প্রায় ২৩ কোটি টাকা ঘাটতি রেখে খসড়া বাজেট বাফুফে‘র

- আপডেট সময় : ০৪:২৫:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪
- / ২০৭ বার পড়া হয়েছে
ডিডিএম ক্রীড়া প্রতিবেদক :
প্রায় তেইশ কোটি টাকার ঘাটতি রেখে খসড়া বাজেট উপস্থাপন করেছে বাংলাদেশ ফুটবর ফেডারেশন (বাফুফে)। আজ স্থানীয় একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত বাফুফে‘র এজিএম এই বিল উত্থাপিত হয়। প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২৪ সালের জন্য বাফুফের আয় ধরা হয়েছে ৩১ কোটি ৪৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এই আয়ের উৎস ধরা হয়েছে পৃষ্ঠপোষকতা থেকে ৫ কোটি টাকা, ফিফার অনুদান থেকে ১৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, এএফসির অনুদান ৫ কোটি ৫ লাখ টাকা, ভেন্যুর বোর্ড বিজ্ঞাপন থেকে ৫০ লাখ টাকা, সাউথ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন থেকে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা, জাপান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন থেকে ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজনের জন্য অনুদান ৫ কোটি টাকা।
এদিকে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৪ কোটি ২৯ লাখ ৮৯ হাজার ৩০ টাকা। প্রস্তাবিত বাজেটে ঘটতি থাকছে ২২ কোটি ৮০ লাখ ৩৯ হাজার ৩০ টাকা। ব্যয়ের খাতে উল্লেখযোগ্য খরচ ধরা হয়েছে ঘরোয়া বিভিন্ন প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্য (পুরুষ ও নারী এলিট একাডেমি পরিচালনা ব্যয়সহ) ৩৩ কোটি ৮৯ লাখ ৩৯ হাজার ৩০ টাকা, আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজনের জন্য ১০ কোটি ২৫ লাখ টাকা এবং দেশি-বিদেশি কোচ এবং বাফুফের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন, বোনাস ও ভাতা বাবদ ৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
এদিন উপস্থিত সবার মধ্যে আলোচনায় ছিলেন বাফুফে‘র পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করা সাবেক ফুটবলার মুনের উপস্থিতি নিয়ে। যদিও তিনি বলেছেন নীলফামারী জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের প্রতিনিধিত্ব করতেই তিনি উপস্থিত হন এজিএমে।
মুন বলেন, ‘আমি এখানে জেলার প্রতিনিধিত্ব করতে এসেছি। আমি তৃণমূলের লোক, অনেক জেলার অনেকেই আসবে যারা আমার প্রিয় ও কাছের মানুষ। এই সাধারণ সভার মাধ্যমে তাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ হবে, সেই উপলক্ষ্যেই মূলত আসা।’
মুন ২০১২ সাল থেকে বাফুফের নির্বাহী কমিটির সদস্য। তিনি টানা তিন মেয়াদে নির্বাচিত হয়েছেন। তৃতীয় মেয়াদের দেড় বছর বাকি থাকতেই পদত্যাগ করেন বাফুফে থেকে। বার্ষিক সাধারণ সভায় এতদিন মুন ছিলেন মঞ্চের ওপর। এবার সাধারণ পরিষদের সদস্য হিসেবে মঞ্চের অপরপ্রান্তে। বার্ষিক সাধারণ সভায় নির্বাহী কমিটির জবাবদিহিতা আদায়ের ক্ষেত্র। নির্বাহী কমিটির কর্মকাণ্ড নিয়ে তিনি এতটাই বিরক্ত যে কথা বলতেও অরুচি তার, ‘কমিটিতে থেকে ও বেরিয়ে আসার পরও অনেক কিছুই বলেছি। কোনো পরিবর্তন নেই, বলে আর কি হবে।’
বাফুফের নির্বাহী কমিটি ২১ সদস্য বিশিষ্ট। সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি, চার সহ-সভাপতি ও ১৫ জন্য সদস্য। বাফুফের অধিভুক্ত জেলা, ক্লাব ও বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধির মাধ্যমে ভোটে নির্বাহী কমিটি ৪ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়। নির্বাহী কমিটি ৪ বছরের জন্য ফুটবল ও ফেডারেশন পরিচালনার কর্তৃত্ব পেলেও, বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রতিটি কাজের জন্য জবাবদিহিতা এবং এ সভায় কোনো সুপারিশ, প্রস্তাব পাশের কাজ বাস্তবায়ন করতে বাধ্য।
কাজী সালাউদ্দিন আমলে বাফুফে সদস্য থেকে পদত্যাগ নতুন নয়। মুনের আগে আরেক সাবেক জাতীয় ফুটবলার শেখ আসলাম ২০১৬ সালে পদত্যাগ করেছিলেন। এরপর তিনি বাফুফের আনুষ্ঠানিক কোনো সভা বা অনুষ্ঠানে যোগ না দিলেও ২০২০ সালে সালাম মুর্শেদীর বিপক্ষে লড়েছিলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে। ২০০৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করা কাজী সালাউদ্দিনও ফেডারেশনের সহ-সভাপতি থেকে পদত্যাগ করেছিলেন।
১৯৯৩ সালের সাফ গেমসে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক ছিলেন আরিফ হোসেন মুন। খেলা ছাড়ার পর নিজ জেলা নীলফামারীতেই থেকেছেন, ঢাকায় স্থায়ী হননি। এখনও নীলফামারীর ক্রীড়াঙ্গন ও রাজনীতিতে সক্রিয় তিনি। গত বছর মার্চে আকস্মিকভাবে বাফুফে থেকে পদত্যাগ করেন। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করলেও মূলত বাফুফের সামগ্রিক কর্মকাণ্ড ও শীর্ষ নীতি-নির্ধারকদের ওপর নাখোশ হয়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সাবেক এই অধিনায়ক।