ঢাকা ০৯:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

নিজেরাই গ্রামরক্ষা বাঁধ দিলেন সাতক্ষীরা উপকুলের মানুষ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:১৪:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ মে ২০২৪
  • / ২৪৪ বার পড়া হয়েছে
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ডিডিএম প্রতিবেদক
সরকারের দিকে না তাকিয়ে নিজেরাই গ্রাম রক্ষা বাঁধ নির্মান করে দিলেন উপকুলের মানুষ। ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাত ও অতিবৃষ্টিতে গত ২৭ মে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূলের নদ-নদীতে ছয়-সাত ফুট পানি বেড়ে গিয়েছিল। প্রবল দমকা হাওয়ার সঙ্গে জলোচ্ছ্বাসের পানি উপকূলের বেড়িবাঁধের ওপর আছড়ে পড়তে থাকে। বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি লোকালয়ে ঢোকার আশঙ্কা দেখা দেয়। এ অবস্থায় শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়ন ও আশাশুনি উপজেলার খোলপেটুয়া নদী সংলগ্ন গ্রামের বাঁধের স্থানে উঁচু আইল দিয়ে পানি আটকানোর চেষ্টা করেন এলাকাবাসী। তাদের এই প্রচেষ্টায় শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার অন্তত ২০টি গ্রাম জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা পেয়েছে। ফলে বড় ধরনের কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
প্রচণ্ড ঝড়ের মধ্যে স্থানীয়রা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বেড়িবাঁধের ওপর মাটির আইল দিয়ে নদীর জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ বন্ধ করে দেন। ফলে গ্রাম ও শতাধিক মৎস্যঘের প্লাবন থেকে রক্ষা পায়।
স্থানীয়রা জানান, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে উপকূলের নদ-নদী উত্তাল হয়ে ওঠে এবং জোয়ারের পানি ছয়-সাত ফুট পর্যন্ত বেড়ে যায়। দমকা হাওয়ার কারণে তা প্রবল আকারে বেড়িবাঁধের ওপর আছড়ে পড়ে। এরই মধ্যে বেড়িবাঁধের ভাঙন ঠেকাতে ও লোকালয়ে পানি প্রবেশ বন্ধ করতে মাটির আইল বাঁধতে শুরু করেন এলাকাবাসী। এতে বেড়িবাঁধ ভাঙন থেকে রক্ষা পেয়ে বেঁচে যায় হাজারো মানুষের বাড়িঘর।

আশাশুনি উপজেলার বিছট গ্রামের রুহুল আমিন মোড়ল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘২৬ মে রাতে ঘূর্ণিঝড় উপকূল অতিক্রম করার সময় আমার বাড়ির সামনে দিয়ে বয়ে যাওয়া খোলপেটুয়া নদীর পানির উচ্চতা ও বাতাসের গতিবেগ ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু পরদিন সোমবার দুপুরের পর থেকে নদীতে জোয়ারের পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাতাসের গতিবেগও বাড়তে থাকে। রাতে দমকা হাওয়ার সঙ্গে জোয়ারের পানি প্রবল বেগে আছড়ে পড়তে থাকে বেড়িবাঁধের ওপর। ফলে বিছট মোড়ল বাড়ি ও সরদার বাড়ির সামনের বাঁধ উপচে পানি লোকালয়ে ঢুকতে শুরু করে। এ অবস্থায় গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে বাঁধে মাটি দিয়ে কোনও রকমে উঁচু করে পানি প্রবেশ ঠেকানোর চেষ্টা করি। পরে আইল দিয়ে রাত ১২টা পর্যন্ত বাঁধটি রক্ষা করেছি আমরা। এতে আমাদের গ্রামসহ আশপাশের অন্তত ১০টি গ্রাম বন্যা প্লাবিত হওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছে।’

নদীর পানির চেয়ে বাঁঁধের উচ্চতা অনেক কম উল্লেখ করে রুহুল আমিন আরও বলেন, ‘ফলে যেকোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় নদ-নদীর পানি বাড়লে বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করে। বছরের পর বছর বেড়িবাঁধ উঁচু করছে না পানি উন্নয়ন বোর্ড। টেকসই বেড়িবাঁধ তৈরি না করলে এসব গ্রাম রক্ষা কঠিন হবে।’
স্থানীয়দের অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড যথাযথভাবে বেড়িবাঁধগুলো তদারকি করছে না। উচ্চতা কমে যাওয়ায় বড় জোয়ারের চাপ সামলানোর ক্ষমতা হারিয়েছে বাঁধগুলো।

শ্যামনগরের গাবুরা গ্রামের হাফিজুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঝড়ের পরদিন খোলপেটুয়া নদীতে ছয়-সাত ফুট পানি বেড়ে যায়। ডুমুরিয়া এলাকায় বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি ঢুকতে দেখে এলাকাবাসী নদী রক্ষা বাঁধের ওপর মাটির আইল দিয়ে উঁচু করে দেন। এতে এই যাত্রাই কোনোমতে রক্ষা পেয়েছি আমরা। আমাদের সঙ্গে সঙ্গে আশপাশের আরও ১০টি গ্রামের মানুষও রক্ষা পেয়েছে। না হয় সবগুলো গ্রাম প্লাবিত হয়ে যেতো।’

একই কথা বলেছেন পদ্মপুকুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মাসুম বিল্লা। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘কপোতাক্ষ নদের পানি বেড়ে যাওয়ায় বেড়িবাঁধ উপচে পাতাখালি এলাকায় পানি ঢোকার উপক্রম হয়। এ সময় আমরা এলাকার লোকজন বেড়িবাঁধের ওপর মাটির আইল দিয়ে নিজেদের গ্রামগুলো রক্ষা করেছি। তবে ঝড়ে বেড়িবাঁধ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দ্রুত সংস্কার করা না হলে যেকোনও সময় ভেঙে যাবে।’

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-১-এর সেকশন অফিসার সাজ্জাদুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বেড়িবাঁধ নির্মাণে গাবুরায় মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। ঘূর্ণিঝড় আঘাতের পর স্বাভাবিকের তুলনায় জোয়ারের সময় নদীতে ছয়-সাত ফুট পানি বেড়েছিল। সেই তুলনায় ভাটায় পানি নামেনি। এজন্য বেড়িবাঁধগুলো একটু ঝুঁকির মধ্যে ছিল। অনেক জায়গায় বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে পানির ঢোকার উপক্রম হয়েছিল। তবে কোথাও বাঁধ ভাঙেনি। স্থানীয়দের প্রচেষ্টায় বাঁধগুলো রক্ষা পেয়েছে। ফলে অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়নি। বড় ধরনের কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।’

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী এম সালাউদ্দীন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে ছয়-সাত ফুট পানি বেড়ে গিয়েছিল। শ্যামনগর উপকূল রক্ষা বাঁধের ১২৯ কিলোমিটারের মধ্যে সাত-আট পয়েন্টে দুই কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ। নদ-নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় বাঁধের বেশ কয়েকটি স্থান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা সেগুলো মেরামত করবো।’
একই কথা জানিয়েছেন সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমার বিভাগের আওতায় ১৫টির অধিক পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। পর্যায়ক্রমে সবগুলো পয়েন্টের সংস্কার করবো।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাতক্ষীরা উপকূলীয় এলাকার মানুষের ত্যাগ ও কঠোর পরিশ্রমের ফলে তারা ঘূর্ণিঝড়ের হাত থেকে নিজেদের গ্রামগুলো রক্ষা করতে পেরেছেন। তবে বেড়িবাঁধের অবস্থা যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ এবং উঁচু করে তৈরি না করলে ভবিষ্যতে আরও বড় বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হবে। এজন্য স্থানীয় ও জাতীয় কর্তৃপক্ষকে আরও তৎপর হতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

নিজেরাই গ্রামরক্ষা বাঁধ দিলেন সাতক্ষীরা উপকুলের মানুষ

আপডেট সময় : ০৯:১৪:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ মে ২০২৪

ডিডিএম প্রতিবেদক
সরকারের দিকে না তাকিয়ে নিজেরাই গ্রাম রক্ষা বাঁধ নির্মান করে দিলেন উপকুলের মানুষ। ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাত ও অতিবৃষ্টিতে গত ২৭ মে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূলের নদ-নদীতে ছয়-সাত ফুট পানি বেড়ে গিয়েছিল। প্রবল দমকা হাওয়ার সঙ্গে জলোচ্ছ্বাসের পানি উপকূলের বেড়িবাঁধের ওপর আছড়ে পড়তে থাকে। বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি লোকালয়ে ঢোকার আশঙ্কা দেখা দেয়। এ অবস্থায় শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়ন ও আশাশুনি উপজেলার খোলপেটুয়া নদী সংলগ্ন গ্রামের বাঁধের স্থানে উঁচু আইল দিয়ে পানি আটকানোর চেষ্টা করেন এলাকাবাসী। তাদের এই প্রচেষ্টায় শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার অন্তত ২০টি গ্রাম জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা পেয়েছে। ফলে বড় ধরনের কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
প্রচণ্ড ঝড়ের মধ্যে স্থানীয়রা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বেড়িবাঁধের ওপর মাটির আইল দিয়ে নদীর জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ বন্ধ করে দেন। ফলে গ্রাম ও শতাধিক মৎস্যঘের প্লাবন থেকে রক্ষা পায়।
স্থানীয়রা জানান, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে উপকূলের নদ-নদী উত্তাল হয়ে ওঠে এবং জোয়ারের পানি ছয়-সাত ফুট পর্যন্ত বেড়ে যায়। দমকা হাওয়ার কারণে তা প্রবল আকারে বেড়িবাঁধের ওপর আছড়ে পড়ে। এরই মধ্যে বেড়িবাঁধের ভাঙন ঠেকাতে ও লোকালয়ে পানি প্রবেশ বন্ধ করতে মাটির আইল বাঁধতে শুরু করেন এলাকাবাসী। এতে বেড়িবাঁধ ভাঙন থেকে রক্ষা পেয়ে বেঁচে যায় হাজারো মানুষের বাড়িঘর।

আশাশুনি উপজেলার বিছট গ্রামের রুহুল আমিন মোড়ল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘২৬ মে রাতে ঘূর্ণিঝড় উপকূল অতিক্রম করার সময় আমার বাড়ির সামনে দিয়ে বয়ে যাওয়া খোলপেটুয়া নদীর পানির উচ্চতা ও বাতাসের গতিবেগ ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু পরদিন সোমবার দুপুরের পর থেকে নদীতে জোয়ারের পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাতাসের গতিবেগও বাড়তে থাকে। রাতে দমকা হাওয়ার সঙ্গে জোয়ারের পানি প্রবল বেগে আছড়ে পড়তে থাকে বেড়িবাঁধের ওপর। ফলে বিছট মোড়ল বাড়ি ও সরদার বাড়ির সামনের বাঁধ উপচে পানি লোকালয়ে ঢুকতে শুরু করে। এ অবস্থায় গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে বাঁধে মাটি দিয়ে কোনও রকমে উঁচু করে পানি প্রবেশ ঠেকানোর চেষ্টা করি। পরে আইল দিয়ে রাত ১২টা পর্যন্ত বাঁধটি রক্ষা করেছি আমরা। এতে আমাদের গ্রামসহ আশপাশের অন্তত ১০টি গ্রাম বন্যা প্লাবিত হওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছে।’

নদীর পানির চেয়ে বাঁঁধের উচ্চতা অনেক কম উল্লেখ করে রুহুল আমিন আরও বলেন, ‘ফলে যেকোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় নদ-নদীর পানি বাড়লে বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করে। বছরের পর বছর বেড়িবাঁধ উঁচু করছে না পানি উন্নয়ন বোর্ড। টেকসই বেড়িবাঁধ তৈরি না করলে এসব গ্রাম রক্ষা কঠিন হবে।’
স্থানীয়দের অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড যথাযথভাবে বেড়িবাঁধগুলো তদারকি করছে না। উচ্চতা কমে যাওয়ায় বড় জোয়ারের চাপ সামলানোর ক্ষমতা হারিয়েছে বাঁধগুলো।

শ্যামনগরের গাবুরা গ্রামের হাফিজুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঝড়ের পরদিন খোলপেটুয়া নদীতে ছয়-সাত ফুট পানি বেড়ে যায়। ডুমুরিয়া এলাকায় বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি ঢুকতে দেখে এলাকাবাসী নদী রক্ষা বাঁধের ওপর মাটির আইল দিয়ে উঁচু করে দেন। এতে এই যাত্রাই কোনোমতে রক্ষা পেয়েছি আমরা। আমাদের সঙ্গে সঙ্গে আশপাশের আরও ১০টি গ্রামের মানুষও রক্ষা পেয়েছে। না হয় সবগুলো গ্রাম প্লাবিত হয়ে যেতো।’

একই কথা বলেছেন পদ্মপুকুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মাসুম বিল্লা। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘কপোতাক্ষ নদের পানি বেড়ে যাওয়ায় বেড়িবাঁধ উপচে পাতাখালি এলাকায় পানি ঢোকার উপক্রম হয়। এ সময় আমরা এলাকার লোকজন বেড়িবাঁধের ওপর মাটির আইল দিয়ে নিজেদের গ্রামগুলো রক্ষা করেছি। তবে ঝড়ে বেড়িবাঁধ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দ্রুত সংস্কার করা না হলে যেকোনও সময় ভেঙে যাবে।’

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-১-এর সেকশন অফিসার সাজ্জাদুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বেড়িবাঁধ নির্মাণে গাবুরায় মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। ঘূর্ণিঝড় আঘাতের পর স্বাভাবিকের তুলনায় জোয়ারের সময় নদীতে ছয়-সাত ফুট পানি বেড়েছিল। সেই তুলনায় ভাটায় পানি নামেনি। এজন্য বেড়িবাঁধগুলো একটু ঝুঁকির মধ্যে ছিল। অনেক জায়গায় বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে পানির ঢোকার উপক্রম হয়েছিল। তবে কোথাও বাঁধ ভাঙেনি। স্থানীয়দের প্রচেষ্টায় বাঁধগুলো রক্ষা পেয়েছে। ফলে অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়নি। বড় ধরনের কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।’

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী এম সালাউদ্দীন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে ছয়-সাত ফুট পানি বেড়ে গিয়েছিল। শ্যামনগর উপকূল রক্ষা বাঁধের ১২৯ কিলোমিটারের মধ্যে সাত-আট পয়েন্টে দুই কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ। নদ-নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় বাঁধের বেশ কয়েকটি স্থান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা সেগুলো মেরামত করবো।’
একই কথা জানিয়েছেন সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমার বিভাগের আওতায় ১৫টির অধিক পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। পর্যায়ক্রমে সবগুলো পয়েন্টের সংস্কার করবো।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাতক্ষীরা উপকূলীয় এলাকার মানুষের ত্যাগ ও কঠোর পরিশ্রমের ফলে তারা ঘূর্ণিঝড়ের হাত থেকে নিজেদের গ্রামগুলো রক্ষা করতে পেরেছেন। তবে বেড়িবাঁধের অবস্থা যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ এবং উঁচু করে তৈরি না করলে ভবিষ্যতে আরও বড় বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হবে। এজন্য স্থানীয় ও জাতীয় কর্তৃপক্ষকে আরও তৎপর হতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।