমাধান। ছাত্রদের আন্দোলন দমাতে সরকার আরো কঠোর অবস্থান নিয়েছে। গতকাল তথ্য প্রতিমন্ত্রীর মোহাম্মদ আলী আরাফাতে বক্তব্যে পরিস্কার তারা শক্তহাতে ছাত্রদের আন্দোলন করবে। তিনি গতকাল বিকেলে মিডিয়া কর্মীদের জানিয়ে দেন, এটি এখন আর ছাত্র আন্দোলনে নেই। এটি এখন একটি রাজনৈতিক আন্দোলন। সুতরাং বর্তমান সরকার এই নাশকতাকে শক্তহাতে দমন করতে বদ্ধপরিকর।
ছাত্রদের উত্তেজনা ও সংঘাত এড়াতে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করেছেন বলে জানিয়েছেন।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আরাফাত আলী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা ডাক দিলে সবাই রাজপথে নেমে আসবে। ২৮শে অক্টোবর যাদের মোকাবিলা করেছি তারা আবারো সামনে চলে আসছে। রাজনৈতিকভাবেই এই পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করা হবে।
যে কারণে ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবক সকলকে নিরাপদে ঘরে ফিরে যাওয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হচ্ছে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এখন যারা নাশকতা করছে তারা কেউই ছাত্র নয়। তারা সন্ত্রাসী। এই সন্ত্রাসীদের শক্ত হাতে দমন করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাই।
অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরাও এক দফা দাবী বাস্তবায়নে রাজপথ ছাড়ছেন না। তারা নিহত ছাত্রদের শপথ নিয়ে মাঠে নেমেছেন বলে বিভিন্ন ছাত্ররা জানান।

ঢাকায় নিহত ৫ জন 
রাজধানী ঢাকার সাইন্সল্যাবে ১ জনসহ ঢাকায় ৫ জন নিহত হয়েছেন। এর আগে সাইন্সল্যাব এলাকায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সকাল ১১টার দিকে বাটা সিগন্যালের দিক থেকে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের একটি মিছিল সাইন্সল্যাবের দিকে আসতে থাকে এবং আন্দোলনকারীদের ধাওয়া দেয়। কয়েক মিনিটের মধ্যেই আন্দোলনকারীরা পাল্টা ধাওয়া দিলে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা সেখান থেকে পিছু হটে।
শাহবাগ চত্তর 
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচিতে অংশ নিতে রোববার সকাল থেকে শাহবাগে অবস্থান নেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া দেন আন্দোলনকারীরা।
সে সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সামনের দিকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা স্লোগান দিচ্ছিলেন। পরে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া দেন আন্দোলনকারীরা।
সংঘর্ষের সময় হাসপাতালের প্রাঙ্গণে রাখা গাড়িগুলো ভাঙচুর করা হয়। সে সময় হাসপাতালের ভেতরে আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ইট পাটকেল ছুড়ছিলেন। আগুন দেয়া হয়েছে পরীবাগ ওভারব্রিজের নিচে।
জাতীয় প্রেস ক্লাব
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাব এলাকা। সকাল সাড়ে ১০টা থেকেই বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রেসক্লাবে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করছেন। তাদের স্লোগানে মুখর প্রেস ক্লাব সড়ক। বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি), গণহত্যা ও নিপীড়ন বিরোধী আইনজীবী, গণতান্ত্রিক
আফতাব নগর
অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা দাবির কর্মসূচিতে সাড়া দিয়ে আফতাবগরে জড়ো হয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে রাজধানীর আফতাবনগরের ইস্টওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ফটকের সামনে অবস্থান নেন তারা।
সিরাজগঞ্জে ১৩ পুলিশ নিহত
সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় ১৩ পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ২৩ জন। রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি বিজয় বসাক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ফেনীতে নিহত ৭
ফেনীতে ছাত্র-জনতার সঙ্গে আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৭ জনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার ফেনী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ইকবাল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আহত অনেকের অবস্থা সংকটাপন্ন। প্রায় ৬০ জনের মতো আহত অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন জেনারেল হাসপাতালে। নিহতদের পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

নরসিংদীতে নিহত ৬
নরসিংদীতে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৬ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন।

মুন্সীগঞ্জে নিহত ৪
মুন্সীগঞ্জে কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের গুলিতে ৪ জন মারা গেছেন। এতে আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক। যার মধ্যে ৩০ জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়।
মাগুরায় নিহত ৪
মাগুরায় পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদী হাসান রাব্বী নিহত হয়েছেন। এ সময় সংঘর্ষে ৪ পুলিশ সদস্যসহ আহত হয়েছেন ১০ জন। গতকাল রোববার সকাল ১১ টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, সকালে পারনান্দুয়ালী এলাকা থেকে বিএনপি একটি মিছিল নিয়ে শহরে ঢুকতে গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ তাদের ধাওয়া দেয়, রাবার বুলেট ও গুলি নিক্ষেপ করে। এ সময় নিহত হন রাব্বী। এই সংঘর্ষে তিন পুলিশ সদস্যসহ ১০ জন আহত হয়। রংপুরে নিহত ৫
রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২০ জন।
লক্ষ্মীপুরে গুলিবিদ্ধ ৫, আহত ৫০
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিতে লক্ষ্মীপুরে সংঘর্ষে ৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এর মধ্যে ৩জনের নিহত হবার খবর পাওয়া যায়। এছাড়া আহত হয়েছেন প্রায় ৫০ জন।
বগুড়ায় ৪ জন নিহত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিতে বগুড়ায় ৪ জন নিহত হয়েছেন।বগুড়ার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়ক অবরোধ করে রেখেছে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা। দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শামসুন্নাহার বলেন, ১২ জন চিকিৎসা নিতে দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে যান। তার মধ্যে একজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। মাথায় গুলি লেগে তিনি নিহত হয়েছেন। তার নাম মনিরুল ইসলাম (২৪)।

কিশোরগঞ্জে নিহত ৪
কিশোরগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিতে নিহত ৪ জন নিহত হয়েছেন।
এছাড়া ভোলায় ৩ জন এবং ধামরাইতে ১ জন নিহত হয়েছেন।
পাবনায় নিহত ৩
পাবনার খেয়াঘাট মোড়ে শিক্ষার্থীদের অবস্থানকালে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের মিছিল থেকে গুলি চালানো হলে ৩ জন নিহত হন। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ৩২ জন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আওয়ামী লীগ নেতা এই গুলি চালান।
বরিশালে নিহত ২
বরিশালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিতে নিহত হয়েছেন ২ জন।
জয়পুরহাটে নিহত ১
জয়পুরহাটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিতে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
কুমিল্লায় নিহত ২
সংঘর্ষে কুমিল্লায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিতে ২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
ধামরাইতে নিহত ১
ঢাকার ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অজ্ঞাত এক যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে আছে। তবে তিনি কখন এবং কীভাবে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তাৎক্ষণিকভাবে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ভোলা নিহত ১
ভোলায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে ১ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

দেশজুড়ে সংঘর্ষ, বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল

আপডেট সময় : ০৯:১৩:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ অগাস্ট ২০২৪

# আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা, নিহত ৮৮

ডিডিএম প্রতিবেদক : 
রাজধানী ঢাকাসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচি চলছে। সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করছে ছাত্র-জনতা। বিক্ষোভে উত্তাল গোটা দেশ। গতকাল রোববার সকাল থেকেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। ত্রিমুখী সংঘর্ষে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ৮৮ জন নিহত হবার খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন শতশত।
এই রিপোর্ট পর্যন্ত গতকাল পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ঢাকায় নিহত হয়েছেন ৫জন,ফেনীতে ৭ জন, নরসিংদীতে ৬, মুন্সীগঞ্জে ৪, বগুড়ায় ৪, মাগুরায় ৪, ভোলায় ৩, পাবনায় ৩, কুমিল্লায় ২, সিরাজগঞ্জে ১৩, ধামরাইয়ে ১, রংপুরে ৫, বরিশালে ২, সিলেটে ৩, জয়পুরহাটে ১, কিশোরগঞ্জ ৪, লক্ষীপুরে ৫জনসহ মোট ৮০ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন শতাধিক।
মৃত্যুর বড় মিছিলের পরেও মিলছে না কোন সমাধান। ছাত্রদের আন্দোলন দমাতে সরকার আরো কঠোর অবস্থান নিয়েছে। গতকাল তথ্য প্রতিমন্ত্রীর মোহাম্মদ আলী আরাফাতে বক্তব্যে পরিস্কার তারা শক্তহাতে ছাত্রদের আন্দোলন করবে। তিনি গতকাল বিকেলে মিডিয়া কর্মীদের জানিয়ে দেন, এটি এখন আর ছাত্র আন্দোলনে নেই। এটি এখন একটি রাজনৈতিক আন্দোলন। সুতরাং বর্তমান সরকার এই নাশকতাকে শক্তহাতে দমন করতে বদ্ধপরিকর।
ছাত্রদের উত্তেজনা ও সংঘাত এড়াতে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করেছেন বলে জানিয়েছেন।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আরাফাত আলী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা ডাক দিলে সবাই রাজপথে নেমে আসবে। ২৮শে অক্টোবর যাদের মোকাবিলা করেছি তারা আবারো সামনে চলে আসছে। রাজনৈতিকভাবেই এই পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করা হবে।
যে কারণে ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবক সকলকে নিরাপদে ঘরে ফিরে যাওয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হচ্ছে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এখন যারা নাশকতা করছে তারা কেউই ছাত্র নয়। তারা সন্ত্রাসী। এই সন্ত্রাসীদের শক্ত হাতে দমন করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাই।
অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরাও এক দফা দাবী বাস্তবায়নে রাজপথ ছাড়ছেন না। তারা নিহত ছাত্রদের শপথ নিয়ে মাঠে নেমেছেন বলে বিভিন্ন ছাত্ররা জানান।

ঢাকায় নিহত ৫ জন 
রাজধানী ঢাকার সাইন্সল্যাবে ১ জনসহ ঢাকায় ৫ জন নিহত হয়েছেন। এর আগে সাইন্সল্যাব এলাকায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সকাল ১১টার দিকে বাটা সিগন্যালের দিক থেকে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের একটি মিছিল সাইন্সল্যাবের দিকে আসতে থাকে এবং আন্দোলনকারীদের ধাওয়া দেয়। কয়েক মিনিটের মধ্যেই আন্দোলনকারীরা পাল্টা ধাওয়া দিলে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা সেখান থেকে পিছু হটে।
শাহবাগ চত্তর 
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচিতে অংশ নিতে রোববার সকাল থেকে শাহবাগে অবস্থান নেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া দেন আন্দোলনকারীরা।
সে সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সামনের দিকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা স্লোগান দিচ্ছিলেন। পরে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া দেন আন্দোলনকারীরা।
সংঘর্ষের সময় হাসপাতালের প্রাঙ্গণে রাখা গাড়িগুলো ভাঙচুর করা হয়। সে সময় হাসপাতালের ভেতরে আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ইট পাটকেল ছুড়ছিলেন। আগুন দেয়া হয়েছে পরীবাগ ওভারব্রিজের নিচে।
জাতীয় প্রেস ক্লাব
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাব এলাকা। সকাল সাড়ে ১০টা থেকেই বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রেসক্লাবে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করছেন। তাদের স্লোগানে মুখর প্রেস ক্লাব সড়ক। বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি), গণহত্যা ও নিপীড়ন বিরোধী আইনজীবী, গণতান্ত্রিক
আফতাব নগর
অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা দাবির কর্মসূচিতে সাড়া দিয়ে আফতাবগরে জড়ো হয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে রাজধানীর আফতাবনগরের ইস্টওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ফটকের সামনে অবস্থান নেন তারা।
সিরাজগঞ্জে ১৩ পুলিশ নিহত
সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় ১৩ পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ২৩ জন। রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি বিজয় বসাক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ফেনীতে নিহত ৭
ফেনীতে ছাত্র-জনতার সঙ্গে আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৭ জনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার ফেনী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ইকবাল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আহত অনেকের অবস্থা সংকটাপন্ন। প্রায় ৬০ জনের মতো আহত অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন জেনারেল হাসপাতালে। নিহতদের পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

নরসিংদীতে নিহত ৬
নরসিংদীতে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৬ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন।

মুন্সীগঞ্জে নিহত ৪
মুন্সীগঞ্জে কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের গুলিতে ৪ জন মারা গেছেন। এতে আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক। যার মধ্যে ৩০ জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়।
মাগুরায় নিহত ৪
মাগুরায় পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদী হাসান রাব্বী নিহত হয়েছেন। এ সময় সংঘর্ষে ৪ পুলিশ সদস্যসহ আহত হয়েছেন ১০ জন। গতকাল রোববার সকাল ১১ টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, সকালে পারনান্দুয়ালী এলাকা থেকে বিএনপি একটি মিছিল নিয়ে শহরে ঢুকতে গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ তাদের ধাওয়া দেয়, রাবার বুলেট ও গুলি নিক্ষেপ করে। এ সময় নিহত হন রাব্বী। এই সংঘর্ষে তিন পুলিশ সদস্যসহ ১০ জন আহত হয়। রংপুরে নিহত ৫
রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২০ জন।
লক্ষ্মীপুরে গুলিবিদ্ধ ৫, আহত ৫০
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিতে লক্ষ্মীপুরে সংঘর্ষে ৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এর মধ্যে ৩জনের নিহত হবার খবর পাওয়া যায়। এছাড়া আহত হয়েছেন প্রায় ৫০ জন।
বগুড়ায় ৪ জন নিহত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিতে বগুড়ায় ৪ জন নিহত হয়েছেন।বগুড়ার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়ক অবরোধ করে রেখেছে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা। দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শামসুন্নাহার বলেন, ১২ জন চিকিৎসা নিতে দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে যান। তার মধ্যে একজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। মাথায় গুলি লেগে তিনি নিহত হয়েছেন। তার নাম মনিরুল ইসলাম (২৪)।

কিশোরগঞ্জে নিহত ৪
কিশোরগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিতে নিহত ৪ জন নিহত হয়েছেন।
এছাড়া ভোলায় ৩ জন এবং ধামরাইতে ১ জন নিহত হয়েছেন।
পাবনায় নিহত ৩
পাবনার খেয়াঘাট মোড়ে শিক্ষার্থীদের অবস্থানকালে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের মিছিল থেকে গুলি চালানো হলে ৩ জন নিহত হন। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ৩২ জন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আওয়ামী লীগ নেতা এই গুলি চালান।
বরিশালে নিহত ২
বরিশালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিতে নিহত হয়েছেন ২ জন।
জয়পুরহাটে নিহত ১
জয়পুরহাটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিতে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
কুমিল্লায় নিহত ২
সংঘর্ষে কুমিল্লায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিতে ২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
ধামরাইতে নিহত ১
ঢাকার ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অজ্ঞাত এক যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে আছে। তবে তিনি কখন এবং কীভাবে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তাৎক্ষণিকভাবে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ভোলা নিহত ১
ভোলায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে ১ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন।