ঢাকা ০২:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ফুটবলার হামজা নাকি সালাউদ্দিনকে খেলার ব্যাপারে আগ্রহ দেখায়নি!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:০৮:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ জুন ২০২৪
  • / ২১৫ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ডিডিএম ক্রীড়া প্রতিবেদক :

বেশ কিছুদিন ধরেই ইংল্যান্ডের প্রবাসী ফুটবলার হামজা চৌধুরির বাংলাদেশ দলে খেলা নিয়ে আলোচনা চলছে। হামজা গত পরশু (বুধবার) ইংল্যান্ডের লন্ডন দূতাবাসে বাংলাদেশের পাসপোর্টের জন্য আবেদনও করেছেন। এই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলারের লাল-সবুজ জার্সিতে খেলার বিষয়টি যখন কিছুটা এগিয়েছে, ঠিক তখনই বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের বেফাঁস মন্তব্য তৈরি করেছে নতুন সংকট।
বৃহস্পতিবার কিংস অ্যারেনায় বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ দেখতে গিয়ে বাফুফে সভাপতি  বলেন, ‘হামজা চৌধুরি যদি খেলতে চায়, অবশ্যই স্বাগতম। যা চায় তাই দেবো। কিন্তু সে কখনও আমাকে বলেনি, খেলতে চায়। এটা মিডিয়ার মিথ্যা (ছড়ানো)। সে আমাকে বলুক খেলতে চায়, কি করতে হয় করে দেবো সাত দিনে।’

তাহলে কোনটি সত্য? মিডিয়ায় প্রকাশিত তথ্য, নাকি বাফুফে বস সালাউদ্দিনের বক্তব্য। এ নিয়ে ফুটবলাঙ্গনে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।এনিয়ে বাফুফে নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য মহিদুর রহমান মিরাজ বলেন, ‘কিছুদিন আগে জাতীয় দল কমিটির চেয়ারম্যান হামজা নিয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছেন। এরপর সভাপতির কাছ থেকে এমন মন্তব্য প্রত্যাশিত নয়। ফুটবলপ্রেমীদের উদ্দেশে বিষয়টি পরিষ্কার করা প্রয়োজন।’
হামজা ও তার পরিবার বাফুফের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রেখেই পাসপোর্ট আবেদন করেছে। নিজেই লন্ডন দূতাবাসে হামজার পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়া নিয়ে যোগাযোগ করেছেন বাফুফে সহ-সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ। জাতীয় দল কমিটির সর্বশেষ সভা শেষে আনুষ্ঠানিক মন্তব্যও করেছেন। সরাসরি হামজার সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছেন সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার। যেখানে হামজাকে সেপ্টেম্বরের উইন্ডোতে খেলানোর জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে, সেখানে সভাপতি বলছেন হামজা নাকি খেলতে চান এটা বলেননি। তাকে হামজা সরাসরি বলেননি এটা সঠিক, কিন্তু তাকেই কেন বলতে হবে এই প্রশ্ন যেমন উঠেছে, তেমনি হামজাকে নিয়ে ফেডারেশন যে কাজ করছে সেটা কি সভাপতির অগোচরে বা বিনা অনুমতিতেই তা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে ফুটবলাঙ্গনে।
বাফুফে সভাপতির মন্তব্যের প্রেক্ষিতে উদ্ভূত সংকট নিরসনে একটি বিবৃতির দেওয়ার পরিকল্পনা আছে ফেডারেশনের। এ নিয়ে অবশ্য দোটানায় দেশের ফুটবলের এই নিয়ন্ত্রক সংস্থা। হামজার সঙ্গে বাফুফের সম্পর্ক ও বর্তমান অবস্থানের ব্যাখ্যা প্রদান করলে সভাপতির সঙ্গে অন্য কর্মকর্তাদের যোগাযোগের অভাব রয়েছে যে সেই বিষয়টি ফুটে উঠবে। সেই বিষয়টি এড়িয়ে যদি বাফুফে সভাপতির মন্তব্য ভুল স্বীকার করে বিবৃতি দেওয়া হয়, তখন আবার তার দায়িত্বজ্ঞানহীনতার প্রশ্নও উঠবে।
সভাপতির এমন মন্তব্যে হামজা ও তার পরিবারের যেন মনক্ষুণ্ন না হয় সেদিক অবশ্য তড়িৎ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ফেডারেশন থেকে হামজা ও তার পরিবারকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে পুরো বিষয়টি। ফুটবলপ্রেমীদের জন্য সুখবর, হামজা ও তার পরিবার সেই ব্যাখায় সন্তুষ্ট হয়েছেন। হামজা আজও বাংলাদেশের গণমাধ্যমে খেলার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
হামজাকে নিয়ে ফেডারেশনের অফিস ও জাতীয় দল কমিটি কাজ করছে এটি বাফুফে সভাপতিরও জানা। তার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের মতে, আকস্মিকভাবে হামজার বিষয়টি স্মরণে ছিল না তাই এমন মন্তব্য করেছেন। গতকাল কিংস অ্যারেনায় সালাউদ্দিন যখন গণমাধ্যমে কথা বলছিলেন তখন ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির দুই-তিন জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সভাপতিকে শোধরানো বা সতর্ক না করে উল্টো নিশ্চুপই ছিলেন তারা। এই ঘটনায় ফুটবলাঙ্গনের অনেকে টিপ্পনী কেটে প্রবাদ আওড়ে বলছেন, ‘বোকা বন্ধুর চেয়ে, বুদ্ধিমান শত্রুুও শ্রেয়।’

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ফুটবলার হামজা নাকি সালাউদ্দিনকে খেলার ব্যাপারে আগ্রহ দেখায়নি!

আপডেট সময় : ১০:০৮:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ জুন ২০২৪

ডিডিএম ক্রীড়া প্রতিবেদক :

বেশ কিছুদিন ধরেই ইংল্যান্ডের প্রবাসী ফুটবলার হামজা চৌধুরির বাংলাদেশ দলে খেলা নিয়ে আলোচনা চলছে। হামজা গত পরশু (বুধবার) ইংল্যান্ডের লন্ডন দূতাবাসে বাংলাদেশের পাসপোর্টের জন্য আবেদনও করেছেন। এই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলারের লাল-সবুজ জার্সিতে খেলার বিষয়টি যখন কিছুটা এগিয়েছে, ঠিক তখনই বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের বেফাঁস মন্তব্য তৈরি করেছে নতুন সংকট।
বৃহস্পতিবার কিংস অ্যারেনায় বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ দেখতে গিয়ে বাফুফে সভাপতি  বলেন, ‘হামজা চৌধুরি যদি খেলতে চায়, অবশ্যই স্বাগতম। যা চায় তাই দেবো। কিন্তু সে কখনও আমাকে বলেনি, খেলতে চায়। এটা মিডিয়ার মিথ্যা (ছড়ানো)। সে আমাকে বলুক খেলতে চায়, কি করতে হয় করে দেবো সাত দিনে।’

তাহলে কোনটি সত্য? মিডিয়ায় প্রকাশিত তথ্য, নাকি বাফুফে বস সালাউদ্দিনের বক্তব্য। এ নিয়ে ফুটবলাঙ্গনে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।এনিয়ে বাফুফে নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য মহিদুর রহমান মিরাজ বলেন, ‘কিছুদিন আগে জাতীয় দল কমিটির চেয়ারম্যান হামজা নিয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছেন। এরপর সভাপতির কাছ থেকে এমন মন্তব্য প্রত্যাশিত নয়। ফুটবলপ্রেমীদের উদ্দেশে বিষয়টি পরিষ্কার করা প্রয়োজন।’
হামজা ও তার পরিবার বাফুফের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রেখেই পাসপোর্ট আবেদন করেছে। নিজেই লন্ডন দূতাবাসে হামজার পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়া নিয়ে যোগাযোগ করেছেন বাফুফে সহ-সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ। জাতীয় দল কমিটির সর্বশেষ সভা শেষে আনুষ্ঠানিক মন্তব্যও করেছেন। সরাসরি হামজার সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছেন সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার। যেখানে হামজাকে সেপ্টেম্বরের উইন্ডোতে খেলানোর জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে, সেখানে সভাপতি বলছেন হামজা নাকি খেলতে চান এটা বলেননি। তাকে হামজা সরাসরি বলেননি এটা সঠিক, কিন্তু তাকেই কেন বলতে হবে এই প্রশ্ন যেমন উঠেছে, তেমনি হামজাকে নিয়ে ফেডারেশন যে কাজ করছে সেটা কি সভাপতির অগোচরে বা বিনা অনুমতিতেই তা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে ফুটবলাঙ্গনে।
বাফুফে সভাপতির মন্তব্যের প্রেক্ষিতে উদ্ভূত সংকট নিরসনে একটি বিবৃতির দেওয়ার পরিকল্পনা আছে ফেডারেশনের। এ নিয়ে অবশ্য দোটানায় দেশের ফুটবলের এই নিয়ন্ত্রক সংস্থা। হামজার সঙ্গে বাফুফের সম্পর্ক ও বর্তমান অবস্থানের ব্যাখ্যা প্রদান করলে সভাপতির সঙ্গে অন্য কর্মকর্তাদের যোগাযোগের অভাব রয়েছে যে সেই বিষয়টি ফুটে উঠবে। সেই বিষয়টি এড়িয়ে যদি বাফুফে সভাপতির মন্তব্য ভুল স্বীকার করে বিবৃতি দেওয়া হয়, তখন আবার তার দায়িত্বজ্ঞানহীনতার প্রশ্নও উঠবে।
সভাপতির এমন মন্তব্যে হামজা ও তার পরিবারের যেন মনক্ষুণ্ন না হয় সেদিক অবশ্য তড়িৎ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ফেডারেশন থেকে হামজা ও তার পরিবারকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে পুরো বিষয়টি। ফুটবলপ্রেমীদের জন্য সুখবর, হামজা ও তার পরিবার সেই ব্যাখায় সন্তুষ্ট হয়েছেন। হামজা আজও বাংলাদেশের গণমাধ্যমে খেলার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
হামজাকে নিয়ে ফেডারেশনের অফিস ও জাতীয় দল কমিটি কাজ করছে এটি বাফুফে সভাপতিরও জানা। তার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের মতে, আকস্মিকভাবে হামজার বিষয়টি স্মরণে ছিল না তাই এমন মন্তব্য করেছেন। গতকাল কিংস অ্যারেনায় সালাউদ্দিন যখন গণমাধ্যমে কথা বলছিলেন তখন ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির দুই-তিন জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সভাপতিকে শোধরানো বা সতর্ক না করে উল্টো নিশ্চুপই ছিলেন তারা। এই ঘটনায় ফুটবলাঙ্গনের অনেকে টিপ্পনী কেটে প্রবাদ আওড়ে বলছেন, ‘বোকা বন্ধুর চেয়ে, বুদ্ধিমান শত্রুুও শ্রেয়।’